ভ্রমণ বাংলাদেশ নামে আমাদের একটা টিম আছে। প্রতি বছর ডিসেম্বরে আমাদের এই সংগঠন টেকনাফ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত তিন দিনে সাগরের পাড় ধরে হাটে। আমিও দুইবার হেটেছি। আমার অনুভুতি ছিল এটা স্বর্গ, আর স্বর্গ সবাই দেখতে পায়না, কারণ হাটতে পারে কয়জন? এবার সেই স্বর্গ দেখার জন্য আর হাটার দরকার নাই। কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে গাড়িতে করেই পুরোটা দেখা যায়।
এটি ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক, যা বঙ্গোপসাগর এর পাশ দিয়ে কক্সবাজারের কলাতলী সৈকত থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি বর্তমানে পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক। ২০১৭ সালের ৬ মে এটি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।
এই সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয় ১৯৮৯ সালে। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন সরকার ৪৮ কিঃমিঃ দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ প্রকল্প গ্রহণ করেন। তবে ২ কিঃমিঃ সড়ক নির্মানের পর এর কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কটি সাগরের প্রবল স্রোতে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তিতে ১৯৯৫ সালে এর নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয়। তখন এর নির্মান কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। মাঝে কয়েক বছর কাজ বন্ধ থেকে পুনরায় ২০০৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে এটির নির্মাণ কাজ পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এতে মোট খরচ হয় প্রায় ১,০৫০ কোটি টাকা। এর নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এক বছর আগেই তা শেষ হয়ে যায়। এটির নির্মান কাজ চলাকালীন ২০১০ সালের ১৪ জুন পাহাড় ধসে নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছয় সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
(২) কক্সবাজারের শহরতলী পার হওয়ার পরই রাস্তার দুই পাশে সবুজের বন্যা দেখা যায়।
(৩) আরো কিছুটা পথ পারি দিলে কিছু নারকেল গাছের পরই দিগন্ত বিস্তৃত বঙ্গোপসাগর।
(৪) হিমছড়ি পর্যন্ত বাম পাশে পাহাড় থাকায় এমন ছোট আকারের ঝর্ণার দেখা মেলে বেশ কয়েকটা।
(৫) মাঝপথে এমন একটা লোহার ব্রীজও রয়েছে এই পথে।
(৬) ডান পাশে সাগর আর বাম পাশে পড়বে এমন বেশ কয়েকটি ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র।
(৭/৮) সাগর আর আকাশ এক সাথে মিলেমিশে আছে।
(৯) গাড়ি থামিয়ে সাগরে নেমে তুলেছি এই ছবিটা।
(১০) এক সময় মেরিন ড্রাইভের শেষ মাথায় দেখা দেবে টেকনাফের পাহাড়।
(১১/১২) ছবির মতোই সুন্দর ছবি।
(১৩) বালির নিচে জেলেদের কূড়ে।
(১৪/১৫) মাছ ধরার পর, অলস নৌকাগুলো।
(১৬/১৭) টেকনাফের চমৎকার সবুজ পাহাড়গুলো।
(১৮) শুটকি শুকানো হচ্ছে।
(১৯) দূরে গ্রাম, কাছে নৌকা।
(২০) এটা নাফ নদী, ওপাশে মায়ানমার।
৩০টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
মাশাআল্লাহ ছবি গুলো অসাধারন
জানলাম মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু, শেষ সময়, নির্মাণ করাতে ব্যায় বাজেট,,,
ধন্যবাদ অশেষ
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু
তৌহিদ
ভাই ভ্রমন গল্প ভালো লেগেছে। ছবিগুলি অসাধারণ। তবে এত এত ছবি না দিয়ে যদি লেখায় ভাব প্রকাশ করতেন আরও ভালো হতো। ব্লগে এত ছবি দিলে একসময় দেখবেন আপনার জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা সব ছবি দিয়ে ভরাট হয়ে আছে তখন আর লেখা দিতে পারবেননা, জায়গাই অবশিষ্ট থাকবেনা।
কারন ধরুন একটি লেখা জায়গা নেয় ১ থেকে ২ কিলোবাইট, আর একটি ছবি জায়গা নেয় ৮০ থেকে নব্বই কিলোবাইট। এখন আপনি যদি ৫ টি ছবিও ব্যবহার করেন তাহলে এক পোস্টেই জায়গা নিচ্ছে প্রায় ৫০০ কিলোবাইট যা অন্যান্যদের ৫০০ টি লেখার সমান বা প্রায় ৫ বছরের লেখার জায়গার সমান। এরকম হলে সোনেলা ওপেন করতে অনেক সময় লাগবে আপনার।
ভাবুন!! কি করছেন। আপনি অভিজ্ঞ মানুষ। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই, সোনেলা ব্লগের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আমার অতোটা জানা ছিল না।
তৌহিদ
তবে আপনি যেভাবে দিয়েছেন তা জেনে ভালো লাগছে। এভাবে দিলে সমস্যা নেই ভাই।
জিসান শা ইকরাম
কামাল উদ্দিন ভাই, যেভাবে ছবি দিচ্ছেন, তাতে সমস্যা নেই। লিংক দিয়ে ছবি দিলে ব্লগ স্লো হবে না কখনো।
জিসান শা ইকরাম
তৌহিদ ভাই, এই ছবিগুলো সরাসরি আপলোড করা হয়নি সোনেলায়। অন্য কোথাও আপলোড করে লিংক এর মাধ্যমে ছবি দেয়া হয়েছে। এতে সমস্যা হবে না।
মনির হোসেন মমি
ইয়াহো ফ্লিকার তার নিজের এ্যাকাউন্ট হতে ছবিগুলো আনা। এ ভাবে ছবি পোষ্টে সমস্যা যখন নেই তখন পোষ্ট চলবে।ধন্যবাদ জিসান ভাইজান জান বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য।
তৌহিদ
জানানোর জন্য ধন্যবাদ ভাই।
কামাল উদ্দিন
তাহলে এবার বগল বাজিয়ে ব্লগানো যায় 😀
সঞ্জয় মালাকার
ছবি গুলো অসাধারণ, তবে কখনো যাওয়া হনি, ছবি দেখেইআপসুস পূরণ করলাম,ধন্যবাদ আপনাকে ।
কামাল উদ্দিন
দেখার ইচ্ছে থাকলে সময় হয়ে যাবে, আফসোসে থাকবেন কেন ভাই?
সঞ্জয় মালাকার
হু ঠিক বলেছেন দাদা, ধন্যবাদ আপনাকে।
কামাল উদ্দিন
😀
এস.জেড বাবু
বেশ চড়াই উৎরাই পাড় হয়ে এতো বাধার মুখে আমাদের দেশে দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক এর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ভাবতেই গর্ব হয়।
২০১১ এর পর আর যাওয়া হয়নি ওদিকে,
এইবার আপনার লিখা দেখে উৎসাহ বেড়ে গেল।
চমৎকার পোষ্ট
কামাল উদ্দিন
হুমম, এবার তাহলে ঝাপিয়ে পড়ুন বাবু ভাই।
এস.জেড বাবু
ইনশাআল্লাহ-
কামাল উদ্দিন
😀
জিসান শা ইকরাম
মেরিন ড্রাইভ নিয়ে পোষ্ট আমিও দেব ভেবেছিলাম, দিয়ে দিলেন আপনি।
তবে আমিও দেব, আমার দেয়া মেরিন ড্রাইভ রোড নিয়ে।
কামালউদ্দিন ভাই, লেখার সূত্র উইকিপিডিয়া দিয়ে দিলে ভালো হতো।
এডিটে গিয়ে সূত্র দিয়ে দিয়েন।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ ইকরাম ভাই, এমন সহযোতা পেলে ব্লগে পদচারণা সহজ হয়, সূত্র সংযুক্ত করে দিয়েছি।
মনির হোসেন মমি
নাম শুনেছি কখনো যাওয়ার সুযোগ হয়নি আর হবেও বলে মনে হয় না। তাই আপনার পোষ্টের লেখা ও ছবি দেখে তৃপ্তির ঢেকুর আপাতত গিললাম। ধন্যবাদ এমন পোষ্টের জন্য।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ মমি ভাই, ভালো থাকুন, সব সময়।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমার কয়েকবার সৌভাগ্য হয়েছে এই পথে চলার। ছবিগুলো দেখে সব আবার চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠলো। এই পথে চলার সময় তখনকার অনুভূতি যদি বলতে চাই এমন হবে… ” হঠাৎ করে কেউ স্বর্গের দ্বার খুলেছে, আর আমি চলেছি স্বর্গের আরো গভিরে ”
ভালো লাগে আপনার ভ্রমনকালের গল্প। সাথে ছবিগুলো এক্সট্রা বোনাস 🙂
* ৭ নম্বর ছবিতে যে জিনিস গুলো সাগরের পাড় ঘেসে রাখা হয়, এগুলো মুলত কি কাজে লাগে? এর নাম কি?
কামাল উদ্দিন
…… চমৎকার অনুভুতি বর্ণনা করেছেন আপু।
৭নং ছবির সিমেন্ট নির্মিত ত্রিফলাগুলো সাগরের প্রচন্ড ঢেউ থেকে স্থলভাগের ভাংগন ঠেকানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে আমি ২ বার আসা যাওয়া করেছি।
তবে সোনা পাড়া হয়ে উখিয়া পর্যন্ত ২৫/২৬ বার আসা যাওয়া করেছি। সাগরপাড়ের দিয়ে ভ্রমণ আসলে খুবই উপভোগ্য। ছবিগুলো খুবই সুন্দর।
কামাল উদ্দিন
ওটাতো আপনারই অঞ্চল, আপনার পদচারণা বেশী থাকাটাই স্বাভাবিক………শুভ কামনা সব সময়।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আমার অঞ্চল হচ্ছে চট্টগ্রাম শহর। আমি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেবা করি বলে যেতে হয়ে। যেতে ৬/৭ ঘন্টা গাড়িতেই চড়তে হয়।
কামাল উদ্দিন
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারকে আমরা খুব একটা দূরে মনে করিনা ভাই 🙂
আরজু মুক্তা
কয়েকদিন আগেই ঘুরে এলাম
কামাল উদ্দিন
তাহলে তো নানা বাড়ির গল্প মায়ের কাছে করার মতো হয়ে গেল…… শুভেচ্ছা:D