সবই আছে সুপরিসর ডিম্বাকৃতি কাল টেবিল জুড়ে। রংবেরংয়ের কলমরাজি, রঙ্গিন-খাতা, ঘড়ি, ফোন, গ্লোব,
পিটপিটে নীল-চোখের রাউটার, সবই আছে সঠিকতায়-স্বস্থানে; টেবিলে সাজিয়ে রাখা সদা-সবুজ গ্রাসহপার গাছটি,
তবুও কী একটি যেন নেই! জামা-কাপড় জুতো-স্যান্ডেল পরিপাটি করে রাখা আছে সবই,
নখ কাঁটার বাহারি কল, কোল্ড ক্রিম, রঙ্গিন সব পেপার ওয়েট, ক্যালকুলেটর।
ঘুম ভেঙ্গে গেল, ঝুম অন্ধকার-চোখে, আধার হাতড়ে ভাবছি আলো দেব কী দেব-না!
আঁধারের-আলো, বাইরে-থেকে ধারে-আনা আলো! জোনাকির-চাঁদ, জ্যোৎস্নার-আলো,
জ্বেলে দিলাম সব নক্ষত্রালো, আহা, বড়ই সৌন্দর্য! কিন্তু-কিন্তু, কী-যেন নেই!
মিস করছি তো কিছু-একটা! কী তা?
সদ্য-ফোটা ফুলেল সমারোহ গোটা জানলা জুড়ে, বুক ভরা নিশ্বাসে নিবিড় সুগন্ধ, ইতস্তত ছড়ানো বইরাজ্য,
রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ, স্তাদালের দ্য রেড এন্ড দ্য ব্লাক, কাফকা, সবাই হাসছে সঙ্গীদের সাথে নিয়ে,
আধ খাওয়া কফি কাপ! সবই আছে,
শুধু নেই, গ্রাসহফারের একটি সজীব সবুজ পাতা!
২০টি মন্তব্য
নীহারিকা
একটি পাতার জন্য এমন হাহাকার? অবশ্য হয় এরকম। খুব ছোট/তুচ্ছ কোনো কিছুর জন্য কখনো মন কেমন করে। এর কোনো ব্যাখা নেই।
ছাইরাছ হেলাল
কারও ‘গরু’ না হারালে এই যন্ত্রণা সে কিছুতেই বুঝবে না!!
নীহারিকা
এই যুগে গরুর চাইতে মোবাইল হারানো বেশি কষ্টের।
ছাইরাছ হেলাল
গোপাল ভাঁড়ের গরু হারানোর গল্প। গরুর খোঁজে এ-গাঁ সে-গাঁ ঘুরে ক্লান্ত গোপাল দাওয়ায় বসে পুত্রকে যখন ভাই ডেকে পানি চেয়েছিলেন, রন্ধনরত স্ত্রী স্বভাবতই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন যে, মিনসের মাথায় গণ্ডগোল দেখা দিয়েছে কি-না! স্ত্রীর মুখ ঝামটার জবাবে গোপাল বিরস কণ্ঠে জানিয়েছিলেন, ‘গরু হারালে এমনই হয় মা!’
আপনার কিছু হারায় নাই!! তাই বুঝবেনও না!!
নীলাঞ্জনা নীলা
শৈশবকে কে না মিস করে! তবে মিস করে এভাবে সকলে লিখতে পারেনা। ঘাসফড়িং-এর পেছনে পেছনে ছুটে বেড়ানো শৈশব আজ কোথায়! তারপর গ্রাসহপার নিয়ে সেইসব ছড়া, সেই শিশুতোষ গল্পের দিনগুলোর প্রতি প্রেম কোনো কিছুর বিনময়েই আর ফিরে পাওয়া যাবেনা। কবিতাটি বহুবার পড়লাম, মন ভরিয়ে দিলেন।
রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজের রুবাইগুলো নিয়ে লেখেন না কিছু কুবিরাজ ভাই? খুব ভালো লাগতো পড়তে সেই অনার্সের সময় পড়েছিলাম। আচ্ছা এতো জ্ঞান নিয়ে ঘুমান কিভাবে বলুন তো! আর আপনি ‘লে রুজ এ লহ্ নোহাখ্’ এই বইও পড়েছেন? পেন্নাম হই। :c কাফকার বইগুলোর নাম দেবেন, অনুবাদ অবশ্যই। আর অবশ্যই স্তাদালের ‘দ্য রেড এন্ড দ্য ব্লাক’ বইটির রিভিউ লিখবেন। ঠিক আছে? 😀
ছাইরাছ হেলাল
আসলে হারানোরা ফিরে আসে না, স্মৃতি হয়ে ঝোলাঝুলি করে আর যন্ত্রণা দেয়,
অমলিনতায় থেকেই যায়, আনন্দিত হচ্ছি সব সময় প্রাণ দিয়ে পড়েন বলে,
এক সময় রুবাই লিখেছি, এখন সে সব দেখলে হাসি পায়, আনন্দ-ও লাগে।
মুখ্যু-সুখ্যু রইয়েই গেলাম, কিচ্ছু পড়া-শোনা করতে পারিনি, শুধুই অজানা।
ফ্রানৎস কাফখা গল্পসমগ্র, অনুবাদ, মাসরুর আরেফিন, প্রকাশক– পাঠক সমাবেশ।
পেন্নাম সঠিক স্থানে দিয়েছেন,
জিতে রহ বেটা!!
নীলাঞ্জনা নীলা
একা একা হাসি-আনন্দ নেয়া ঠিক না। এতো কঞ্জুসামী ঠিক না কুবিরাজ ভাই। সব লেখা প্রাণ দিয়ে পড়তে পারিনা। যেটা মোটামুটি মাথায় ঢোকে, ওটাই কেবল…। বুঝলেন?
বইয়ের নাম দিলেন, আরে পোষ্ট করে পাঠিয়ে তো দিতে পারতেন। এটা একটা হলো? 🙁
পান্ডব বিবর্জিত দেশে থেকে যে কয়টা বই পাই কিনি, তাও দামের চেয়ে চৌদ্দগুণ ডাবলে। আপনার ওই রেড এন্ড ব্ল্যাক বইয়ের ফ্রেঞ্চ উচ্চারণ আমার পুত্র শিখিয়েছে। বাপ্রে দাঁত যে ভাঙ্গে নাই, সেই ঢের! 😀
পেন্নাম আবার দিমু নে, সুন্দর একখানা মন নাচানো কুবিতা লেখেন তো!
ছাইরাছ হেলাল
দেশে আসুন, পাবেন।
আচ্ছা লেখা পাবেন,
অবশ্যই।
সৈয়দ আলী উল আমিন
ঘাসফড়িং-এর পেছনে পেছনে ছুটে বেড়ানো শৈশব আজ কোথায়! লেখাটি খুব ভাল লেগেছে।
ছাইরাছ হেলাল
স্মৃতি হয়ে আনন্দ/বেদনা দিচ্ছে ক্রমাগত,
পড়ার জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আমি কিছু হারাইনি হারাইনা হরাইতে হারাইতে পূর্ণ হস্তগত যদিও মন স্মৃতি শুণ্য।শৈশবকে খুব মনে পড়ে।আপনার মতো লিখতে জানলে জীবন সার্থক হতো।শুভ কামনা। -{@
ছাইরাছ হেলাল
হারাতে আমাদের হয়-ই, হারাই-ও তাই, সম্বল হয়ে থাকে স্মৃতিটুকু।
কিছুই লিখতে পারলাম না , ভাই,
ইঞ্জা
গ্রাস হপারের জন্য এমন হাহাকার, যেখানে জ্বালিয়ে দিলেন সকল নক্ষত্র রাজ্য?
বিমোহিত হই বারবার।
ছাইরাছ হেলাল
কী আর করা, যা হারায় তা আর ফিরে আসে না, ভাই।
ইঞ্জা
আহা আহা কবির কি হাহাকার।
ছাইরাছ হেলাল
সবাই বোঝেনা!!
জিসান শা ইকরাম
জীবনের প্রতি বাঁকে বাঁকে কিছু মিসিং হয়ই,
কি আর করা!
ছাইরাছ হেলাল
হুম, মিসিং নিয়েই আমারা বার বার বাঁচি।
শুন্য শুন্যালয়
প্রহেলিকা এসে যদি বলে তারে মিস করতেছেন তাইলে কিন্তু আমি কিছু জানিনা।
লেখাটি খুবই সুন্দর। এ এক অদ্ভুত মিসিং অনুভূতি। যতক্ষন পর্যন্ত বুঝতে না পারছেন ততক্ষন অস্থিরতা, আবার এ অস্থিরতাই ভালো থাকা।
সব থেকেও সবুজের প্রাণ না থাকা বড্ড কষ্টের। আপনি বুঝি গ্রাসহপার?
ছাইরাছ হেলাল
কে-যে কখন কাকে কী ভাবে মিস করে তা অবশ্যই জটিল বিষয়,
তবে হ্যা, আমার কিছু লেখা আমি সব সময়ই মিস করি, যা লিখতে পারিনি এখনও!
প্রাণের সমার্থক সবুজ, সেটি রং পাল্টিয়ে ঝালঝ্যালে হলে সমস্যা হয় বৈকি;
এত্ত কঠিন প্রশ্নের উত্তর হয় না।