ঈদুল আজহার তাৎপর্য এবং করণীয়।

ইঞ্জা ১ আগস্ট ২০২০, শনিবার, ১২:২৭:৫৭পূর্বাহ্ন সমসাময়িক ২০ মন্তব্য

আগামীকাল ভোর হলেই সবাই গোসল করে নামাজের প্রস্তুতি নেবেন, এরি মধ্যে মসজিদের মাইকে বারে বারে শুনা যাবে, ঈদ মুবারক, ঈদ মুবারক, নামাজের জন্য তৈয়ার হোন।

দলে দলে মানুষ যাবেন মসজিদের উদ্দেশ্যে, এই করোনাকালে মসজিদের কাতারে একটু দুরুত্ব বজায় রেখে সবাই বসবেন নামাজের অপেক্ষায়, এ সময় অনেকেই রোজাদার ব্যক্তি হবেন, যারা গরু জবাইয়ের পর প্রথম রান্নার মাংসের টুকরা দিয়ে রোজা ভাঙ্গবেন। 

এই ঈদুল আজহা সম্পর্কে কিছু বলি, মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম, এটি ঈদ আল-কুরবান বা ঈদ আল-নাহ্র নামেও অভিহিত হয়,  বাংলাদেশে এটি কুরবানীর ঈদ নামে পরিচিত।

ঈদ ও আযহা দুটিই আরবী শব্দ, ঈদ এর অর্থ উৎসব বা আনন্দ। 

আযহার অর্থ কুরবানী বা উৎসর্গ করা, হযরত ইবরাহীম (আ.) আল্লাহ তা’লার আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে প্রাণপ্রিয় জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে তাঁর (হযরত ইসমাঈলের) পূর্ণ সম্মতিতে কুরবানী করতে উদ্যত হন (৩৭ঃ ১০২, ১০৭)। মক্কার নিকটস্থ ‘‘মীনা’’ নামক স্থানে ৩৮০০ (সৌর) বছর পূর্বে এ মহান কুরবানীর উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাঁর ঐকান্তিক নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ হযরত ইবরাহীম (আ.)-কে তাঁর পুত্রের স্থলে একটি পশু কুরবানী করতে আদেশ দেন। আল্লাহর প্রতি অবিচল আনুগত্য ও নজিরবিহীন নিষ্ঠার এ মহান ঘটনা অনুক্রমে আজও মীনায় এবং মুসলিম জগতের সর্বত্র আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পশু কুরবানীর রীতি প্রচলিত রয়েছে।

উৎসর্গকৃত পশু, যা’ এক আল্লাহর উদ্দেশ্যে যবেহ করা হয়, আত্মীয়-স্বজন বিশেষত দুঃস্থ দরিদ্রজনের মধ্যে যা বিতরণ করে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক তাঁর সান্নিধ্য লাভ করার চেষ্টা চালান হয়, সে সার্থক প্রচেষ্টার যে আত্মিক আনন্দ তাই ঈদুল আযহা নামে অভিহিত হয়। এ দিনে মীনায় হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর অনুপম কুরবানীর অনুসরণে কেবল হাজীদের জন্য নয়, বরং মুসলিম জগতের সর্বত্র সকল সক্ষম মুসলমানদের জন্য এ কুরবানী করা ওয়াজিব (মতান্তরে সুন্নাঃ মুআক্কাদা)।

ঈদুল আযহা ১০ই যু’ল-হিজ্জা, যে দিন পবিত্র হজ্জব্রত পালনকালে হাজীরা মীনা প্রান্তরে কুরবানী করেন এবং তৎপরবর্তী দুই দিনে, মতান্তরে তিন দিনও (আয়্যাম-আল-তাশরীকে) অনুষ্ঠিত হয়। (সূত্রঃ গুগল)

ঈদের নামাজের শেষে সবাই তাড়াতাড়ি কুরবানি দেওয়ার উছিলায় কুরবানি স্থলে পোঁছে যাবেন, উপস্থিত হাজিরানা মসলিসের সামনে মওলানা তার ধারালো ছুরি বা কিরিচ নিয়ে তৈয়ার হবেন কুরবানি দেওয়ার জন্য, কুরবানি দাতার গরু হলে পরিবারের সাত জনের নাম, ছাগল বা ভেড়া হলে একজনের নাম বলবেন মওলানাকে, মওলানা আল্লাহ্ রাসুলের নামে সুরা পাঠ পূর্বক জবেহ সম্পাদন করবেন। 

কুরবানি দেওয়া পশুর সব স্থানের মাংস নিয়ে মাংস রান্না করাকে সিন্নি বলা হয়, যাহা ফাতিহা পাঠ পূর্বক তা উপস্থিত মসলিশ, গরীবদের মাঝে দেওয়া হয় আটার রুটি, চালের রুটি, পরোটা সহযোগে খাওয়ার জন্য।

মনে রাখতে হবে, গরুর রক্ত এবং বর্জ্য সঠিক ভাবে পরিস্কার করে হয় মাটিচাপা দিন, নাহয় নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলার ব্যবস্থা করুন, সাথে কুরবানি দেওয়া স্থানে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। 

আসুন সবাই মিলে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি যেন উনি আমাদের এই কুরবানি কবুল করেন এবং যেন বর্তমানের করোনাকাল যেন দূর হয়ে যায় তার জন্য দোয়া কবুল করেন, আমীন। 

সোনেলার সকল ব্লগার ও পাঠককে সোনেলার ব্লগ কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে ঈদুল আজহা মুবারক।

ঈদ মুবারক।

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ