সায়নোএক্রিলেট (Cyanoacrylate)

জি.মাওলা ২৬ আগস্ট ২০১৪, মঙ্গলবার, ০৫:৪০:২৭অপরাহ্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ২ মন্তব্য

সায়নোএক্রিলেট (Cyanoacrylate)

আঠা বা গাম ও সুপারগ্লু সবার কাছে  নামে পরিচিত জোড়া তালি দেবার এই উপকরণ গুলি যা আমারা প্রায় কিছু না কিছু কাজে ব্যবহার করে থাকি। প্রয়োজন ভেদে এই আঠার ধরণ বা শক্তিতে যেমন পার্থক্য রয়েছে তেমনি পার্থক্য রয়েছে ব্যবহারেও। আঠা বা গাম সাধারণত পাতলা কাগজ বা এই ধরনের কিছু জোড়া দিতে আমরা ব্যবহার করে থাকি। এ ছাড়া বর্তমানে রং এর সঙ্গে মিশিয়ে রং করার কাজেও ফেভিকল গাম খুব পরিচিত আমাদের কাছে। তাছাড়া আধুনিক আসবাপপত্রের জয়েন্ট শক্ত করার কাজেও বহুল ব্যবহারিত হয় এই ফেভিকল গাম। আর হিন্দি গানের কলিটা নিশ্চয় ভুলে যাননি। আর সুপারগ্লু একটু শক্ত যেমন প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস পত্রের জোড়া দিতে খুব প্রচলিত। এ ছাড়াও বিভিন্ন কাজে ব্যবহারিত হচ্ছে  সায়নোএক্রিলেট (Cyanoacrylate) বা সুপারগ্লু।

Cyanoacrylate adhesives, commonly known as instant adhesives in the industrial world (and super glue in the consumer market), are a category of thermoplastic adhesives that are known for rapid fixturing and very high shear strength performance on most plastic, metal, and rubber substrates. Cyanoacrylates or CA adhesives, are ideally suited for bonding applications in high-throughput and fast cycle time manufacturing operations.

>> ব্যবহারঃ সায়নোএক্রিলেট (Cyanoacrylate) বা সুপারগ্লুর বিভিন্ন ভারসান আজ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারিত হচ্ছে। যেমন—

১।ইলেকট্রনিক্স জিনিস পত্রে।

২।অ্যাকুরিয়াম

৩।যে কোন গর্ত বন্ধ করতে

৩। ফরেনসিক ল্যাবে

৪।মেডিকেল শাখায় সার্জারিতে

৫।কসমেটিকে

>ইতিহাসঃ

কোনো কিছু জোড়া দেওয়ার জন্য বা আটকানোর এই পদ্ধতির চলটি কিন্তু শুরু হয়েছিল খ্রিস্টের জন্মেরও প্রায় হাজার চারেক বছর আগ থেকে। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা সে সময়কার নিদর্শনের মাঝে এমন অনেক মাটির পাত্র খুঁজে পেয়েছেন যেগুলো গাছের আঠালো রস দিয়ে জোড়া লাগানো। অন্যদিকে প্রাচীন গ্রিসের অধিবাসীরা যে ডিমের সাদা অংশ, রক্ত, হাড়, দুধ, মাখন বা সবজির মতো বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে আঠা বানাতে জানতো সেটিও প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়।

>বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনঃ

জানা জায় আঠা বা গাম বা সুপারগ্লু সর্বপ্রথম বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ব্রিটেনে।বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন আঠা বা গাম বা সুপারগ্লু উত্পাদনের জন্য প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বা প্যাটেন্ট হয় ১৭৫০ সালে ব্রিটেনে। এ ছাড়া এর কাছাকাছি সময়ে প্রাকৃতিক রাবার, প্রাণীর হাড়, মিল্ক প্রোটিন বা সিজনের মতো উপাদান ব্যবহার করেও আঠা উত্পাদন শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

>> আধুনিক সুপারগ্লুঃ

বর্তমানে কোনো কিছু জোড়া দেওয়ার জন্য সবচেয়ে কাজের পণ্য হিসেবে যে সুপারগ্লুকে আমরা চিনি সেটির আবিষ্কার হয় আরও পরে, ১৯৪২ সালে। এ সময় কোডাকের রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে অপটিক্যাল ক্লিয়ার প্লাস্টিক তৈরির জন্য গবেষণা করছিলেন ড. হ্যারি কুভার। আর এই গবেষণারই এক পর্যায়ে তিনি আবিষ্কার করেন সায়নোএক্রিলেট নামের একটি যৌগ। যদিও মজার বিষয় হলো, খুব আঠালো বলে এটি ব্যবহার অসুবিধাজনক ভেবে সে সময় এ যৌগটি নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাননি কুভার। পরবর্তীতে ১৯৫১ সালে ইস্টম্যান কোম্পানির সাথে কাজ করার সময় আবারও সায়ানোএক্রিলেট নামের এই যৌগটির দিকে চোখ পড়ে কুভার ও ফ্রেড জয়েনার নামের আরেক গবেষকের। তারা লক্ষ করেন যে, জয়েনার যখন রিফ্র্যাক্টোমিটার প্রিজমের মাঝখানে এই যৌগটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন তখন প্রিজমগুলো খুব দ্রুতই একটার সঙ্গে অন্যটা আটকে যাচ্ছে। যদিও মজার বিষয় হলো, জয়েনারও কিন্তু আঠা আবিষ্কারের জন্য এই যৌগটি বানাননি। বরং তার উদ্দেশ্য ছিল জেট ক্যানোপির জন্য তাপরোধী একটি পলিমার তৈরি। অবশেষে, পর পর দুটি ঘটনা দেখার পর কুভার সিদ্ধান্ত নেন যে, অন্য কোনো কাজে নয়, বরং শক্তিশালী আঠা হিসেবেই কাজে লাগানো যাবে সায়ানোএক্রিলিন নামের এই যৌগটিকে। আর এভাবেই গেল শতকের পঞ্চাশের দশকের একেবারে শেষভাগে বাজারে আসে আজকের দিনের শক্তিশালী সুপারগ্লু।

সুত্রঃ পত্রিকা ও নেট।

0 Shares

২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ