রোজা খুলতে বেশীক্ষণ নাই! খুব অল্প সময় বাকি ইফতারের। বাঁশি দেবে দেবে ভাব। ফাহিমের আর সহ্য হচ্ছেনা। আধা ঘন্টাও
আর টিকবে বলে মনে হচ্ছেনা। ধৈর্য সহ্য খুবই
কম ছেলেটার। আগেও কয়েকবার ভেবেছে চুপিচুপি আড়ালে গিয়ে পানি খেয়ে আসবে।
কিন্তু একটু সহ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ওদিকে শেষ বেলাতে “বাবা” ডেকে বলল,
-এই ফাহিম! বাজারে গিয়ে জলদি আধা কেজি জিলাপী নিয়ে আয়!
বাবার আদেশ! পালন তো করাই লাগবে। এমনিতেই ফাহিমের বাবা স্বভাব সুলভ আচারন
থেকে একটু বেশিই রাগী।
কিছুদিন আগে একবার ধোলাই দিয়েছে ফাহিমকে। মুখে মুখে তর্ক করেছিল এজন্য। একারণে আপাতত সাহস করে ফাহিম আর কিছুই বলেনা ওর বাবার সামনে। রাস্তা দিয়ে মরার মতো হাটছে ফাহিম। গাড়ি ঘোড়ার দিকে দৃষ্টি অনুপাত করার সময় নাই। একেকবার মনে হচ্ছে ওর, এই বাতাসটা বুঝি এবারই ওকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। দোকানদারের সাথে কিছুক্ষণ তর্ক বিতর্ক করে আধা কেজি জিলাপীতে পাচঁ টাকা বাঁচিয়েছে ফাহিম। নির্ভয়েই তর্ক করে জিতেছে। সবাই তো ওর বাবার মতো না? যে তর্ক করতে গেলেই কানের নিচে বাজিয়ে দেবে!
জিলাপীর প্যাকেট হাতে নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাটছে ফাহিম।
আহ! একটা মহা যন্ত্রনায় পড়ে গেলো ফাহিম।
জিলাপীর মিষ্টি গন্ধে ওর মুখ থেকে লালা ঝরার উপক্রম হলো! আর সহ্য করা যাচ্ছেনা। কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা। পাড়ার “ঘাড় ব্যাকা হাতেম” ওর দিকে তাকিয়ে পিট পিট করে হাসছে। ফাহিম একবার মুখ ভেংচি দিয়েছে। তবুও নির্বোধ হাতেম আবারো হাঁসে! আশ্চর্য!
হাতেম এতো হাঁসে কেন? ফাহিম এই হাঁসির
রহস্য খুজতে গিয়ে বুঝতে পারলো এতক্ষণে
ওর প্যাকেট থেকে দুটি জিলাপী শেষ করা হয়ে গেছে। হাতে এখনো বাকী আরেকটার অর্ধেক ঝুলে আছে! ওদিকে ঘাড় ব্যাকা হাতেম হাসঁতে হাসঁতে রাস্তার ল্যাম্পপোষ্টের সাথে গুতো খেয়ে সেখানেই শুয়ে আছে।
কে জানো খুব নাড়ানাড়ি করছে ফাহিমকে।
-এই ওঠ! জলদি ওঠ! ইফতারের সাইরেন দিয়ে দিয়েছে উঠবি না? সারাদিন ঘুমিয়েছিস! যাহ,
কাল থেকে তোর আর রোজা থাকা লাগবেনা!
ফাহিমের কাছে মনে হচ্ছে, এটা ওর মায়ের ! কথা গুলো ধীরে ধীরে পরিস্কার হচ্ছে।
ফাহিমের ঘুম ভেঙ্গেছে এতক্ষণে। বুঝতে পারলো এগুলো সব স্বপ্ন ছিলো। বারোটার মধ্যে আজ টেনে টুনে তিনটা রোজা পুরলো ফাহিমের। কিছুটা কষ্ট হয়েছে। সেটা ওর চেহারা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে!
১৬টি মন্তব্য
সিকদার
সুন্দর হয়েছে ।
রাসেল হাসান
ধন্যবাদ জানবেন। 🙂
আর্বনীল
ভালো লিখেছেন…… এমন গল্প আরো লিখে যান…
রাসেল হাসান
ধন্যবাদ। চেষ্টা থাকবে। 🙂
ইমন
🙂
রাসেল হাসান
🙂 🙂
খেয়ালী মেয়ে
প্রথমে তো বুঝতেই পারিনি যে ফাহিম স্বপ্ন দেখছে–
ভালো লিখেছেন–
রাসেল হাসান
শুভেচ্ছা জানবেন। শুভ কামনা। 🙂
পারভীন সুলতানা
বাহ খুব সুন্দর লিখেছেন । ভাল লাগলো ।
রাসেল হাসান
পাঠে শুভেচ্ছা নিবেন! ভালো থাকুন। শুভ কামনা। 🙂
জিসান শা ইকরাম
অনেক দিন পরে সোনেলায় দেখলাম।
রাসেল হাসান
মাঝে অনেকদিন বিজি সময় কাটাচ্ছিলাম। মাস খানেক হলো নিয়মিত হয়েছি তবে ফেসবুকেই পড়ে থাকা হয়। আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে কিন্ত আছি ভাই। 🙂
অনিকেত নন্দিনী
যাক বাবা! স্বপ্ন ছিলো। নাড়ানাড়ি দেখে আমি তো ভয় পেয়েছিলাম বেচারা বুঝি এক্সিডেন্টই করলো!
রাসেল হাসান
🙂 না এক্সিডেন্ট করেনি। পাঠে শুভেচ্ছা জানুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
অন্যরকম, ভালো লেগেছে।
রাসেল হাসান
শুভেচ্ছা নিন। ভালো থাকুন।