একটা সময় ভাবা হতো প্রেম ভালোবাসা মানুষের একার সম্পত্তি। কিন্তু ধারণাটা দিন দিন বদলে যাচ্ছে। বরং দেখা যাচ্ছে অ্যানিম্যাল প্লানেটে কীটপতঙ্গ বা পাখিদের প্রেমের উপর করা ডকুমেন্টরি অনেক সময় টিভিতে ভালোবাসা দিবসের রাতে দেখানো পুতুপুতু প্রেমের নাটকের চেয়ে ঢের বেশি উপভোগ্য।
এই যেমন, প্রেমের ক্ষেত্রে স্যাক্রিফাইস করার যে ব্যাপারটা আছে তার কথা যদি বলি, সেটা মানুষ বা অন্য যে কারো চেয়ে হাজারগুন বেশী করতে হয় আর একটা প্রাণীকে, সেটা হলো মাকড়শা।
চিন্তা করে দেখুন – আমরা যারা মানুষ, প্রপোজ করার সময় আমরা কি চিন্তা করি? ইতিবাচক সাড়া পেলে তো কথাই নাই, দুই কেজি মিষ্টি কিনে সোজা কাজী অফিস। আর নেতিবাচক হলে দুই চারটা কথা হজম করতে হতে পারে, অথবা খুব বেশি হলে একটা চড় আর সাথে দহনজ্বালা। এ আর এমন কি! অন্যদিকে একটা পুরুষ মাকড়শাকে প্রেম নিবেদন করতে যেতে হয় নারী মাকড়শার কাছে, যে কিনা ক্যানিবাল । মানে ক্ষুধার সময় যারা জাতিগোত্র বাছবিচার করে না।
একটা গবেষনায় দেখা গেছে প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে মাত্র ২০% পুরুষ মাকড়শা শেষ পর্যন্ত বেঁচে ফেরত আসতে পারে, বাকী ৮০% মাকড়শা বেঘোরে প্রাণটা হারায়।
অর্থাৎ, হৃদয়ের কথা বলতে গিয়ে রীতিমতো প্রান উৎসর্গ করতে হয় বেচারাদের।
কিন্তু কেন এই নিষ্ঠুরতা? নারী মাকড়শার দৃষ্টিতে যদি দেখি, তারা আসলে রীতিমতো কনে দেখার মতো করে সঙ্গী নির্বাচন করে। আগের দিনে কনে দেখতে আসলে পাত্রপক্ষ যেরকম কনের সাথে কথা বলে এমনকী হাঁটিয়ে পর্যন্ত দেখে নিতো মেয়ের কোনো খুঁত আছে কিনা, ঠিক সেরকম নারী মাকড়শাও প্রেম নিবেদনকারী পুরুষটিকে দেখে শুনে তার হাবভাব বিচার করে, তারপর সায় দেয়।
আর দেখে শুনে পাত্রকে যদি সুবিধার মনে না হয় তাহলে তাকে দিয়েই লাঞ্চটা সেরে ফেলে নারী মাকড়শাটা।
রংঢং করে যখন প্রেম নিবেদনকারী পুরুষটিকে কাছে আসতে আহবান করে, তখন সে তো খুশীতে রীতিমতো আটখানা হয়ে এগিয়ে আসতে থাকে। যেই নাগালের মধ্যে চলে আসে অমনি খপ! কাহিনী খতম!
তবে যারা পুরুষদের প্রতি নারী মাকড়শাদের এই নির্দয় আচরণে ক্ষুদ্ধ, তাদের জানিয়ে রাখি, মাকড়শাদের মধ্যে ক্যানিবালিজম এর চর্চা শুধু পুরুষদের উপরেই হয় তা না। এক প্রজাতির মাকড়শা আছে, যারা ডিম ফুটে বের হওয়ার পর প্রথম খাবার হিসেবে মা মাকড়শাকে ভক্ষণ করে।
যাহোক, ভাগ্য ভালো বলতে হবে, পুরুষ মাকড়শার এই করুণ পরিনতি চোখে পড়েছে বেশ কিছু সহৃদয় গবেষকের। তারা এই ব্যপারে রীতিমতো গবেষণা করে বের করেছেন বেশ কিছু সূত্র।
এই যেমন, যেসব পুরুষ খালি হাতে সঙ্গীর কাছে যায়, তাদের চেয়ে যারা কিছু একটা উপহার সাথে করে নিয়ে যায় তারা কম প্রত্যাখ্যাত হয়।
উপহার বলতে পোকামাকড় টাইপ কিছু আরকি! তাও আবার খোলা অবস্থায় নিয়ে গেলে হবে না! রীতিমতো র্যাপিং পেপার দিয়ে মুড়িয়ে..মানে মাকড়শার জাল দিয়ে জড়িয়ে নিয়ে যেতে হবে!
চকচকে সাদা রঙ্গের জাল দিয়ে মোড়ানো পোকাই সবচেয়ে লোভনীয় গিফট। তবে এই চকচকে সাদা জালের আবার কাহিনী আছে। জাল বুনতে ভুল হলে অথবা প্রেম নিবেদনের সময়টা অনুকূলে না থাকলে প্রানের ভয়টা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
উপরের সূত্রগুলোর সাথে মানুষের প্রেমের সূত্র একদম খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে না? ঠিক যেনো দজ্জাল টাইপ কোনো মেয়েকে প্রেম নিবেদন করতে যাচ্ছে কোনো গোবেচারা ছেলে।
কে জানতো মানুষের ডেটিং টিপস মাকড়শাদের জন্যেও এতো কঠিনভাবে প্রযোজ্য!
৭টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
” আর দেখে শুনে পাত্রকে যদি সুবিধার মনে না হয় তাহলে তাকে দিয়েই লাঞ্চটা সেরে ফেলে নারী মাকড়শাটা। ” — বাপরে বাপ , এতো দেখছি ভয়ানক অবস্থা । প্রেমিক পুরুষ মাকড়সাদের বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করি ।
পরপর দুটো পোস্ট দিলেন , যে সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না বলতে গেলে ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন পোস্ট দেয়ার জন্য ।
ফাঈলাসূফ
জি ভাই, চিন্তা করেন মনুষ্য প্রজাতির নারীরা যদি ক্যানিবাল বা ভ্যাম্পায়ার টাইপ কিছু হতো, কি অবস্থা হতো!! 😮
প্রহেলিকা
অসাধারণ বলেছেন ভাই। দারুন পোষ্ট তবে সতর্ক হয়ে গেলাম অনেক। আপনার পোষ্টটির জন্য রোস্ট খাওয়াতে ইচ্ছা করছে কিন্তু। …………..
ফাঈলাসূফ
অনেক ধন্যবাদ ভাই, সতর্কতাই সর্বোত্তম পন্থা! 😀 আর রোস্টটা পেন্ডিং থাকলো কিন্তু! \|/
শুন্য শুন্যালয়
আরে অদ্ভুত পোস্ট !!!! লাইক লাইক, জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশন কিন্তু তুললাম না..এমন একটা পোস্টের জন্য আপনার সব দোষ মাপ.
মাকড়সার ডকুমেন্টারী এখন দেখতেই হবে. মাকড়শা র্্যাপিং পেপার এ মুড়িয়ে গিফট নিয়ে যাচ্ছে এ দৃশ্য দেখতেই হবে ..
অনেক ধন্যবাদ ভাই. -{@
লীলাবতী
আমরা অনেক ভালো 😛 অফার করলে তাঁকে মেরে ফেলে খাই না । কত ভালো লেগেছে আপনার পোষ্ট বুঝাতে পারবো না । -{@
খসড়া
:Cool: :Be-Happy: :Cool: