দেশের ঘূণেধরা রাজনিতী দেশ উন্নয়ণে অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে।যে কোন উন্নয়ণের পূর্ব শর্ত হল প্রতিষ্ঠানটির সততা কাজের দক্ষতা ও একাগ্রচিত্ততা।সেদিক দিয়ে আমাদের রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোতে এর লেস মাত্র নেই বললেই চলে।এ দেশে ১৯৫২ সালে রক্তক্ষয়ী ভাষা আন্দোলনের মধ্য দেশের স্বাধীনতা আসে।সে সময় রাজনিতীতে ছিলো দেশপ্রেম আর সততা যা এখন শুন্যের ঘরে।’৯০ এর পর সাধারনত নীতিগত রাজনীতিতে পচন ধরতে শুরু করে।আর এই পচন ছড়িয়ে পড়ে সরকারী সকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

জাতির সঠিক দিক নির্দেশক গড়ে উঠেন শিক্ষাক্ষেত্র হতে সেই শিক্ষাক্ষেত্রই যদি দূর্নীতিগ্রস্থ হয় সেখান হতে রাষ্ট্র ভাল কিছু আশা করতে পারেন না।‘৯০ এর পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈর্ষনীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।রাজনিতীর কালো থাবায় শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয় দেশের সব বিশ্ব বিদ্যালয় আজ তার সেই জৌলুস সেই নাম ধাম হারিয়ে অন্ধকারে দিকে এগুচ্ছে জাতির বিবেগ গড়ে উঠার কারখানাগুলো।

এ দেশে এক সময় রাজনীতি ছিলো সৎ,শিক্ষিত পেট ভূখা দৈণ্য দারিদ্রতায় বসবাস রত রাজনৈতিক লোকদের মাঝে।আজ রাজনিতী চলে গিয়েছে তথাকথিত সন্ত্রাসী গড ফাদারদের হাতে।মানুষ আজ রাজনিতী বলতে বুঝে শুধু কেবল ক্ষমতার অপব্যাবহার আর রাতারাতি বণে যাওয়া কাড়ি কাড়ি টাকার পাহাড়ের মালিক।কারন রাজনীতির বানানের “রাজ” আছে ‘নীতির মা যেন পরপারে চলে গেছে সেই কবেই।

আপনি প্রবাসী দেশে কিছু করতে চান সেখানেও রাজনীতি আছে,রাজনিতীর ছত্রছায়ায় না থাকলে আপনি ফকির হতে আপনার সময় লাগবে না।আপনি চাকুরীজীবি হতে চান ভাল একটি চাকুরীর প্রয়োজন।যোগ্যতা ছাড়াই ভাল মাইনের একটি চাকুরী পেয়ে যাবেন যদি আপনি রাজনিতীর নীতিহীন নেতাদের পা চাটতে পারেন।আপনি যদি একজন সফল ব্যাবসায়ী হতে চান সেখানেও রাজনিতী লাগছে নতুবা নীতিহীন নেতারা আপনাকে এমন ঋণখেলাপীতে ফেলবে যেখান থেকে আপনি আর উঠে দাড়াতেও পারবেন না।যে কোন পরীক্ষায় ভাল করতে চাইলেও রাজনিতীর আর্শীবাদ লাগবে।বিশ্ব বিদ্যালয়গুলোতেতো রাজনীতির মতাদর্শ ছাড়া আপনি নড়ঁতেও পারবেন না।মোট কথা এ দেশে বাচার মত বাচতে হলে রাজনীতিকে ঘরের বউ করে নিতে হবে।বিয়ে করতে চান সেখানেও যদি আপনার কিঞ্চিৎ রাজনীতির পরিচয় থাকে তবে আপনি একজন সফল রাজনৈতিক বউ(অর্থে-বিত্তে) সহজেই পেয়ে যাবেন।

সুতরাং জীবনের সর্বোক্ষেত্রে আমাদের স্ব-দেশীয় নীতিহীন রাজনীতি জড়িয়ে আছে। এ থেকে উত্তরনের পথ কি ভাবে তা জানা নেই কারন সমাজে নীতহীন মানুষের জীবনে যে ভাবে রাজনীতির বীজ বপণ হয়ে আছে তা উপরে ফেলা সূদুর ভাগ্য প্রসারীর প্রয়োজন।

বিষয়টা এমন নয় যে এ সরকারের বেলায় এ সব অপকর্ম গুলো ঘটেছে।যুগের পর যুগ সরকারের পর সরকারের লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতা,দায়হীন রাষ্ট্র পরিচালনা সর্বোপরি জগণের সরলতার সুযোগে আমলাতন্ত্রের জটিলতায় বছরের পর বছর একটি রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পঙ্গু করে জিম্বি করে রেখেছেন নিজেদের আখের গুছানোর খাতিরে।

কয়দিন আগে নিউজে এলো ছাত্রলীগের ডাকসাইডের বড় দুই শীর্ষ লিডার চাদাবাজীর অভিযোগে ছাত্রলীগের উচ্চ  পদ ত্যাগ বা দল হতে বহিষ্কার।একজন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও অন্যজন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।তাদের ছাত্রলীগের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার পেছনে সব চেয়ে বড় যে  অভিযোগটি ছিলো তা হল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ব বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বড় অংকের চাঁদা দাবি করা।এমনিতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বের কোন নাম্বারেই নেই তার উপর এই যদি হয় দলীও লোকদের দূর্নীতির অবস্থা তবেতো বলতেই হয় দেশের মুল চলিকা শক্তি এখন ধবংসের পথে।এই নিয়ে দেশে বেশ আলোচনা সমালোচনা চলছে আর আমি এটাও বিশ্বাস করি পূর্ববর্তী ঘটনার ন্যায় এ সব ঘটনাও একদিন যাদুঘরে স্থান পাবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এ সব চাদাবাজী বা অপকর্মগুলো কি শুধু তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই করেন নাকি তারা করতে বাধ্য হন বা উপরতলার কেউ না কেউ তাদেরকে এ সব দূর্ণীতি করতে বাধ্য করান।আমি যতটুকু জানি এ দেশে এমনো ঘটনা ঘটেছে,ঘুষ তুমি খাও আর না খাও তোমার উপরে যে জন ঈশ্বর বসে আছেন তাকেতো দৈনিক খাবার দিতেই হবে এর থেকে কোন নিস্তার নেই।আবার যে পদটিতে আমি আসিন হব সেই কাঙ্খিত পদটি পেতেও আমাকে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিযোগ করতে হবে।তেমনি সামান্য একটি বিশ্ব বিদ্যালয়ের পথ পেতে দলীও কাউকে না কাউকে চাদা দিতে হয় লক্ষাধিক টাকা। তাহলে আর নৈতিকতা আসবে কোথায় থেকে?

দেশে আরেকটি খবর বেশ আলোচনায় সমালোচনায় এসেছে তা হল ক্যাসিনো নামে জুয়া আর নেশার আসর।এ এক অজানা অধ্যায় যেন দেশের মানুষ জানতে পারছে।দেশের অধিকাংশ মানুষ জানে অতি সাধারণ বা সমাজের নিন্ম শ্রেণীরাই কেবল জুয়ারী হয়।কথিত আছে তারা এমন সব জোয়ারী যে অনেক সময় জোয়ার আসরে বউকেও বন্ধক দেয়।এ সব জুয়ারীকে আমি অনেকটা পজিটিভ দেখছি কিন্তু যারা ক্যাসিনো নামের জোয়ার আসরে শত লক্ষ কোটি টাকার জোয়া খেলে সাথে চলে নিরাপত্তার বলয়ে মদ মাগীবাজদের নিয়ে আনন্দ উৎসব সেটাকে আমি দেশের শত্রু নেগেটিভ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছি না।

আরেকটি বিষয় সব চেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হল দেশের বড় বড় ক্লাবগুলোতে প্রত্যাহ যে ক্যাসিনো নামে জোয়ার আসর বসছে সেই সব ক্লাবগুলোকে কাজ করার কথা ছিলো দেশ ও জাতীগত উন্নয়ণের প্রন্থাগুলোকে নিয়ে কাজ যা সাধারন মানুষ উপকৃত হত।অবাক করার বিষয় যারা এ দেশটাকে স্বাধীন করেছিল সেই সব মুক্তিযোদ্ধাদের নামে গড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদেও চলে এ সব অনৈতীক কাজ কর্ম।আর এসব অবৈধ ব্যাবসা নীতিভ্রষ্ট কোন রাজনৈতীক নেতার মনেই দাগ ফেলেনি-না এটা অন্যায় এটা ঠিক নয়।শুধু খালেদের ক্যাসিনোতেই পার নাইটে খেলা হত প্রায় দুই কোটি টাকার উপরে। যতটুকু জানা যায় সরকারদলীও যুবলীগের চার নেতার কন্ট্রোলে চলত শহরে এ সব জোয়ার আসর।বিষয়টা পরিস্কার,তাহলেতো ঐসব তথাকথিত নেতাদের অংকের হিসাবটা মিলবে না।তাহলে আর আপনি আমি কি বলব।অথচ সেই সব স্থানে এই সব নষ্ট ঘূণে ধরা রাজনীতিবিদদের মদদে চলছে হরদম অবৈধ ব্যাবসা।আর এরাই নাকি আমাদের ভবিষৎ জাতি গঠনের কর্ণদার।

যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের অনেকে সরকারদলীও লোক, তাদের অনেকে প্রশ্ন করেছেন- প্রশাসন এতো দিন কোথায় ছিলো? অথচ তিনিও জানে না যে তিনিও প্রশাসনের বাহিরে নয়।তবে বর্তমান মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি তাদের এ সব কথার জবাবে চমৎকার একটি মন্তব্য করেছেন তা হল- আগে কৈ ছিলো বলে লাভ নেই,এখন যখন জেনেছি তখন এখনি এর অ্যাকশানে যাচ্ছি এটাই বড় কথা।কিন্তু আমার কথা হল এর পর কি হবে?আমরা এ সব মনে রেখে দমনের পথে চলবো নাকি মাছের মার পুত্র শোকের মত আবারো একই তালে নাচব।

এরপর আসল আরেক আলোচিত ঘটনা।নারায়ণগঞ্জের জি কে শামীমের কেবল মাত্র এফডিআর এ জমা আছে প্রায় দুইশ কোটি টাকা।এছাড়া তার টাকা জমা রাখার বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টস।১৪০ কোটি টাকার এফডিআর কেবল শামীমের মায়ের নামে, বাকিটা তার নিজের নামে।  এছাড়াও নগদ পাওয়া গেছে  ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার এবং ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার। যতটুকু জানা যায় তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ঠিকাদারী ব্যাবসা করেন।তার একাই এ সব ব্যাবসা রানিং এ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।অথচ তাকে আমরা সাধারন জনগণ সহ সরকারদলীও অনেকেই তেমন একটা চিনেন না।কেউ বলছেন তিনি যুবলীগের সভাপতি কেউ বা বলছেন ভিন্ন কথা।কেউ বলছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি।অথচ ১১তম সংসদ নির্বাচনেও সে নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ থেকে নির্বাচনের দাড়ানোর কাতারে ছিলেন।তবে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে এ সব লোকেরা যখন যে সরকার আসেন তখন সে সেই সরকারের হয়ে যান।

দূর্নীতি কোথায় নেই ঠিকাদারে দুর্নীতি, ব্যাংকিং খাতে লুটপাট, শেয়ার বাজারে চুরি,পুলিশ প্রশাসনে দূর্ণীতি ক্ষমতার অপব্যাবহার।দেশে দূর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যাবহার নেই কোথায়? বালিশের দামে,একটি ঢেউ টিনে,পর্দায়!  তবে সরকার যখন শুরু করেছেন দূর্ণীতিবাজ নির্মূলের পদক্ষেপ- তখন সরকার অনেকটা লাভবান হবেন।কারন আটককৃত তাদের যে সব অর্থ সম্পদ আছে তা বায়েযাপ্ত করে নিলেই এমন কয়েকটা পদ্মা সেতু ব্রীজের কাজ সহজেই শেষ করতে পারেন।উদ্দ্যেশ্য হউক যখন যেখানে দূর্ণীতি অনিয়ম অবৈধ পয়সার আলামত সেখানেই প্রশাসনের কড়া হামলা,ব্যাংক ব্যালেন্স মালামাল সহ তার নাগরিকত্বের উপর রাষ্ট্রীও আইনে সব জব্দ করে সরকারী কোষাঘারে জমা করা হউক।

আর যদি তা না হয় নামেই কেবল গ্রেফতার দেখিয়ে রাজনৈতিক পরিবেশ গরম করে রাখেন এবং ঠান্ডা হলে সব আবার আগের জায়গায় চলে যাওয়া তবে দেশে সমস্যা শুধু রয়ে যাবে না বরং বেড়ে যাবে কয়েকগুণে। তখন ধনী কেবল ধনীই হবে আর গরীব কেবল গরীবি হালতেই থাকবে যা এখনি বেশ পরিলক্ষিত।সমাজের অর্থনৈতীক বিবেচনায় এই যে সাম্যহীনতা তার এক দিন না একদিন বিষ্ফোরণ ঘটবে।তখন আর উচু তলার মানুষকে কষ্ট করে নীচে নামতে হবে না অধিকার বঞ্চিত জনগণ তাদের অধিকার আদায়ে টেনে হিচড়ে নীচে নামিয়ে আনবেন সেই দিন আর বেশী দূর নয়।

তথ্য ও ছবি
কালেরকণ্ঠ সহ অন্যান্য অনলাইন পোর্টাল

0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ