এক মুঠো ভালোবাসা (২১তম পর্ব)

ইঞ্জা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ১২:০২:০১পূর্বাহ্ন উপন্যাস ২৮ মন্তব্য

ব্রেকফাস্ট শেষে সবাই রুমে ফিরে এলে অনিক আফরিনকে বললো, তুমি ব্যাগেজ গুছিয়ে নাও, আমাদের বারোটার সময় বেরুতে হবে।

ওকে, তোমার কিছু গুছিয়ে দিতে হবে?
না, তুমি যাও।
মা তোমাদের তো আমাদের চার ঘন্টা পর ফ্লাইট, তোমার আর বাবার লাগেজ গুছিয়ে নাও, ইন্টারকম বেজে উঠাতে অনিক এগিয়ে গিয়ে রিসিভ করে হ্যালো বললো।
অপর প্রান্ত থেকে রিসেপশনিস্ট বললো, মি. অনিক, আপনার জন্য থাই এয়ারলাইনস থেকে কল। (ইংরেজিতে)।
ইয়েস, প্লিজ।
হ্যালো মি. অনিক চৌধুরি?
ইয়াস।
স্যার আপনার এবং আপনার কমপিনিয়নের ফ্লাইট টিএইচ-37 ক্যানসেল হয়েছে, এর পরিবর্তে বিকাল পাঁচটায় টিএইচ-48 এ কনফার্ম করা হয়েছে (ইংরেজিতে)।
আর ইউ সিউর?
ইয়েস স্যার।
ওহ, ওকে ধন্যবাদ (ইংরেজিতে)।
কি হয়েছেরে অনিক, অনিকের বাবা জিজ্ঞেস করলেন।
বাবা বুঝলামনা, এয়ারলাইনস থেকে কল করে বললো আমাদের ফ্লাইট ক্যানসেল করে বিকাল পাঁচটার ফ্লাইটে দিলো।
বলিস কি, ফ্লাইট নাম্বার কত?
টিএইচ-48.

এতো আমাদের ফ্লাইট নাম্বার, আশ্চর্য হয়ে বললেন অনিকের বাবা।
কিন্তু ওরা কিভাবে জানলো আমি এইখানে উঠেছি?
কি বলিস?
অনিক ইন্টারকমে ওর মার রুমে কল দিলো, আফরিন রিসিভ করলে জিজ্ঞেস করলো, আচ্ছা আমরা এই হোটেলে শিফট করেছি তা কি এয়ারলাইন্সকে আপডেট করেছিলে?
জ্বি, গতরাতে আপডেট করেছিলাম, কেন কোন সমস্যা হয়েছে?
সমস্যা না, আমাদের ফ্লাইট ক্যানসেল করে পাঁচটার ফ্লাইটে দিলো।
তাই, আচ্ছা আমি কল করে কনফার্ম হয়ে নিচ্ছি।
আমাকে জানিও।
সিউর।
কিছুক্ষণ পর আফরিন অনিকের মাকে নিয়ে অনিকদের রুমে এলো দেখে অনিক জিজ্ঞেস করলো, কি খবর?
অনিক ওরা জানালো ওদের যে ফ্লাইটে আমরা যাওয়ার কথা ছিলো, ওইটা ক্যানসেল হয়েছে, এর বদলে টিএইচ-48 এ আমেরিকার যাত্রী গুলোকে দেওয়া হয়েছে।
কারণ কি?
ওরা বললো বিষয়টা যান্ত্রিক গোলযোগ।
ওহ, এতে ভালোই হলো, এখন আমরা সবাই এক সাথেই যেতে পারবো, অনিক বললো।
হুম তুইও তো চেয়েছিলি আমাদের ফ্লাইটে যাওয়ার জন্য, আফরিন বলেছে আমাকে, বলেই অনিকের মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন।

লাঞ্চ করেই অনিক সবাইকে নিয়ে এয়ারপোর্টে হাজির হয়ে চেকইন সেরে ভিতরে প্রবেশ করলো, এয়ারপোর্টের ভিতরে ছোট ছোট ব্যাটারি চালিত গাড়ী চলাচল করছে, অনিক ওর বাবা মাকে সহ আফরিনকে তুলে দিয়ে বললো, তোমরা গেইটের ভিতরে গিয়ে বসো আমি হেঁটেই আসছি।
শুনেই অনিকের মা তরাক করে নেমে গিয়ে অনিকের বাবাকে বললেন, তোমরা যাও, আমি আমার ছেলের সায়হে আসবো।
গাড়ী চলে গেলো অনিকের বাবার অবাক চোখ দেখা যাচ্ছে দেখে অনিকের মা ছেলের এক হাত জড়িয়ে ধরে হাসতে লাগলেন, সাথে হাত তুলে টা টা দিলেন।
মা তুমিও না বেশ পারো, চল এগিয়ে যায়।
পুরা ওয়াকওয়ের পাশেই বিভিন্ন ধরণের অর্নামেন্টস, ব্যাগ - স্যুটকেইস, পারফিউম, লিকার শপ, মেইকওভার আইটেম সহ বিভিন্ন ধরণের দোকান আছে, সব গুলোই ডিউটি ফ্রি শপ।
অনিক ওর মাকে নিয়ে এগিয়ে গেলো এক অর্নামেন্ট শপে, প্রচুর ধরণের অর্নামেন্টস আছে এইখানে, অনিক ওর মাকে বললো, মা কি পছন্দ হয় দেখো।
কার জন্য, পাল্টা প্রশ্ন করলেন উনি।
কেন তোমার জন্য।
অনিকের মা বেছে বেছে দুইটা ব্রেসলেট নিয়ে সেলস গার্লকে জিজ্ঞেস করলেন কোনটা কত দাম?
সেলস গার্ল জবাবে বললো, এগুলো ২২ কেরেটের।
অনিক কোনটা পছন্দ?
মা তুমি পছন্দ করো।

কার জন্য না বললে তো কিভাবে নিই, কপট রাগ দেখালেন অনিকের মা।
তোমার জন্য আর ছায়ার জন্য, অনিক মিষ্টি হেসে বললো।
ওহ আচ্ছা, আমার এখন লাগবেনা, আসার আগেই তোর বাবা কিনে দিয়েছে, আচ্ছা তাহলে এইটাই নিই বলে একটা এগিয়ে দিলেন সেলস গার্লের দিকে।
সেলস গার্ল বললো, ১৫০০ ইউএস ডলার।
অনিক ক্রেডিট কার্ড এগিয়ে দিলে সেলস গার্ল সেইটা সহ অর্নামেন্টসটা আরেকজনকে এগিয়ে দিলো, একটু পর তা সার্টিফিকেট, সেলস রিসিট সহ ক্রেডিট কার্ড রিসিট সহ দিলে অনিক সিগনেচার করে দিয়ে ওর মাকে বললো, এইটা তুমিই দিও ছায়াকে, মেয়েটা অনেক দুঃখি, এইটা পেলে খুশি হবে।
কেন তুই খুশি হবিনা, অনিকের মা খোঁচা দিলেন।
মা তুমি এইভাবে বলছো কেন, তোমাদেরকে সব বলেছি আমি।
আরেহ তোর সাথে মজাও করতে পারবোনা, অনুযোগ করলেন উনি।
মা, বলেই অনিক মাকে জড়িয়ে ধরলো।
আচ্ছা চল আর কি কিনবি?
দেখি চলো পাশের পার্ফিউমের শপে।
দুজনেই পার্ফিউমের দোকানে গিয়ে কয়েকটা পার্ফিউম নিয়ে ফিরে চললো গেইটের দিকে, একটা গাড়ী আসতে দেখে অনিক হাত দেখিয়ে দাঁড় করিয়ে নিজেরা উঠে বসলো।

........ চলবে।
ছবিঃ গুগল।

 

সোনেলার জন্মদিনে সোনেলার মডারেটর, এডমিন সহ সকল ব্লগারকে জানাই অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

শুভ জন্মদিন প্রাণ প্রিয় সোনেলা, ভালোবাসি তোমায়। 

0 Shares

২৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ