আজ বাংলাদেশের বিজয় দিবস ১৬-ই ডিসেম্বর। ভাবছি,  বিয়াল্লিশ বছর কাটলো তবুও বাংলার আকাশ হতে পুরনো শকুণের অশনিময় দৌরাত্ম গেলোনা। এখনও তাদের কালো থাবার বিস্তার রক্তাক্ত করে চলেছে প্রিয় বাংলাদেশের শান্তির সহধর্ম। ধর্মান্ধ একাত্তুরের দেশীয় শয়তানদের উত্তরসুরী আজকের জামাত-শিবির বিএনপির সঙ্গে বেঁধেছে গাঁটছড়া। এবঙ প্রায় নেতৃত্বহীন তাদের নেতৃত্ব দিতে বেগম জিয়া আঠার জট (আঠার জোটকে জট-ই বলি) পাকিয়ে দিব্যি লেলিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ অচল করার হরতাল-অবরোধের নজিরবিহীন কর্মসূচী চালিয়ে জনপদে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে। বিজয়ের মাসেও তারা মরিয়া আক্রমণাত্মক ধ্বংসাত্মক নাশকতায় লিপ্ত। সরকারের সঙ্গে বিরোধীতার নামে তাদের জঙ্গী সন্ত্রাস সেই একাত্তুরের হায়েনাদের মতোই। তারা সশস্ত্র চোরাগোপ্তা হামলা চালানোয় সুদক্ষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিবির। পুলিশের উপর চড়াও হতেও পারদর্শী। বিগত মাসগুলোতে তাদের বোমাবাজি জনমনের শান্তি হরণ করে একটা আতংকের বাংলাদেশ বানাতেই অপততপরতা চালাচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দন্ডাদেশ রুখতে। তাতে ইন্ধনদাতা সমাজের অনেক তথাকথিত ব্যাক্তিত্ব। যারা দেখেও দেখেন না জ্বলন্ত দগ্ধ স্বদেশ কার / কাদের নির্দেশে রক্তাক্ত আজ। তাদের খোঁড়া যুক্তিতর্কের মূল দোষারোপের চেষ্টা কেবল সরকারের উপর। যেন সরকারের পতন হলেই বিএনপি জামাতীদের নিয়ে দেশের চাকা ঘুরিয়ে দেবে যেন বা যুদ্ধাপরাধ আদতে অপরাধ ততোটা নয় যতোটা শেখ হাসিনা সরকার। অজনপ্রিয় এইসব জ্ঞানপাপীর বিরুদ্ধে এবার আমাদের সবার আওয়াজ তোলার দিন বিজয়দিনে। জনগণের দোহাই দিয়ে জনগণের উপর হামলা করবার দায়েই অপশক্তি আমাদেরই সন্মিলিত শক্তিতে রুখে দেবার সময় হয়েছে আজ। জনগণকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ভার আঠার জটের নেত্রীর। বলিহারি বিরোধীতার এই নজিরবিহীন নমুনা! বিবেকের বালাই নাই যাদের তাদের কি অধিকার থাকে রাজনৈতিক নেতানেত্রী হবার? এই প্রশ্নটা আজ সবার মনে।

যদি বা তারা নির্বাচনেও দিতো সন্মতি তবু তাদের অধিকার ছিনিয়ে নিতো জনগণই ব্যালটে জবাব দিয়ে। অর্বাচীন আমার এমনই ধারণা। আমাদের অহংকার একাত্তুরের চেতনামূল যারা উতখাতের অপচেষ্টায় মরিয়া উতখাত তাদের প্রাপ্য তরুণ প্রজন্মের হাতেই। এবারের বিজয় দিবসের বার্তাটি কিন্তু তারই সমুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বে উদাহরণ রচেছে আন্তর্জাতিক অনেক চাপ সত্বেও। বর্তমান সরকারের এটি একটি ঈর্ষনীয় সাফল্য। আঠার জটের তাইতো এত বিদ্বেষবিষে পোড়া জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচীর সহিংস্র তান্ডব। কিন্তু তারা যে স্বদেশের ধ্বংসযজ্ঞে মেতেছে আন্দোলনের নামে জনগণের তাতে এতটুকুও অংশগ্রহণ নেই। অংশ গ্রহণের কথাও অবান্তর। আমাদেরও বিন্দুমাত্র ভরসা নাই প্রধান বিরোধী দলের নেতৃত্বের উপর।

তাই সবার শেষ ভরসা একমাত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। যাঁর ইমেজ আজ আত্মপ্রত্যয়ী বঙ্গবন্ধুকন্যার সুযোগ্য ইমেজ প্রায় আয়রনিক। বাংলাদেশের অপরাজেয় চেতনামূলে আঘাতের জবাবে এই আয়রনিক নেতৃত্বই জরুরী। তাঁর ভরসাতেই বিয়াল্লিশ বর্ষের পুঞ্জীভূত বেদনাধারা বিজয়ানন্দের অশ্রুধারা বইয়ে দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের এবঙ বীরাঙ্গনাদের আত্মিক আশীর্বাদের মতোন বাংলাদেশের বাতাসে ঝরছে। দেখেদেখে আমাদেরও অবাঙ বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি হৃদয় হতে হৃদয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এতকাল এইতো চেয়েছিলাম। হ্যাঁ, এতোকাল এই চেয়েছিলাম। প্রিয় বাংলাদেশটা আবার অসাম্প্রদায়িক রাজাকারমুক্ত ঘাতক দালাল স্বাধীনতাবিরোধীমুক্ত হোক। চেতনাধারার পাঁজরজাগা "জয়বাংলা" শ্লোগানে পুনরুজ্জীবিত হোক। পাকিস্তানের পরাজিত অপশক্তির দৌরাত্মমুক্ত বিজয়ী বাংলাদেশ হোক। বিজয়দিনে সারা বাংলাদেশ উজ্জীবীত তারুণ্যে উড়িয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহত পতাকা সবুজের হৃদয়ে লাল সূর্যখচিত অহংকারের জয়ী পতাকা। একটু পরেই তিন লক্ষের অধিক কন্ঠের সুরে বাংলাদেশের বাতাসে বেজে উঠবে আমাদের আশ্চর্য মায়াবী হৃদয়ছোঁয়া জাতীয় সঙ্গীত - বঙ্গবন্ধু কবিগুরুর এই অবিস্মরণীয় গানটিকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত চয়ন করে বিশ্বের বিস্ময় রূপেই প্রতিষ্ঠা দিলেন। আমরা গর্বিত। জয়বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু। জয় বঙ্গবন্ধুকন্যা।

বিজয় দিবস ১৬-ই ডিসেম্বর ২০১৩ ইং

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত

0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ