ধানাইপানাই করে এদেশে রাজনীতি করার দিন যে শেষ হয়ে গেছে, এখনো যদি উপলব্ধি করতে না পারেন তো অতলে হারিয়ে যাওয়া ছাড়া আপনাদের আর কোন গত্যন্তর দেখছি না।
টিভি স্ক্রিনে দেখছি, গণফোরামের নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নেবেন বলে ইংগিত দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। বলি কি, আপনারাও নিন। হোক না ৫টিই আসন, তবুও নিন। সংসদের ভেতরে-বাহিরে থেকেই জন সম্পৃক্ততা বাড়ান।
আওয়ামীলীগ কোনরুপ গণরোষ তৈরি না করেও শুধুমাত্র তাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দেবার কারণেই টানা ২১ বছর দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়নি। আর আপনারা তো একের পর এক কুকর্ম করে করে গণরোষকে তাতিয়ে দিয়েছেন। নাহয় নিয়মতান্ত্রিক পথে কালো ইতিহাসকে ছাপিয়ে আসতে আপনাদের ২১ অথবা ৪১ বছরই অপেক্ষা করতে হলো। তবুও স্বাভাবিক পথেই থাকুন। ২০০১, ২০০৪, সর্বশেষ ২০১৫ তে পেট্রোল বোমা! মা রে মা। একবার ভাবুন তো, শরীরে পেট্রোলবোমার আগুন নিয়ে শিশু মুনির দৌড়াচ্ছে আর নিক্ষেপকারীরা উল্লাসে ফেটে পড়ছে! উফফ! কি বিভৎস!!! আর? আর অন্যদিকে আপনাদের ভাবী নেতা লন্ডনে আয়েশি জীবন যাপন করছেন। তো? এরপরেও কিভাবে আশা করেন জনসম্পৃক্ততা থাকবে? এখন তো আর আগের দিন নেই যে ভিন্নপথে ক্ষমতার মসনদে আসবেন। চোরাগলি এখন ফকফকা। ডিজিটাল যুগ। কাজেই ফাঁকাবুলি, বাঁকাপথ এসবের চিন্তা বাদ দিয়ে রাজনীতির মূল পথে ফিরুন। অই আমেরিকার রাষ্ট্রদূত বা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা এরা কেউ কিছু করে দিতে পারবে না। সেদিন এখন আর নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বহুদূর এগিয়ে গেছে। বরং যাদের নেতৃত্ব দিতে চান, তাদের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়ান। উঁহু, ভুলভাল বুঝিয়ে নয়, সঠিক নির্দেশনার মাধ্যমে আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি করুন। এখন সবাই সব বুঝে। কাজেই সেইদিন শেষ।
মেজর জিয়ার দাম্ভিক উক্তি ছিলো,
"I will make politics difficult for the politicians"
গতকাল এই বাক্যটিকে কেন্দ্র করে এক ফেবুবন্ধুকে লিখতে দেখলাম, মেজর জিয়া বলেছিলেন আর শেখ হাসিনা তা করেছেন।
আর আমি বলি, মেজর জিয়া বলেছিলেন রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করবেন। আর শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য রাজনীতি কঠিন করেছেন।
তিনি এমনভাবে রাজনীতির আলপথে হেটে চলেছেন যে, ষড়যন্ত্রকারীরা এর পাকে পড়ে কেবল পাক খেয়েই যাচ্ছে। সত্যিই difficult।
রাজনীতি মানে রাজার নীতি (যদিও কেউকেউ রাজা শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলবেন আপনারা তাইলে প্রজা?) অর্থাৎ জনগণের নেতার নীতি। সেই নীতি যেমন হবে জনতার কাছে নেতার অবস্থানও তেমন হবে। জনতাকে টানতে হলে জনতার কাতারে দাঁড়াতে হয়। তাদের সুখকে নিজের সুখ চিন্তা করতে হয়। মেজর জিয়ার অনুসারীরা সেটা পারেননি। তারা নিজের সুখের অনুসন্ধানে মত্ত থেকেছেন। (এবারও মনোনয়ন বানিজ্য করে হাজার কোটি টাকার পাহাড় গড়েছেন) এভাবে কেউ জনতার নেতা হতে পারে? ভোগ নয়, ত্যাগই রাজনীতির চাবিকাঠি।
জনতার নেতা হতে হলে জনতার কাতারে নামতে হবে। জনতার অধিকার আদায়ে রাস্তায় পড়ে মার খেয়ে অধিকারের লড়াই করতে হবে। মাথার উপড় জেল জরিমানা থাকলে তা পেতে নিয়েই নামতে হবে। তা নয়তো রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়তেই হবে।
আর আরেকটি কথা। জন্মশত্রুদের পরিহার করুন। ২০১৩ সালের কথা মনে আছে তো? এই একটি পয়েন্টে কিন্তু সেদিন সারাদেশ এক লাইনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো।
জাতির অনুভূতি বুঝুন, জাতির সাথে থাকুন। ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করুন। ট্র্যাকে ফিরতে দেরী হলেও অন্তত ছিটকে পড়বেন না।
১১টি মন্তব্য
ইঞ্জা
অসাধারণ লিখলেন আপু, যথার্থ উপস্থাপন করেছেন। (y)
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
বিএনপিদের কথা ২০১৪ সালের সালের নির্বাচনের মত নিরবাচন আর হতে দেব না।
হয়নি হয়েছে ২০১৮ সালের মতই।
তবে ড. কামাল সাহেবের কিঞ্চিত উপলদ্ধি হয়েছে যে, তাঁরা শপত নিবেন।
সময়ের পরিক্রমায় দারুন লেখা। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
গনফোরাম তার অবস্থান আবার পাল্টেছে, যাবেনা তারা সংসদে। তবে এরা সংসদে না গেলে চরম ভুল করবে বলেই আমার ধারনা।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এখনো তারা স্থির সিদ্ধান্তেই আছেন, যাবেন না।
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা’পু ভালো লিখেছো।
একটা প্রশ্ন করি, সত্যিই কি নির্বাচন সততার সাথে হয়েছে? উদাহরণস্বরূপ অতীতের কালো নির্বাচনের কথা না তুলে বলো তো!
নতুন বছরের শুভেচ্ছা, শুভকামনা। ভালো থেকো। 🌹
মারজানা ফেরদৌস রুবা
শুভেচ্ছা।
কোন দেশেই ষোলআনা সততার সাথে নির্বাচন হয় না। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও না।
তৌহিদ
ভালো লিখেছেন আপু। আমাদের দেশের বেশীরভাগ নেতাই আর গনমানুষের জন্য রাজনীতি করেননা। যদি তাই করতো তাহলে সংসদ বর্জন করতোনা, যেমনটা করছে গণফোরাম আর ঐক্যজোট নেতারা।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সত্যিকার অর্থে নেতা হতে হবে গণমানুষের। কিন্তু পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় ভোগবাদ এতোই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এখন আর নেতা হয় অর্থবল আর বাহুবল যাদের আছে তারা। মোদ্দাকথা অর্থবলই মূল। আর তাই যেনোতেনো উপায়ে গণমানুষের সম্পদ চুরি করে বিত্তবান হওয়াই সার এবং এরই প্রতিযোগিতা চলে এখন। খুব শীঘ্রই পৃথিবীতে পুঁজিবাদ মুখ থুবড়ে পড়বে আর তা নয়তো সভ্যতার পতন ঘটবে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সত্যিকার অর্থে নেতা হতে হবে গণমানুষের। কিন্তু পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় ভোগবাদ এতোই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এখন যে, অর্থবল আর বাহুবল যাদের আছে তারা হয় নেতা। মোদ্দাকথা অর্থবলই মূল। আর তাই যেনোতেনো উপায়ে গণমানুষের সম্পদ চুরি করে বিত্তবান হওয়াই সার এবং এরই প্রতিযোগিতা চলে এখন।
খুব শীঘ্রই পৃথিবীতে পুঁজিবাদ মুখ থুবড়ে পড়বে, তা নয়তো সভ্যতার পতন ঘটবে।