আমি আবারও অসুস্থবোধ করছি!
কিছু ঘটনা আমাকে স্থির থাকতে দেয় না।
কতোক্ষণ একটানা দম মেরে ছিলাম,
টের পাইনি।
হবে হয়তো; বিশ কিংবা ত্রিশ মিনিট।
চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে নামছে
লোনাজল,
আমার নারী জন্মের যন্ত্রণাকর উপলব্ধি।
আহা, মেয়েটি!
কতোই বা বয়স ছিলো তার?
সতেরো বা আঠারো হবে হয়তো।
ছিঁড়ে খুবলে সবটুকু তার নিংড়ে নিয়ে
ফেলে চলে গেলো কতোগুলো দানবের দল।
আমি আবারও অসুস্থবোধ করছি!
আমার সহ্য হচ্ছে না।
অহ! কী ভীষণ যন্ত্রণাকর
আমার এ নারী জন্ম।
আমি সহ্য করতে পারছি না।
একেবারেই পারছি না।
দানবগুলোর সাথে যুদ্ধ করার
কোন শক্তিই ছিলো না মেয়েটির
বিধাতার উপহাসের দানে
এ শরীর; উন্মুক্ত অবয়বে পুরুষের যেমনইচ্ছা
ভোগের উপকরণ!
আমার আর সহ্য হচ্ছে না,
মেয়েটির অসহায়ত্বের চেহারা মনে করে।
আমি আবারও অসুস্থবোধ করছি!
স্থির থাকতে পারছি না।
আমি মেয়েটির মায়ের পাশে বসেছি
তার যন্ত্রণাকে উপলব্ধি করে শিহরিত হচ্ছি।
কী নির্মমতা!
চোখের সামনে থেকে মেয়েটিকে
হেঁচকাটানে নিয়ে গেলো তুলে।
বাকরুদ্ধ মা কিছুই আর বলতে পারছে না।
ক্ষণেক্ষণে মূর্ছা যাচ্ছে।
হুস ফিরলে কপাল চাপড়াচ্ছে।
এসব দেখেদেখে
আমি আবারও অসুস্থবোধ করছি!
নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছি না।
আমি এবার মেয়েটির বাবার পাশে গিয়ে বসি।
কন্যার নারী জন্মের যন্ত্রনার নীল বিষ
পিতার পিতৃত্বকেও
নীলে নীল করে তুলেছে।
এখানে আমার আর কন্যাটির পিতার
যন্ত্রনার রঙ এক হয়ে দেখা দেয়।
বিকারহীন পিতার অপলক চাহনি,
আর হৃদয়ের হাহাকারকে
সকরুণ দৃষ্টিতে এক পলক দেখে নিয়ে
চোখ ফিরাই।
সহ্য হয়না আমার,
আমি অসুস্থবোধ করি!
এই দেখতে দেখতে আমি বোধহয়
অসুস্থই হয়ে যাচ্ছি।
#রুবা
২৩/১০/২০১৯
৬টি মন্তব্য
এস.জেড বাবু
বিকারগ্রস্থ মস্তিস্কের অসুস্থ কর্মকান্ড প্রতক্ষ্য করলে নিজেকে অসুস্থ হতে হয়।
চমৎকার মানবিক উপলব্ধি।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ।
আরজু মুক্তা
আসলে অসুস্থ বোধ না অসুস্থই।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
পরিস্থিতি যেমন, সুস্থ থাকাই দায়।
মনির হোসেন মমি
মনকে নাড়া দিয়ে গেল লেখাটি।মানুষের কর্মকান্ড কখনো কখনো পশুকেও হার মানায়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ।