অধরা

রুদ্র রুহান ১০ অক্টোবর ২০১৪, শুক্রবার, ১১:৪৮:৫৬পূর্বাহ্ন বিবিধ ১০ মন্তব্য

প্রত্যেক পূর্ণিমা রাতে বাসায় ফেরার পথে দীঘির পাড়ে কিছুটা সময় একা হয়ে যাওয়ার তাড়নায় অনভূতিগুলো তাড়া করে। যখন সে তাড়নায় সাড়া দিয়ে দীঘিটার পাড়ে সবুজ ঘাসে বসি, ঠিক তখন, রুপোলী আবছায়ায় অধরা ধরা দেয়। নি:শব্দে নিশ্চুপ আমার ডান দিকে বসে দীঘির জলে কিছু একটা ছুড়ে দেয়। বস্তটা টুপ করে শব্দ করে চারদিকে জল ছড়িয়ে দেয়। বুঝতে পারি অধরা আমার পাশে। ইচ্ছে হয় অধরাকে ছুঁয়ে দেই। ইচ্ছে হয় ওর হাত ধরে পুরো মাঠ ঘুরে ঘুরে গল্প করি অনন্ত। কিন্ত সে যে অধরা। ছুঁয়ে দিতে গেলে মুহুর্তেই নিরুদ্দেশ।

সে দিনও ঠিক এমন দীঘিটার পাড় ধরে হাটছি কোথাও বসবো বলে। মুঠোফোনে রিং, অপরিচিত নম্বর। রিসিভ করলাম
– রুদ্র কেমন আছো?
– জ্বী, ভালো, আপনি?
আমার “আপনি” বলার বাচন ভংগিতে উনি বুঝে ফেলেছেন দুটো প্রশ্ন করছি।
– ভালো, চিনতে পারছোনা? অবশ্য চেনার কথাও তোমার। আট বছর আগের সে কণ্ঠস্বর চিনবে কি করে!
– আমি কি আপনার পরিচিত কেউ? প্লিজ পরিচয়টা দিলে নিশ্চিন্ত হতে পারতাম।
– রুদ্র, আমরা কত সহজে পাল্টে যেতে পারি, তাইনা? ভেবে দ্যাখো, আট বছর আগে তুমি কিছু হারিয়েছিলে? কি হারিয়েছিলে? রুদ্র মাত্র ৮ বছর, ভুলেই গেছো দিব্যি। অথচ প্রত্যকদিন বলতে, আজন্ম ভুলতে পারবেনা। বিয়ের অনুষ্ঠানে যে দিন তোমার স্ব-রচিত কবিতাবৃত্তি শুনে বিমোহিত, মন্ত্রমুগ্ধ আমি তোমাকে ভালবাসার কথা বলতে ব্যাকুল ছিলাম, আজও তোমার মুঠোফোনের নম্বরটি সংগ্রহের পর ঠিক এক সেকেন্ডও অপেক্ষা করতে পারিনি।
রুদ্র, নিশ্চয় এবার আমাকে চিনতে পারছো।
– সাথী
– হ্যাঁ, রুদ্র আমি তোমার সে সাথী, আট বছর আগে যে তোমার সাথে অভিমান করে তিলতিল করে নিজেকে বৃত্তবন্দি করেছে। কেনোনা, আমার সবটুকু প্রেম তো তোমাকে ঘীরে।
– সাথী তুমি কোথায়!!! কেন তুমি হারিয়েছিলে? তুমি কেমন আছো? কোথায় আছো??
– আমি, অনেক ভালো, আমার দুটো সন্তান, ঢাকার অভিজাত এলাকায় বরের বাড়ি, দামী গাড়ি, কি নেই বলো? আমার সুখের আয়োজনে কিসের অভাব? জানো রুদ্র! ৮ বছর ধরে তোমাকে খুঁজছি অবিরাম………….

( পড়ে লিখবো আবার কখোনো)

৪৮১জন ৪৮১জন
0 Shares

১০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ