যাকাত সম্পর্কে আমার মত গুনাহগার মানুষ (আল্লাহ্ আমার গুনাহ মাফ করুন, আমীন) বেশি না বলাটাই যুক্তিযুক্ত কারন এই বিষয়ে আমি খুব কম বুঝি বিধায় আমি বিশিষ্ট আলেমদের মতামত নিয়েই করতে আগ্রহী কিন্তু কাকে দেবো কেন দেবো, কিভাবে দেবো তার একটি আমার নিজস্ব মতামত আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই আর এই মতামতের সাথে কারো যদি কোন দ্বিমত অথবা অন্য মতামত থাকে প্লিজ কমেন্টে আলোচনা করবেন যাতে আমার ভুল থাকলে শুধরাতে পারি।
প্রতি বছর আমরা যাকাত দিই আমাদের সামর্থ্য মতো আর যাদের কোটি কোটি টাকা আছে তারাতো যেন সো অফ করার জন্য প্রতিযোগিতা করতে উঠে পড়ে লাগেন আর এই সো অফের বলি হোন অনেক নিরীহ প্রাণ কিন্তু আমরা কি আমাদের এই কালচার কি চেইঞ্জ করতে পারিনা? চাইলেই পারি হয়ত, আমরা প্রতি বৎসর লক্ষ লক্ষ টাকা যাকাত হিসাবে দান করি আর এই যাকাত হিসাবে আমরা কেউ কেউ টাকা, শাড়ী, লুঙ্গি ইত্যাদি প্রদান করি যা গ্রহিতাদের তেমন কোন কাজেই আসেনা কারন অল্প টাকা অল্প সময়েই শেষ হয়ে যায় আর তদ্রুপ কাপড় অল্প সময়ে নষ্ট হয়ে যায় অথবা গ্রহিতা একি কাপড় দোকানে অল্প পয়সায় বিক্রি করে দেয় কিন্তু একটু খেয়াল করলেই আমারা দেখতে পাবো আমাদের আত্মীয়, অনাত্মীয় অনেকেই লজ্জায় যাকাত চাইতে পারেন না আমাদের কাছ থেকে আর তারা বেশ কষ্টেই থাকেন আজীবন আর আমরা চাইলেই উনাদের বেশ কাজে লাগতে পারি।
কেমন কাজে লাগতে পারি তা বলছি এখন, আমাদের কাছের দরিদ্র যারা আছেন তাদেরকে আমরা এই যাকাত দিয়েই কিছু একটা করে দিইনা কেন বলবেন, হাজার হাজার মানুষকে না দিয়ে আমরা এমন একজনকে যদি সেই অর্থ দিয়ে কোন ব্যবসা খুলে দেওয়া যায় তাতে সে নিজেও স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে, তার সংসারে ভাত, কাপড়ের সংস্থান হবে, সে দারিদ্রমুক্ত হবে আর পরবর্তীতে সে নিজেই যাকাত দেওয়ার উপযুক্ত হবে আর প্রতি বছর যদি হিসেব করেন আমরা যারা যাকাত দিই তাদের সংখ্যা ধরুন ১৬ কোটি জনসংখ্যার ৫%ও ধরি তাহলে ৮ লক্ষ মানুষকে আমরা স্বাবলম্বী করতে পারি আর প্রতি বছর যদি আমরা অনুরুপ কর্ম করি তাহলে দেশে কি আর দরিদ্র থাকে?
এখন কথা আসতে পারে যারা অল্প যাকাত দেন তাদের টাকাই কি ব্যবসা ধরিয়ে বা করে দিতে পারি, ভালো প্রশ্ন। আমাদের যাদের অল্প যাকাত আসে তারা চাইলে তাদের আত্মীয় বা পরিচিত জনদের সন্তান বা যারা কাজ করতে পারবে তাদের আমরা কোন হাতের কাজ শেখার ব্যবস্থা করে দিতে পারি যেন সে কোন এক বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে, যেমন লেদ মেশিনের কাজ, মেশিনারিজের কাজ, হস্তশিল্প, ইলেক্ট্রিশিয়ান, ইলেক্ট্রনিকস, নির্মান শিল্প ইত্যাদির কাজ শেখার ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় যাতে ভবিষ্যতে তারা নিজ কাজ নিজে করে খেতে পারে। আর যারা আরেকটু বেশি সামর্থ্যবান তারা চাইলে তাদের যাকাত দিয়ে ছোটখাট ব্যবসা খুলে দিতে পারি যেমন ছোট খাট মুদির দোকান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর অথবা যেকোন ধরণের ছোট ব্যবসা যাতে গ্রহিতা ভবিষ্যতে যেন ভালো কিছু করে খেতে পারে আর যারা কোটিপতি তারা তো চাইলেই তাদের কাছের মানুষদের ভালো কোন ব্যবসা করে দিতে পারেন, কি ঠিক বলেছি কি আমি, আপনারা কি বলেন?
১৯টি মন্তব্য
আবু খায়ের আনিছ
যাকাত এর বিধিবিদান নিয়ে বিশেষজ্ঞ আলেম এর সাথে কথা বলাই শ্রেয়।
তবু যতটুকু জানি তা বলতে পারি,
যাকাত আদায় করা ইসলামি রাষ্টের কতর্ব্য এবং তা সুষ্ঠ ভাবে বন্টন করাও তাদের দ্বায়ীত্ব।
যাকাত এর অর্থে কাপড় বা এই ধরণের ব্যবহারর্য্য বস্তু দিলে যাকাত আদায় হয় না, আবার জেনেশুনে সুদখোর বা নিষেদ্ধ কাজে লিপ্ত এমন কাউকে দিলেও যাকাত আদায় হয় না।
আপনার কথার সাথে সহতম, যাকাত এর অর্থ অনেকগুলো ভাগ না করে একজন বা কয়েকজনকে এমন ভাবে যাকাত দেওয়া প্রয়োজন যাতে পরবর্তীতে সেই লোকের অন্যকারো কাছে যাকাত গ্রহণ করতে হয় না। এই বিষয়ে হাদিসও আছে, এই মুহুর্তে রেফারেন্সটা মনে পড়ছে না তাই হাদিসটি উল্লেখ্য করলাম না, তবে সহি বোখারী দেখতে পারেন।
ঠিক তেমনি ফেতরার টাকা নিয়েও এমন করা হয়, দুই বা দশ টাকা করে অনেককে দেওয়া হয়। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে একজন বা কয়েকজনেক দেওয়া যাতে অন্তত ঈদের দিনটি ভালোভাবে কাটে। আর ফেতরার টাকা ঈদের নামাজের আগেই আদায় করতে হয়।
ধন্যবাদ, গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্য আর সহমতের জন্য।
মোঃ মজিবর রহমান
খুব ভাল ইঞ্জা ভাই। সহমত। এভাবে যদি সবাই অর্থাৎ দেশের বিত্তবানরা যদি প্রতি বছর জাকাত ঠিক মত দেয় তাহলে ২/৩ বছর পর জাকাত নেওয়ার ব্যাক্তি খুজে পাওয়া যাবেনা আমাদের দেশে। -{@
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই সহমতের জন্য।
লীলাবতী
খুবই ভাল একটি পোষ্ট ইঞ্জি ভাইয়া। সহমত আপনার লেখার সাথে। নিয়মিত সোনেলায় লিখছেন দেখে ভাল লাগছে।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ আপু সহমত পোষণের জন্য, আমি চেষ্টা করছি সোনেলায় নিয়মিত থাকতে কিন্তু যার ডরে আইলাম হেতেই তো দেহি অমাবস্যার চাঁদ তাই জিগাইতে মুঞ্চাই আফনে কবে নিয়মিত হইবেন? \|/
লীলাবতী
আমিও নিয়মিত গতকাল হতে। একটি পোষ্টও দেয়ার ইচ্ছে আছে। অপেক্ষা করুন, সাথে থাকুন 🙂
ইঞ্জা
আলহামদুলিল্লাহ্
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই ভাবার মত বিষয় এটি।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই সহমতের জন্য। 🙂
মেহেরী তাজ
ভাইয়া জাকাতের মূল উদ্দেশ্যই সম্ভবত ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করা! তাতে আপনার মতামতের সাথে আমি এক মত…..
ইঞ্জা
সহমতের জন্য ধন্যবাদ
ইঞ্জা
সহমতের জন্য অফুরন্ত ধন্যবাদ পিচ্চি আপু। 🙂
জিসান শা ইকরাম
ভাল লিখেছেন, সহমত।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়, ভালো থাকবেন। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনার লেখার সাথে সহমত।
ইঞ্জা
তাহলে কি এই বছরই কি শুরু করা যায় আপু?
নীলাঞ্জনা নীলা
অবশ্যই।
ইঞ্জা
তাহলে কি এই বছরই কি শুরু করা যায় আপু?