ছোটবেলায় রোজার মাসে আমি নিয়মিত ইফতার খেলেও প্রায় সময়ে সেহেরি খেতে পারতাম না। ঘুম ভাঙতো না। মা, বাবা, নানা নানী, খালা মামা, এমনকি বাড়ির পোষা মোরগ-মুরগিদেরকেও অনুরোধ করতাম যেন ঠিক সময়মতো

আমাকে ডেকে দেয়। মা অনেক ডাকতো,কিন্তু সেহেরির বেশিরভাগ সময়েই আমাকে জাগাতে ব্যর্থ হতেন।

আমি অনেক দেরিতে রোজা রাখতে শুরু করেছিলাম।

ক্ষিদে সহ্য করতে পারতাম না। যখন ক্লাস সিক্স/সেভেনে পড়তাম সম্ভবত তখন থেকে রোজা রেখেছি। ক্লাসে গিয়ে যখন শুনতাম আমার সহপাঠীরা কেউ এতগুলো, কেউ সবগুলো রোজা রেখেছে তখন খুব আত্মসম্মানে লাগতো। মনে রোখ চেপে গিয়েছিল, আমিও রোজা রাখবো সেহেরি খাই বা না-খাই। তখন থেকে সেহেরির সময় আমাকে ডেকে উঠাতে মায়ের বেশি কষ্ট করতে হয়নি,অল্প ডাকাডাকিতেই উঠে যেতাম। কিন্তু সবগুলো রোজা রাখা সম্ভব হতো না। কারণ মেয়েদের শারীরিক চক্রের নিয়মানুযায়ী তের/চৌদ্দ বছরের পর থেকে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত কোন সুস্থ মেয়ের পক্ষে একাধারে ত্রিশ রোজা রাখা সম্ভব না।

একটা সময় ঘুমের কারণে সেহরি খেতে পারতাম না। এখন সেহেরি পর্যন্ত কীভাবে যেন জেগে থাকি! সারাদিনের কর্মব্যস্ততা ক্লান্তি কোনকিছুই আমাকে ঘুমে আচ্ছন্ন করে না। ঘুমানোর চেষ্টাও করি না।

ছোটবেলায় মা ডেকে দিবেন, তাই হয়তো নিশ্চিন্ত মনে বেঘোরে ঘুমাতাম।

সেহেরির সময় মেয়েদের যখন ডেকে তুলি,মনেহয় ওদের ঘুমে আধবোজা চোখগুলো আমায় বলছে ❝ মা তুমি ডাকবে বলেই আমরা এমন বেঘোরে ঘুমাই ❞

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ