আমি আকাশ, মনটা আজ কেন যেন ভালো না বুঝতে পারছিনা কেন, আজ আমার সব আছে, বাড়ী, গাড়ী সব সাজিয়েছি আমার মনের মতই করে যা আগে তেমন ছিলোনা মা বাবা ভাই বোন সবাই দেশে থাকে আর আমি একাই থাকি এই পাহাড়ে, বাড়ীতেই বড় ৬ তলা বাড়ী করে দিয়েছি আর সবাই সেখানেই থাকে। একা থাকি বললে ভুল হবে, ঘরের কেয়ার টেকার, মালি, কুক, পিয়ন সবাই থাকে এইখানে তবুও আমি একা।
আজ বেশ ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে, ঘরের সবাই বাইরের স্টাফ ঘরে ঘুমাতে গেছে আর এই ঘরে আমি একা, ঘুম আসছেনা বলেই নিচে নেমে এলাম, ড্রয়িং রুমে এসে মিউজিক সিস্টেমটা চালু করে দিলাম, বিটোফনের পিয়ানোর করুণ সূর বাজছে,আমি সোফাতে গাটা এলিয়ে দিলাম, তন্দ্রার মত লেগে এসেছিল হঠাৎ দরজায় করাঘাত এমন জোরে শব্দ করছে যেন দরজা ভেঙ্গে ফেলবে, "এতো রাতে আবার কে এলো" বলে উঠে আসলাম, দরজা খুলেই আমি অবাক এবং যেন বজ্রাহত হলাম সে ভাবে বাইরের মানুষটার দিকে তাকিয়ে রইলাম আর মানুষটা ভয়ার্ত চোখে কাকুতি মিনতি করছে কিন্তু আমি যেন কিছুই শুনছিনা আর মনে পরে গেল সেইসব দিনের কথা, ইউনিভারসিটিতে পড়তাম এক সাথে, জুলি ছিলো আমাদের ২ সেমিস্টার ছোট কিন্তু ওরা কয়েকজন বান্ধবীর ছিলো আমাদের সাথে আড্ডা আর আমি ভিতরে ভিতরে জুলিকে প্রচন্ড ভালোবাসতাম তা কখনো বলা হয়নি কিন্তু জুলি বুঝতে পারতো আমার ওর প্রতি টান আর আবেগের বিষয়টা কিন্তু হঠাৎ একদিন এসে জানালো ওর পুরো পরিবার চলে যাচ্ছে কানাডা আর ওর বাকি পড়ালেখা এখন থেকে সেখানেই হবে, যাওয়ার সময় আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক্ষন কাঁদলো, বলল সে আবার ফিরে আসবে আমাকে বিয়ে করবে কিন্তু ঘটনাচক্রে ওর সাথে যোগাযোগ বন্ধ আজ প্রায় অনেক বছর আর সেই মেয়েটি কিনা আমার সামনে দাঁড়িয়ে, আমি সম্বিৎ ফিরে পেলাম কিছু মূহুর্ত পর, বললাম তুমি এইখানে, সে বলছে "প্লিজ রক্ষা করুন আমাকে, প্লিজ রক্ষা করুন", আমি তাড়াতাড়ি তাকে ঘরের ভিতর আসতে বললাম, সে ঢুকার পর দরজা লাগিয়ে দিলাম, খেয়াল করলাম সে থরথর করে কাঁপছে আর এইদিক সেদিক দেখছে, বললাম "বসো তুমি, ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এইখানে কেউ আসবেনা" বলেই ইন্টারকমে গার্ডরুমে কল দিলাম আর তাদের বললাম যেন ভালো করে লক্ষ্য করে কেউ যেন ভিতরে আসতে না পারে না জানিয়ে।
আমি কিচেনে গিয়ে কিছু ফ্রুটস, দুইটা স্যান্ডউইচ আর দুই কাপ কফি নিয়ে এলাম, সামনের টেবিলে সেগুলো রেখে বললাম " কিছু খাও আগে" এতক্ষনে ও কিছুটা দাত্বস্থ হয়েছে, আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে, আমি বললাম "কি দেখছো, খাও" সে বললো তুমি মানে আপনি কি আকাশ? আমি হেসে বললাম এতক্ষণে চিনেছো, ও আর দেরী করলোনা সাথে সাথে সোফা থেকে লাফিয়ে উঠলো আর আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো আর আবার কান্না শুরু হোল তার, "কই ছিলে তুমি, তোমাকে কত খুঁজেছি তোমাকে" এইসব বলছে, আমি ওকে ধরে সোফায় বসিয়ে দিলাম, বললাম "তুমি কফিটা নাও আর সিঁড়ি ধরে উপরে যাও, সেখানের ৩য় রুমে আমার মার কিছু কাপড় আছে তাড়াতাড়ি চেইঞ্জ করে নাও না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে, ভিজে তো চুপসে গেছো", ও নিজের দিকে তাকালো তারপর জিজ্ঞেস করলো " কেউ আসবে নাতো"? আমি বললাম "না আসবেনা, তুমি এখানে নিশ্চিত থাকতে পারো", ও তখন উঠে কফির কাপটা হাতে নিয়ে সিঁড়ির দিকে হেঁটে গেল আর আমি মিউজিক সিস্টেমটা বন্ধ করে টিভিটা অন করে দিলাম আর ভাবছি জুলি এতো রাতে এইখানে কেন আর কেন তার এই অবস্থা?
চলবে.........
১৬টি মন্তব্য
ইকবাল কবীর
শুরুটা ভালো লেগেছে। চলুক, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ইনজা
আপ্লুত হলাম, পাশে থাকবেন।
ধন্যবাদ। 🙂
মৌনতা রিতু
চলুক। কফিটা গরমই থাকুক।
ইনজা
ধন্যবাদ, কফি গরম রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে দেখছি, ধন্যবাদ আপনাকে অবিরত। 🙂
আবু খায়ের আনিছ
কফি ঠান্ডা হওয়ার আগেই পরের পর্ব চাই।
কিছু মনে করবেন না, মাঝের দুয়েকটা লাইনে কিছু কথার মিল পাচ্ছিলাম না। একটু দেখবেন।
ধন্যবাদ।
ইনজা
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য, প্লিজ একটু বলবেন কি কোন লাইন দুটিতে গরমিল পেয়েছেন তাহলে আমি দেখে নেবো, আবারো ধন্যবাদ। 🙂
আবু খায়ের আনিছ
”ইউনিভারসিটিতে পড়তাম এক সাথে, জুলি ছিলো আমাদের ২ সেমিস্টার ছোট কিন্তু ওরা কয়েকজন বান্ধবীরর ছিলো আমাদের সাথে আড্ডা আর জুলিকে প্রচন্ড ভালোবাসতাম আমি কখনো বলা হয়নি কিন্তু জুলি বুঝতে পারতো আমার ওর প্রতি টান আর আবেগের বিষয়টা কিন্তু”
ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম এক সাথে, জুলি ছিলো আমাদের ২ সেমিষ্টার ছোট কিন্তু ছোট হলেও ওদের কয়েকজন বান্ধবীর ছিলো আমারদের সাথে আড্ডা (বা এভাবেও লিখা যায়, ওরা কয়েকজন বান্ধবী মিলে আমাদের সাথে আড্ডা দিত)। জুলিকে প্রচণ্ড ভালোবাসতাম আমি যা কখনোই বলা হয়নি কিন্তু জুলি বুঝতে পারতো তার প্রতি আমার টান আর আবেগ এর বিষয়টা।
ধন্যবাদ ভাইয়া, আমি সাধারণ পাঠক মাত্র, তাই আমার কাছে মনে হয়েছে লাইনগুলো এমন হলে ভালো হত। ঠিক গড়মিল নয়, আপনার দেওয়া লাইনগুলো বুঝতে একটু সময় দিতে হয়।
ইনজা
অজস্র ধন্যবাদ ভাই, আসলে আমি এই প্রথম গল্প লিখছি আর কথার মাঝেই খেই হারিয়ে ফেলছি তা আমি বুঝতে পারছি, প্লিজ আমার ভুল গুলোকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। 🙂
জিসান শা ইকরাম
হুম রহস্যই বটে, জুলি এত রাতে আসলো কোথা হতে!!
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
ইনজা
মনে হচ্ছে আকাশের কাছে জুলি আকাশ থেকেই পড়েছে :p
ধন্যবাদ ভাইজান আর শুভকামনা। 🙂
ব্লগার সজীব
পরবর্তী পর্বে জানা যাবে আসল কাহিনী। ভাইয়া বাক্য গুলো একটু ছোট করা যায়না?
ইনজা
ভাই সত্য কথা হোল গল্পে আমি ছিচকে চোরের পর্যায়ে আছি আর ডাকাত হতে তা ঢেড় সময় বাকি (যেমন কলা গাছ কাটতে কাটতে ডাকাত হয়), মাত্র ২য় গল্প লেখা শুরু করলাম ভাই অনেক ভুল ভ্রান্তি হবে যা আপনারা ক্ষমা সুন্দির চোখে দেখবেন আশা করি।
ধন্যবাদ নিরন্তর। 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
স্মৃতিকে টেনে বের করে আনা একান্ত অনুভুতিগুলো চমৎকার। -{@ পরের পর্বের অপেক্ষায়।
ইনজা
ধন্যবাদ ভাই, আপনাদের আমার গল্পের পাঠক হিসাবে পেয়ে নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
লিখুন। ধারাবাহিকতায় ধারাবাহিকভাবেই আছি।
ইনজা
নিরন্তর ধন্যবাদ আপু, আনন্দিত হলাম। 🙂