ইনফার্নোঃ উপন্যাস বনাম চলচ্চিত্র

অলিভার ২ ডিসেম্বর ২০১৬, শুক্রবার, ১২:০০:২১পূর্বাহ্ন মুভি রিভিউ ২০ মন্তব্য

ধরুন চোখ মেলে আপনি নিজেকে আবিষ্কার করলেন কোন এক হসপিটালের বিছানায়। স্মৃতি আঁকড়ে ধরে মনে করার চেষ্টা করছেন ঠিক কি কারণে আপনি কখন হসপিটালে আসলেন। কিন্তু চেষ্টা করেও কিছু মনে করতে পারলেন না। তখনই হঠাৎ করে হসপিটালের জানালা গলে আপনার দৃষ্টি ছড়িয়ে পড়ল। বুঝতে পারলেন আপনি আছেন ভিন্ন কোন এক শহরের অজানা কোন এক হসপিটালের বিছানার উপর।

বলুন তো, ঠিক এমন একটা পরিস্থিতিতে কতটা অসহায় বোধ হবে আপনার?

এমন একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গল্পের শুরু হবে রবার্ট ল্যাংডনের সাথে। একজন প্রখ্যাত সিম্বলিষ্ট হঠাৎই নিজেকে আবিষ্কার করবেন এক হসপিটালের বেডে যে হসপিটালটি তার নিজের দেশে নয়, বরং রয়েছে ভিন্ন আরেক দেশে। সাথে রয়েছে মাথার যন্ত্রণা আর টুকরো টুকরো স্মৃতি ও স্বপ্নের মিশ্রণ। যদিও এই স্বপ্নটাকে আপনি কোনভাবেই সাধারণ স্বপ্ন বলতে পারবেন না, তারচেয়ে বরং স্বপ্ন গুলোকে দুঃস্বপ্ন বলা যেতে পারে।

দায়িত্বরত ডক্টরের কাছ থেকে জানতে পারলেন আপনাকে কোন এক ক্যাব হসপিটালের ইমার্জেন্সি সেকশনে ছেড়ে গেছে, কিন্তু যখন ছেড়ে গিয়েছিল তখন আপনি ছিলেন আপনার নিজেরই রক্তে চপচপে ভেজা! জানতে পারলেন এই রক্তের উৎস আপনার মাথার চামড়া কেটে যাওয়াতেই হয়েছে। কিন্তু খুব সাধারণ ভাবে চামড়া কেটে রক্ত বের হয়নি, বরং হয়েছে কোন একটা বুলেট শুধুমাত্র চামড়াটা ছুঁয়ে যাবার কারণে! আর দুই এক মিলিমিটার এদিক-সেদিক হলে হয়তো আপনার ভবলীলা সাঙ্গ হতো। আর এই আঘাতের কারণেই আপনার স্মৃতির কিছু অংশ ভ্রষ্ট হয়েছে। তবে আশার কথা হল সেসব স্মৃতি খুব দ্রুতই ফিরে পাবেন আপনি।

কিন্তু এতটাই সহজ যদি গল্পের শুরু হবে তবে সেটা কিভাবে এক উপন্যাসে রূপ নেবে? হ্যাঁ, এবারে আবারও শুরু হবে জটিলতার। হঠাৎ করেই গোলাগুলির শব্দ! কর্তব্যরত চিকিৎসকদের একজন আপনার সামনেই সেই গুলির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন, তার রক্ত মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ছে খুবই দ্রুত। শুরু হল ছুটোছুটি আর এই ছুটোছুটি চলবে একদম উপন্যাসের শেষ পর্যন্ত। শুধু ল্যাংডন যে তার নিজের জীবন বাঁচানোর জন্যেই ছুটবেন তা কিন্তু নয়, বরং এ ছুটো-ছুটি চলবে পুরো মানব গোত্রকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে। বলতে পারেন মানব সমাজকে বাঁচিয়ে রাখার একমাত্র ক্লু’টি রয়েছে রবার্ট ল্যাংডনের হাতে।

 

 

 

 

এতক্ষণ যে গল্পের প্লট নিয়ে কথা বলছিলাম তা ছিল একজন সফল রোমাঞ্চ উপন্যাস লেখক 'ড্যান ব্রাউন' রচিত 'ইনফার্নো' উপন্যাসটির একদম প্রাথমিক অংশ। 'ডা ভিঞ্চি কোড', 'দ্যা লস্ট সিম্বল' এবং 'ইনফার্নো'; এই তিনি উপন্যাসে লেখক ড্যান ব্রাউন আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেন তার বিখ্যাত চরিত্র রবার্ট ল্যাংডন সাহেবকে। আর প্রতিবারই দারুণ এক উত্তেজনার সাগরের তলদেশ হতে ঘুরিয়ে নিয়ে এসেছেন তার পাঠকদের।

ইতোপূর্বে 'ডা ভিঞ্চি কোড' এবং 'দ্যা লস্ট সিম্বল' উপন্যাস দুটোকে চলমান চিত্রে রূপ দান করা হয়েছে। সেখানে ল্যাংডনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরেক কালজয়ী অভিনেতা 'টম হ্যাংক্‌স'। আর সত্যি কথা বলতে গেলে এই চরিত্রটির জন্যে টম হ্যাংক্‌সের চেয়ে ভালো কেউ হতে পারত বলে মনে করি না। মাঝে মাঝে মনে হয় ড্যান ব্রাউন সাহেব সম্ভবত ল্যাংডন চরিত্রটিকে রূপদান করার পূর্বে তার কল্পনাতেও টম হ্যাংক্‌স সাহেবকে নিয়ে এসেছিলেন। 'ডা ভিঞ্চি কোড' এবং 'দ্যা লস্ট সিম্বল'-এ দারুণ অভিনয় গুণ ফুটিয়ে তোলার পুরস্কার স্বরূপ এবারেও ইনফার্নো চলচ্চিত্রে একই চরিত্রে দেখা মেলে হ্যাংক্‌স সাহেবের সাথে।

এর আগেও একটি লেখাতে আমি বলেছিলাম যে, যদি হাজারও চেষ্টা করা হয় তবুও কখনো কোন উপন্যাসের সমস্ত ঘটনা সমেত একটি মুভি একজন ডাইরেক্টর সাহেব কোনদিনই তৈরি করতে পারবেন না। কারণ ব্যাপারটা একেবারেই অসম্ভব। তবে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত উপন্যাসকে মুভিতে নিয়ে আসা সম্ভব বলে আমি মনে করি। কিন্তু এবারে ইনফার্নো মুভিটি যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে আমার কোন ভাবেই মনে হয়নি যে এখানে মূল উপন্যাসের ৪০ ভাগের বেশি উপস্থিত রয়েছে। বরং হিসেব করলে হয়তো তার থেকে অনেক কমই পাওয়া যাবে।

স্ক্রিপ্ট রাইটার মুভিটির স্ক্রিপ্ট তৈরি করার সময় উপন্যাস থেকে এত বেশি অংশ বাদ দিয়েছেন, আর এত বেশি নিজ থেকে যুক্ত করেছেন যে কেউ যদি মুভিটিকে ভিন্ন কোন নামে প্রকাশ করেন তবে সেটা আমার দিক থেকে মোটেও খুব অনুচিত কিছু মনে হবে না।

 

 

আবারও বলি, কারও সাথে যদি বইয়ের পাতাতে ইনফার্নোর সাথে পরিচয় হয়ে গিয়ে না থাকে তবে অবশ্যই আপনি মুভিটি দারুণ ভাবে উপভোগ করতে পারবেন। কিন্তু যদি ইতোমধ্যে ইনফার্নোর উপন্যাসটি আপনি পড়ে থাকেন আর আপনার স্মৃতিতে ইনফার্নোর ঘটনার বিবরণের রঙ এখনো কিছু বাকি থেকে থাকে তবে অবশ্যই মুভিটি দেখার পর আপনি বেশ অনেকটা হতাশ হবেন আর অনেক খানি বিরক্ত চলে আসবে আপনার মনে।

যদি এই ঘটনা পরিবর্তনের কারণ খুব ভালো করেই অনুমেয় তবুও পরিবর্তনটুকু ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য মনে হয় নি। উপন্যাসের স্রষ্টা খুব ভালো বুঝেই উপন্যাসটি রচনা করেছেন। এবং আন্তর্জাতিক ভাবে উপন্যাসটি 'বেস্ট সেল' র‌্যাংক প্রাপ্ত হয়েছে। তাই উপন্যাসের মত করে মুভিটিকে নিয়ে আসলে সেটা মানুষজনকে বিভ্রান্ত করবে, এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হবে কিংবা তার কারণে বড় ধরণের পরিবর্তন হয়ে যাবে মনে করে করা হয়ে থাকলে সম্ভবত ভুলই করা হয়েছে।

উপরন্তু উপন্যাসে বর্ণিত ঘটনা প্রবাহকে অনেক বেশি মর্ডানাইজেশন করা হয়েছে। মানছি সময়ের সাথে এমন পরিবর্তন হয়তো প্রয়োজন ছিল, তবুও যতটুকু না করলে আসলে সম্ভব ছিল না ততটুকু বাদ দিয়ে করলেই সম্ভবত তা আরও বেশি আকর্ষণীয় হতো। উপন্যাসে এক স্থানে ল্যাংডন ইনফার্নোর একটি হার্ড কপি বই ধার নিয়েছিলেন ভ্রমণকারীর কাছ থেকে। সে অংশটাকে মর্ডানাইজেশন প্রক্রিয়ায় বাদ দেয়া হয়েছে। এখানে দেখা যায় সিয়েনা ব্রুক্‌স চাওয়া মাত্রই নেট থেকে ইনফার্নোর একটি কপি বের করে নিয়ে আসেন তার চুরি করা সেলফোনে। এই অংশটা প্রযুক্তির ব্যবহারের অতিরিক্ত মনে হয়েছে আমার কাছে।

 

 

এছাড়াও পালিয়ে বেড়ানোর অনেক অংশে নিয়ে আসা হয়েছে অনেক পরিবর্তন। উপন্যাসে ছুটোছুটির যেসব স্থানে স্থানে এসে প্রায় আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম পাঠক হিসেবে, আবার ঠিক তার পরমুহুর্তে সিয়েনা আর ল্যাংডন সাহেব যেভাবে সেই ঘটনা উৎরে যাবার রসদ খুঁজে বের করে নিচ্ছিল, যেখানে ধাঁধা আউরে বার বার সমাধান বের করার চেষ্টা চলছিল; সেখানে লাইট-ক্যামেরা-রোলিং এর গ্যাঁড়াকলে পড়ে তার প্রায় সব কিছুই বাদ পড়ে গেছে।

এ ছাড়াও চরিত্রায়নে ছিল অনেক বেশি গাফিলতি(!)। ড. সিন্সকিকে উপন্যাসে যেভাবে দেখানো হয়েছে, তার যে বর্ণনা সেখানে পাওয়া গেছে তার ঠিক বিপরীত রূপটাই এসেছে মুভিটিতে। অন্তত এই চরিত্রটিকে বেছে নেয়ার ব্যাপারে আরও একটু স্টাডি করার প্রয়োজন ছিল। একই ব্যাপার ঘটেছে সিয়েনা ব্রুকসের ব্যাপারে। তারপরও সিনেমার খাতিরে সিয়েনাকে মেনে নিয়েছিলাম। তবে চরিত্রায়নের পজিটিভ দিক বলতে গেলে বলতে হবে প্রভোস্টের চরিত্রটির কথা। প্রভোস্ট চরিত্রটি চরিত্রায়ন করেছেন ভারতীয় অভিনেতা 'ইরফান খান' এবং তার অভিনয় বেশ সাবলীল ছিল। এই একটি চরিত্রই মুভিটির জন্যে বেশ নিখুঁত মনে হয়েছে।

এরকম হাজারও পরিবর্তন দেখতে দেখতে মুভিটির প্রায় শেষ অংশে উপস্থিত হয়েছি। উপন্যাসের একদম শেষ দিকে সিয়েনার পালিয়ে যাওয়া, তারপর পুনরায় ফিরে আসা, আত্ম সমর্পণ করা, প্রভোস্টের চোপ-পুলিশ খেলায় নিজেই ধরা খাওয়া আর শেষ পরিস্থিতিতে পুরো ব্যাপারটার উপর নিয়ন্ত্রণ নেবার যে ব্যাপারগুলি উপন্যাসটিতে যে দারুণ সব উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল; মুভিতে সেই একই ব্যাপার গুলির অনুপস্থিতি, নতুন দৃশ্যপট সংযোজন আর বিয়োজনে সেই ব্যাপারগুলি একদম সাদামাটা ঠেকেছে। এখন মুভিটিকে আর ১০ টি সাধারণ এডভেঞ্চার মুভির মতই একটা সস্তা দরের এডভেঞ্চার মুভি মনে হয়েছে।

 

 

জানিনা বাকি সবার কাছে পরিবর্তিত এই মুভি কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পাবে, তবে ব্যক্তিগত ভাবে ১০ এর স্কেলে আমি মুভিটিকে মাত্র ৪ পয়েন্ট দিয়ে রেট করব। টিজার আর ট্রেলার দেখার পর অনেক আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম মুভিটি দেখার জন্যে। কিন্তু মুভিটি দেখার পর মনে হয়েছে, যদি দয়া করে ডাইরেক্টর সাহেব মুভিটিকে সৃষ্টি না করতেন তবেই কেবল ইনফার্নো উপন্যাসটির প্রতি তার সুবিচার করা হতো।

 

 

রকমারি হতে বইটির হার্ডকপি সংগ্রহ করতে পারবেন
কিংবা এই লিংক হতে বইটির সফটকপি ডাওনলোড করতে পারেন।

 

 

0 Shares

২০টি মন্তব্য

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    মুভিটি দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেললাম। তবে হ্যা উপন্যাসটির অনুবাদ পেলে অবশ্যই পড়বো।

    অবশ্য মজা হলো আমার জীবনে এই বেঁচে থাকা সময়ের মধ্যে ১৫ দিনের স্মৃতি নেই। জ্ঞান ফিরে দেখেছি আরেকটি শহরের আরেক হাসপাতাল। কিভাবে এলা্ম, কেন এলাম জেনেছি সব ১৫ দিন পরে। 🙂

    • অলিভার

      ইনফার্নো যেহেতু আপনার পড়া হয়নি তাই সময় করে মুভিটি দেখতে পারেন। আপনার কাছে খুব একটা খারাপ লাগবে বলে মনে হয় না। তবে মুভিটি দেখার পর উপন্যাসটি পড়লে বুঝতে পারবেন ঠিক কতটুকু বাদ রেখে গিয়েছিল। বইটির সফটকপির লিংক (অনুবাদ) পোষ্টের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। এখান থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন।

      স্মৃতি হারানোর মত বিব্রতকর ঘটনা অন্য কিছুর সাথে তুলনা করা যায় না। স্বল্প সময়ের জন্যে হলেও এমন অভিজ্ঞতার সাথে পরিচয় আমারও হয়েছে।

      • নীলাঞ্জনা নীলা

        তাহলে মুভিটি দেখবো। আসলে দেখার চেয়ে বই পড়ার প্রতি আমার আগ্রহ বেশী।

        স্মৃতি হারানোর ঘটনার কারণ যদি বলার মতো হয়ে থাকে, বলবেন। কেমন?

      • অলিভার

        দুটোই করুন। তবে প্রথমে মুভিটি দেখে তারপর উপন্যাসটি পড়লে হয়তো আমার মত তিক্ততা আসবে না।

        স্মৃতি হারানোর ঘটনার সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব ‘খামখেয়ালিপনার’। এখানে আমি একদমই নির্দোশ ছিলাম 😛

  • মিষ্টি জিন

    উপন্যাসটির অনুবাদ পেলে ভালো হোত।
    সব উপন্যাসের মুভি ভাল হয় না। পরিচালকের অদক্ষতা বা নিজ থেকে অতিরিক্ত সংযোজনের ফলে সাধারণত এটা ঘটে থাকে।
    ইনফারনোর বেলায় হয় তো তাই ঘটেছে।

    • অলিভার

      এই ব্লগে সম্ভবত মুভি নিয়ে আলোচনার তৃতীয় পোষ্ট এটি। আর উপন্যাস হতে মুভিতে রূপান্তর নিয়ে ২য় লেখা। আমি প্রথম লেখাটিতেই বলেছিলাম, কেউ হাজার চেষ্টা করলেও উপন্যাসকে চলচ্চিত্রে রূপায়ন করতে পারবে না। তবুও রবার্ট ল্যাংডন সিরিজের ডা ভিঞ্চি কোড আর দ্যা লস্ট সিম্বলের তুলনায় এটি খুবই বাজে ধরণের হয়েছে। ডা ভিঞ্চি কোড আমার প্রিয় কিছু সিনেমার অন্যতম একটি।

      তবে হয়তো উপন্যাসটিকে মনে ধরে রেখে খুব বেশি আশা করে ফেলেছিলাম মুভিটার কাছে। যার ফলাফল এই হতাশাজনক পোষ্ট।

      উপন্যাসটির অনুবাদ সংগ্রহ করার লিংক পোষ্টে সংযুক্ত করা হয়েছে।

      ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্যে 🙂

  • ছাইরাছ হেলাল

    এই উপন্যাসটি পড়িনি, মুভিটিও দেখিনি, তবে সুন্দর সাবলীল আলোচনা পড়ে
    মুভিটি দেখব কী দেখব না ভাবছি। Rotten Tomatoes রেটিং খুব ই পুওর।
    তবে আপনি মুভি দেখেন জেনে ভাল লাগল, আমিও কিছু ছবি প্রায় নিয়মিত দেখি,

    • অলিভার

      আমি প্রথমেই রোটেন টমেটো আর আইএমডিবি’র রেটিং দেখা বাদ রেখেছিলাম এই মুভিটির জন্যে। যদিও এমন অনেক মুভি রয়েছে যাদের রেটিং অনেক খারাপ হওয়া স্বত্তেও তাদের স্টোরি লাইন কিংবা মেকিং আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আর এসব দেখার আগে মূলত উপন্যাসের চিত্রপট আর আগের দুটো পর্বের মেকিং মনে খুব বেশি কাজ করেছিল বিধায় ওসব গোনায় ধরি নি আগে।

      আপনি যেহেতু উপন্যাসটি এখনো পড়েন নি তাই আপনার কাছে মুভিটা ততটা খারাপ লাগতে নাও পারে। সাধারণ দরের এডভেঞ্চারের স্বাদ পাবেন মুভিটাতে। আর এই লেখার সাথে বাস্তবতার মিল খুঁজতে হলে উপন্যাসটির প্রথম ৩ খন্ড পড়ে মুভিটি দেখতে বসতে পারেন। তাহলেই ব্যপারটা পরিস্কার হয়ে যাবে।

      মুভি দেখা হয়, অনেক না হলেও মোটামুটি গোছের মুভিখোর উপাধি হয়তো বাগাতে পারব সুযোগ পেলে 😛

  • শুন্য শুন্যালয়

    পরে মন্তব্য। আগে দেখে নেই মুভি। আজই দেখবো। বই পড়ে মুভির মজা নষ্ট করতে চাচ্ছিনা। টম হ্যাংকস আমার প্রিয়র চাইতেও প্রিয় অভিনেতা, সে হযবরল অভিনয় করলেও আমি গিলবো। আর সাথে যদি ইরফান খান থাকে, তাহলে কেমন হবে ভাবছি। আপনার রিভিউ নিয়ে কথা নেই, প্রশংসাও নেই। বাদ বাদ।

    • অলিভার

      ওহ! আমি সম্ভবত টক হ্যাংকস্‌ সাহেবকে নিয়ে ব্লগে কিছু লিখি নি ইতোপূর্বে, তাই এমন কথাটি বলার সুযোগ পেয়ে গেলেন 😂

      টম হ্যাংকস্‌ হচ্ছেন প্রিয় তারকাদের একজন। অবশ্য এখানেও অল্প করে বলেছি যে তিনি ‘কালজয়ী একজন অভিনেতা’। তিনি অভিনয় না করলে হয়তো “Forrest Gump”, “Cast Away”, “The Terminal”, “Saving Private Ryan”, “The Green Mile”, “Captain Phillips”, “Road to Perdition”, “Cloud Atlas”, “Big”, কিংবা “Sleepless in Seattle” নামের মুভি গুলো তাদের এই খ্যাতি অর্জন করতে পারত না।

      তবে আপনার সাথে একতম, এমন বাজে রিভিউ(!) পড়ে প্রিয় তারকার মুভি না দেখে থাকাটাই বরং বোকামী হবে। দ্রুত দেখে তারপর আপনার প্রতিক্রিয়া জানান। অপেক্ষায় রইলাম 🙂

  • মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)

    টম হ্যাংকস,মিল গিবসনস,উইল স্মিথ,নিকোলাজ কেইজ,ব্রাটপিট,রুসেল ক্রো, হ্যারিকসন,স্যামুয়েলস,ডি ক্যাপিরিউ এরা সবাই হলিউডের সেরাদের সেরা।তাদের ছবি মানেই একটি ভাল মানের গল্প সহ চিত্রায়ণ।এই ইনফার্নোটা দেখা হয়নি ভ্যান ডেমের ইনফার্নো দেখেছি।ভালই হলো দেখার আগে বাংলানুবাদটি পড়া হলো।ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টের জন্য।

    • অলিভার

      আহ্‌ এক টানে প্রায় সকল প্রিয় অভিনেতার নাম নিয়ে ফেললেন প্রথমেই। তবে একটু অনুযোগ রয়েছে। আপনি আরেকজন লিজেন্ডকে বাদ দিয়ে যাচ্ছেন। এই নাম গুলোর মাঝে তার নামটা তার কাজের জন্যেই থাকার অধিকার রাখে বলে মনে করি। আর ঐ অভিনেতা হলেন ‘ডেনজাল ওয়াশিংটন’। তিনিও দারুন শক্তিশালী অভিনেতা এবং পরিচালক।

      আপনি যেটা দেখেছেন সেটা আবার আমার দেখা হয়নি, তাই দুজনেরই স্কোর সমান সমান ধরে নেয়া যায় 😛

      অনুবাদটি পূর্বে পড়া থাকলে মুভিটি দেখার পর উপন্যাসের গল্পরূপ দেখতে না পাবার জন্যে আক্ষেপ কিছু মাত্রায় হলেও সৃষ্টি হবে।

    • অলিভার

      পিডিএফ প্রসঙ্গ যখন আসলোই তখন এই সুযোগে একটু বলে নেই, পিডিএফ পড়ায় অতিরিক্ত অভ্যস্ত হবার কারণে বইটির হার্ডকপি মালিকানায় থাকা সত্ত্বেও আমি এই উপন্যাসটি মোবাইলের স্ক্রিনেই পড়ে শেষ করেছিলাম :D)

      বই থেকে পড়ার এক অন্য ধরণের ভালোলাগা আছে এবং পজিটিভ সাইটও অনেক। কিন্তু সমস্যা হল পোর্টেবলিটি। মোবাইলটি সাথে থাকায় আমি যেখানে ইচ্ছে সেখানে বসে/শুয়ে/দাড়িয়ে বইটি পড়ার সুযোগ পেয়ে যাই। একবার কারও জন্যে লম্বা একটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল সিড়ির দোড়গোড়ায় বসে, আমি ঐ সময়ের মাঝে সেখানে বসেই ছোট ধরণের একটা উপন্যাসিকা পড়ে শেষ করেছিলাম :p এমন পরিস্থিতিতে বইয়ের হার্ডকপির তুলনায় সফটকপিই বেশি কাজে আসে।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ