মূর্তি আর ভাস্কর্য যারা এক সাথে গুলিয়ে ফেলেন তারা আবার ইসলামের কাণ্ডারী! আমার ভাবতে অবাক লাগে যারা আজ আল্লাহর দোহাই দিয়ে ইসলাম ধর্মকে পুঁজি করে ভাস্কর্য ভাঙ্গায় মত্ত তারা এতো দিন কোথায় ছিলেন?

* যখন মাদ্রাসাগুলোতে একটার পর একটা ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছিল ?
* যখন দেশের এতো এতো দুর্নীতিবাজ ধরা পড়ছেন?
* যখন দেশের সাধারণ জনগণ বাজার দর এর ঊর্ধ্বগতিতে অস্থির?
* কারো কী মনে পড়ে ইসলামের লেবাসধারী এসব নেতাদের কেউ কোন একটি জন কল্যাণকর কাজে যোগ দিয়েছিলেন? নাকি দেশ ও জনতার স্বার্থে সংকটকালে জনগণের সাথে রাজপথে ছিলেন?

তখন তারা কোথায় ছিলেন? নাকি ধর্ষনের মহামরীতে নিজ জাত ভাই নিয়োজিত ছিলো বলে চুপ ছিলো যেমনটি চুপ ছিলো ১৯৭১  মুক্তিযুদ্ধে।বাজার দর এর উর্ধ্বগতি জনগনের সমস্যা হলেও তাদের সমস্যা হয় না কারন তাদের অন্ন যোগার আল্লাহর ওয়াস্তেই আসে আর ঐ সব দুর্নীতিবাজরা ছিলেন বলেই তারা মোটা অংকের ডোনেট নিয়ে বেচে আছেন।

কাজেই এসব দেখতে এসব অনিয়ম ধর্ষন নিয়ে কথা বলতে, রাজপথে নামতে , প্রতিবাদ না করতে ঐশ্বরিক ভাবে হয়তো তাদের কাজে ওহী এসে ছিলো কারন বিশ্বের এই একটি মাত্র দেশ যেখানে আল্লাহ মনে হয় সরাসরি প্রেরিত আল্লাহর নেক বান্দারা বসবাস করেন।যাদের দৃষ্টিতে মূর্তি আর ভাস্কর্য এক ও অভিন্ন। অথচ সৌদি সহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও রয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে অসংখ্য ভাস্কর্য।আমাদের তথাকথিত ভাস্কর্য ভাঙ্গার মুসলিম নেতাগো কথা ও কাজ দেখলে মনে হয় যেসব দেশে শতভাগ মুসলমান এবং ভাস্কর্য আছে তাদের ভন্ড মনে হয়।

আজকে যারা যুগ যুগ ধরে ইতিহাস ঐতিহ্যের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে সেসব ভাস্কর্যকে মূর্তি বলে বিরোধীতা করছেন তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হল কুষ্টিয়ায় নির্মিত শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যে আঘাত করে নতুবা তারা দেশের আরো অন্যান্য ভাষ্কর্যেও আঘাত করত। তাদের উদ্দেশ্য যেমনটি ছিলো ১৯৭১সালে পাকিদের সমর্থনে আজও তারা তাই করছে। প্রথমত ৫মে শাপলা চত্বরে গেইম খেলে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করে দ্বিতীয়ত আল্লামা শফি হুজুরকে মেরে নিজেদের জামাতী রূপটি জনগনের মাঝে পরিষ্কার করলেন।

তাদের বুঝা উচিত এ দেশটিে এখন যে স্বাধীনতার কথা বলছেন যে মাটির উপর দাড়িয়ে আছেন সেই দেশটির জন্ম দাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং তার সহযোগী গন।তাদের বুঝা উচিত এ দেশ স্বাধীনে আত্মত্যাগে মৌলবাদী টাইপ ব্যতীত অন্যান্য মুসলমানদের সাথে ভিন ধর্মীও লোকদের আত্মত্যাগও ছিলো লক্ষণীয়।সুযোগ দেয়াতে আজকে তৈরী পুলার বাপ সেজে যে বাহাদুরী দেখাচ্ছেন তার জবাব জনগণ অবশ্যই দিবেন। এদেশে ইসলাম ধর্মের অনুসারী শুধু আপনারাই নন আমরাও আছি, হাদিস কোরান শুধু আপনারাই জানেন না আমরাও জানি।

সুবিধাবাদী তথাকথিত ধর্মান্ধরা ছাড়াও এদেশে শান্তিপূর্ণভাবে সকল ধর্মের সহাবস্থানে বসবাস করা মুসলিমদের মনে ইসলামের ভুল ব্যাখা দিয়ে যে লাভের চিন্তা করছেন তা মুলত তাদের স্বার্থসিদ্ধি চরিতার্থ করার প্রয়াস।স্বাধীন দেশটিতে সংসদ আছে, আইন আদালত আছে।  প্রয়োজনে তারা আইনি লড়াই লড়তে পারতেন। তা না করে ত্রাসের রাস্তা বেছে নিয়ে দেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন যা শান্তির ধর্ম ইসলামের পরিপন্থি।একদিকে তারা ভাস্কর্যকে মূর্তি বলে শিরক নামে ধর্মের বিরোধে দার করিয়ে নিজেরাই ত্রাস করে অপরাধীর বিচার হাতে তুলে নিয়ে আল্লাহর সাথে পরোক্ষভাবে শিরক এ মত্ত আছেন- এটা কখনোই ইসলামের কাম্য নয়।কারণ ভাল মন্দ  বিচার করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ বিচার করেন বান্দার নিয়ত দেখে।

ইসলাম ধর্ম সব কিছুতেই সমান  চোখে দেখেন।আর আমার দেশের তথাকথিত কিছু আলেমরা ইসলামের ভেতর নানান রঙ দেখান নানান মতপার্থক্য দেখান।যে মানুষটার জন্য এ দেশ পাইলি, যে মানুষটা সহ তার পুরো পরিবারকে হত্যা করলি সেই মানুষটার যক্ষের ধন আজ যখন দেশকে একটি উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন তখন তার কর্মকাণ্ডকে বাঁধাগ্রস্থ করতে অবশেষে বেছে নিলি বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতির পিতার ভাস্কর্যকে!! তোরা কত বড় হারামি নিমক হারাম জনগনের কাছে তা স্পষ্ট হয়ে গেল এবং জনগণই এর জবাব দিবে।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

  • সাবিনা ইয়াসমিন

    এক শ্রেণীর মানুষের কর্মকান্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে নয় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। জাতি হিসেবে এটা দুঃখজনক এবং অবশ্যই লজ্জাজনক। যার প্রতিনিধিত্বের কারণে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি, স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের সামনে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি তার অবদানকে স্বীকৃতি দিতে চাচ্ছি না।

  • সুপর্ণা ফাল্গুনী

    প্রতিদিন হাস্যকর কিছু শুনতে ও দেখতে হয়। হুজুগে বাঙ্গালী এখন ভাস্কর্য ও মূর্তি পূজারে এক কাতারে ফেলে অস্থির করতে চাইছে সাধারণ জনগণ কে। অথচ মাদ্রাসায় এমন জঘন্য অনাচারে একজন ও কোনো আওয়াজ তুললো না। আবার ফ্রান্সরে বয়কট করে কিন্তু নিজের দেশের অন্যায়ের কোনো প্রতিবাদ করেনা। ফেবু তো হলো সব নেক বান্দাদের আখরা। বাংলাদেশ ই খাঁটি মুসলমান এর জন্মভূমি!! সৌদি আরবের ওরা কিন্তু এসবে কর্ণপাত করছে না তখন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। সৌদি আরবে যে নারীরা ধর্ষিত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে বা দেশে ফিরে আসছে তার জন্য একটা টু শব্দটিও করলো না। সৌদি না হয়ে অন্য কোন বিধর্মীদের দেশ হলে ঠিক বয়কট করতো, তোলপাড় হতো। এসব লোকজন ধর্মের উছিলা খুঁজে মিছিল, আন্দোলন করে কিন্তু দেশের অন্য সমস্যায় এরা ইঁদুরের গর্তে লুকিয়ে থাকে। দুদিন পর পর ইস্যু তৈরি করে দেশটাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এরা কারা?

  • মোঃ মজিবর রহমান

    ঘটনা বড়ই দুঃখজনক।
    তবে আমি দেশের টাকা খরচ করে মোড়ে মোড়ে এই খরচ মেনে নিতে পারিনা। এতে সরকার ও অবিসংবাদিত নেতার কোন মুল্যায়ন হয়না। যেমনঃ-

    ১. ধর্ম মতে হোক আর যেভাবেই হোক কোন উপকারে আসেনা।
    ২. অর্থ অপচয় ঘটে।
    ৩. মানুষের সামনে ছবি বা ভাস্কর্য করে রাখলেই ভালোবাসবেনা।
    ৪. বর্তমান সরকার পথেঘাটে ও অফিস আদালতে নীতিবাক্য ও ছবি ঝুলিয়ে রেখে কোন সুবিধা করতে পারবেন না। কারোন সরকারে ও আওয়ামীলিগ দলের মাঝেই তাঁকে মুল্যায়ন কতটুকু করে নেতাকর্মীরা কোন সম্মেলন বা অনুষ্ঠানে বুঝা যায় ব্যক্তি স্বার্থে ছবি পা দিয়ে দুম্লিয়ে মুষড়িয়ে অপমান করে। সরকারী অফিসে ঘুষ ও দল্বাজী সারা কাজ হয়না। নীতিবাক্য গোরস্থানে।
    ৫. আর বর্তমানে ধর্মের নাম বেসাতি দূর করাও সরকার পারবেনা, তাঁর উদাহরণ অনেকেই জানেন স্বার্থে বেস্বার্থে কি করে।
    ৬. বিশ্বে করোনা টিকা জনগনকে দেওয়ার জন্য সরকার প্রধানরা উপায় করছে আর আমাদের দেশে দরবেশ বাবাকে দিলেন টাকা কামানোর মেশিন।
    ৭. যদি তুলনা করেন দেশের জনগনের বেকার দূর করার জন্য মুজিব বর্ষে কোন মিল্কারখানা চালু করত তা অনেক মানুষ পক্ষে থাক্ত।
    ৮. মুজিব বর্ষে টিকা ফ্রী দেওয়ার ঘোষনা দিয়ে মানুষের মাঝে আরও বেশি সাড়া জাগানো যেত।
    ৯. ধর্মের নামে বেসাতি রা যাতে কঠর হস্তে দমন সরকার করতে পারবেনা, কারণ যারা সংবাদ পড়ে তারা অবগত।
    ১০. জামাতও আওয়ামিলীগ করে নিরাপত্তা পায় কিন্তু আওয়ামিলীগ করেও নিরাপত্তা ও সুবিধা পায়না আওয়ামিলীগ দালালের জন্য। এটা কুরার খমতাও সরকার হারিয়েছে।

    বেশি বলবনা ডিজিটাল খপ্পর আছে। সবাই ভালো থাকুন।

    • মনির হোসেন মমি

      আপনার কথাগুলোও ফেলনার নয় তবে স্বাধীনের পর হতেই বঙ্গবন্ধুর নামটিও কেউ উচ্চারণ করতে সাহস পেতনা অথচ এ দেশটিই তার গংদের সৃষ্টি ছিলো।বিশ্ব অনেক দেশই তাদের কৃর্তিমানদের স্মৃতি ধরে রাখতে কত খরচইনা করেন সেই তুলনায় আমরা কী খরচ আর করছি।মুল সমাস্যটা স্বয়ং লীগ সরকারের ভেতরেই আছে তাদের দালালীর কারনে ধর্মের দোহাই দিয়ে দেশের জিয়ার ভাষ্কর্যসহ সকল ভাষ্কর্য অক্ষত রেখে তাদের টার্গেট কেবল বঙ্গবন্ধুর দিকে কিন্তু ইসলাম ধর্ম মতে যদি ভাষ্কর্য হারাম হত তবে আঘাতটা কেন শুধু বঙ্গবন্ধুর তর্জনী আঙ্গুলে মুখমন্ডলে আসবে।স্পষ্ট বুঝা যায় এরা দেশেরটা খেয়ে পাকিদের কাজ করে।
      সুন্দর গঠনমুলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

      • মোঃ মজিবর রহমান

        আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত গতকাল একটি মন্তব্য করে হঠাত কোন একটি কি বোর্ড কি তে চাপ লেগে মুঝে যায়।

        কৃতিমানদের দুনিয়ায় অবিনশ্বর রাখার জন্য কি শুধুই ভাস্কর্য প্রয়োজন? তাঁদের নামে অনেক কিছুই করা যায়, যা সবার কর্মেই জেগে থাকবে। মুখে মুখে। রাস্তায় পথে ঘাটে অসহায় বৃদ্ধ বা মানুষ আছে তাদের আশ্রয় কেন্দ্র করে তাদের থাকার সুব্যবস্থা। কত পথ আছে।

        আপনার সাথে একমত আওয়ামিলীগ যদি সম্পুর্ণ ইসলামিক রাষ্ট্রও করে তবুও একশ্রেনীর মানুষ তাঁকে স্বরণ করবেনা আত নিশ্চিত।

        ঢাকা ক্যান্ট জিয়া শিখ অনির্বান করেছে সালার জামাত বা অন্য কেউ কিছুই বলেনি।
        আবার সোহরাওর্দী উদ্যানে শিখআ চিরন্তন করেছে তাঁর বিরুদ্ধে গো আযম সহ জামাত সালারা অগ্নী পুজার মকথা বলেছে যা শুধুই রাজনৈতিক উদ্যশ্য বই কিছুই না।
        আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মনির ভাই

  • প্রদীপ চক্রবর্তী

    এই উঁচিয়ে ধরা আঙ্গুল একটা দেশের জন্ম দিয়েছিলো।
    এ আঘাত মানচিত্রের উপর…..
    .
    একের পর এক ইস্যু তৈরি করে দেশটা অন্ধকারে নিমজ্জিত করার জন্য কিছুসংখ্যক লোক উঠে পড়ে আছে।
    তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করা হোক।

  • তৌহিদ

    আমরা ধর্ম মানি বিশ্বাস থেকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সকল ধারকত্বকে লালন করি জাতিগত আদর্শ থেকে। এর বাইরে যারাই আছেন তারা ধর্মান্ধ।

    ধর্মান্ধতা কখনো কোন জাতিকেই আলোর পথ দেখাতে পারেনি। যদি তাই হতো তাহলে জ্ঞান লাভের জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীনে যাবার কথা ইসলামে আসতোনা।

    বর্তমান প্রেক্ষপটে ভাস্কর্য ইস্যুটি একটি নির্দিষ্ট দিকে ইঙ্গিত করছে আর তা হলো বঙ্গবন্ধু। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন ভাই।

    চমৎকার পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ