কোকিলের কুহুতান

ছাইরাছ হেলাল ১০ মার্চ ২০১৯, রবিবার, ০৯:৩১:৪৯অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৪ মন্তব্য

বিকেল-আলোর শেষ রং-ঝুড়িটুকু
চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে,
নিভে যেতে যেতে প্রাণপণে
কী-জানি কিছু একটা জানান দিচ্ছে,
বুঝছি-না-তো কিছুই, হাজারো শোনার ভিড়ে;

নামাজ-জানলায় হয়রান কোকিল
ডেকে ডেকে অস্থির,
কী-জানি! কাকে কী বলে! বলতে চায়;

আলো আর আধারের এই আবছায়ায়
ঝাঁপিয়ে পড়া অভিজাত হুল্লোড় লুকোচুরি,
নিয়ত নিত্তের তোলপাড় রূপের এক জলছবি
অভিনব এক ফিউশন ফেরারি ।

ডিগবাজি খেয়ে খেয়ে ধেয়ে আসে কুহুতান
একাকীর নিঃসঙ্গ আঁকাবাঁকা রেখায় তরঙ্গ বেজে ওঠে,
আমার নামাজ-মন উদাস বিষণ্ণতায়
বিধাতার সাহায্য চায়।

0 Shares

২৪টি মন্তব্য

  • তৌহিদ

    ভাই, এসব বাহানা চলবেনা, নামাজ পড়েন। গোধুলীর আলো বলেন আর ভোরের অন্ধকার বলেন, মন যতই কুহু কুহু করুক প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়।

    সৃষ্টিকর্তা পাশে থাকবেন নিশ্চয়।

  • সাবিনা ইয়াসমিন

    একটা গান আছে,
    আমার ঘুম ভাঙাইয়া গেলো রে
    মরার কোকিলে, আমায় পাগলও বানাইলো রে
    মরার কোকিলে,,,,,,, হা,হা,হা, এখন আপনি চাইলে গানটির রিমেক করতে পারবেন। সেখানে ঘুমের যায়গায় নামাজ চলে আসবে।

    নাহ, রিমেকটা ভালো হবেনা মহারাজ। কোকিল গানে / ঘুমেই মানায়। নামাজে এলে হয় তাকে ভাগিয়ে দিতে হবে নয়তো নিজ কানে তুলো দিতে হবে। তবে, মনের কানে যদি বনের কোকিল ডেকে উঠে তাহলে বিপদ। তখন নিজ কান/মনের চিকিৎসা নেয়ার কোনো বিকল্প নেই।

    আপনার জন্যে এখন থেকে চিন্তা করতে হবে দেখছি।🤔

  • প্রহেলিকা

    প্রার্থনারত মুখ, নিষ্পাপ কুহুতান দুইয়ে মিলিয়েই চলুক জীবন তরঙ্গ। তবুও ভালো যে কোকিলের কুহুতান এসে ভিড় করে দুষ্টু কাকের কা কা না। যদিও কাকের কা কা ডাকটা আমার ভালোই লাগে। কোকিলকে একটু এদিকেও পাঠিয়ে দিয়েন, কেন জানি মনে হলো ভালো বৈ মন্দ চাইবে না এ কোকিল। বিপদে একমাত্র সাক্ষীও হতে পারে সে।

    তবে এবার মোক্ষম জায়গায় সাহায্যের আরজি জানিয়েছেন, উনি মুচকি না হাসলেই হলো আপনার আরজি শুনে।

    লিখুন লিখুন, চাইলেই সবাই যদি লিখতে পারত আপনার মতো!!!

    • ছাইরাছ হেলাল

      আপনাকে তো পাই-ই না, পেলাম যখন, একটু গপাই।

      পাপীতাপীর মন, হিমালয় সম ভারী ও গ্রানাইট সম কঠিন-ও না।
      আবার আশি মাইল লম্বা লহার শিকল, এক একটি আংটা আশি কেজি ওজনের, তা দিয়েও বেঁধে রাখা যায়/যাচ্ছে না।
      অতএব মনের আকুপাকু থাকবে/থাকছে।

      অন্য গল্প বলা যাক,
      খুব বিখ্যাত ডাক্তারের কাছে গভীর সিরিয়াল পার করে রোগী পৌছাই।
      যথারীতি রোগের লক্ষণ বর্ণনা পালা,
      প্রার্থনায় মন নানান দিকে ধায়!! মনে কোকিল আসে!! কানে কোকিল ডাক পৌঁছায়!!
      বলুন বলুন, নির্ভয়ে নির্দ্বিধায় বলুন,
      কোবতে ভেসে আসে!! এক, একাধিক!!
      আর, আর কী, বলুন বলুন,
      এডিট অপশন আসে, মন্তব্যের উত্তর-ও!!
      তখন কী করেন!!
      নত হয়ে নত মুখে মাফ/টাফ চাই।

      ডাক্তার এ সব শুনে/টুনে ঝিম/মটকা মেরে থাকলেন, রোগী প্রমাদ গুনতে লাগল।
      তাকিয়া ছেড়ে উঠে এসে কাছে ডেকে বুকে চেপে ধরলেন! নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে পাঁজরের
      হাড় কটমট কর উঠল। কোনরকম ছাড়া পেয়ে বেঁচে ওঠার আনন্দে আনন্দিত হলো, রোগী।

      বিধাতার সামনে দাঁড়ালে আমাদের যা মনে আসে তা তো বলতে পারি-না/পারছি-না,
      আর আপনার মত ক্ষমা প্রার্থনার সাহস-ও রাখি-না।

      এরপর থেকে ডাক্তার আর রোগী দুজনে দুজনার!!

      এবার আসি লেখার বিষয়ে পাঠক ভাবনা, লেখকের নিকুচি করি, সে তার হাজার-বিজার
      ভাবনা নিয়ে চুলোয় ঘুমাক।

      “বিকেল-আলোর শেষ রং-ঝুড়িটুকু
      চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে,
      নিভে যেতে যেতে,”

      জীবন-সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে আলো-আধারের পার্থক্য বুঝতে পারছে,
      এক মাত্র অমোঘ সত্য মৃত্যু, তার মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে অজানা শঙ্কা নিয়ে।

      “নামাজ-জানলায় হয়রান কোকিল
      ডেকে ডেকে অস্থির,
      কী-জানি! কাকে কী বলে! বলতে চায়;”

      এখানে কোকিল হলো সাময়িক সময়ের প্রতিভূ, সে জানান দিচ্ছে
      আগামীর সময়ে কে কোথায় থাকবে কেউ জানে না।
      জীবন একটাই, একবার-ই!

      “আমার নামাজ-মন উদাস বিষণ্ণতায়
      বিধাতার সাহায্য চায়।”

      আত্ম-সমর্পিত বান্দা বিধাতার কাছেই নতমুখে নতজানু হয়ে সাহায্য প্রার্থনা করে।

      লিখতে সবাই-ই পারে, কেউ দেখায় কেউ না-দেখায় রাখে।

      • প্রহেলিকা

        বলতে যখন গেলেনই, ভেবেছিলাম এই দুটি পঙতির কথাও উঠে আসবে।

        “আলো আর আধারের এই আবছায়ায়
        ঝাঁপিয়ে পড়া অভিজাত হুল্লোড় লুকোচুরি”

        স্বভাবজাত দর্শন বলা যায়। সুন্দরতম আশ্রয় বা অমোঘ সত্যকে আড়ালে লেখা এই হুল্লোড় আর লুকোচুরিতেই জ্বলন্ত কুপিটি ধীরে ধীরে নিভে যেতে থাকে।

        তবে ভাবছি আসলে অন্যকিছু, কিভাবে নিভে যেতে পারে? ফুয়েল ফুরিয়ে গেলেও যেমন নিভে যাবে তেমনি একটি দমকা হাওয়া এসেও নিভিয়ে দিতে পারে।

        এমন ডাক্তারের খোঁজে খোঁজে বিকাল হলো সন্ধ্যা হবার আগেই তার দেখাই চাই, চাই-ই!

        নতমুখে নতজানু হয়ে মাফটাফ চাওয়া ছাড়াতো আর কোনো উপায় দেখছি না। আশি কেজি আংটার ওজন সইতে পারাও কথা আপাতত ভাবতেই চাচ্ছি না।

        আত্ম সমর্পণে একটি সুবিধে রয়েছে, ইনিয়ে বিনিয়ে শাস্তি কিছুটা কমিয়ে আনা যাবে, সাক্ষী থাকলো কোকিলের কুহুতান আর অই নামাজের জানলা।

      • ছাইরাছ হেলাল

        কত আর বলা যায়!!

        “আলো আর আধারের এই আবছায়ায়
        ঝাঁপিয়ে পড়া অভিজাত হুল্লোড় লুকোচুরি”

        বাঁচে থাকা ও ক্রমাগত শেষের দিকে এগিয়ে যাওয়া, এই যে টানাপোড়েন, এখানে থাকে কিছু সুবাতাস, সুখ স্মৃতি।

        ইনুনি-বিনুনিটুকু বিধাতার বড়ই মন-পছন্দ তরিকা।

    • বন্যা লিপি

      আমার নামাজ মন উদাসীন বিষন্নতায় বিধাতার সাহায্য চায় “”
      অসাধারন অসাধারন শেষ লাইনেই পুরো বক্তব্য উপলব্ধি। আনুশেহ্ র গানের দুটো শব্দ মনে পড়ে গেলো…….”নামাজ পড়া হইলোনা আমার। “দিনান্তের আলোটুকু সর্বতঃ হুঁস এনে দিক সকলের তরে। বিধাতা সকলের দোষ ক্ষমা করে নিক আপন রহমতের তলে। শুভ কামনায়।

  • শুন্য শুন্যালয়

    বসন্তে কোকিল কে কী আর আটকিয়ে রাখা যাবে, না ডাকলে তো আবার বোবা বলবেন? এক ডাককেই এতো ভয় পেয়ে জানপ্রাণ নিয়ে বিধাতার শরনাপন্ন হলেন!! অবশ্য বিকেল রঙ টং কি জানি, তারাও নাকি কিসের আলামত দিচ্ছে।
    বিধাতার প্রতি টানের চাইতে কিন্তু প্রতিকূল টানের জোর টোর বেশি লাগতেছে ভাউ। ভয় টয় পেয়েই মানুষ বেশি বেশি দুগ্যা দুগ্যা করে 🙂

    • ছাইরাছ হেলাল

      কে আর কাকে কবে কখন আটকাতে পেরেছে!! অবশ্য আটক করতে বা আটকে যেতে মন্দ লাগে না।
      আর ভয়!! ঐ যে গোপাল ভারের ভাষায়…………(একটু পাল্টে) মা জননী ভয় পেলে বুঝতেন, ভয় কাকে বলে।
      একদম ঠিক ধরেছেন! টান সে দিকেই বেশি তা বুঝতে পেরেই বিধাতার আশ্রয় প্রার্থনা!!
      খালি দুজ্ঞা!! জয় মা তারা ও বলে।
      আপনি সহি-শুদ্ধ মানুষ!! ডর/ভয়ের কিচ্ছুটি নেই। রাধে রাধে!!

      • শুন্য শুন্যালয়

        টানাটানি বহুত আগেই আমারে টানতে গিয়া ক্ষান্ত দিছে, ভয় আর কারে পাবো? সহি-শুদ্ধ মানুষেরই ভয় বেশি থাকে, আর ভেজাইল্যাদের অন্যে ডড়ায়, বোঝা গেলো?
        কোকিল কুকিল আটকে আর কি করবেন? নিজেরেই কোথাও গিট্টু দেয়া কিনা দেখেন। অবশ্য আপনি ছাড়া আইছলেন কবে? হেতি হুতি কেউ না কেউ বাইন্ধাই রাখছে।
        এরপর কী আসিবে? কবে আসিবে?

      • ছাইরাছ হেলাল

        যাক, ভয়ে আছে তা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না!!
        গিট্টুটি দেখিয়ে দিলে মন্দ হয় না।
        হেতি/হুতিরা আমারে কেউ পাত্তা দেয় না, আপনি দাক্তার মানুষ, নিশ্চয়ই তা জানেন!

        এরপর কী আসিবে তা বলে দিলে আরও ভালু হয়, তবে উত্তর/ফুত্তর তো দিচ্ছেন না।

  • মায়াবতী

    ডিগবাজী খাইয়া আমি ও আইয়া পরছি কুবি গুরুজন। অনেক দিন পরে আপনার কুবিতা পড়িয়া খুশিয়ে ভাল্লগাতেছে ♥♥♥ বাই দ্যা ওয়ে, টানা টানি বাদ দিয়ে সোজা সাপটা কিছু কুবিতা কি ডেরিভারী দেয়া যায় না গুরু জ্বী ***:)

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ