চোর

সাবিনা ইয়াসমিন ৩১ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ১১:৫৬:১২পূর্বাহ্ন ছোটগল্প ২০ মন্তব্য

বিচার বসেছিলো সেই সকালে। এখন দুপুর। কিছুক্ষণ আগে উত্তম-মধ্যম দেয়ার পর  মাথার চুল গুলো কেটে তাকে ন্যাড়া করে দিয়ে গেছে পাড়ার ছেলেগুলো। এদের অনেকেরই আতুড় ঘরে সে উপস্থিত থেকেছে। প্রসব বেদনায় যখন ওদের মায়েরা ছটফট করেছিলো, তখন ধৈর্যের চরম সীমায় থেকে পরম মমতায় সেই তাদেরকে পৃথিবীর আলো দেখতে সাহায্য করেছিলো। ছেলেপেলেদের উপর কেন জানি কোনো অভিমান হচ্ছে না, অভিমান কেন করবে! চুরি করে ধরা পড়লে সবাইকেই ন্যাড়া করে দেয়া হয়।

স্কুল ঘরের ত্রাণ চুরির সময় দুজনেই ধরা পড়েছিলো। বিমলা দেবীর ঘরে সপ্তাখানেক ধরে একমুঠো চাল ছিলো না। আর সাদেক মিয়ার দরকার ছিলো নগদ টাকার। প্রস্তাবটা সাদেকের, আর বিমলা যোগাড় করেছিলো স্টোররুমের চাবি।

- বিচারে সাদেকের কি হলো, ওর মাথায় তো চুল নেই! তাহলে?

লুটিয়ে পড়া শরীরটাকে খুব যত্ন নিয়ে দাঁড় করালো, মাথাটা ভোঁ ভোঁ করছে। চোখের দৃষ্টি ধুলোবালি আর দৈহিক যন্ত্রণায় ঝাপসা হয়ে আসছে।

খানিকটা দূরে চেয়ার টেবিল পাতা হয়েছিলো যেখানে, সেখানে বসে সাদেক মিয়া স্কুলের সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে বসে চা খাচ্ছে। ওদের কথাগুলো এতদুর থেকে ভালো করে শোনা যাচ্ছে না, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে সাদেকের পরিস্থিতি তারমত হয়নি।

বিমলার খুব তেষ্টা পাচ্ছে। কার কাছে পানি চাইবে? কেউ কি চোরের জন্য একটু পানি এগিয়ে দিবে!

দৃষ্টিতে অন্ধকার নেমে আসে..

 

*ছবি -আমার।

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ