মাগো,
ওরা আমার মুখের কথা
কাইড়া নিতে চায়,
কথায় কথায় শিকল পড়ায়
আমার দুটি পায়.............

এলোমেলো মেলো চুল তার,ধূলোয়  বিবর্ন মুখবয়,পড়নে ছেড়া ছেড়া রক্তাক্ত  জামা,কেমন যেন অস্হিরতায় ভরা তার আচরন মায়ের পায়ের কাছে ধপাস করে বসে .....মা তুমিই বলো তোমার ভাষাকে ছাড়া আমাদের জীবন  কি পূর্ণ হয়, কেমন করে,অন্য ভাষায় কেমন করে হাসব-কাদব?কেমন করে মনের ভাব প্রকাশ করবো?আমিতো বাঙ্গালী ,আমি কেনো অন্য ভাষায় কথা বলব,কেনো ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়?
-ওরা মানুষ নয়,ওরা জানোয়ার ওদের বুঝিয়ে দাও ,দেহ থেকে প্রান চলে গেলে দেহ বাচে কি করে!আদেশ করলাম মায়ের বুকের দুধের প্রতিশোধ নাও।

মাথায় কালো পট্টি বেধে , মায়ের আদেশ রক্ষার্থে, মুখের ভাষাকে ফিরিয়ে আনতে সেই  যে আঘাত প্রাপ্ত সেই ছেলেটি  রক্তমাখা জামা নিয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে  "রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই" রাজপথটিতে নিঃস্বার্থ ভাবে অকুতোভয়ে নিজের রক্তের বিনিময়ে মুখের ভাষাকে এনে দিয়ে রাজপথ রাঙ্গিয়ে দিল.......সেই তাদের....সেই আমাদের আত্ত্বাদের ভূলি কি করে!।
ঘটনা:১৯৫২ সাল ২১শে ফেব্রুয়ারী :v -{@

  (y) ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রশ্নে পুরাতন কলা ভবন প্রাঙ্গণে আমতলায় ঐতিহাসিক ছাত্র জন সভা।
পূর্বে ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী সকাল নয়টা হতে লোকজন জড়ো হতে থাকেন।তারা ১৪৪ ধারা জারির বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন এবং পূর্ব বঙ্গ আইন পরিষদের সদস্যদের ভাষা সম্পর্কে সাধারণ জনগণের মতা মতকে বিবেচনা করার আহ্বান জানাতে থাকেন। পুলিশ অস্ত্র হাতে সভা স্থলের চারদিক ঘিরে রাখে। বিভিন্ন অনুষদের ডীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ঐ সময় উপস্থিত ছিলেন। বেলা সোয়া এগারটার দিকে ছাত্ররা গেটে জড়ো হয়ে প্রতিবন্ধকতা ভেঙে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ছাত্রদের সতর্ক করে দেয়।কিন্তু কিছু ছাত্র ঐ সময়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের দিকে দৌঁড়ে চলে গেলেও বাদ-বাকিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পুলিশ দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং পুলিশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন।...."আমাদের দাবী মানতে হবে,মেনে নাও"...।
উপাচার্য তখন পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ না করতে অনুরোধ জানান এবং ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু ছাত্ররা ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময় কয়েক জনকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করলে সহিংসতা বেড়ে যায়। অনেক ছাত্রকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ছাত্ররা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে পুনরায় তাদের বিক্ষোভ শুরু করেন।
(y)  পুরাতন কলা ভবন প্রাঙ্গণ, ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সময়ে.......... :v
দুপুর প্রায় দুইটার দিকে আইন পরিষদের সদস্যরা আইন সভায় যোগ দিতে এলে ছাত্ররা তাদের বাঁধা দেয়। কিন্তু পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে যখন কিছু ছাত্র সিদ্ধান্ত নেয় তারা আইন সভায় গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করবেন। ছাত্ররা ঐ উদ্দেশ্যে আইন সভার দিকে রওনা করলে প্রায় তিনটার দিকে পুলিশ দৌঁড়ে এসে ছাত্রা বাসে গুলি বর্ষণ শুরু করে।পুলিশের গুলি বর্ষণে আব্দুল জব্বার এবং রফিক উদ্দিন আহমেদ ঘটনা স্থলেই শহীদ হন। এছাড়া আব্দুস সালাম, আবুল বরকত সহ আরও অনেকে সে সময় নিহত হন।ঐ দিন অহি উল্লাহ নামের একজন ৯/১০ বছরেরে কিশোরও নিহত হয়।প্রত্যক্ষ দর্শীদের মতে  আরো অনেকে শহীদ হন।
ছাত্র হত্যার সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে সাধারন জনগণ ঘটনা স্থলে আসার উদ্যোগ নেয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সমস্ত অফিস, দোকানপাট ও পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্রদের শুরু করা আন্দোলন সাথে সাধারন মানুষের সম্পৃক্ততায় আন্দোলনে রূপ নেয়।রেডিও শিল্পীরা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে শিল্পী ধর্মঘট আহ্বান করেন এবং রেডিও স্টেশনে পূর্বে ধারণ কৃত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে থাকেন।
ঐ সময় গণপরিষদে অধিবেশন শুরুর প্রস্তুতি চলছিল। পুলিশের গুলির খবর জানতে পেরে মাওলানা তর্ক বাগিশ সহ বিরোধী দলীয় বেশ কয়েকজন অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন এবং বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়ান।গণ পরিষদের মনোরঞ্জন ধর, বসন্তকুমার দাস, শামসুদ্দিন আহমেদ এবং ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত-সহ ছোট ছয় জন সদস্য মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনকে হাসপাতালে আহত ছাত্রদের দেখতে যাবার জন্যে অনুরোধ করেন এবং শোক প্রদর্শনের লক্ষ্যে অধিবেশন স্থগিত করার কথা বলেন।কোষাগার বিভাগের মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ, শরফুদ্দিন আহমেদ, সামশুদ্দিন আহমেদ খন্দকার এবং মসলে উদ্দিন আহমেদ এই কার্যক্রমে সমর্থন দিয়েছিলেন। অবশেষে নুরুল আমিন অন্যান্য নেতাদের অনুরোধ রাখেননি বরং অধিবেশনে বাংলা ভাষার বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন।
(y) এর পর ২২ ফেব্রুয়ারির ঘটনা
: :v   ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে বিশাল মিছিল বের হয়।
ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে সারা দেশ হয়ে উঠে মিছিল ও বিক্ষোভে উত্তাল। জনগণ ১৪৪ ধারা অমান্য করার পাশাপাশি শোক পালন করতে থাকেন।বিভিন্ন অফিসের কর্ম কর্তা-কর্ম চারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করে ছাত্রদের মিছিলে যোগ দেয়। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শহরের নাগরিক সমাজ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রাবাস পরিদর্শন করেন। পরে তাদের অংশ গ্রহণে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিশাল মিছিলে অংশগ্রহণ করে।সকাল এগারোটার দিকে প্রায় ত্রিশ পয়ত্রিশ হাজার লোকের একটি মিছিল কার্জন হলের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। প্রথমে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে এবং এক পর্যায়ে তাদের উপর গুলি বর্ষণ করে। ঐ ঘটনায় সরকারি হিসেবে ৪ জনের মৃত্যু হয়।
শহরের বিভিন্ন অংশে একই ভাবে জানাজা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন কলেজ, ব্যাংক-সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে লোকজন এই মিছিলে অংশ নিতে আসেন।বিকেলে আরেকটি বিশাল মিছিল পুলিশ দ্বারা আক্রান্ত হয়। বিক্ষুদ্ধ জনতা সরকার পক্ষের প্রথম সারির দুটি সংবাদপত্র জুবিলী প্রেস এবং মর্নিং নিউজ অফিসে অগ্নিসংযোগ করে।উল্লেখ্য আছে যে, জুবিলী প্রেস থেকে সকালের পত্রিকা বের হয়েছিল।একই দিনে পুলিশ দ্বারা আক্রমণ ও হত্যার বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। নবাবপুর রোডের বিশাল জানাজার মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণ করে। এই গুলিবর্ষণে শহীদ হন ঢাকা হাইকোর্টের কর্মচারী শফিউর রহমান, ওয়াহিদুল্লাহ এবং আবদুল আউয়াল প্রমুখ।
(y) থেমে যাওয়া আন্দোলন আবারও চাঙ্গা

২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর সরকার আন্দোলনের বিপক্ষে জোরালো অপপ্রচার চালাতে থাকে। তারা জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকে যে, কমিউনিস্ট ও পাকিস্তান বিরোধীদের প্ররোচনায় ছাত্ররা পুলিশকে আক্রমণ করেছিল। তারা বিভিন্ন ভাবে তাদের এই প্রচার অব্যাহত রাখে। তারা সারা দেশে প্রচারণাপত্র বিলি করে। সংবাদ পত্র গুলোকে তাদের ইচ্ছানুসারে সংবাদ পরিবেশনে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে।পাশাপাশি ব্যাপক হারে সাধারণ জনগণ ও ছাত্র গ্রেফতার অব্যাহত রাখে। ২৫ ফেব্রুয়ারি আবুল বরকতের ভাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করার চেষ্টা করলে, উপযুক্ত কাগজের অভাব দেখিয়ে সরকার মামলাটি গ্রহণ করেনি। রফিক উদ্দিন আহমদের পরিবার একই ধরণের একটি প্রচেষ্টা নিলে, ঐ একই কারণে তাও বাতিল হয়ে যায়।
৮ এপ্রিল সরকার তদন্ত শুরু করে কিন্তু এর প্রতিবেদনে মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের উপর গুলি করার কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ দেখাতে পারেনি। সরকারের প্রতিশ্রুত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ প্রত্যাখান করে। ১৪ এপ্রিল গণপরিষদের অধিবেশন শুরু হলে রাষ্ট্র ভাষার প্রশ্ন সামনে চলে আসে।এ সমস্যা নিরসনের পক্ষে অনেক সদস্য মত প্রকাশ করলেও মুসলিম লীগের সদস্যরা এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে।এ বিষয়ের বিপক্ষে তারা ভোট দিলে তা অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। এর মাধ্যমে তারা ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর গণপরিষদে বাংলা ভাষার পক্ষে কথা বলার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে।২৭ এপ্রিল বার সেমিনার হলে কেন্দ্রীয় সর্বদলীয় কর্ম পরিষদ একটি সেমিনার আহ্বান করে এবং সরকারের কাছে ২১-দফা দাবি উত্থাপন করে। ১৬ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খুললে সেদিন ছাত্ররা সমাবেশ করে। বিশ্ববিদ্যালয় লীগ কমিটির প্রধান নেতা আব্দুল মতিন সাহেব গ্রেফতার হলে কমিটি আবার পুণর্গঠিত হয়।
১৯৫২ ২৩শে ফেব্রুয়ারী:একটি সম্পূর্ন ও স্বতঃস্ফুর্ত সাধারন ধর্মঘট পালিত হয়। আবার সরকার দমন নীতি প্রয়োগ করে। এর প্রতিবাদে এ পি সি এ ফেব্রুয়ারির ২৫ তারিখ আবার একটি সাধারন ধর্মঘট পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররা পুলিশের গুলিতে মৃতদের 'চরম আত্মোত্সর্গ' স্বরণে  শহীদ বরকত কে যেখানে গুলি করা হয়, সেই যায়গায় রাতা রাতি 'শহিদ মিনার' গড়ে ফেলল। পরে বাঙ্গালিদের  কাছে এই শহিদ মিনার হয়ে উঠে ঐক্যের প্রতীক আন্দোলনের শক্তি,মাকে তার ভাষা ফিরিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতির প্রথম আলামত।
(y) ১৯৫২ ২৪শে ফেব্রুয়ারী: ঢাকায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকার পুলিশ আর মিলিটারিকে ঢালাও ক্ষমতা দেয়। "এই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ ভাষা আন্দোলনের সাথে যূক্ত প্রায় সব ছাত্র এবং রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে।
(y) ১৯৫২ ২৫শে ফেব্রুয়ারী
:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়....
অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষিত হল। "দমন পীড়নের কারনে আন্দোলন ঢাকায় কিছুটা ঝিমিয়ে যায়, কিন্তু ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে জেলা গুলিতে... পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতির দাবী ছাড়াও ছাত্ররা এবার নুরুল আমিন মন্ত্রী সভার পদত্যাগের দাবী করতে থাকেন...নুরুল আমিন দাবী করলেন যে, সরকার তার দমন নীতির সাহায্যে প্রদেশকে বিপর্যয় এবং অরাজকতার হাত থেকে বাঁচিয়েছে। কিন্তু ছাত্ররা দাবী করলেন তাঁরা তাঁদের রক্ত দিয়ে আন্দোলনের সাফল্য এনেছেন। ফিরে দেখলে এটা পরিষ্কার যে, এই আন্দোলন পূর্ব বঙ্গে ধর্ম নিরপেক্ষ-ভাষা-কেন্দ্রিক বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের বীজ বুনেছিল। এর তাৎক্ষণিক অভিঘাতে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিরোধী ইউনাইটেড ফ্রন্টের হাতে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় ঘটে, যার ভিত্তি ছিল পূর্ব বঙ্গের সাংস্কৃতিক,রাজনৈতিক এবং আর্থিক স্বাশনের আকাংক্ষা।
(y) ১৪৪ ধারা ভঙ্গের যুগৎসই একটি প্লান
(y) শ্লোগান চলার সময় আবদুস সামাদ আজাদ কী ভাবে ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে তার একটি প্রস্তাব পেশ করেন। এ প্রস্তাব কে বলা হয় বিখ্যাত ১০ জনী মিছিল। তার মতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী একত্রে মিছিলে নামলে ভয়া বহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তাই প্রতি দফায় ১০ জন করে রাস্তায় মিছিল বের করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী এ বক্তব্য সমর্থন করেন এবং কলা ভবনের গেট খুলে দেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর শুরু হয় ছাত্র-ছাত্রীদের ১০ জনের মিছিল
(y) প্রথম দলের নেতৃত্বে ছিলেন হাবীবুর রহমান (পরবর্তী কালে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচার পতি ও তত্ত্বাবধায়ক প্রধান উপদেষ্টা এবং পরে রাষ্ট্রপতি)। (y) দ্বিতীয় দলে ছিলেন আবদুস সামাদ আজাদ ও ইব্রাহীম তাহা।
(y) তৃতীয় দলে আনোয়ারুল হক খান এবং আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ খান।
এই ১০ জনের মিছিলে যারা গ্রেফতার হচ্ছিল তাদের তালিকা তৈরীর দায়িত্বে ছিলেন মোহাম্মদ সুলতান এবং কাজী আজাহার।
(y) চতুর্থ দফায় মেয়েদের একটি মিছিল স্বেচ্ছায় কারা বরনের উদ্দেশ্যে রাস্তায় নেমে আসার পরপরই ছাত্রদের অনেক গুলো মিছিল একে একে বের হয়ে আসতে শুরু করে।
(y) এমন সময় পুলিশ আকস্মিক ভাবে মিছিলের উপর লাঠিচার্জ ও অবিরাম কাদানো গ্যাস নিক্ষেপ করতে শুরু করে। কাদানো গ্যাসের ধোয়ায় ছেয়ে যায় চারদিক। ছাত্ররা দৌড়ে কলা ভবনের পুকুর পাড়ে এসে রুমাল ভিজিয়ে চোখ মুছে আবার মিছিলে যোগ দেয়। এমনি সময়ে একটি টিয়ারশেল সরাসরি গাজিউল হকের বুকে এসে আঘাত করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলায় মেয়েদের কমন রুমে তাকে রেখে আসা হয়। বেলা প্রায় ২টা কলাভবন এলাকায় ছাত্র-পুলিশ সংঘর্স চলতে থাকে।
(y) তখ নপর্যন্ত ঢাকার অন্যান্য স্থানে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও বিশ্বদ্যিালয় এলাকায় একদিকে চলতে থাকে পুলিশের লাঠি চার্জ আর আরেক দিকে ছাত্রদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। এ পরিস্থিতে ছাত্ররা যাতায়াতের সুবিধার জন্য কলা ভবন ও মেডিকের কলেজ হাসপাতালের মধ্যবর্তী দেয়াল ভেঙে দেয়। ফলে কিছু ক্ষনের মধ্যেই পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষের দিক পরিবর্তিত হয়। ছড়িয়ে পড়ে চার দিকে সংঘর্ষ। এ সময় পুলিশের বেপরোয়া লাঠি চার্জে আহত হন বহু ছাত্র জনতা।
(y) এমনই সময় কোন পূর্ব সংকেত ছাড়াই সশস্র পুলিশ জেলা মেজিস্ট্রেট কোরেশির নির্দেশে দৌড়ে এসে জগন্নাথ হল প্রাঙ্গনে অবস্থান নিয়ে গুলি ফায়ার করে। চারদিকে টিয়ার গ্যাসের ধোয়ার ভেতর কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিছু তাজা প্রাণ মাটিতে লুটিয়ে পড়ল, অনেক আহত হয়, বাকিরা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে রইল। তখন সময় দুপুর ৩ টা ১০মিনিট আর দিনটি ২১ ফেব্রুয়ারী, বৃহস্পতিবার।
(y) একটি লাশের মাথার অর্ধেকটাই গুলিতে উড়ে যায়। পরে যানা যায়, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আবুল বরকত। সে সময় পর্যন্ত ঘটনা স্থলে নিহতের সংখ্যা ছিল ২ এবং আহত ছিল প্রায় ৯৬ জন। সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মারা যান আরো দুজন।তারা হলেন শহীদ জব্বার ও রফিক উদ্দিন
(y) পরিণতি ১৯৫৪ ৭ই মে:
পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে আন্দোলনের মুখে  একটি জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি জানাতে বাধ্য হন।
(y) ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ ২৬শে ফেব্রুয়ারী:
বাংলাকে একটি জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকার করে কন্সটি টুয়েন্ট অ্যাসেমব্লি পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান পাশ করেন।
..................................................................................................................................................................... -{@

মাতৃ ভাষা হচ্ছে সেই ভাষা,যা চেষ্টা করে শিখতে হয় না,পৃথিবীতে মানুষ যে গোত্রের ভাষায় আগমন করেন সেটাই তার প্রকৃত পরিচয়। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা, যা মাতৃ ভাষাকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিঃশেষে প্রাণ দান এবং এই আত্মত্যাগের মাধ্যমে জাতি সত্তার উপলব্ধি। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা-আন্দোলনের শহীদদের তাজা রক্তে রাজপথ যখন রঞ্জিত হয় তখন এ দেশের মানুষ মাতৃ ভাষাকে নতুন ভাবে অর্জন করেন যা পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে তা এখন আন্তজার্তীক মাতৃ ভাষা হিসাবে বিশ্ব স্বীকৃত।কিছুটা নমুনা দেখুন বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষার সাথে শুনুন সুন্দর একটি কবিতাও একুশের কবিতা "কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে গেছে লতাটা"

বিশেষ অনুরোধ:স্বদেশী বাংলা ভাষা ভাষী যারা কর্ম ক্ষেত্রে কিংবা নৈমত্তিক প্রয়োজনীয় সময়ে বাংলা ভাষার বদলে ভিনদেশী ভাষার ব্যাহার করেন তাদের মনে রাখতে হবে বিশ্বে যত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ কিংবা আন্দোলন হয়েছে, ভাষা নিয়ে এমন আন্দোলন আর কোথাও হয়নি সুতরাং এর মহত্ত্ব ত্যাগকে স্বরণ রেখে অপ্রয়োজনে ভিনদেশী ভাষা ব্যাবহার পরিহার করে বাংলাদেশকে বাংলা ভাষাকে বুকে ধারন করে চলতে হবে।
আরো মনে রাখা প্রয়োজন, স্বাধীন স্বদেশ আমাদের বাংলাদেশ পাকিদের পরাধীনতার শিকল ভেঙ্গে আসার প্রথম আন্দোলনের বীজ উৎপন্ন হয়েছিল এই ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোনের মধ্যে দিয়ে।সুতরাং ১৯৫২ এবং ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী ইতিহাসগুলো একে অন্যের পরিপুরক।

চলবে...

সহযোগিতায়:উইকিপিয়া এবং বিভিন্ন ব্লগ,অন লাইন।
(২য় পর্বটি সম্ভবত প্রকাশ করব  ২১শে ফেব্রুয়ারী..দীর্ঘ সময় নেয়ার জন্য দুঃখিত)

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ