সে আসে নিঃশব্দ পায়ে টলমল জলে,
ফারাওয়ের সমাধি স্তম্ভের মতো অতন্দ্র টহলে,
ওয়ার্ডের সমস্ত বিপত্নীক পিলার,
পাহারায় রেখেছিলো বুক ঝাপটানো মেয়েটাকে!
আক্রান্ত স্থলে বিদ্রোহী যুবক যেভাবে করে পণ,
আটকাতে চায় অবশ্যম্ভাবী আত্মসমর্পণ!
মেয়েটার শখ ছিলো একদিন উড়বে-
মেঘের সাথে বিকালের পাখির মতোন!
আজ চন্দ্রমাসের শেষদিন তার শরীরে লুপাস,
বিষময় প্রজাপতি দিয়েছে গালেতে ছাপ,
অক্সিজেনের গতি বাড়ছে ক্রমশ!
দুমদাম উড়ছে সাদা পর্দারা অসময়ে ঝড়ে,
দেবদূত এলো নাকি মধ্যরাতের ঘরে?
না! না! এই মাহেন্দ্রক্ষণে তারা আসবেনা!
দরোজার ফাঁক দিয়ে ঢুকেছে নিথর ওয়ার্ডে,
অলক্ষ্যে সবার চঞ্চলা কিশোরী এক!
নৃত্যপটীয়সীর মতো বেড গুলো নেচে নেচে,
ঘুরছে! মাঝে মাঝে খাচ্ছে ঘুরপাক!
সে আসে! প্রায়ই আসে! এভাবে লুকিয়ে,
একে ওকে ছুঁয়ে বলে- ‘এসো উড়ব আকাশে!’
মধ্যরাতে মেয়েটি আজ পারলোনা বেশিক্ষণ-
আটকাতে তার সর্বসংহারী ডাক!
রুপান্তরিত হলো তুলতুলে পক্ষীশাবকে,
নরম বলের মতো উষ্ণ পশমে!
তারপর কিছুটা উড়াউড়ি!
ব্যাস!
অমর কিশোরী খপ করে ধরে নিল মেয়েটিকে,
পুরে দিল খাঁচার ভিতর!
নিঃস্তব্ধতা ভেঙ্গে চিৎকারে ছুটল তন্দ্রা সবার,
মেয়েটির মা ডুকরে উঠল-
মারে! তুই চলে গেলি! ফিরবি না আর?
আর্তচিৎকার দিলো পরিচিত বাতাস তখন,
নিয়ে গেলো! নিয়ে গেলো সব পড়শি মরণ!
১০টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
কঠিন বাস্তবতা। কেমন করে নিয়ে যায় খাঁচার ভিতর! হায়রে মরণ!! সাবধানে থেকো ভালো থেকো।
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ দিদি। শুভকামনা।
আরজু মুক্তা
না, এই হঠাৎ চলে যাওয়া। সব কিছুই বিবর্ণ
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ। মৃত্যু মাত্রই বিবর্ণ।
সাবিনা ইয়াসমিন
মৃত্যুই আমাদের সবচেয়ে নির্মম নিকট প্রতিবেশী।
মর্মস্পর্শী লেখা।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ। শুভকামনা।
আলমগীর সরকার লিটন
খুব সুন্দর ভাবনা কবি দা
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ জানবেন। নিরাপদ থাকুন।
হালিমা আক্তার
সেই খাঁচা থেকে ফেরানোর ক্ষমতা কারো নেই।এ যে কঠিন থেকে কঠিনতর। শুভকামনা। ভালো থাকবেন।
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ ও শুভকামনা।