ঈদ আনন্দ না বেদনা!

মনির হোসেন মমি ৩১ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ০৭:৩৬:২৬অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি, সমসাময়িক ৯ মন্তব্য

চারদিক থৈ থৈ পানি।এ বছর ২০১৭ সালের বন্যাটা ছিলো অস্বাভাবিক সঙ্গে অনবরত বৃষ্টি হওয়াতে পানি সয়লাব হয়ে গিয়েছিলো স্বয়ং দেশের রাজধানী ঢাকা ও চট্রগ্রামেও।শহরের অনেক এলাকেই যাতায়াতের মাধ্যম নৌকাকে ব্যাবহার করেছেন।অনেকেই এ সব বন্যা পীরিত মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন।অনেকে এখনো তাদের ত্রান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে আবার ঈদের পর এ সব বন্যাপীরিত মানুষের পাশে দাড়াবেন।এরই মাঝে বন্যাপীরিত মানুষের মানুষ জনেরা বিভিন্ন ভাবে একটু আশ্রয়ের পথে এগুচ্ছেন কেউ বা আশ্রীত।মানুষ প্রাকৃতিক দূর্যোগকে মোবাবেলায় যতটা সহজ ততটাই কঠিন বোবা জাত গরু ছাগলদের।ঠিক সেই মুহুর্তেই মুসলিম জাহানের দুটো সব চেয়ে বড় উৎসবে একটি ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদ।উত্তর বঙ্গের গরুগুলোকে ভাসিয়ে ভাসিয়ে আনছেন দালালরা।অনেকের গরু আশ্রয়ের অভাবে হয়তো মরে ভেসে উঠছে পানিতে।অনেকেই কোরবানির জন্য পশু গুলোকে মোটা তাজা করে আসছিলেন কিছু বাড়তি আয়ের জন্য;কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন মনে হয় ভেসে যাচ্ছে বানের পানিতে।

সিরাজগঞ্জ সদর,কাজিপুর, বেলকুচি,শাহজাদ পুর সহ জেলার নয়টি উপজেলার প্রায় ছয়টিতেই এখনো বন্যার পানি।কৃষক ও গবাদি পশুর মালিকদের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে বানের পানি।এই যে পশু হত্যার মহা ধুমধাম তাতে ভাবি আমরা কতটা পাষান!এমনিতেই এরা অসায় তার পর তাদের উপর এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সীমাহীন কষ্টের ভিতর ওদেরকে থাকতে হয় তার পর কয়েক দিনের মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে যারা বেচে থাকবে তাদের মধ্যে থেকে হয়তো অনেকে সামনে ঈদে কোরবান হবে।এক মাত্র ধর্মকে খুশি করতেই এ হত্যা বা কোরবানী।এ সব গরু গুলোর সাথে অনেকের আত্মার সম্পর্ক গড়ে উঠে।হয়তো অনেক গরু ছিলো যা কৃষকের বিক্রয় করার ইচ্ছে ছিলো না কিন্তু উপায় নেই বন্যায় নিজেদের আশ্রয়ের হুমকি যেখানে সেখানে গরুকে রাখবেন কোথায়।এমন পরিস্থিতিতে তাও বিক্রয় করে দিচ্ছেন কৃষক।

ফেবুকে এক বন্ধুর টাইম লাইনে এ সম্পর্কে একটি গল্প বা ঘটনার বর্ননা পড়ে অবাক হলাম। কোরবানী দিবেন এমন এক ব্যাক্তি একটি গরু কিনে মনের আনন্দে বাসায় নিয়ে গেলেন।সম্ভবত বাসায় যাবার ঠিক পরদিন গরু বিক্রেতা তার ছোট ছেলেকে নিয়ে খোজঁ নিতে নিতে ঐ গরু ক্রয়ওয়ালার বাড়ীতে গিয়ে হাজির হলেন।বাড়ীর ভিতরে অনেক হৈ চৈ করে ঢুকলেন।বাসার কর্তা যিনি গরু ক্রয় করেছিলেন তিনি লোকটির সামনে এসে দাড়ালেন।
-কি ব্যাপার আপনি কে?
-স্যার আমি গরুওয়ালা,যার কাছ থেকে আপনি গরুটা কিনেছিলেন।
-ও হ্যা তা কি খবর আপনি আমার বাড়ীতে ।
-গরুডারে আরেক বার দেখতে আইলাম।বড় আদরের গরু ছিলো।
-ঠিক আছে চলেন।
গরুটারে দেখে লোকটির সাথে আসা তার ছোট অবুঝ ছেলের চোখে জল টলটলে সে আবেগে কাদতে কাদতে গরুটির নিকট গেল।অপর দিকে বোবা জাত গরুও মানুষের আবেক বুঝে সেও তাদের দেখে হাম্বা হাম্বা করতে থাকে।গরুটির উপর হাত বুলিয়ে বুলিয়ে ছেলেটি তার বাবার নিকট আবদার করল।
-বাবা বাবা তুমি স্যার এর টাকা তুমি ফেরত দিয়ে দাও....
ছোট ছেলেটির কথা শুনে গরু ক্রয় কর্তা ঘাভরে গেলেন তা বিক্রেতা বুঝতে পেরে অভয় দিলেন।
-না স্যার আপনি চিন্তা কইরেন না আমি গরু নিতে আসি নাই দেখতে আইছিলাম তয় গরুরা যেনো কষ্ট না পায়।
গরু ক্রয় কর্তা অবাক হন পশু আর মানুষের এ আত্মার মিল যেনো পৃথিবীর মানবতার কথা কয়।গরু ক্রয় কর্তা ছোট ছেলেটির হাতে এক হাজার টাকার একটি নোট গুজে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।

মুসলিম জাহানের বড় উৎসব বছরের দুটি ঈদ।অথচ যাদের জন্য এ আনন্দ উৎসব বিশ্বে তারাই এখন অত্যাচারীত।বিশেষ করে মায়ানমারের আজকের রোহিঙ্গা সমস্যায় অসংখ্য মুসলিম নিধন হচ্ছেন নির্বিচারে যা বিশ্ব বাসী অবাক ও মানবতা আজ অন্ধকারে।এ অবস্থায় এ ঈদ কতটা আনন্দ হবে তা আপনাদের উপর ছেড়ে দেয়া হল।

 

 

 

 

 

 

 

 

"ঈদ যাত্রা হউক শুভ
ফিরতি হউক নিরাপদে"

 -{@ সবাইকে ঈদ শুভেচ্ছা -{@ 

0 Shares

৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ