আমি কেবলই মেঘ ছু’তে গিয়েছিলাম (৪র্থ পর্ব)

আর্বনীল ৫ আগস্ট ২০১৪, মঙ্গলবার, ১১:০৩:২৩পূর্বাহ্ন গল্প ৬ মন্তব্য

৩য় পর্বের লিংক - http://www.sonelablog.com/archives/18438

 

কেমন আছো আন্টি?

আরে শুভন! কেমন আছিস তুই? এতদিন পর আন্টির কথা মনে পরল তোর?

তোমাদের কথা আমার সব সময়ই মনে পরে। কিন্তু কি করে আসব বল। তোমার ছেলে কি আর আমাকে আসতে বলে কখনো?

তুই আমার বোনের ছেলে মানে আমারই আরেকটা ছেলে। তোর যখন খুশি তখন চলে আসবি। রুপক বলার কে? হ্যা রে আপা কেমন আছে?

মা ভালোই আছে। তোমার কথা প্রায়ই বলে।

তোর সাথে করে নিয়ে এলি না কেন? কতদিন আপাকে দেখিনা।

এলেতো আনব! মা আমার জন্য মেয়ে দেখা নিয়ে ব্যাস্ত। তাই আসবে না। এখন বল তোমার বাদর ছেলেটা কোথায়?

বাদরটা ভয়ে ঘুমিয়ে পরেছিল। তুই গিয়ে দেখতো উঠেছে কিনা? আমি তোদের জন্য চা নিয়ে আসছি। চা খেতে খেতে তোর বিয়ের বিষয়ে গল্প করা যাবে।

ঠিক আছে তুমি চা নিয়ে আসো। আমি দেখছি বাদরটা কি করে।

 

 

আকাশে আজ অপুর্ব জ্যোৎস্না। যে জ্যোৎস্না দেখলে মুখ ফোসকে বেড়িয়ে আসে ওয়াও!!! তবে এই জ্যোৎস্না ঘরের কোনে বসে দেখার নিয়ম নেই। যদিও জ্যোৎস্না গলে ঘরের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। তবুও এই জ্যোৎস্না দেখার জন্য খোলা আকাশের নীচে যেতে হয়। নিয়ম হল যতক্ষন পর্যন্ত জ্যোৎস্না চিবিয়ে খেতে ইচ্ছে না করবে ততক্ষন পর্যন্ত দেখে যাওয়া। এটা রুপকের নিজস্ব নিয়ম। কিন্তু আজ সে নিয়ম ভেঙ্গে ফেলেছে। সে বারান্দায় চেয়ারে বসে জ্যোৎস্না দেখছে। বাতাসের ঝাপ্টায় হাসনাহেনার মিষ্টি গন্ধে মাতাল ভাব হচ্ছে তার। কম্পিউটারে স্লো ভলিউমে গান বাজছে।

 

Jimmy please say you’ll wait for me

I’ll grow up someday you’ll see

Saving all my kisses just for you

Signed with love forever true…

 

Joni was the girl who lived next door

I’ve known her I guess ten years or more

Joni wrote me a note one day.

And this is what she had to say……………

 

কিরে বাদর। আন্টি বলল তুই নাকি ঘুমুচ্ছিস?

শুভন তুই! এতদিন পর মনে হল তাহলে। কেমন আছিস?

এই বয়সে বউ ছাড়া কি আর ভালো থাকা যায়? হা হা হা.........

রুপকও শুভনের সাথে তাল মিলিয়ে হাসার চেষ্টা করল। কিন্তু এখন তার হাসতে ভালো লাগছে না। ছাদে উঠে চাদেঁর দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষন হাওয়া গলধঃকরন করতে পারলে ভালো লাগতো।

শুভন বলল, কিরে বাদর তোকে এমন লাগছে কেন? প্রেমে-ট্রেমে পরিসনি তো আবার?

রুপক হ্যা সূচক মাথা নাড়ল।

বলিস কি! নাম কি মেয়েটার? দেখতে কেমন? আমাকে আগে বলিসনি কেন?

রুপক বলল, ওর নাম রুপন্তি। দেখতে কেমন এখনো জানি না। তবে শিগ্রই জেনে যাব।

সত্যি তুই মেয়েটাকে এখনো দেখিস নি?

না।

তুই আমার সাথে ফাজলামি করছিস না তো?

রুপক হাসল। এ হাসির মানে কি সে নিজেই জানে না।

শুভন বলল, মেয়েটার সাথে তোর পরিচয় হল কিভাবে?

প্রথমে একটা উড়ো চিঠি। তারপর টেলেফোন।

ও… তার মানে টেলিফোনে পরিচয়?

হুম। বলতে পারিস।

আচ্ছা মেয়েটার গলা কেমন?

যদি এক কথায় বলি তাহলে বলব অসাধারন।

শুভন বলল, তাহলে শোন! তোকে বিনা পয়সায় একটা উপদেশ দেই। ঐ মেয়েটাকে দেখার আশা মন থেকে ঝেড়ে ফেল। কারন ঐসব মেয়ে দেখতে কখনই সুন্দর হয়না।

তুই এতটা জোড় দিয়ে বলিস কি করে?

আরে গাঁধা! তুই আমাকে দেখে শিক্ষা নে। আজ পর্যন্ত চার চারটা মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলে যেইনা দেখতে গেছি; এক একটা ভূতের বাচ্চা। বুঝলি?

রুপক বলল, আমার কিন্তু মনে হচ্ছে না রুপন্তি ঐসব ভূতের বাচ্চার মত কেউ একজন হবে।

তার মানে আমার বিনা পয়সার উপদেশ তোর পছন্দ হয়নি?

রুপক এবারও হাসল।

তাহলে তোর যা ইচ্ছে তাই কর। ফলাফল কি হয় পরে আমাকে বলিস। আমি এখন যাই। আংকেলের সাথে দেখা করে ঐদিকে চলে যাব।

ঐ শুভন শুনে যা!

পরে ফোনে কথা বলব। এখন যাই। ভালো থাকিস! শুভন চলে যাচ্ছে।

 

 

সকাল ৯টা ২৮ মিনিট। রুপকের রাতে ভালো ঘুম হয়নি। সে দুঃস্বপ্ন দেখে রাত কাটিয়েছে। একবার দেখেছে এক রুপবতি তরুনী চাঁদের আলোয় গভীর অরন্যে ঘাসের উপর বসে আছে। রুপক ছুটে যাচ্ছে সেই তরুনীর দিকে। যেতে যেতে হঠাৎ সে তরুনী অদৃশ্য হয়ে গেল। আরেকবার দেখেছে সাতটি শুকনো গোলাপ হাতে নিয়ে তার দিকে বিভৎষ্য চেহারার ছোট্ট একটা মেয়ে ছুটে আসছে। এসবের মানে কি? রুপক জানে না।

 

গুড মর্নিং ভাইয়া।

ব্যাড মর্নিং টুনু।

এই নাও তোমার কফি। এখন বল ব্যাড মর্নিং কেন?

রাতে ভালো ঘুম হয়নি। দুঃস্বপ্ন দেখেছি।

কি দুঃস্বপ্ন দেখেছো ক্লাস থেকে ফিরে এসে শুনব। এখন যাই দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।

চল আজ আমি তোকে পৌছে দেব।

তুমি! হঠাৎ...

তোর না দেড়ি হয়ে যাচ্ছে? এত কথা বলছিস কেন! চল…

 

(গল্পটা ১০ পর্ব পর্যন্ত যাবে)

 

#১৯

0 Shares

৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ