ইউরোপের দেশগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখবেন। তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর বয়স আমাদের দেশের এমপি-মন্ত্রীদের চেয়ে অনেকটা কম। আমি খুব ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম 'আমেরিকা, চিন, রাশিয়া এসব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যখন ব্রিফিং করে তখন তাদের কথাবার্তাগুলো একদম স্ট্রেটকাট! একদম ভেজাল মুক্ত হুংকার বলা যায়। অথচ তাদের তুলনায় আমাদের দেশের মন্ত্রীপরিষদ সদস্যদের বয়স অনেক বেশি। এবং তারা প্রবীণ নেতাকর্মী! তারপর, মাঝে মধ্যে আমাদের দেশের বয়স্ক এমপি-মন্ত্রীগণ এমন সব কথাবার্তা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করেন। তা শুনে মুখ ফুসকে বেড়িয়ে আসে 'বয়স বাড়লে মানুষের জ্ঞানবুদ্ধি পুরোপুরি লোভ পায়। আর যদি জ্ঞানবুদ্ধি ঠিকঠাক জায়গা মত থাকতো তাহলে হুট করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা আসতো না 'সারা দেশ থেকে অটোরিকশা, ইজি বাইকসহ, নসিমন তুলে দেয়া হবে।

মাথায় কতখানী পোকা জমলে রাষ্ট্রের সর্বোচ্ছ জায়গা থেকে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তা আমার একদমই অজানা। নিউজটা দেখে আমি একদম হতাশ! জাস্ট নিতে পারছিনা। জনগণের ভোটে সংসদে জায়গা পাওয়া ব্যক্তিরা আজ জনগণকেই বাঁশের বদলে রড দিতে চাচ্ছে! অসহায় গরীব মানুষগুলো কিস্তি থেকে টাকা ঋণ উঠিয়ে গাড়ি কিনে নিজেদের সংসার চালায়। অথচ আমাদের দেশের এমপি-মন্ত্রীরা আইন তৈরী করে দেশে অটোরিকশা, নসিমন, টমটম(ইজি বাইক) এসব থাকবেনা। এবার প্রশ্ন তাহলে এতগুলা গরীব মানুষের সংসার চালানোর দায়িত্বটা কে নিবে? কোনো এমপি -মন্ত্রী নিবে? নাকি দেশের সরকার নিবে? আমার তো মনে হয় আমাদের দেশের সরকার গরীবদের এলিয়েন মনে করে। তারা চাইতেছে দেশ থেকে এলিয়েন তাড়াতে হবে। তাই এমন হাস্যকর আইন তৈরী করতেছে। উনারা কী একবারও চিন্তা করলো না। এসবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে আমার দেশের গরীবরা কোথায় যাবে? তাদের সংসারের চাহিদা কে মিটাবে? অন্তত একবারও কী ভাবার প্রয়োজন ছিলনা। গরীব দুঃখি মেহনতি মানুষের কথা?

দেশটাকে নিজের মত করে চালান। যখন খুশি তখন নতুন নতুন আইন তৈরী করেন সেটাও ভালো কথা। কিন্তু নতুন কোনো কিছু তৈরী করার আগে। দেশের মানুষের কথা চিন্তা করার দরকার নেই কী? নাকি আপনারা যা মন চায় তাই করবেন। যার ভালো লাগবে সে দেশে থাকবে। যার ভালো লাগবেনা সে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাক! এটাইতো চাইতেছেন মেবি? তাহলে একটা কথা শোনে রাখা ভালো। দেশটা কোনো ব্যক্তির মালিকানা নয়! দেশ আমার আপনার সবার। দেশের প্রতিটা গরীব অসহায় মানুষগুলো আমাদের ভাই, বন্ধু আত্মীয়। তাদের নিয়ে কথা বলাটা আমাদের জন্য ফরজ। নতুন আইন কিংবা নিয়ম না করে। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করুন। তাদের ছেলে-মেয়েরা কিভাবে পেটপুড়ে দুমুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে সেটা চিন্তা করুন।

হুদাই গায়েবী আইন জারি করে। দেশের ভাবমূর্তী নষ্ট করবেন না। মানুষ অনেক সহ্য করতেছে। যখন সীমানা ক্রস করে ফেলবেন। তখন কোনো আইন দিয়েও অসহায় মানুষগুলোকে আটকাতে পারবেন না। অটোরিকশা, ইজিবাইক(টমটম), নসিমন এসব যারা আমদানী করে আপনাদের মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে দেশের অসহায় নিরহ বোকা মানুষদের গছিয়েছে। তাদের গিয়ে ধরুন। পারলে তাদের কম্পানি ব্যান করুন। দেশ থেকে এসব গাড়ির শো-রুম উঠিয়ে দিন। তা না করে গরীবদের চুল ছিড়তে আসছেন। তবে দুঃখের কথা হল গরীদের চুল এতটাও নরম না যে। আপনারা যখন টান দিবেন তখনই ছিঁড়ে যাবে। গরীবরা এতটাও অসহায় নয় যে। যখন আপনারা যা বলবেন তাই মেনে নিবে! ভুলে যাবেন না আপনি আপনার বাপের কিংবা দাদার ভোটে নির্বাচনে পাশ করেননি। অসহায় গরীব, জনগণের ভোটে পাশ করেছেন। সো যা করুন ভেবে চিন্তে করুন। হুটহাট আইন তৈরী করে মানুষের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করবেন না।।

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ