রং তুলিঁর ডায়রী (০২পর্ব)

মনির হোসেন মমি ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১২:৪০:১৪অপরাহ্ন গল্প, বিবিধ ১৪ মন্তব্য

অনেক যতঁন করেই মঈনুল আলপনাঁ গুলো একেঁ শেষ করলেন।হারানোঁ ডায়রীটি যে তার চাই চাই এই ভেবেই হয়তো নিজের সেরাটা আলপনায়ঁ দিতে চেয়েছেন।ভাবছেন 1-16195944_408998419439981_258236521535030071_n-002আলপনাঁতো শেষ এখন ওর মুখটিই আকঁতে হবে।সত্যিই সে অপূর্ব রূপের অধিকারিনী।এমন মেয়েকে কে না ভালবাসতে চায়।যেমন তার রূপ তেমনি তার গুণ।ভালবাসা হয় কেবল এক জনের সাথেই দ্বিতীয় বার যা হয় তা কৃত্রিম,যাতে মানুষ আছে ভালবাসবার সেই মন নেই৴৴৴মঈনুলের সেই মনতো আজ আর তার আমিতে নেই।এমনি ভাবনায় মঈনুল পূলকিত হন যখন ঘটে সেই মেয়েটির আগমন।
৴কি ভাবছেন?আমি কিছু বুঝি না, আমাকে আসতে হবে কেনো?আমিতো জানিই আপনিতো আমার ছবি দেখেই আমার পোর্ট্রেট আকতেইঁ পারেন….একেঁছেনও একবার।
৴না মানে আমি আপনার ভাইকে চিনতাম না যে,সে আপনার ভাই হন আর সে যে আপনার ছবি দিয়েছিলেন তা নীচে রেখেছিলাম খুলে দেখিনি।
সাথের বন্ধুটিকে উপরে এক তলায় তার ড্রইংয়ে রং করতে পাঠিয়েছিলো,সে নীচে নেমে এলেন।
৴কিরে তোর কাজ শেষ হয় নাই?
৴ হ একটু বাকী আছে রং নিতে আইছি।
৴ নিয়ে যা…।সে রং নিয়ে উপরে চলে গেলেন।

৴আপনি খুব সুন্দর ছবিঁ আকেনঁ।
৴ থ্যাংইউ।
৴আচ্ছা,আমার ছবিঁ আকঁতে আমাকে ঠিক কি ভাবে বসতে হবে,একটু দেখিয়ে দিবেন?
৴কেনো?
৴ঐ যে আপনি আমার ছবিঁ আকঁবেন,ভাইয়াকে বলেছিলেন আমাকে আসতে হবে।
৴অ৴ হ্যা…ভুলেই গেছিলাম।
৴না,
৴কেনো?

আপনি ডাকেননি আমি নিজেই এসেছি আর আমার বান্ধবীর কাছ থেকে আপনাদের আসার পথে মুখ সংঘর্ষের বিবরন জানলাম আর মনে মনে যা ভাবলাম এখানে এসে দেখলাম 1-16195715_410705705935919_2214931257185392788_nঠিক তাই।সেই যে বেশ কয়েকটি বছর কাটালাম একে অপরে পরশী ফ্লাটে।তখন আপনি মাঝে মাঝে আমাদের বাগানে আসতেন আর আনমনে ছবিঁ একেঁ যেতেন…মনে পড়ে আপনার সেই বছর চারেক হবে।
৴ মনে পড়ছে না তবে আপনার ফেইসটি কেনো যেন বহু চেনা চেনা মনে হয়।মনে হয় এমনি একটি মুখের অপেক্ষায় থাকতাম কখনো কখনো।
৴তাই নাকি!
৴ হ্যা,
৴একদিন আপনি একটি বিশেষ কারনে হঠাৎ রেগে গেলেন আমার উপর।
৴ ও হ্যা..আমার সাময়িক অনুপস্থিতে আপনাদের বাগানেই আমার আকাঁ অসমাপ্ত একটি পোর্টেট নষ্ট করে দিলেন…ও হ্যা সেইতো তুমি…তুমি মৌসুমি না?
৴যাক,বাচা গেলো এতোক্ষণে তাহলে চিনতে পেরেছেন।
৴চিনবো কি করে!তুমিতো আগের চেয়ে অনেক লম্বা আর বেশ ফর্সা হয়েছো।
৴হুম, সে সব স্মৃতি এখন বেশ মনে পড়ছে…..আপনাকে আমি প্রথম প্রথম প্রচন্ড ভয় পেতাম বিশেষ করে আপনার চোখে যখন তাকাতাম তখন মনে হতো আপনর হৃদয় এক ট্রাম্প হৃদয়।তবুও আমি চুপি চুপি আপনার আকাঁর ভাব দেখতাম,দূর থেকেই।তার পর এক দিন দেখলাম একটি ডায়রী পড়ে আছে সেই স্থানে আমি তা নিয়ে যতন করে রেখে দীর্ঘ এই সময় গুলো অতি বাহিত করলাম।সে দিন যদিও আপনি আমাকেই সন্দেহ করেছিলেন ডায়রীটি আমার কাছেই আছে,আমিই পেয়েছি তবুও আমি বারং বার না না বলেছিলাম কারন ডায়রীটি খোলে তার ভিতরের লেখাগুলো দেখে তা পড়ার লোভ ছিলো আমার।
৴তাই নাকি,তা আমার ডায়রীটা এখন কোথায়?
৴এখানে কি আপনি ডায়রী খোজঁতে এসেছেন?
এমন ভাবে সে প্রশ্ন করল যে মঈনুলের মনে তৎক্ষণাত দায়ীত্ব জ্ঞান জেগে উঠে।
৴না মানে,তুমি…. ঐতো ঐখানে বসো।চলো তোমাকে দেখিয়ে দিচ্ছি কি ভাবে বসবে…এইরে আমি কিন্তু আপনাকে তুমি করে বলে ফ কিছু মনে করোনা কিন্তু।
৴সমস্যা কি?যা বলার তাইতো বলছেন।চলুন।
লীলাবতীর মতো মেয়েটি একটু নৃত্য পোজ দিয়ে মুখটি বাড়িয়ে দিলেন মঈনুলের কান বরাবর।যদিও ছবিঁ আকঁবেন এই বনলতা সেনের মুখটি।
৴আপনি তো ডায়রীতে একটি মুখচ্ছবি একেঁছেন,লিখেছেন আপনার অতৃপ্ত জীবন প্রবাস জীবন,আপনার হারানো অসংখ্য প্রেমের অতৃপ্ত ভালবাসা এক বিশাল প্রেম উপখ্যান।ডায়রীতে অংকিত মুখটিই কি সেই সে ভাগ্যবতী?।৴৴৴৴৴তাছাড়া ছবিটি দেখে মনে হলো এর শেষ তুলিঁর ছোয়াঁ বাকী ছিলো।
মঈনুল ছবিঁ আকাঁ অবস্থ্যায় তার কাথার উত্তর দিচ্ছেন।৴৴
৴সবিই দেখছি জেনে গেছো,তাকে কি অনধিকার চর্চ্চা বলতে পারি?
৴কেনো এটা অনাধিকার চর্চ্চা হবে, ডায়রীর কোথাও কোন লেখা নেই যে এটা পড়া নিষেধ।তবে প্রতিটি লেখার মাঝে মাঝে অপরূপ কিছু রোমান্টিক চিত্র আমাকে আপনার প্রতি বেশ দুর্বল করে দেয়।
৴আমার এ অ্যাবাষ্ট্রাক হৃদয়ের জন্য কেউ ভাবেন এটা অবাক ব্যাপার।যাগগে ডায়রীটা পাবো তো!।
৴সত্যিই আপনার মন ঐ অ্যাবাষ্ট্রাক ছবির মতো মিশ্রিত নীল হলুদের রং ধনুর খেলা খেলে যায়,বুঝাই যায় না আপনার সত্য কোনটি….ভেবে দেখি ডায়রীটি ফেরত দিবো কি দেবো না।
৴আরে আরে কি করছো এতো নড়া চড়া করলে কি ছবি আকাঁ যায়?
৴ঠিক আছে এই নিন আর নড়বো না, ঠিক আছে ।
৴এইতো সভ্য মেয়ের মতো কথা।অনেক দেরী হয়ে যাচ্ছে এবার ঝটপট ছবিটা একেঁ শেষ করব।ছবিঁ আকাঁ শেষ হলেই ডায়রীটি ফেরত দিবে ঠিক আছে?
ছবিঁর প্রায় পার্টস ড্রইং শেষ এবার রংয়ের ছোয়াঁ।এ দিকে মেয়েটির যেনো কথাই শেষ হয় না আবারো শুরু করলেন কথা তবে এবার সে স্থির কেবল মুখ দিয়ে খইঁ ফুটোরঁ মতো শব্দগুলো বের হচ্ছে।
৴জানেন,আপনার ডায়রীর একটি লেখা আমাকে অনেক ভাবিয়ে ছিলো,ভালবাসলে যে এতো কষ্ট পেতে হয় তা জানা ছিল না।ভাগ্যবতী মেয়েটি যখন তার প্রেমিকের পিঠে হালকা রোমাঞ্চের থাপ্পর দিয়ে বললেন…এই এতো দেরী হলো কেনো অমনি প্রেমিকের মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো যন্ত্রণার একটি মৃদু শব্দ ‘উফ্ ।সে মানে প্রবাসী প্রেমিক যখন প্রেমিকের কাছে যাবেন ঠিক সেই সময় বড় ভাইদের বাধার সাথে অসংখ্য জুতার আঘাতে পিঠটি থেতলিয়ে রক্ত জমাট হয়,নরম পিঠের মাংসের এখানে সেখানে।তবুও সে সব বাধা ডিঙ্গীয়ে আসলেন দেখা করলেন দীর্ঘকাল পর প্রেমিকার সাথে…দেখার অধির আগ্রহে থাকা প্রিয়তমারএমন স্পর্শ তার রোমান্টিকতার গভীরতাকে ম্লান করে ব্যাথায় প্রেমিকের মুখ বেড়িয়ে এলো উপফ্ একটি শব্দ যা প্রিয়ার সন্দেহ হয়।
৴কি হয়েছে তোমার?শার্টটি খুলতো।
৴না কই কিছু নয়।
৴যা বলছি তাই করো শার্ট খোল৴৴৴৴৴নাকি আমি খুলবো।
৴না না আমিই খুলছি।
শার্টটি খুলতে গিয়ে সেন্টু গ্যাঞ্জি ডিঙ্গিয়ে রক্তের চাপে শাটর্টি আকটে আটকে খোলে।পুরো শাটর্টি খোলা মুহুর্তেই প্রেমিকার আখিঁ জলে ছল ছল,পুরোটা পিঠে জুতার রক্তাক আঘাতে চিহ্নগুলো তার চোখেরঁ ছল ছল অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি গড়িয়ে পড়ল গাল বেয়ে।সেই তাদের ভালবাসার পরিণতি যদি হয় বিচ্ছেদ, তখন মানতেই হয় ভালবাসার ব্যার্থতাই ভালবাসার স্বার্থকতা, কি বলেন ?তবে আমার বেলায় আমি কিন্তু সেটা হতে দেবো না।
৴তবে কি করবে?।

পূর্বেব পর্ব

৯২২জন ৯২২জন
0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ