কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম নাজিরহাট সড়ক দিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে শহরে ফেরার পথে হাটাহাজারির ২/৩ কি মিঃ আগে থেকে ৪/৫ কি মিঃ পর পর্যন্ত দেখলাম শত শত ব্যাটারি চালিত রিক্সা। পাশাপাশি দেখলাম ব্যাটারি রিক্সা গলি চেড়ে শহরের প্রধান সড়কে চলতে শুরু করেছে যদিও শহরে ব্যটারি চালিত রিক্সা চলাচলে মাননীয় আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই যেখানে পুলিশ থাকে সেদিকে ব্যাটারি চালিত রিক্সাগুলো চলাচল করে না। আসলে বাংলা রিক্সা বা প্যাডেল রিক্সায় ২৯ প্যালেটের ২ টি ব্যাটারি চালিত ১ টি মোটর লাগিয়ে এর গতি বৃদ্ধি করা হয়েছে মাত্র। এটির ব্রেক স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করেনা যেহেতু এটি বিল্ড ইন মোটর ইঞ্জিন নয়। দ্রুত গতির ব্যাটারি রিক্সাগুলো যদি অকস্মাৎ বা হঠাৎ ব্রেক করে তাহলে তা অনেক সময় উল্টে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। কেননা এর গতি নিয়ন্ত্রণহীন এবং যান্ত্রিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এই ব্যাটারি চালিত গাড়িতে চড়ে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন বা সারা জীবনের জন্যে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা নেয়াতই কম নয়। তারপরেও এটি চলছে এবং মানুষও সিএনজি ড্রাইভারদের অতিরিক্ত ভাড়া দাবী এবং মিটারে না চলায় দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছার জন্যে এই ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে আরোহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। এটি প্রথমত দুর্ঘটনা প্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ একটি যানবাহন, দ্বিতীয়ত এটিতে ২৯ প্যালেটের দুইটি ব্যাটারি যা ৮/১২ ঘণ্টা চার্জ করতে অনেক বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। আমাদের মতো বিদ্যুৎ ঘাটতির দেশের জন্যে এই রিক্সাগুলো মোটেই উপযোগী নয়। বরং সারাদেশে এসব রিক্সার কারণে বিদ্যুতের প্রচুর অপচয় হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাটারি চালিত রিক্সাগুলোর ঝাঁকুনি শুধু অসুস্থ রোগী, হার্টের রোগী, ব্যাথা বেদনায় ভুক্ত মানুষের জন্যেই নয় সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের জন্যেও মারাত্মক এবং স্বাস্থ্য হানিকর বলে জানা যায়। বিদ্যুৎ অপচয়কারী, ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণের কারণে দুর্ঘটনা প্রবণ, চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ এবং মাননীয় আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ এই যানবাহন অতি দ্রুত রাস্তায় চলাচল বন্ধ বা নিষিদ্ধ করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং ট্র্যাফিক বিভাগের উদ্যোগ নেয়া জরুরী। তাছাড়া বিনা লাইসেন্সে এবং আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা কিভাবে অলিতে গলিতে এবং প্রধান সড়কে চলছে তা তদন্ত করে দেখার যৌক্তিক দাবীও রাখে। আশা করি সবদিক বিবেচনায় নিয়ে শুধু চট্টগ্রাম শহরে নয় চট্টগ্রাম জেলার সব জায়গায় তা বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসন।
৮টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
এই বাহনগুলো খুব ই ঝুঁকিপূর্ণ, সবাই তা জানে, আমরা ও জানি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
এটাই যেন নিয়তি।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আসলেই ভাইয়া এ যেন আমাদের নিয়তি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আরজু মুক্তা
এদেশে শুধু আইন হয়। প্রয়োগ কম
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
জ্বি আপা আইনের প্রয়োগের অভাবে আমাদের দেশে অনেক দুর্নীতি নৈরাজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
সুন্দর সচেতনমূলক পোষ্ট।
এ অরাজকতা রোধে প্রশাসন ও জনগনের সর্বস্তরের সচেতনতা প্রয়োজন।
নিরন্তর মুগ্ধতায় আন্তরিক শুভ কামনা রাখলাম পাতায়।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনার প্রেরণামূলক মতামতের জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ধন্যবাদ ভাই।
হালিমা আক্তার
শুধু চট্টগ্রাম নয়। ঢাকা শহরের অলিগলিতে এই ব্যাটারি চালিত রিকশা চলছে। আমারও একই প্রশ্ন নিষেধাজ্ঞা সত্বেও কিভাবে চলছে। সুন্দর সচেতনতা মূলক পোস্ট। শুভ কামনা রইলো।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছি — “আমারও একই প্রশ্ন নিষেধাজ্ঞা সত্বেও কিভাবে চলছে”।
ধন্যবাদ মতামতের জন্য।