অপরাজিতা (শেষ পর্ব)

অনুশঙ্কর গঙ্গোম্যাক্সিম ২৬ নভেম্বর ২০১৩, মঙ্গলবার, ০১:১০:০৩পূর্বাহ্ন বিবিধ ৭ মন্তব্য

পরন্তু বিকেল,ঝিরিঝিরি বাতাসে এলোমলো হাওয়ায় উড়ছে অপরাজিতার চুল। তুহিন এখনও আসেনি।নীল শাড়ি,খয়েরি রঙের চাদর,কপালে লালটিপ হাতে সোনালি চুড়িতে খুব সুন্দর লাগছে অপরাজিতাকে। একটু পরেই হলুদ পাঞ্জাবি আর জিন্স প্যান্ট পড়ে আসে তুহিন। অপরাজিতা দুহাতে বাড়িয়ে তুহিনকে বুকে টেনে নেয়,অপরাজিতার চোখের কোণে জল টলমল করছে।নিজ হাতে তুহিন টিস্যু দিয়ে অপরাজিতা চোখ মুছে দেয়। দুজন সবুজ ঘাসের উপর গিয়ে বসে, সেই পুরনো সুখ দুঃখের স্মৃতিচারণে মগ্ন। অপরাজিতার হাত তুহিনের হাতের উপরে রেখে বলল আর কখনও আমাকে ছেড়ে যাবেনা তো?
-না,তুমি আমাকে ও আগলে রেখো।
-বাবা মারা যাওয়ার পর, আত্মীয়স্বজন উঠেপড়ে লেগেছে বিয়ের জন্য। কিন্তু আমি রাজি হয়নি।
-সমস্যা কি বিয়ে করে ফেল!
-আমি এখনও তোমাকে ছাড়া জীবন সঙ্গী হিসেবে কাউকে ভাবতে পারিনা।
-দেখ,আমার লেখাপড়া শেষ হতে এখনও একবছর বাকি, তাছাড়া বেকার। তোমার ফ্যামিলি কি মেনে নিবে।
-যেহেতু আমি বড়, তাই আমার পছন্দকে সবার মানতে হবে, হয়তো সাময়িক কয়েকটি দিন একটু কষ্ট হবে আর কি।
-আমি তোমাকে বিয়ে করে রাখার মত জায়গা ও তো নেই আর খাওয়াবো বা কি আমি যে বেকার।
-সমস্যা নেই, আমার কাছে কিছু জমানো টাকা আছে, আর দুজনেই যেহেতু মোটামুটি শিক্ষিত টিউশনি করে আপাতত চলতে পারব,একবছর পরেই তো দুজনের লেখাপড়া শেষ হচ্ছে তখন জীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করা যাবে।
-তুহিন গম্ভীর,আচ্ছা যদি কখনও আমাদের সংসারে দারিদ্র্য,দুঃখ কষ্ট আসে তখন নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে তো?পারবে ঝড়ের বিপরীতে দাঁড়াতে?
-কেন পারবো না, তুমি পাশে থাকলে সব পারব। অপরাজিতা তুহিনের বুকে মাথা রাখে।
সন্ধ্যা প্রায় নেমে এলো,পশ্চিমের আকাশে সন্ধ্যাতারা উঠেছে,উওর দিক থেকে হিমশীতল বাতাস বহিছে। অপরাজিতা চাদরে আগলে রাখে তুহিনকে।। উঠে দাড়িয়ে দুজন একসাথে পা ফেলে হাটতে শুরু করে। আজ তাদের গন্তব্য কাজী অফিস। আজ অপরাজিতার মন খুলে গাইতে ইচ্ছে করছে "এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায় একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু, কোন রক্তিম পলাশের স্বপ্ন মোর অন্তরে ছড়ালো গো বন্ধু "।

0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ