আজমির শরীফ (২য় পর্ব)

ইঞ্জা ২ অক্টোবর ২০১৯, বুধবার, ০৮:২৩:৫৪অপরাহ্ন ভ্রমণ ৩২ মন্তব্য

মাতোয়ালী আমাকে জিজ্ঞেস করলো, খাজা বাবার দরবারে দেওয়ার জন্য গোলাপ পাপড়ি ও গিলাফ নিতে চাই কিনা?

জবাবে বললাম, গোলাপ পাপড়ি নেবো শুধু।
উনি বুঝে গেলেন আমার নিয়ত, এক দোকানে নিয়ে গিয়ে এক ঝুড়ি গোলাপ পাপড়ি কিনে দিলেন, এরপর আমাকে নিয়ে এগিয়ে চললেন গেইটের দিকে, গেইটের ভিতর নিয়ে গিয়ে প্রথমে নিয়ে গেলেন দরবারের ঔরস শরীফের জন্য রাখা বড় ডেক (ডেকচি) যেখানে রাখা সেই জায়গায়, ওখানে যে দুইটা ডেক রাখা আছে তা দেখে আমি অবাক হলাম।
ডেক গুলোর বড়টাতে কমছে কম বিশজন মানুষ ভিতরে আরামসে বসে থাকতে পারবে, আর ছোটটা কিছুড়া ছোট বড়টার তুলনায়।
জিজ্ঞেস করলাম এতো বড় ডেকে কিভাবে রান্না হয়, নিচে দেখছি বড় চুল্লি এর উপরে ডেক, রান্না করলেও সেখান থেকে খাবার কিভাবে তোলা হয়?
উনি জানালেন, রান্নার পর হট প্রুফ ড্রেস পড়ে কয়েকজন লোক নামে এই ডেকের ভিতর, ওরাই খাবার তুলে দেয়।

উনি আমাকে বললেন, অনেকে এইখানে আসেন মানত করে, ওরা কেউ কেউ মানত অনুযায়ী পুরা ডেকের খরচা দেন, আবার অনেকে শেয়ার করেন, যেমন ভিতরে দেখুন অনেক টাকা পয়সা ডেকের ভিতরে দেওয়া আছে, যার যা মানত সেই অনুযায়ী লোকজন টাকা ডেকের ভিতরে দিয়ে যান।

ছোটবেলায় শুনেছিলাম আমার আব্বা পুরা ডেকের টাকা দিয়েছিলেন, আমি নিজেও মানত করে কিছু টাকা ডেকের ভিতর দিয়ে দিলাম।

এরপর আমরা এগিয়ে গেলাম খাজা বাবা মইনউদ্দিন চিশতির দরবারের উদ্দেশ্যে।
খাজা বাবা, যার ডাক না আসলে নাকি কেউই উনার দরবারে যেতে পারেননা, উনার দরগাহ জিয়ারত করে অনেকের মনের আশা পূরণ হয়েছে।
আমি অধীর আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি খাজা বাবার দরবারের দিকে, চুম্বকের মতো যেন আমাকে টানছে খাজা বাবা।

কথিত আছে বড় পীর হিসেবে সুপরিচিত আবদুল কাদির জিলানী (রহঃ)– এর সাথে তাঁর সম্পর্ক এতোই ভালো ছিল যে, কিছু কিছু জায়গায় খাজা মঈনুদ্দিনকে তাঁর ভাগ্নে বলেও উল্লেখ করা হয়।
তাঁর জীবনীতে বর্ণিত আছে, ইরাকের বাগদাদে আবদুল কাদির জিলানীর সাহচর্যে ৫৭ দিন অবস্থান করেন তিনি।
এ সময় জিলানী তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ইরাকের দায়িত্ব শেখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দীকে আর হিন্দুস্তানের দায়িত্ব আপনাকে দেয়া হলো।”
এরপর খাজা বাবা তখন ভারতবর্ষে আসেন এবং ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন, উনি সাতানব্বই বৎসর বয়সে ইন্তেকাল করেন, উনার দাফন এইখানেই করা হয়।

আমাকে প্রথমেই খাজা বাবার দরগাহ ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়, আমি জিয়ারত শুরু করলে মাতোয়ালি সাহেব সাথে আনা গোলাপ পাঁপড়ি খাজা বাবার দরগাহর উপর ছিটিয়ে দিতে লাগলেন।

......... চলবে।

ছবিঃ গুগল।

0 Shares

৩২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ