কালোর্ত্তীর্ণ

সৌবর্ণ বাঁধন ২৬ জুলাই ২০২০, রবিবার, ০৮:৩০:০১অপরাহ্ন কবিতা ১৩ মন্তব্য

তুমি তো কালোর্ত্তীর্ণ!

ভোরের মেঘের গম্বুজে টাঙ্গানো বিপন্ন বিস্ময়!

প্রহরের চক্র ঘুরলে বাতাসে, শিশুতোষ ফুলেল চড়কিরা-

হাসে, সেখানেও দানবেরা থাকে পাশে পাশে,

অকারণে কাঁদে সকল শিশুই মাঝে মাঝে,

দেখোনি কি তুমি?

সর্বোত্তম সুখের বাসর মানে বালুচরে বিসর্জনের আসর,

একটি জীবনে আর কতোবার বলো ঝাঁপ দিব জলে!

তুমি প্রাচীন সোপানে ভাসা লাইফবোটের মতো-

শেষ সম্বল! তুমি কালোর্ত্তীর্ণ তুফানের মগ্ন বেলাভূমি!

সংশয়ী বালুর মতো; নাছোরবান্দা প্ল্যাঙ্কটনের মতো-

ভেসে থাকি আমি!

টুপটাপ কড়া লাল আপেলরা ঝড়ে পড়ে আহুতিতে,

স্বর্গোদ্যান পাহারায় রেখেছে বিদ্রোহী বিভীষণ,

কুড়ানোর সাহসই হয়না!

এখন রাস্তায় টুকটুকে লাল আপেলের মতো প্রেমেরা,

ছড়িয়ে পড়ছে বুদবুদে লীন হওয়া অচেনা আলোয়,

ছোঁয়ার সাহসই হয়না!

খেলায় মত্ত স্ট্রয়ের থেকে উড়ে আসা রুপালী বুদবুদ,

প্রেম হয়ে মিশে যায়! আমিতো ছুঁতেই পারিনা!

হাতের তালুতে ক্ষতদাগ; মস্তিষ্কে সাদা রোমের মতো-

অবশ ছত্রাক! এইসব নিয়ে বেশ আছি!

প্রতিটি রোমকূপে সূক্ষ সুচের মতো বিঁধলে-

আকুপাঙ্কচারের ব্যর্থ প্রয়াস, টেনে আনে পুরাতন পীড়া,

চোখ বুজে ভাবি কালোর্ত্তীর্ণ তুমি!

পাওয়া না পাওয়ার অবিশ্বাস্য মল্লযুদ্ধে,

আমি তোমাকে পেয়েছি! যদিও অমীমাংসিত আছে-

লটারীর ফলাফল! তবু আজকাল পদ্যের পংক্তিতে লিখি,

সংবাদ সম্মেলনের ঘড়েল প্রশ্নোত্তরে অবলীলাক্রমে বলি,

আমি তোমাকে পেয়েছি!

তুমি তো কালোর্ত্তীর্ণ সংগ্রহ আমার!

 

শোন প্রেম! কানে কানে শোন! ভ্রমরের মতো শোন!

সমস্ত সুরের শেষে সেইতো এখনো কালোর্ত্তীর্ণ কালোয়াত,

আমি তার গীত বাদ্যেই মশগুল!

তৃতীয় মহাযুদ্ধের শেষে আরো যুদ্ধ হবে চতুর্থ, পঞ্চম,

দামামায় জিনিয়ার পাপড়ি গুলো মথের মতো প্যারাসুট হবে,

লাফিয়ে লাফিয়ে পড়বে উত্তপ্ত জলের উপর,

অন্ধ বৃক্ষের শাখা প্রশাখার ভিতর!

তখন সে কালোর্ত্তীর্ণ জিনিয়ার বিবাগী বরষায় ঢলে পড়া-

ক্রন্দন!

আমিও যুদ্ধে যাব!

হবো পাপড়ির প্যারাসুটে নাছোড়বান্দা প্যারাট্রুপার!

রামমোহনের দরগায় নব্য উপনিবেশবাদীরা যতোই খুঁজুক-

সংস্কার! তুমি ও তোমার প্রেম এক নিঃখুত আবিষ্কার!

রেখেছি সৌধে, মিছিলের মাঠে, বালিশের পাশে,

সুদীপ্ত কবিতার বইগুলোর প্রতিটি অক্ষরে,

প্রতিটি পাতার ভাঁজে!

এবার বরগি এলে আমিও যুদ্ধে যাব!

কঠোর পাহারায় বরেন্দ্র, গৌড়ে এনে দিব ঘুমের বিরতি,

এখানে যে তুমি থাকো কালোর্ত্তীর্ণ প্রেম আমার!

কালীয় নাগের মতো কালো জলে নুয়ে থাকা স্থলপদ্মের সাথে,

এই লালটে মাটি জুড়ে করেছ বসতি!

আলোয় আলোয় খেলে চোখের অনির্বাণ জ্যোতি!

নিভে গেলে সূর্য্যের মোটর,

ধরো আরো প্রায় পাঁচশ কোটি বছর পর!

আরেক নক্ষত্রের ভুতুড়ে সৌরমন্ডলে এই উদ্ভাসিত হাসি নিয়ে-

আসবে কি? তখনো কি আধাউন্মাদ হবে চেতনার প্রকৃতি!

জানা নেই কারো এই পাগলাটে প্রশ্নের উত্তর!

তবু ফিরে এলে আমাকে ডেকে নিও আবার,

প্রতিটি সত্তারই তো কিছু এলোমেলো পাগলাটে প্রেম দরকার!

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ