জীবন্ত দগ্ধ ৫২ প্রাণ

হালিমা আক্তার ১০ জুলাই ২০২১, শনিবার, ১২:০৩:২৪পূর্বাহ্ন সমসাময়িক ২০ মন্তব্য

জীবন্ত দগ্ধ হয়ে গেল বায়ান্নটি প্রাণ। মৃত্যু কত সহজ। বলছিলাম নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত সেজান জুস কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা কথা। দুর্ঘটনা বলে কয়ে আসে না। দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু তার জন্য সেফটি ও সিকিউরিটি থাকতে হবে। বিশেষ করে কারখানা গুলোতে।

আপনারা ব্যবসা করবেন। কারখানা বানাবেন। মুনাফা ঘরে তুলবেন। কিন্তু অসহায় কর্মচারীদের জন্য নিরাপত্তা ব্যাবস্থা রাখবেন না। কারন ওরা দরিদ্র। ওরা অসহায়। ওরা পেটের দায়ে আপনার কারখানায় দিনরাত শ্রম দিয়ে যায়।

খবরে প্রকাশ দুর্ঘটনার সময় চারতলার গেট তালাবদ্ধ ছিল। যার ফলে আগুন লাগার পর কারখানা থেকে কেউ বের হতে পারে নাই। আমার প্রশ্ন কারখানা কি কোন দারোয়ান থাকেনা। আর দারোয়ান যদি থেকেই থাকে। তবে কারখানা তালাবদ্ধ থাকে কেন??? কতটা অমানবিক হলে মানুষ এ কাজ করতে পারে।

একসময় আমাদের গার্মেন্টসগুলোতে প্রায়ই আগুন লাগার কথা শোনা যেত। প্রশাসন ও বায়ারদের শর্ত মেনে চলার কারণে গার্মেন্টস গুলো এখন অনেকটাই সেফটি এবং সিকিউরিটি মেনে চলে। প্রশাসন কঠোর হলে কারখানাগুলো সেফটি সিকিউরিটি মেনে চলতে বাধ্য।

এবার আসা যাক ফায়ার সার্ভিসের কথায়। ফায়ার সার্ভিসের ১৭/১৮ টি ইউনিটের কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও প্রায় ২৪ ঘন্টা লেগে যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। এটাকি  আগুনের ভয়াবহতা, না ফায়ার সার্ভিসের অক্ষমতা। না কি আগুনলাগা কারখানার কাঠামোগত দুর্বলতা।

দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করার জন্য সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্ত কমিটি এক সময় রিপোর্ট দিবে। তাতে মালিকপক্ষ কিছুটা বিব্রত অবস্থায় পড়বে। দুর্ঘটনার কারণে মালিকপক্ষ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কিন্তু যে তরতাজা বায়ান্ন জীবন প্রদীপ নিভে গেল। তাদের পরিবারের শূন্যতা কিভাবে পূরণ হবে। খবরে দেখা গেল তাদের সকলেরই বয়স সতেরো বা আঠারো থেকে চব্বিশ/ পঁচিশ হতে পারে। যে ফুলগুলো বিকশিত হবার অপেক্ষায় ছিল। ছিলো পরিবারের আশা ভরসা। তারা অকালেই ঝরে পড়ে গেল। সরকার ঘোষিত অর্থ সাহায্য কি পারবে মায়ের বুকের হাহাকার প্রশমন করতে।

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ