ইন দ্যা মুড ফর লাভ – ওং কার ওয়ে

হুসাইন আহমেদ ২ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ০৫:১৮:৫৫অপরাহ্ন মুভি রিভিউ ৯ মন্তব্য

তারা ভালবাসার মেজাজে রয়েছে, কিন্তু এটির জন্য সময় ও অবস্থানে নেই। তারা একে অপরের দিকে তাকায় তৃষ্ণা ও মধুরতার ভেজা চোখে এবং তাকিয়ে নিজেদের ঘরে ফিরে যায়। নির্দয়তা তাদের জীবন বিস্বাদ করে দিচ্ছে:একজনের স্ত্রী এবং অন্যজনের স্বামীর মধ্যে পরকিয়ার সম্পর্ক তাদের মনস্তাত্তিক জগতকে শূন্যতায় ভরে দিচ্ছে ।

" "For us to do the same thing," they agreed, "would mean we are no better than they are." The key word there is "agree." "

আসলে, তারা সম্মত হন না। ,তাদের অসম্মতিরও সাহস নেই এবং সময়ও তাদের সাথে নেই তা প্রবাহমান। একজন অপরজনের সাথে ফিজিক্যালি ইনভ্লভড হতে চায় , তবে উভয়ই নৈতিক অবস্থানের দ্বারা আবদ্ধ তাই তারা তাই করে যা প্রত্যেকে বিশ্বাস করে ।

হয়তো এখানে আরো স্পেকুলিশন এর জায়গা থাকতে পারতো, হয়তো আরো গভীর প্রেম দেখানো যেতো । কিন্তু Wong Kar Wei "In The Mood For Love"-এ এত সতেজ একটি প্রেম দেখান যেখানে সুন্দর ভাবে ইন্সট্রমেন্টাল এবং ট্র্যাক গুলো আলাদা এক বৈশিষ্ট তৈরি করে একটি কমপ্লিট অনুভুতি জাগায় ।

তার নাম Mr. Chow (Tony Leung Chiu-wai)। অন্যজন Su Li-zhen (Maggie Cheung Man-yuk)। 196২ সালের জনাকীর্ণ হংকংয়ে, তারা একে অপরের পাশে অ্যাপার্টমেন্টে রুম ভাড়া করে আছে। তারা দরিদ্র নয়; একজন একটি সংবাদপত্র প্রতিবেদক, অন্যজন একটি অফিসের নির্বাহী সহকারী। এই জনাকীর্ণ শহরে স্থান যেমন সংকুলান তার সাথে গোপনীয়তার জায়গাও কম । খুব অদ্ভুত ভাবে এই মুভিটি ফিজিক্যালি সতেজ, মাদকতায় পরিপূর্ণ ।চলচ্চিত্রেটিতে রংগুলি দৃশ্যের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়: লাল, হলুদ, বাদামী গভীর ছায়া ফেলে। একটি দৃশ্য যেখানে সিগারেটের ধোঁয়া কুণ্ডলীপাকে আবির্ভাব করে অভিনেতাকে তা এক কথায় অনবদ্য । দুই অ্যাপার্টমেন্টের বাইরের হলওয়ে ক্যামেরা Forth এবং Back করে বুঝিয়ে দেয় যে এটি দুটি এপার্টমেন্ট একটি নয় ।

আর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দৃশ্যগুলো আসে যখন Chow এবং Su তাদের পারটনারদের ভুমিকায় অভিনয় করে এবং নিজেদের সাথে কনভারশেসন করে । "Do you have a mistress?" - Su বলে Chow কে যা আসলে সত্যিকার অর্থে সে তার স্বামীকে বলার চেস্টা করবে। আলতো চড় যা বাস্তবতার অনেক দূরেই থাকে এবং এভাবে নিজেদের ক্ষতটাকে তাড়া অনুভব করার চেস্টা করে ।

Wong Kar-Wai প্রতারণাকারি যুগলকে অফস্ক্রিনেই রেখে এখানে ভিকটীমকেই প্রটাগনিস্ট করেছেন । প্রতারনাকারিরা হয়তো টোকিও অথবা হংকংয়ের ডাউনটাউনে হোটেলে পাপ করতে পারে, কিন্তু তারা এই চলচ্চিত্রের স্ক্রিনে কখনোই পাপ করবে না, কারণ তাদের প্রতারনা বিরক্তিকর এবং সাধারণ চোখে যা দেখা কস্টকর । এর প্রেক্ষিতে Su এবং Chow এর উত্তম আচরন তাদের ভালবাসাকে শুদ্ধ করে তোলে ।

তাদের জীবন একটা গন্ডির মধ্যে বন্দী। ব্যয় করার জন্য তাদের অর্থের কমতি নেই তারপরও এখনও অফিসের জন্য তৈরি হয় অথবা নুডলস কিনতে যায় ভিড়ের মধ্যে । কখনো সিঁড়িতে দেখা হয়ে যায় । কখনো বা আবার বৃষ্টি হয় । দাঁড়িয়ে তারা কথা বলতে থাকে । আপনি যখন নির্দিষ্ট মোড়ালিটি বজায় রেখে কথা বলবেন তখন আসলে কোনো কনভারশেসনি বিরক্তিকর না কারণ খালি জায়গাগুলি আপনার ভালবাসার মেজাজে পরিপূর্ণ থাকে তখন।

0 Shares

৯টি মন্তব্য

  • সাবিনা ইয়াসমিন

    আপনি যখন নির্দিষ্ট মোড়ালিটি বজায় রেখে কথা বলবেন তখন আসলে কোনো কনভারশেসনি বিরক্তিকর না কারণ খালি জায়গাগুলি আপনার ভালবাসার মেজাজে পরিপূর্ণ থাকে তখন।….

    যথার্থ বলেছেন। কথোপকথনের ক্ষেত্রে মোড়ালিটি বজায় রাখলে সম্পর্কের ছন্দপতন ঘটার সম্ভাবনা থাকে না।

    সম্পূর্ণ লেখাটি আমার কাছে অনুবাদ বই পড়ার মত মনে হয়েছে। কেন এমন লাগলো বুঝলাম না।

    সোনেলা ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম।
    বছরের শুরুতেই ভিন্ন স্বাদের লেখা নিয়ে এখানে এলেন। নিয়মিত লিখুন, আমাদের সহ-সাথী রুপে আপনাকে আমাদের মাঝে দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

    শুভ কামনা 🌹🌹

  • সুরাইয়া পারভীন

    তারা একে অপরের দিকে তাকায় তৃষ্ণা ও মধুরতার ভেজা চোখে এবং তাকিয়ে নিজেদের ঘরে ফিরে যায়। নির্দয়তা তাদের জীবন বিস্বাদ করে দিচ্ছে:একজনের স্ত্রী এবং অন্যজনের স্বামীর মধ্যে পরকিয়ার সম্পর্ক তাদের মনস্তাত্তিক জগতকে শূন্যতায় ভরে দিচ্ছে ।

    বাস্তবতার নিরিখে নির্মিত হয়েছে ছবিটি বলে মনে হচ্ছে। চমৎকার উপস্থাপন

  • সুপর্ণা ফাল্গুনী

    পরিনত বয়সের দুজন বিবাহিত নারী পুরুষের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক যেমন হতে পারে বা হয়ে যায় বিশ্বায়নের যুগে সিনেমাতে সেটাই মনে হচ্ছে তুলে ধরা হয়েছে। মনস্তাত্ত্বিক জগতটা বোঝা সত্যিই কঠিন। কখন কার মধ্যে শূন্যতা ভর করবে , কাকে ভালো লেগে যাবে, শারীরিক মানসিক চাহিদা তীব্র হবে আগে থেকে বোঝা মুশকিল। সবশেষে মোরালিটি এটাই, আপনি যখন নির্দিষ্ট মোড়ালিটি বজায় রেখে কথা বলবেন তখন আসলে কোনো কনভারশেসনি বিরক্তিকর না কারণ খালি জায়গাগুলি আপনার ভালবাসার মেজাজে পরিপূর্ণ থাকে তখন। পরকীয়া সম্পর্কের টানাপোড়েন ভালো ভাবেই ফুটে উঠেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয় তুলে ধরার জন্য। সোনেলায় স্বাগতম

  • মনির হোসেন মমি

    তারা ভালবাসার মেজাজে রয়েছে, কিন্তু এটির জন্য সময় ও অবস্থানে নেই। তারা একে অপরের দিকে তাকায় তৃষ্ণা ও মধুরতার ভেজা চোখে এবং তাকিয়ে নিজেদের ঘরে ফিরে যায়।
    লেখার শুরুতেই নিঃশব্দ প্রেমের ইঙ্গিত সাথে পরকীয়ার আভাস। চমৎকার একটি লেখা নিয়ে সোনেলায় আগমন ।নব বর্ষ ২০২০ অভিনন্দন ও শুভ কামনা।
    মুভি রিভিউ না বলে আমার কাছে মনে পুরো মুভিটাই আমি যেন এই মাত্র দেখলাম।শব্দ বাক্যের দক্ষতা অনন্য।

  • তৌহিদ

    সোনেলায় স্বাগতম।

    লেখাটি ঠিক মুভি রিভিউ মনে হলোনা। লেখায় আরও তথ্য বিশ্লেষণ প্রয়োজন। মুভির অভিনেতা কারা, পরিচালক, গল্পের প্রেক্ষাপট আর আপনার কেন ভালো লেগেছে এসব তথ্য আসা দরকার মুভি রিভিউ এ।

    এবার আসি গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্টে- লেখাটি আপনি ২০১৮ তে আপনার ফেসবুক ওয়ালের লেখাটিই সরাসরি কপি করে দিয়েছেন। আপনার লেখা আপনি দিতেই পারেন তবে সোনেলা আপনার কাছ থেকে নতুন কিছু আশা করে সবসময়।

    ব্লগের নীতিমালা ভালো করে পড়ে নেবেন। আর হ্যা শুধুমাত্র নিজের ফেসবুক ওয়ালের লেখা ছাড়া অন্য কোন গ্রুপ, ওয়েবসাইটে আপনার লেখা আগে প্রকাশিত হয়েছে এরকম লেখা কিছুতেই সোনেলায় পোষ্ট করবেননা।

    ভালো থাকবেন।

মন্তব্য করুন