তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্হান্তরে অপজিট পার্টির আন্দোলনে  জ্বলছে গাড়ী পুড়ছে বাড়ী দোকান পাট,উপড়ে ফেলছে রেল লাইন,অনিয়ন্ত্রিত আন্দোলনে জনতা বন্দী ঘরে ঘরে,অফিস আছে আছে ব্যাবসা বানিজ্য যেতে ভয় কখন যে উড়ন্ত হাত বোমা কিংবা পেট্রোল বোমায় প্রানটা চলে যায়।প্রতি পাচঁ বছর অন্তর অন্তর রাজনৈতিক ক্ষমতা বদলের ভয়ংকর শেষ দৃশ্যটি ঘুড়ে ফিরেই আসে এর কোন ব্যাতিক্রম নেই।অসংখ্য সাধারন মানুষের লাশের উপর ভর করে আমাদের দেশের নেতারা ক্ষমতার মসনদে বসেন, কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই ,যেন এ দেশের সাধারন জনতা জম্মেছেই রক্ত দিতে আর ওরা যারা ক্ষমতাবান তারা কেবল স্বপ্নের কেদারায় বসে নাকে শরষে তৈল মত্তন করে ঠেংয়ের উপর ঠেং ঝুলিয়ে হুকুম জারি করবেন বরই আফসোস যদি প্রশ্ন করি...বোমার আঘাতে মরেন কারা?জনগণ,গাড়ী ঘোড়া জ্বলছে কাদের?জনতার,যারা মদনদে বসেন তাদের বেতন ভাতার উৎস কোথায়?সাধারন জনগণের টাকায়,দেশের সবচেয়ে ফাকি বাজ কর্মচারী কারা?সাংসদরা কারন তাহারা পাচ বছরে গড়ে মাত্র বছর দুয়েক কোটি কোটি টাকায় তৈরীকৃত সংসদে গরীবের কথা বলতে গিয়ে সতীন সতীনের যুদ্ধ করেন। জ্বালাও পোড়াও এ দেশের ভাগ্যের গোয়ায় বাশ জনগণের শুধু হা হুতাস।

দেশের সর্বত্রই চলছে অসহযোগ সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন।সূর্য্য শাহবাগ মোড়ে ফুলের দোকানের কাছে যেতেই দেখা হয় পুরাতন এক বন্ধুর সাথে তার নাম অভি।ভার্সিটিতে এক সাথেই অনার্স পাশ করে বেরিয়েছিল।মাঝ খানে বেশ কয়েক বছর হুট করেই দেখা নেই,বন্ধুটিকে আজ ফুল দোকানে দেখে প্রথমে সন্দেহ করল এই কি তার ভার্সিটি পড়ুয়া বন্ধু!ইতস্তঃ হয়ে প্রশ্ন করেন।

-হেলো এক্সিউস মি,

-জি,আমাকে বলছ?

-হ্যা আপনাকেই,আপনি কি অভি?

-তোমার কি মনে হয়।

-আমারতো মনে হয় আমি ঠিক ধরেছি।

-তাহলেতো ঠিকই আছে,আমি যে তোমাকে তুমি তুমি করে বলছি তাও কি বুঝনি।

-ওরে সালা তুমিতো দেখছি সেই আগের মতই আছো।

-তুমিওতো তাই,শুধু বয়স আর শরীরলটা চেঞ্জ।

-তা কেমন আছো।এত দিন কোথায় ছিলে?

-ভালোই ছিলাম... এখন আছি ঝামেলায়।তুইতো জানিস দেশের বাড়ীতে বাবা এক জন নির্বাচীত জন প্রতিনিধি।

-কি ঝামেলা।নির্বাচন নিয়ে এলাকায় কোন্দল আর বিরোধীদলের আন্দোলন।এলকায় থাকা মুসকিল তাইতো ফিরে এলাম আবার এই চেনা ঢাকা শহরে।

-হুম,ভালই হলো এবার মজা করে আড্ডা হবে।

-নারে আড্ডায় বেশী সময় দিতে পারব না।আব্বার কিছু নিতীর সাথে মিলতে পরছিলাম না তাই এক প্রকার রাগ করেই চলে এসেছি।এখানে একটি টিভি চ্যানেলে গ্রাফিক্স ডিজাইনে চাকুরী হয়েছে।প্রায় মাস খানেক হলো চাকুরী করছি।

-বিয়ে করিস নাই।

-নাহ,সময় কই।

-চল,আজ মধু দার কেন্টিনে যাবো কত দিন হয় যাই না সেখানে অনেক পরিচিত জন হয়তো হারিয়ে গেছে।

দু'বন্ধু কাধে হাত রেখে মধু দার কেন্টিনের দিকে হাটছে।

-তার পর... সমর কই আছে জানিস।

-শুনেছিলাম এই ঢাকা শহরেই নাকি সে আছে।ভাল একটা চাকরিও করে।

-খালাম্মা কেমন আছে?

-ভালো।

-তামান্না!

-তুই কি করে জানলি?

-বারে ওর সাথে তোর ভার্সিটিতে থাকতেইতো সম্পর্ক হয় তুই ভুলে গেলি।

-কি জানি এখন প্রেম ভালবাসায় আর আগের মতন ফিলিংস হয় না,

-তুই এখন কি করছিস।

-বাপের খেয়ে মোশ তাড়ানো....সাংবাদিকতা একটি পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টটার।

-ভালই তো।

-ভালো না ছাই।আমি যা লিখি তা সম্পাদকের মন মতন না হলে কাটসিট করে প্রকাশ করে।

-অবশেষে বি এন পি তো কেয়ার টেকার সরকার বানালো নিজের লোক প্রেসিডেন্ট ইয়াজ উদ্দিনকে।আমার মনে হয় না বিরোধী পক্ষ তা মেনে নেবেন।

চতুর্থ বারের মতন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় ২০০৬ সালে। প্রথমে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। নিয়োগ দেওয়া উপদেষ্ঠাদের মধ্যে চার জন একমাসের উর্ধে কাজ করার পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ সাথে মতনৈক্যের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন। তারা হলেন ড. আকবর আলি খান, লে.জে. হাসান মশহুদ চৌধুরী, সি. এম. শফি সামী ও সুলতানা কামাল চক্রবর্তি। পরবর্তিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ নতুন চার উপদেষ্ঠার নিয়োগ দেন। পরবর্তিতে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ইয়াজউদ্দিন আহমেদ আরো চার জন নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দেন। তারা ছিলেন, বেসরকারী সংস্থা আশার প্রধান সফিকুল হক চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মইনউদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল রুহুল আমিন চৌধুরী ও ড. শোয়েব আহমেদ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হয় জানুয়ারি ২২২০০৭

-দেখা যাক ভবিষৎ কি বলে।

মধুর কেন্টিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রান কেন্দ্র। প্রয়াত মধুসূদন দে'র স্মৃতি স্মরণে স্থাপিত একটি বিখ্যাত রেস্তোরাঁ। ১৩৭৯ বঙ্গাব্দের ২০শে বৈশাখ ক্যান্টিনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট ভবনের সামনে অবস্থিত। '"মধুর ক্যান্টিন"' নামেই সবার কাছে পরিচিত। রাজনীতি, সংস্কৃতি চর্চা এবং আড্ডার জন্য মধুর ক্যান্টিনের আলাদা খ্যাতি রয়েছে। ক্যান্টিনটির সামনেই মধু’র একটি ভাস্কর্য রয়েছে তার পাশে।

জানা মতে ক্যান্টিন ছিল বাগানবাড়ির নাচঘর এবং অনেকের মতে এটি ছিল বাগানবাড়ির দরবার কক্ষ। এখানেই ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম লীগ। আহসানউল্লাহ ঢাকার নবাব ছিলেন ১৮৪৬ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত। ঢাকা শহরে বিস্তৃত তার তিনটি বাগান ছিল। এর মধ্যে একটি শাহবাগে অবস্থিত ছিল। শাহবাগের বাগানবাড়িটির নাচ ঘরটিই বর্তমান মধুর ক্যান্টিন বলে ধারণা করা হয়। অন্য মত অনুযায়ী, সেই বাগান বাড়িতে মার্বেল পাথরের তৈরি একটি গোলাকার বৈঠকখানা ছিল। এই বৈঠকখানাটিই বর্তমানে মধুর ক্যান্টিন নামে পরিচিত।

মধুর কেন্টিনে দু বন্ধু প্রবেশ করে চোখে পড়ে সর্বো কণারের একটি টেবিল।ভার্সিটিতে পড়ার সময় প্রতি বিকালে ঐ টেবিলটিতেই বসে আড্ডা দিত সূর্য্যের বন্ধুরা আজ অনেকগুলো বছর পর এসে সেই অতীতের জালে মন আবদ্ধ।সেই বিখ্যাত শিল্পী মান্না দের কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই গানটির মতন পরিবেশ,জীবনের প্রয়োজনে কে কোথায় ছুটে চলছে তা প্রায় সবারি সবার অজানা।

আড্ডা শেষে সূর্য্য বন্ধুকে বিদায় দিয়ে চারুকলায় প্রবেশ করে বট গাছের নীচে নিজেকে শীতল করার জন্য বসে আছেন হঠাৎ চোখঁ যায় একটি টোকাইয়ের দিকে...হাতের কলম খাতা কবিতা লিখতে ব্যাস্ত,এরই মাঝে কয়েকটি লাইন লিখেও ফেলেন হঠাৎ লিখুনীর কার্যক্রম থেমে যায় যখন টোকাই ছেলেটিকে দেখলেন কাধে ঝুলানো একটি চটের বস্তা থেকে বেশ কিছু অবৈধ মাদক বিক্রয় করছে ছাত্রদের কাছে।টোকাই ছেলেটি এক সময় সূর্য্যের পাশ দিয়ে চটের বস্তাটি কাধে ঝুলিয়ে যাচ্ছিল সূর্য্যের ডাকে ছেলেটি তার কাছে যায়।

-তোর বস্তায় কি?

-লাগবো আপনের?লাগলে কাউলকা পাইবেন এগুলা সব অর্ডার করা।

-তোরে পুলিশে ধরে না?

-কেন আমিতো ব্যাবসা করি চুরি ছিনতাইতো করি না,আর পুলিশ হালারাতো ডাকাইত।বস ওদেরও টাহা দেয়।

-তোর বস আছে নাকি?

-হ...বসেরও বস আছে সব বসেরাই ভাগ পায়।লাগবোনি কন আমার আবার সময় কম,সন্ধ্যায় আবার আরেক কাম করতে অইবো।

-আরেকটি কাজ আবার কি?

-হেইডা আফনের জাইন্না লাভ নাই তয় হেইডা দিয়া মানুষ মারন যায়।

সূর্য্য অবাক হন এই সকল পোলাপানদের দিয়ে সমাজের বুদ্ধিজীবিরা কি করাচ্ছেন।যেখানে ওরা লেখা পড়া করবে সেখানে ওদের কি শিখাচ্ছেন আমাদের সমাজ।এ ঘূণে ধরা সমাজ ভাঙ্গতে হবে তার পূর্বে রাজননৈতিক স্হিথিশীলতা প্রয়োজন।ভাবনার সাথে সাথে ভয়ংকর এক শব্দে কেপে উঠে পুরো শাহ বাঘ চত্ত্বর।লোকের ছুটাছুটি যে যেদিকে পারছেন দৌড়াচ্ছেন।এরই মধ্যে বিশাল এক মিছিল।"খালেদার চামড়া তুলে নেবো আমরা" ইয়াজ উদ্দির গালে গালে জুতা মারো তালে তালে.....এর রকম আরো বিশ্রী ভাষায় সম্মনীত এক জন প্রধানমন্ত্রীকে শ্লোগানের তালে গালাগাল করে যাচ্ছেন।অপ্রিয় হলেও সত্য যে এ রকম শ্লোগান কোন দল বা সুষ্ঠু রাজনৈতিক শ্লোগান হতে পারে না।

মিছিলর অপর পাশে চলছে জ্বালাও পোড়াও তান্ডব।কয়েকটটি সি এন জিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।সূর্য্য সতর্কতায় অবাক নয়নে অবলোকন করছেন এর মাঝে রিক্সায় এক মা ও স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলেন হঠাৎ কোথ্থেকে যেন ককটেলের স্প্রিন্টার ছিটকে এসে মা ও মেয়েকে আঘাত করে।চলন্ত রিক্সা থেকে মাঝ রাস্তায় ছিটকে পড়ে মা মেয়ে,রিক্সাওয়ালাও বাদ যায়নি আঘাত থেকে পেটের দায়ে ঘেটে খাওয়া এমন হাজারো লক্ষ জনতার ঢাকা শহর এখন ভীতি ভয়ংকর মৃত্যুপূরীতে পরিনত হয়েছে।

প্রজম্মের ঋণ শোধ০৬

0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ