অবতল

সৌবর্ণ বাঁধন ২৬ আগস্ট ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১১:৫২:১৭অপরাহ্ন কবিতা ২৩ মন্তব্য

আবছায়া আলো গিলে খায় ঘাসের দুপুর,
ফিরে আসা ফড়িঙের মতো গুনগুন করে নারী,
নক্ষত্র ঝরে পড়ে পায়ের তালুতে; বাজে স্নিগ্ধ নুপূর,
সেই সব আলো অন্ধকারে লন্ঠন হাতে ফেরে বাড়ি,
তাদের পাশেই বসে ফোকলা দাঁতের প্রাচীন বিকাল,
হেসে দেয় গড়াগড়ি, কতো মজলিস শেষ হলো,
জড়াজড়ি করে প্রেমাসক্ত মোরগঝুটির মতো,
বুকে নিয়ে বিষাক্ত ছুরির বিত্রস্ত আলিঙ্গন, 
মরে গেলো যুগে যুগে অগণিত নরনারী,
তারা গলে যাওয়া মোম, তারা নিষিদ্ধ সময়ের দম! 
ভোর রাতে শুকতারা উবে গেলে পড়ে থাকে ঘুম,
উষ্ণ স্পঞ্জের পালংকে মাথাচাড়া দেয় ছত্রাক,
কথা বলে করোটিতে চোখ, নাড়ে জল মৃত বক!
তবুও তোমার চোখের শ্রাবস্তীতে রেখে চোখ,
ভুলে থাকি প্রতি মুহুর্ত জুড়ে অগণন মৃত্যুশোক,
নিষিদ্ধ মন্ত্রোচ্চারণে শুনি- অক্ষয় হোক ঈশ্বরী! 

ঘুম এলে দেয়ালে নাচে ক্রোম্যাগনন মানুষ,
ফিরে আসে তারা খুঁজে নিতে বহু পুরানো শিকার,
তখন তোমার আমার চোখে নামে বিলুপ্ত বিকার!
স্প্যানিশ ফ্লু এর মতো গাঁড় জ্বর আসে,
মানুষেরা বৃত্তাকার নাচে ব্লেন্ডারের চাকাটার মতো,
পাক খায় দ্রুত, অনেকটা বদ্ধ স্রোতে থাকা মাছ!
ছাদের বাগান চাঁদের আলো মেখে পায়না উচ্ছ্বাস, 
পৌষের মেঘে অনিশ্চয়তার নাম আফ্রোদিতি,
এবং মোহিনী সে বাতাসে ভেসে দেয় তবু আশ্বাস!
খুঁজেছি মেমফিসে, আমুদরিয়ার বিরান বাতাসে,
যখন নিজেই আসো আমি থাকি ভিনদেশে
বাণিজ্য বসতে, যখন তোমাকে খুঁজি তুমি থাকো
পরিযানে হৃদয়ের গহীন প্রদেশে! 
সেখানে উল্লম্ব ভূমি, শীতল সাপের মতো কাঁদে
প্রসারপিনার নিঃশ্বাস! 
এ কেমন খেলা আদিগন্ত সরিষার ক্ষেতে নিয়তির,
সৌরদীপ্তি নিভিয়ে খোঁজা হলুদের অমৃত তিথি,
হয়তো সেখানে তুমি অলৌকিক রাজহাঁস, 
পাবোনা জেনেও বলি- অক্ষয় হোক চেরীফুল
এবং আফ্রোদিতি! 

যুদ্ধ মানে অন্ধকারে দুর্বার আরশোলা টিকটিকি,
অথবা মনের কোণে বাসনার তীব্র স্ফূরণ, 
যুদ্ধ মানে উপস্থিত ঝড়, ভেঙ্গে যাওয়া তোরণ, 
নিজের সামনে কুরুক্ষেত্রে দন্ডায়মান এক আমি! 
তবুও তো রণক্ষেত্রে তার জন্য থামি, 
কাঁটাবনে আহত খরগোশ খুঁজে তীব্র বেদনানাশক,
হয়তো কোথাও নেই অদৃশ্য চাঁদ, ম্রিয়মাণ জলপরী,
তবু আনমনে বলি- বেঁচে থাক নাগবল্লী ফুল,
অক্ষয় হোক ঈশ্বরী! 

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ