কেনো যে মেয়েগুলো অমন করে!
এতো নরম কাদামাটি হলে চলে? নরম কাদামাটি নিয়েই তো ওরা খেলতে মজা পায়! বিকৃত আনন্দ উপভোগ করে! সে কি তোমরা একালে এসেও বুঝবে না? হ্যাঁ, ঠিক আছে, ভালোবাসো মন খুলে। মন খুলে ভালোবাসতে না পারলে ভালোবাসার অমর্যাদা হয়। কিন্তু যাকে ভালোবাসছো তাকে বুঝার চেষ্টা করো, সে আদতে কী চায়? তোমাকে? নাকি তোমার শরীরটাকে? যদি স্রেফ শরীরকে ঘিরে ভালোবাসা জেগে উঠে তবে তা শরীরে মেলার পরেই কাটতে শুরু করবে। খুব চতুর যারা, তারা ছলনার (ছলনা নাকি মেয়েরাই করে?) আশ্রয় নেবে। বিভিন্ন ছলে তোমাকে এড়ানোর চেষ্টায় তৎপর থাকবে। কারণ সম্পর্ক চলমানকালে তোমার চিন্তাভাবনার জগত সম্বন্ধে সে পুরোপুরিই ওয়াকিবহাল থাকবে। ফলে তার ছলের অভাব হবে না।
আর যদি মন থেকেই তোমাকে ভালোবেসে থাকে তবে সর্বাবস্থায় সে তোমাকে অনুভব করবেই। কোন ছলের আশ্রয় তো দূর।

সেদিন দেখলাম, এক মেয়ে বিশাল এক লিস্ট দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছে, যদি সত্যিই ভালোবাসো তবে এগুলো করে দেখাও, মেপে দেখি তোমার ভালোবাসার ওজন কতোটুকু। হাসলাম, আর মনেমনে বলেছি, ঠিকই আছে রে মেয়ে। ওজন না বুঝে ভালোবাসা বিলাতে নেই। আর ওজন ঠিকঠাক মাপতে পারলে ধোঁকা খাওয়ার সম্ভবনাটুকু থাকেনা।

যে কারণে কথাগুলো বলতে হলো এবার সে ব্যাপারটিতেই আসি। ফেসবুকে থাকার সুবাদে অনেক মেয়ের সাথেই আমার কথাবার্তা হয়। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়। এর মধ্যে অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত বিষয়গুলোও শেয়ার করেন।
তেমনই একটি মেয়ে। যার সাথে আমার প্রায় ৪/৫ বছর আগে থেকেই লেখালেখির কারণে জানাশুনা। তো, হঠাৎই একসময় খেয়াল করলাম মেয়েটি আর ফেসবুকে আসছে না। খোঁজ নেয়ারও তেমন কেউ ছিলো না। যাকেই জিজ্ঞেস করি, বলে তাইতো! আমিও আর অতো মাথা ঘামাইনি। ভাবি, বিভিন্ন কারণই তো থাকতে পারে ফেসবুকে না আসার। ৮/১০ মাস পরে শুনি মেয়েটি মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। খুব খারাপ লাগে শুনে। বিস্তারিত জানার সুযোগ ছিলো না। এর বছর দুই আড়াই পরে একদিন তাকে ফেসবুকে দেখি। টুকটাক কথাবার্তা হতে থাকে এটাওটা নিয়ে। অনেকদিন পরে আসা হয়েছে, এগুলো বলি। আমার আবার সহজাত স্বভাব হচ্ছে, যতো কাছাকাছিই হই না কেনো কেউ নিজে থেকে কিছু না বললে কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে কখনোই নাক গলাই না। তো, এটাওটা নিয়ে আলাপ হতে হতেই একদিন সে তার জীবনে ঘটে যাওয়া দুঃসহ যন্ত্রণাকর পরিস্থিতির কথা আমার সাথে শেয়ার করে। আমিও তাকে যতোটুকু সম্ভব মানসিক সাপোর্ট দিয়ে ট্রমা কাটিয়ে শক্ত হয়ে উঠতে সহায়তা করি। আস্তে আস্তে সেও স্বাভাবিক হাসিখুশি জীবনে ফিরে আসে।

কিন্তু দুদিন যাবত খুব কষ্ট পাচ্ছি মেয়েটির কথা মনে করে। কিছুদিন আগে সে ইন্ডিয়া বেড়াতে গিয়ে কিছু সমস্যাজনিত কারণে ডাক্তার দেখিয়েছিলো। সেখানেই ধরা পড়ে ব্যাপারটি। তার ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছিলো। ধরা পড়লো যে, মেটাবোলিজম প্রডিউস (এক ধরনের হরমোন) হয় না বলে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। সেই দুঃসহ যন্ত্রণাকর পরিস্থিতির সময় সে একবার ঘুমের ঔষধ খেয়েছিলো অনেকগুলো আর স্টমাক থেকে সেগুলো সেসময় সব বের করতে পারেনি, কিছু যা রয়ে গিয়েছিলো, এটারই সাইড ইফেক্ট হিসেবে এই সমস্যা। এখন তার ওজন ১০০ এর কাছাকাছি, ভাবা যায়? অপারেশন করতে হবে দ্রুত এবং অনেকগুলো টাকাও লাগবে। তারপরও কতোটা ঠিক হবে কে জানে!
কেবলই ভাবছি, মনপ্রাণ উজাড় করে দিয়ে ভালোবেসে এ মেয়েটি কী অপরাধ করেছিলো যে জৈবিক ক্ষুধা নিবারণের পরেই তাকে এড়াতে শুরু করলো? হ্যাঁ, তাদের বিয়েও হয়েছিলো। কিন্তু খেলোয়াড় তো, পরবর্তী শিকারের সন্ধানেই ব্যস্ত।

তো বলি, এই যে মেয়েরা তোমরা প্রেমে পড়ে এতো ফানাফিল্লাহ হয়ে যাও, কার জন্য? যে ভালোবাসে তার জন্যই তো? কিন্তু যখন বুঝো, সে আর তোমার নেই, তখন ভালোবাসাটা থাকে কী করে তোমাদের বুঝে পাইনা! ভালবাসায় ভালবাসার লেনদেন হবে। ভালোবাসা না থাকলে ১৮০ ডিগ্রি এঙ্গেলে ঘুরে যাবে, এরকম কেনো হতে পারো না তোমরা? কেনো পারো না?
খেলোয়ারদের খেলার পুতুল নয়, প্রেমিকের ভালোবাসারজন হয়ে থাকো। যেখানে প্রেম নেই, সেখানে তুমিও নেই। ধোঁকাবাজদের খপ্পরে পড়ে নিজেকে শেষ করে দেয়ার মতো হাস্যকর কর্ম কেনো করবে বোকার মতো? যে ভালোবাসবে, তার জন্য সর্বোচ্চ স্বার্থ ত্যাগ করেও তৃপ্তি, কিন্তু যে ভালোবাসার ছল করে, বলি তার জন্য কিসের এতো টানাপোড়ন?

কথাগুলো এখানে আনলাম, বোকা মেয়েগুলো যেনো নিজেকে ভালোবাসতে শিখে। হ্যাঁ, কিছু ছেলেও আজকাল প্রতারিত হয়। তাদেরও বলি, প্রতারিত হলে নিজেকে কষ্ট দেয়া নয়, উঠে দাঁড়ানোটাই হচ্ছে নিজেকে মূল্যায়ন করা। থাকুক সে তার মতো করে।

কথা হচ্ছে, ভালোবাসলে ভালোবাসবে। তুমুল ভালোবাসবে। কিন্তু মেকি ভালোবাসা টের পেলে সর্বাগ্রে নিজেকে ভালোবাসবে।

0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ