বর্তমান সময়ে এক আতঙ্কের নাম, নভেল করোনাভাইরাস। এই প্রাণঘাতী ভাইরাস ২০১৯ সালের শেষদিকে গণচীনে দেখা দেয়। গণচীনে এই প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস দেখা দেওয়ার পর চীনের কয়েক হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়ে বর্তমানে পৃথিবীর দুইশো দেশেরও বেশি  দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এরমধ্যে বিশ্বের কয়েকটি উন্নত দেশেরও লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়ে আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলা-সহ দেশের বিভিন্ন জেলাশহরেও ছড়িয়ে পড়েছে, এই ঘাতক করোনাভাইরাস।

বর্তমানে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের আক্রমণের শিকার হয়েছে প্রায় দুই হাজারেরও উপরে।। প্রাণ কেড়ে নিয়েছে অন্তত একশো জনেরও বেশি। কিছুতেই কমানো যাচ্ছেনা এই রোগে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিনই নতুন করে এই প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছেই। মৃত্যুর মিছিলেও যোগ হচ্ছে সমানতালে।

এই রোগ দেখা দেওয়ার পর থেকেই বিজ্ঞ চিকিৎসগণ এই প্রাণঘাতী রোগ প্রতিহত করতে দেশের মানুষকে দিচ্ছে নানারকম দিকনির্দেশনা। পাশা-পাশি বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস প্রতিহত করতে এবং মানুষকে বাঁচাতে বিভিন্নরকম পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। তারমধ্যে এই প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন জেলাশহরের বিভিন্ন এলাকা লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পরেছে দেশের অর্ধেক মানুষের চেয়েও বেশি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিন্ম আয়ের মানুষগুলো। যাঁরা দিনে আনে দিনে খায়, তাঁরা।

এমন পরিস্থিতিতে যেসব এলাকায় লকডাউন করা হয়েছে, সেসব এলাকায় নিন্মবিত্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান সরকার। নিন্মবিত্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল-ডান, তেল লবণ-সহ বিভিন্নরকম খাদ্যসামগ্রী।সেসব ত্রাণসামগ্রী যখন দেশের বিভিন্ন জেলাশহরে পৌঁছতে শুরু করেছিল, তখনই শুরু হয়ে যায় সরকারের দেওয়া গরিবের ত্রাণ চুরির মহোৎসব। এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলার কিছু জনপ্রতিনিধি ও অসাধু ব্যবসায়ীরা চুরি-চামারি করে ধরাও খেয়েছে। মামলাও হয়েছে। কিন্তু আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫জন মাননীয় এমপি এবং একজন সিটি মেয়র-সহ  জনপ্রতিনিধিরা রয়ে গেছে এর বাইরে। নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫জন মাননীয় এমপি-সহ জনপ্রতিনিধিরা গরিবের ওইসব ত্রাণ আত্মসাৎ না করে এবং এই প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ভয় না করে; জীবনের মায়া ত্যাগ করে যাঁর যাঁর এলাকায় থাকা নিন্মবিত্তদের মাঝে সুন্দর সুষ্ঠুভাবে ত্রাণসামগ্রী বিলি বন্টন করে যাচ্ছেন। এটা আমাদের নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য একরকম সুখবর!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলা পাঁচটি সংসদীয় আসন নিয়ে জেলা গঠিত। এই পাঁচটি সংসদীয় আসনে পাঁচজন মাননীয় সাংসদ (এমপি) রয়েছেন। রয়েছেন ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের একজন সম্মানিত মেয়র। সাথে আছে ২৭ জন কাউন্সিলর(পুরুষ) ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ৯ জন। এছাড়াও আছে ৫টি উপজেলা পরিষদ ও ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।

নারায়ণগঞ্জের সংসদীয় ৫টি আসনের ৫ জন মাননীয় এমপি, একজন সম্মানিত সিটি মেয়র-সহ প্রায় শখানেক জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা এপর্যন্ত নিন্মবিত্তদের জন্য সরকারের দেওয়া ত্রাণসামগ্রী চুরি তো দূরের কথা; কোথাও বিলি বন্টনে অনিয়ম হয়েছে এমন কোনও খবরও আসেনি। এমন ঘটনা ঘটেওনি, পাওয়াও যায়নি। এপর্যন্ত নারায়ণগঞ্জবাসীর চোখেও পড়েনি। বরং এই প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস প্রতিহত করতে এবং যাঁর যাঁর এলাকার জনসাধারণকে বাঁচাতে সরকারের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের নিজস্ব তহবিল থেকেও কিছু-না-কিছু আর্থিক সহায়তা-সহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছিল, সরকারের ত্রাণসামগ্রী ঘোষণা দেওয়ার আগে থেকেই।

আর এখন তো দেশের প্রতিটি জেলাশহরের প্রতিটি এলাকায় সরকার থেকে দেওয়া ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেই  গেছে। এখন নারায়ণগঞ্জ জেলায় প্রতিদিন প্রতিটি এলাকায় পুরোদমে চলছে গরিবদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ। দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫জন মাননীয় এমপি, সম্মানিত সিটি মেয়র-সহ শতাধিক জনপ্রতিনিধিদের এরকম ন্যায়নিষ্ঠা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীও  তাঁদের জন্য গর্বিত। আশা করি সরকারের দেওয়া গরিব মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে অন্তত নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোনও অনিয়ম বা কেলেঙ্কারি হবে না। এই আশা মনে রেখে তাঁদের জন্য প্রার্থনা করি, মহান সৃষ্টিকর্তা যেন এই সময়ে তাঁদের সবাইকে সবসময় ভালো রাখে, সুস্থ রাখে। জয় হোক মানবতার।

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ