"বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির-কল্যানকর

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।"

এই কবিতাটি আপনি শুনে থাকবেন, আমাদের দেশের নারীবাদীদের অত্যন্ত প্রিয় লাইন, মুখস্থ বুলি। কাজী নজরুলের নারী কবিতায় অনেকগুলো পংক্তি থাকলেও, সব নারীবাদীরা এই দুটি লাইনই আউড়ে থাকেন। অথচ এই দুই লাইনের পরের দু লাইন আবার সুকৌশলে এড়িয়ে যান।

"বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি,

অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।"

 

পেশাগত কারনে গতকিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। নোয়াখালীতে। তো সেখানে এক আজব মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয়, তিনি আবার কট্টর নারীবাদী। তর্কে তর্কে তিনি উপরোক্ত লাইন দুটি বলেন, আর আমাকে বলেন, "আপু, নজরুল তার কবিতায় প্রথমে নারীর কথা লিখেছেন, অর্থাৎ নারীকেই কিন্তু প্রাথান্য দিয়েছেন।" স্বাভাবিক ভাবেই আমি তাকে ওই দু লাইনের পরের দুটি লাইন জিজ্ঞেস করলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে গেলেন।

যাই হোক ভদ্রমহিলা আবার মার্ভেল এর মুভি গুলো দেখেন। তিনি আমাকে বললেন, মার্ভেল এর সবচেয়ে পাওয়ারফুল সুপার হিরোও কিন্তু ক্যাপ্টেন মার্ভেল, যে আবার মহিলা। সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারহিরো হিসেবে আমি ক্যাপ্টেন মার্ভেল কে মানি না, তবে সে উইনিক। আর ক্যাপ্টেন মার্ভেল মহিলা না। কমিকস এ ৬০ বছর ধরে ক্যাপ্টেন মার্ভেল চরিত্রটি পুরুষ চরিত্র ছিলো, তবে মুভিতে সেটাকে নারী চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

তবে MCU তে ক্যাপ্টেন মার্ভেল আর আয়রন ম্যন কে বেশি জনপ্রিয় সেটা সবাই জানে।

One, who needs no introduction, and another...

 

আমাদের পৃথিবীতে মানুষের ভেতর পুরুষজাতি সবচেয়ে অবমূল্যায়নের শিকার। যুগ যুগ ধরেই এটা হয়ে আসছে। সব গল্প-কল্প-পৌরণিক কাহিনীতেই সৌন্দর্যের দেবতার বদলে সৌন্দর্যের দেবী প্রাধান্য পেয়েছেন। গ্রিক, রোমান, মিশরীয় থেকে শুরু করে এ্যাজটেক পর্যন্ত সৌন্দর্যের প্রভু হিসেবে একজন দেবীকে প্রতিষ্ঠা করার হীন চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ প্রাকৃতিক নিয়মেই পুরুষ হচ্ছে সৌন্দর্যের প্রতীক। প্রকৃতির সব ক্ষেত্রেই নারীর চেয়ে পুরুষ বেশি সুন্দর ও আকর্ষনীয়।

যেমনঃ

 

সিংহ-সিংহী

সিংহকে সৌর্য-বীর্যের প্রতীক মানলেও সিংহের সৌন্দর্য কারো যেন চোখে পরে না, অথচ সিংহীর চেয়ে সিংহী অনেক বেশি মাত্রায় সৌন্দর্যের অধিকারী।

 

হরিণ-হরিণী

হরিণীর চাহনি, মায়া ইত্যাদী ইত্যাদী নিয়ে কবি-সাহিত্যকগন সৌন্দর্য্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অনেক ষড়যন্ত্রমূলক লেখা লিখে গেছেন। অথচ হরিণ এর পাশে হরিনীকে দাড় করান, হরিনের সৌন্দর্য্য আপনার চোখে নিজেই ধরা দিবে।

 

ঘোড়া

ঘোড়ার দৌড়ানোর শক্তি নিয়ে অনেক চর্চা হয়। যেন ঘোড়ার কাজ শুধু দৌড়ানোই। ঘোড়ার সৌন্দর্য্য কেউ মূল্যায়ন করে না।

 

গরু-গাভী

গরু হচ্ছে পুরুষদের উপর চলা ষড়যন্ত্রের সবচেয়ে বাস্তব উদাহরন। গরুর কাজ মানেই ধরে নেয়া হয় হাল-চাষ, গাড়ি টানা..

 

একই ভাবে হাঁস-মুরগির ভেতরও পুরুষ প্রজাতিই সবচেয়ে বেশি সৌন্দর্যের অধিকারী।

 

হংস-হংসী

 

মোরগ-মুরগী

 

ময়ূর-ময়ূরী

পাশের দেশের জাতীয় পাখি ময়ুর। অথচ ময়ুরীর ছবি দেখলেও আপনার সেটাকে চিনতেই পারবেন না। অনেকে তো ময়ূরী বললে অন্য একজনকে ভেবে বসে থাকেন..

আপনারা যে ময়ূরীকে চিনেন

অথচ ময়ূরের সৌন্দর্য্যের কাছে দুই ময়ূরীর একজনও দাড়াতেই পারবে না।

 

যাই হোক, আমার লেখাটির উদ্দেশ্য কোন নারীকে ছোট করা বা অসুন্দর বলা নয়। আমি শুধু একথাই  বলতে চাই পুরুষ প্রজাতি প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর প্রজাতি। তাকে আলাদা করে সুন্দর সাজতে হয় না, মেকআপ-পার্লার করতে হয় না। ঈশ্বরই তাকে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন।

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ