অহমের সংক্ষিপ্ত জীবনী – পার্ট ১
সীমা সারমিন
অহমের জীবন সম্পর্কে জানার খুব একটা সৌভাগ্য হয়নি। ৯ ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল ৮ম। তার একটি ছোটো বোন ছিল। ৫ ভাইয়ের মাঝে সে ছিল সকলের ছোটো। অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক বাবার ছোটো ছেলে অহম তার মাকে খুব বেশি ভালোবাসতো। বাবাকেও সে কম ভালোবাসতো না।
অহম ছিল অনেক মিষ্টি দেখতে, ঠিক যেন রূপকথার রাজপুত্রের মতো। সে অনেক নম্র, ভদ্র ও জ্ঞানী ছেলে ছিল, তবে মনে মনে সে অনেকটা দুষ্টুও ছিল যার প্রতিফলন সে খুব একটা ঘটাতে পারত না।
খুব একটা রাগ ছিলনা অহমের তবে সহপাঠীদের মুখে যদি কখনো তার বাবা-মা নিয়ে কোন বাজে কথা শুনেছে তবেই প্রতিবাদী হয়ে ঝাঁপিয়ে পরত তাদের উপর, আর সিনেমার নায়কের মতো কয়েকটা ঢিসুম ঢিসুম দিয়ে রাগ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসত সে।
অপরাধ বোধ তার খুব বেশি ছিল। খুব একটা অন্যায় না করলেও ভুল বশত যদি দুই একটা অন্যায় হয়ে যায় তার দ্বারা, তবে সে নিজেকে খুব অপরাধী ভেবে বসে ও অনুসুচনায় ভুগতে থাকে। অতঃপর সে তার ভুলটাকে শুধরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ও পরিশেষে শুধরিয়েও নেয়।
একদিন মাঠে অহম তার সহপাঠীদের সাথে খেলছে। হটাত খেলতে খেলতে তার চোখ পরে যায় পাশে পুকুর ঘাঁটের উপর খেজুর গাছটিতে। সে দেখতে পায় ছোটো খেজুর গাছটির উপর ১০ টাকার একটি নোট রাখা। অহম তখন
অনেক ছোটো, আশেপাশে কোন মানুষ নেই দেখে সে ভাবল কেউ হয়তো টাকা ফেলে গেছে। অহম মনে মনে ভাবল টাকাটি নিয়ে সে তার খেলার বল কিনতে পারবে, ভেবেই সে টাকাটি নিয়ে পকেটে ঢুকিয়ে রাখল।
কিছুক্ষণ পর এক মহিলা এসে ঐ খেজুর গাছটিতে টাকা খুঁজছেন। উনি নাকি গোসল করতে গিয়ে টাকা ভিজিয়ে ফেলেছিলেন তাই শুকাতে দিয়েছিলেন।
অহম বিষয়টি বুঝতে পারলো কিন্তু ভয়ে বলতে পারেনি টাকাটি সে নিয়েছে। তার পর থেকেই শুরু হয়ে গেলো অনুসুচনা। অনেক দিন থেকে সুযোগ খুঁজছে মহিলাটিকে যদি একা পেয়ে যায় তবে সত্য কথাটি সে বলে দিবে।
অহম সুযোগ খুঁজতে খুঁজতেই বেশ বড় হয়ে গেছে। একদিন হটাত পথে মহিলাটিকে একা পেয়ে গেলো। অহম মহিলাটিকে ডেকে বলল, চাচি আমি একটা অন্যায় করে ফেলেছি, আমাকে ক্ষমা করে দেন। মহিলাটি অবাক হয়ে বলে বাবা আমিতো জানিনা তুমি কি অপরাধ করেছো, তার পরো তুমি ক্ষমা চাচ্ছ কেন?
অহম বলে দেয় সব সত্য কথা, তারপর পকেট থেকে ১০ টাকা বের করে মহিলাটির হাতে দেয়। মহিলাটির চোখে জ্বল চলে আসে। তিনি মাথায় হাত রেখে আদর করে বলেন বাবা এ টাকা আমার লাগবেনা তুমি রাখো। অহম বলে চাচি আপনি টাকাটা না নিলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা। টাকাটি মহিলাটির হাতে দিয়ে সে চলে আসে। অহমের পথের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর তিনি চলে যান।
Thumbnails managed by ThumbPress
৫টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
পড়লাম অহনের জীবন কাহিনীর প্রথম অংশ ।
অহম যে খুব সৎ তা বুঝতে পারলাম ।
নীলকন্ঠ জয়
ভালো ছেলে অহম। ভালো লাগলো।
ভালো লিখেছেন ছোটা’পু (y)
মা মাটি দেশ
পড়লাম অহমের জীবনী পার্ট ১ চলুক….. -{@
শুন্য শুন্যালয়
বেশ সুন্দর ..চলুক লেখা ..
এই মেঘ এই রোদ্দুর
ভাল লাগল