পূর্বের পর্বটিতে আমি তুলে ধরেছিলাম বরইতলা,বাবলা বন এবং বেলতলী বধ্যভূমির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকটি বধ্যভূমি কিংবা সেই জায়গাগুলোতে সংঘটিত গণহত্যার কথা তুলে ধরা হলেও, বাদ পরে গেছে অধিকাংশ বধ্যভূমিতে সংঘটিত গণহত্যার ইতিহাস। এমনও হয়তো অনেক বধ্যভূমি রয়েছে যেগুলোর কোন চিহ্নই এখন আর পাওয়া যায় না। শুধু লোকমুখে শোনা যায় সেসব জায়গার ইতিহাস। অনুসন্ধান করতে গেলে তেমন কোন স্মৃতিচিহ্নই পাওয়া যায় না সেসব জায়গা থেকে। কিন্তু এমনটা কি হবার কথা ছিল ? আমাদের শহীদ পিতা মাতাদের বীরত্বগাঁথার ইতিহাসগুলো কি হারিয়ে যাবার ছিল এমনি ভাবে ? অতন্ত্য দুঃখের হলেও সত্যি যে এমনটাই হয়েছে। আজ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে সেইসব বীরদের বীরত্বগাঁথার ইতিহাস; যারা মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তেও একাগ্র চিত্তে উচ্চারন করে গেছে “জয় বাংলা” ।
স্বাধীনতার পরে আমরা রাজাকারদের পূর্ণবাসিত হতে দেখেছি, অনেক রাজাকারদের দেখেছি মন্ত্রীপ্রতিমন্ত্রীদের আসনে আসীন হতে, আবার ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের “লাল-সবুজ” পতাকাটিকেও উড়তে দেখেছি অনেক রাজাকারের গাড়িতে। কিন্তু দেখিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মহান ইতিহাসগুলোর সংরক্ষণের কোন যথাযথ পদক্ষেপ। যথাযথা পদক্ষেপের অভাবে অনেক মহান ইতিহাসই আজ মুছে গেছে ইতিহাসের পাতা থেকে। কিন্তু এভাবে যদি একটার পর একটা ইতিহাস হারিয়ে যেতে থাকে কালের বিবর্তনে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কিভাবে জানবে যে বাঙালির জন্মের ইতিহাসের সাথে জরিয়ে আছে “মুক্তিযুদ্ধ” নামের একটি মহান অধ্যায়। কিভাবে জানবে তাঁরা নিজ দেশের জন্মের উপাখ্যান !! জানি না আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াসের মাধ্যমে আমি কতোটুকু তুলে ধরতে পারবো, কিন্তু এরপরেও তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে থাকা আমাদের মহান ইতিহাসগুলোর ক্ষুদ্র কিছু অংশ।আজকে আমি তুলে ধরেছি চুকনগর বধ্যভূমিতে সংঘটিত গণহত্যার ইতিহাসঃ-
চুকনগর বধ্যভূমি, খুলনা
চুকনগর খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার অন্তর্গত একটি অঞ্চল।ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নে চুকনগর বাজার অবস্থিত। চুকনগর খুলনা শহর থেকে প্রায় ৩২ কি,মি পশ্চিমে ভদ্রা নদীর তীরে অবস্থিত এবং ভারতীয় সিমান্তের নিকটে অবস্থিত। ১৯৭১ সালে চুকনগর বাজারটি বেশ পরিচিত ছিল। তিনদিকে নদী ঘেরা ছিল চুকনগর বাজার। ৭১ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গণহত্যা শুরু হয়। রাজাকার, শান্তিবাহিনী সংগঠিত হবার পর গণহত্যা কার্যক্রম আরও পরিকল্পিত ভাবে চলতে থাকে। স্থানীয় বাঙালি রাজাকার ও বিহারীরা হানাদারদের থানা ইউনিয়ন পর্যায়ের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসতে থাকে। আর ওদের প্রধান লক্ষ্য হয় হিন্দু সম্প্রদায় এবং আওয়ামী নেতারা। সেই সময় থেকেই সূচনা ঘটে চুকনগরের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের। এছাড়াও ওদের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য ছিল- চুকনগরে আশ্রয় নেয়া লক্ষাধিক শরণার্থীর পুরুষ সদস্য যাদের প্রায় শত ভাগই ছিল হিন্দু। পাকিস্তানীরা বাংলার মাটি থেকে বাঙালি জাতির মূল পরিচয় মুছে দিয়ে সেখানে এক জগাখিচুড়ি পাকিস্তানী জাতি প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছিল। এই লক্ষে তারা বুদ্ধিজীবীদের পাশাপাশি বাংলাদেশের গোটা হিন্দু কমুনিটিকেও আক্রমণের লক্ষে পরিণত করে। ’৭০ এর নির্বাচনের ফলাফল থেকে তাদের ধারণা হয়েছিল হিন্দুরা বাংলাদেশে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ এবং ‘বাঙালি মানস’ এর পক্ষে ভোট-ব্যাংক। ব্যংকটি ভেঙ্গে দিলে গোটা পাকিস্তানে বাঙালি-চেতনা বিশ্বাসী মানুষ সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে। শুরু থেকেই এই অপচিন্তা বিদ্যমান ছিল এবং বিভিন্ন পর্যায়ে হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। ’৭১ এ আমরা এর চূড়ান্ত রূপ দেখি। ’৪৭ এর পার্টিশন পর্বে পাঞ্জাবে যা ঘটেছিল কমপ্লিট এভাকুয়েশন, একাত্তরে এসে তারা পুর্ব বাংলায় ঠিক সেটাই করতে যায়।চুকনগরেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
সারাদেশে যখন হানাদার বাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাতে শুরু করে তখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ; বিশেষকরে বাটিয়াঘাটা, দাকোপ,সাতক্ষীরা,বাগেরহাট, ডুমুরিয়া অঞ্চলের লোকজন চুকনগরে এসে জড় হতে থাকে ভারতে পালিয়ে যাবার উদ্দেশ্যে। চুকনগর অঞ্চলটি একেবারে ভারতের সীমান্তবর্তী একটি অঞ্চল হবার কারণে অনেক মানুষ এই অঞ্চলটিতে আশে ভারতে পাড়ি দিয়ে নিজেদের প্রান রক্ষার তাগিদে। অনেকে চলে যেতে পারলেও অধিকাংশ মানুষই ব্যর্থ হয় সীমানা পাড়ি দিতে। আর সেই সব মানুষকেই পরবর্তীতে শিকার হতে হয় পাকি জানোয়ারদের নির্মম পৈশাচিকতার।
লোকমুখে জানা যায়, ৭১ এর মে মাসের ১৮/১৯ তারিখের দিকে “হানাদাররা আক্রমন করতে পারে” এই আশঙ্কা তীব্র ভাবে বেশ কিছু এলাকায় ছড়িয়ে পরলে লোকজন প্রানের ভয়ে চুকনগরে এসে আশ্রয় নিতে থাকে। ফলে ২০/২১ মের দিকে চুকনগর অঞ্চলটি লোকে লোকারণ্য হয়ে পরে।জানা যায়, একদিন নদী পার হবার সময় খান নামের একজন বিহারীর সঙ্গে নদী পারাপারের মূল্য নিয়ে কয়েকজন বাঙালির কিছু কথা কাটাকাটি হয়। ফলে সেই বিহারী “সকলকে দেখে নেয়া হবে” বলে হুমকি দেয়। এবং পরবর্তীতে সেই “দেখে নেয়ার” ফলশ্রুতিতেই সেই বিহারী হানাদারদের খবর দিয়েছিলো বলে জানা যায়। হানাদারদের স্থানীয় সহযোগীরাও এতে ইন্ধন যুগিয়েছিল।
২০ মে, বৃহস্পতিবার, সকাল থেকেই লোকজন সীমান্ত পাড়ি দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেই সাথে তাদের প্রত্যেকের মনে একটা চাঁপা ভয় তো ছিলই, যেহেতু পূর্বের দিন বিহারী খান তাদের “দেখে নেয়ার” কথা বলে হুমকি দিয়েছিলো। বেলা ১০ টার দিকে সাতক্ষীরা সড়ক ধরে হানাদারদের ২ টি ট্রাক চুকনগর কলেজের পশ্চিম পাশে কাউতলায় এসে পৌছায়।খুব সম্ভবত ১ প্লাটুন সৈন্য এসে জড় হয়। ট্রাক থেকে নেমেই জানোয়ারগুলো এলোপাথাড়ি গুলি করতে শুরু করে।এবং বেলা ৩ টা পর্যন্ত চলতে থাকে গোলাগুলি লোকে লোকারণ্য হয়ে যাওয়া চুকনগর পরিনত হয় একটি মৃত্যুপুরীতে। থেমে যায় মায়ের কোলে থাকা ছোট্ট শিশুটির চিৎকার, থমকে যায় হাজার মানুষের দ্রুত গতির পথচলা, পিতার হাত থেকে বিছিন্ন হয়ে যায় পুত্রের হাত, বৃদ্ধ মা পরে যায় তাঁর পুত্রের কোল থেকে, মায়ের সাদা শাড়িটি হয়ে যায় একটি রক্তবর্ণের শাড়ি। তামাটে মাটি নিমেষেই ধারণ করে লালবর্ণ। চুকনগরের আকাশ বাতাস লক্ষ মানুষের আর্তনাদে অসম্ভব ভারী হয়ে উঠে। সে আর্তনাদ হানাদার পাকিস্তানীদের পৈশাচিক উল্লাস ও অস্ত্রের ঝনঝনানিতে মাথাকুটে ফিরে এসেছিল সেই হতভাগ্য মানুষগুলোর কাছে। অসহায় মৃত্যু অথবা সবকিছু এমনকি সন্তান ফেলে ছন্নছাড়া পলায়ন ছাড়া সেদিন দ্বিতীয় কোন পথ খোলা ছিলনা চুকনগরে জমায়েত ভাগ্যবিড়ম্বিত লক্ষাধিক মানুষের জীবনে। অগুন্তি মানুষের ভীড় এবং হৈচৈ এর মধ্যে অনেকে বুঝতেই পারেনি, অনেকে বুঝতে পেরেও পালাতে পারেনি পথঘাট চিনতো না, রাঁধতে অথবা খেতে বসেছিল কেউকেউ, অনেকেই ছিল পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন- তাদের একত্র করে পলায়ন সম্ভব ছিলনা। চুকনগর জেনোসাইডে কত লোক শহীদ হয়েছিল তার কোন পরিসংখান নেই। পাকিস্তানীদের ভয়ংকর নৃশংস ‘উড়া দো, জ্বালা দো, তাবা করদো’ নীতি এবং অক্ষরে অক্ষরে তার প্রয়োগ এতদূর আতংক সৃষ্টি করেছিল যে তখন স্থানীয় সরকার ও সিভিল প্রশাসন আদৌ কার্যকর ছিলনা।
যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে চুকনগর গণহত্যা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে জনকণ্ঠের রিপোর্টার ফজলুল বারী লিখেছিলেন-
“লাশের উপর লাশ, মায়ের কোলে শিশুর লাশ, স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী জড়িয়ে ধরেছিল। বাবা মেয়েকে বাঁচাতে জড়িয়ে ধরেছিল। মুহূর্তেই সবাই লাশ হয়ে যায়। ভদ্রা নদীর পানিতে বয় রক্তের বহর, ভদ্রা নদী হয়ে যায় লাশের নদী।কয়েক ঘণ্টা পর যখন পাকিস্তানিদের গুলির মজুদ ফুরিয়ে যায় তখন বেয়ানেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো মানুষগুলোকে।”
ধারণা করা হয় সেদিন এই কয়েক মুহূর্তে প্রায় ৬ থেকে ১০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিলো। শুধু হত্যাই নয় তার মাঝে পাকি পিশাচরা কিছু নারীকে ধর্ষণও করে আবার অনেককে ট্রাকে করে তুলেও নিয়ে যায়।যারা আটলিয়া ইউনিয়নের পাতাখোলার বিল থেকে ভদ্রা নদী এবং সাতক্ষীরা রোড থেকে ঘ্যাংরাইল নদী পর্যন্ত বিস্তৃত এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জোড়া বধ্যভূমি থেকে লাশ সরানোর কাজে ব্যস্ত ছিল সেই ওয়াজেদ মিয়া প্রমুখ ৪০/৪২ জন লোক সোমবার দুপুর পর্যন্ত চার হাজার লাশ গুনে শেষপর্যন্ত হাল ছেড়ে দেয়। এই গননার মধ্যে নদী, পুকুর, ডোবা, জলায় ভাসমান হাজার হাজার লাশ অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। লাশ ফেলার সময় তারা বেশ কিছু সোনাদানা, টাকাপয়সা পেয়েছিল বলে জানিয়েছে। তার কিছু ইউনিয়ন কাউন্সিলে জমা দেয়, কিছু অন্যদের কাছে গচ্ছিত রাখে যা পরে আর ফেরত পায়নি। চুকনগর বধ্যভূমি থেকে “মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট” এর সংগৃহীত উপাদান পরীক্ষা করে ৯০ টি সাক্ষাৎকার সংকলন করা হয়। সেখানে একটি উল্লেখযোগ্য কথা বলে হয় যে-
“এবং এই গবেষণায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে চুকনগরেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গণহত্যাটি ঘটিয়েছিল পাক বাহিনী। একটি এলাকায় এতো কম সময়ে এতো কম মানুষ আর হত্যা করা হয় নি”
চুকনগর গণহত্যা সম্পর্কে চ্যানেল আইতে দেয়া হাসেম আলীর একটি সাক্ষাৎকার দেয়া হল নিচের লিংকটিতেঃ
আজকের পর্বটি এখানেই শেষ। পরবর্তী পর্বতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো অন্যকোনো বধ্যভূমিতে ঘটে যাওয়া নৃশংসতার ইতিহাস।
তথ্যসূত্রঃ-
০১.চুকনগরে গণহত্যা –মুনতাসীর মামুন।
০২. http://www.somewhereinblog.net/blog/Labutareq/29451038
২৪টি মন্তব্য
নওশিন মিশু
এই নৃশংসতা অকল্পনীয়।জানলাম বিস্তারিত।ধন্যবাদ আপনাকে।
ফাতেমা জোহরা
আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ লেখাটি পড়ে মন্তব্য করবার জন্য। হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন। পাকিস্তানিরা আমাদের দেশের মানুষের উপর যে নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে তা সত্যিই সকল নৃশংসতার সীমা অতিক্রম করেছে ।
বনলতা সেন
এ ভাবে সুন্দর করে উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ। প্রাপ্য মর্যাদা আমরা দিতে পারিনি।
ফাতেমা জোহরা
এটাই আক্ষেপ। মরে গেলেও এই আক্ষেপ শেষ হবার নয় 🙁
খেয়ালী মেয়ে
আমাদের শহীদ পিতা মাতাদের বীরত্বগাঁথার ইতিহাসগুলো কি হারিয়ে যাবার ছিল এমনি ভাবে ?—না ছিলো না-অথচো হারিয়ে যাচ্ছে তাদের বীরত্বগাঁথার ইতিহাস, বিকৃত হয়ে যাচ্ছে ইতিহাস–ঘুরেফিরে গুটিকয়েকজন ছাড়া আমরা আর কারো বীরত্বগাঁথার ইতিহাস জানতেই পারছি না…ধন্যবাদ এবিষয়টি এতো সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য…
ফাতেমা জোহরা
এটা খুব সামান্যই আপু। এমনও কিছু ইতিহাস পড়েছি , পড়ার পরে মনে হয়েছে বড় অকৃতজ্ঞ সন্তান আমরা বড় অকৃতজ্ঞ।
আপনাকেও অভিনন্দন আপু লেখাটি পড়ার জন্য 🙂
হৃদয়ের স্পন্দন
তথ্য জানলাম, পাকিদের প্রতি ঘৃনা বেড়ে গেলো আরো এক হাজার আলোকবর্ষের সমান, ধন্যবাদ আপনাক্ব -{@
ফাতেমা জোহরা
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু -{@
শুন্য শুন্যালয়
অজানা এই নির্মম হত্যাকান্ড সম্পর্কে জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এরকম আরো কতো বধ্যভূমির ইতিহাস একদিন হয়তো বিলীন হয়ে যাবে। এর চাইতে দুক্ষজনক আর কি হতে পারে। আমরা এমনই অকৃতজ্ঞ জাতি তাদের প্রাপ্য সম্মান দেয়া তো দুরের কথা, অস্বীকার করতে পারলেই যেন বাঁচি।
ফাতেমা জোহরা
বিলীন হয়ে গিয়েছে আপু। এই লেখার অন্য একটি পর্বের জন্যই আমি গিয়েছিলাম মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে। কিন্তু গিয়ে যা দেখলাম তা যে কতোটা অপমানজনক তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। শিয়ালবাড়ি বধ্যভূমির উপরে এখন বড় বড় এপার্টমেন্ট নির্মাণ কাজ চলছে 🙁
দুঃখ কষ্টে আক্ষেপে মরে যেতে ইচ্ছে হয় মাঝে মাঝে।
ব্লগার সজীব
চুকনগর গণহত্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম।ক্রোধে ইচ্ছে করছে রাজাকারদের ধরে নিয়ে জবাই করি।
ধন্যবাদ এমন পোষ্ট দেয়ার জন্য।
ফাতেমা জোহরা
আপনাকেও ধন্যবাদ লেখাটি পড়বার জন্য 🙂
ছাইরাছ হেলাল
কখনো কখনো আমাদের খুব দুর্ভাগা মনে হয়। কোন প্রতিদান আমরা দিতে পারিনি।
ফাতেমা জোহরা
আমরা পারিনি,পারার সময়টুকুও বোধহয় আর হাতে নেই 🙁
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সোনেলায় স্বাগতম আপনাকে।
বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
পরবর্তী প্রজন্ম কেনো জানবে না? অবশ্যই জানবে।
প্রথমত: “জয় বাংলা” ই তো ভুলিয়ে দিয়েছিলো কালিমা লেপন করে। কিন্তু শেষপর্যন্ত ভুলিয়ে রাখতে পারেনি তো! অনেককাল পরে হলেও “জয় বাংলা” ফিরে এসেছে গণস্লোগান হয়ে।
দ্বিতীয়ত: বাঙালির জন্মের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে “মুক্তিযুদ্ধ” নামের একটি মহান অধ্যায়…. পরবর্তী প্রজন্ম অবশ্যই তা জানবে। “জয় বাংলা” যেভাবে গণস্লোগান হিসাবে ফিরে এসেছে সেভাবেই মুক্তিযুদ্ধকেও জানবে। নিজ দেশের জন্মের উপাখ্যানতো তাঁদের জানতেই হবে। বীরদের বীরত্বগাঁথার ইতিহাস না জানলে নিজের শেকড় কোথায় প্রোথিত আছে তা জানবে কি করে।
সে কাজটুকু আমাদের করে যেতে হবে যে যেভাবে পারি, যতটুকু পারি।
ফাতেমা জোহরা
সহমত আপু আপনার সাথে 🙂
মেহেরী তাজ
প্রথমেই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন শিক্ষামুলক পোষ্টের জন্য।
জানার পরিমান বাড়ছে আপনার লেখা পড়ে। লিখতে থাকুন আপু। শুভ কামনা।
ফাতেমা জোহরা
কৃতজ্ঞতা রইলো আপু 🙂
লীলাবতী
চুকনগর হত্যাকাণ্ড পড়ে শিউরে উঠছি আপু।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
ফাতেমা জোহরা
লিখতে গিয়েও আটকে গিয়েছিলো আমার আঙুলগুলো। অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরে উঠেছি বার বার… 🙁
নুসরাত মৌরিন
১৯৭১ এর এমনই কত অজানা ইতিহাস রয়ে গেছে!!
বর্বর হায়েনা আর পিশাচের মত পাকিস্তানি মিলিটারী আর এদেশীয় কুকুরগুলো কেড়ে নিয়েছিল আমার মা,আমার বাবা আর আমার ভাইকে। আমার বোনকে করেছিল অপমানিত…।
যেখানে যতবারই বিবরন গুলো পড়ি একই রকম ভাবে শিউড়ে উঠি।ইচ্ছা করে আমি আবার যুদ্ধে যাই,আমি না হয় প্রতিশোধ নিই আমার পিতা হত্যার,আমার ভাই হত্যার,আমার বোনের সম্ভ্রমহানির,আমার মায়ের কান্নার…।
জানি না বিচার কি আমরা পাব কখনো?
ফাতেমা জোহরা
বিচার যেই কচ্ছপের গতিতে চলছে, তাতে আদৌ বিচার শেষ হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তার উদ্রেক হয় মাঝে মাঝে।
নীলাঞ্জনা নীলা
দুবার এসেও মন্তব্য না করে ফিরে গিয়েছি।কোন শব্দ দিয়ে প্রকাশ করবো এমন নৃশংসতাকে? কি দিয়ে মনের ক্ষোভ দমন করবো?কেমন করে প্রকাশ করবো আমার কষ্টকে?
ধন্যবাদ আপনাকে ইতিহাসকে জানানোর জন্য।
ফাতেমা জোহরা
এরকমটা আমারও হয়। মাঝে মাঝে মনেহয় নাহ্… আর লিখবো না এসব নিয়ে। কিন্তু শেকড়ের টানে নিজেকে আটকে রাখতে পারি না আপু 🙁 ধন্যবাদ লেখাটি পড়বার জন্য।