সম্পর্ক কি মইয়ের মত? প্রতিটি ধাপে এক একজন অবস্থান করে! একটি ধাপের অনুপস্থিতি পরবর্তী ধাপে যাবার অন্তরায়। নাকি পালকে মোড়ান একটি আস্ত পাখি? প্রতিটি পালক এক একটি সম্পর্ক। একটি পালক ছাড়াই কেমন খাপছাড়া হয় পাখি।
আমাদের সবার জীবনেই এমন ঘটে। পূর্বে কখনো দেখা হয়নি বা স্বপ্নেও ভাবা হয়নি তাঁর কথা। অথচ পরিনত বয়সে তাঁর সাথে পরিচয়,পরিচয়ের পর ধীরে ধীরে হৃদয়ের একটি প্রকোষ্ঠে তাঁর আনাগোনা। আনাগোনা থেকে হৃদয়ে বসা এবং বসবাস। একটি সময়ে হৃদয়ের সে প্রকোষ্ঠের মালিক বনে যাওয়া। কিছুদিন পূর্বেই যে ছিল অপরিচিত, সেই এখন হৃদয়ের এক অংশের অধীশ্বর। তাঁকে বাদ দিয়ে হৃদয়, অন্তকরন, প্রাণ অসম্পূর্ন।
কিভাবে হয় এমন? কেন হয়? একটি হৃদয়ে কত প্রকোষ্ঠ থাকে? এটি কি পূর্ব নির্ধারিত থাকে? একটি জীবনে কতজন, কোন সম্পর্কে হৃদয়ের স্থান অধিকার করবে সে আনুযায়ী হৃদয়ের প্রকোষ্ঠ তৈরী হয় আগে থেকেই? শূন্য থাকে তাঁর আগমনের জন্য?
বড় অদ্ভুত এই সম্পর্ক, আত্মীয়তা। যার কথা ভাবা হয়নি, স্বপ্নেও দেখা হয়নি তাঁর অবয়ব ইতিপূর্বে, সে ই কিনা অস্তিত্বের সাথে মিশে যায়! আত্মার সম্পর্কই সবচেয়ে বড় আত্মীয়তার জন্ম দেয়। এক সময়ের অচেনা মানুষটির প্রতি এক ধরনের নির্ভরশীলতা তৈরী হয়। বিনা নোটিশে একদিনের যোগাযোগহীনতায় অসীম শুন্যতার সৃষ্টি হয়। বুকের ভিতর বিরান হাওয়া হু হু করে বয়ে যায়। নিজের থেকেও আপন হয়ে যায় সে। তাঁর আনন্দ, বেদনা, সুখ, দুঃখ, অসুস্থতার সাথে মিশে যায় আস্ত হৃদয়ের মানুষটি। দূরে থাকা হৃদয়ের অংশের আনন্দে আনন্দিত হয়, অসুস্থতার সময়ে ইচ্ছে হয় শিয়রে বসে কপালে হাত রাখতে- আমি আছি, সব ঠিক হয়ে যাবে, এমন অভয় বানী থাকে তাঁর মনে।
এই যে আবেগ, এর জন্যই মানুষ তাঁর জীবনকে তুচ্ছ করে ফেলে। ছুটে চলে হাজার অযুত বন্ধুর পথ।
বন্ধুত্ব, ভালবাসা, সম্পর্ক, প্রেম, আত্মীয়তা, সবই জড়িয়ে থাকে একই সুতোয়।
২৬টি মন্তব্য
পথহারা পাখি
দেহের ভেতর আত্মা আছে বলেই এতো আত্মীয়তা, এতো সম্পর্ক….আত্মা না থাকলে কোনো আবেগ থাকতো না, সম্পর্কের প্রশ্ন ও উঠতো না 🙂
জিসান শা ইকরাম
ভালো বলেছেন তো ডাক্তার,
শুভ কামনা
নীলাঞ্জনা নীলা
সময়ের প্রয়োজনেই জীবনে একেকটি ধাপ আসে। সেই ধাপে কতোজনের সাথে সম্পর্ক হয়ে যায়! চলে গিয়ে নতুন কেউ আসে। আবার সেই নতুনও পুরোনো হয়ে যায়। সম্পর্ক নিজেই তৈরী হয়, আবার একদিন মিলিয়ে যায়।
উদাহরণস্বরূপ – নানা এবং নাত্নী 😀
ভালো লিখেছো।
জিসান শা ইকরাম
নাত্নীটা সেই যে এলো, আর যাওয়া যাইইর নাম নাই, একটা অংশ হয়ে গেছে সে নানার। শরীরের একটা অংগ না থাকলে শরীরের খুত হয়, নাত্নীও তেমনি।
ভাল থাকিস
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
জন্ম মৃত্য এবং বিয়ে
হাজার চেষ্টাও যায় না খন্ডানো
বিধাতা পূর্ব নির্ধারণেই হয় যে মিলন
এ কথা সত্য ।
লেখাটি নিজ অস্তিত্বের সন্ধ্যানে।খুব ভাল হয়েছে।
-{@
জিসান শা ইকরাম
ঠিক বলেছেন মনির ভাই।
শুভ কামনা।
মায়াবতী
একটি হৃদয় কি মৌমাছির মধু জমিয়ে রাখা প্রকোষ্ঠ? প্রতিটি প্রকোষ্ঠ হাজারো ফুল থেকে সংগ্রহীত অমৃত সুধা! এতো গভীর ভাবে তো ভেবে দেখিনি কখনো স্যার!!! অদ্ভুত সুন্দর করে লিখে গেলেন সম্পর্ক গুলোর বিনি সুতার মালা।
জিসান শা ইকরাম
সম্পর্ক আসলেই বিনি সুতোর মালা।
স্বপ্ন নীলা
লেখাটি আমি কয়েকবার পড়লাম। মন দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করলাম– এ যেন বিন্দুর ভেতর সিন্ধুর গভীরতা — সম্পর্ক !!! শব্দটা খুবই ছোট, কিন্তু এর ব্যপকতা অনেক বেশি। অনুরোধ করবো– এই বিষয়টা নিয়ে আরো বড় আকারে লিখুন——
অসাধারণ একটা পোস্ট
মন হতে আন্তরিক ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
ইচ্ছে ছিল বড় আকারে লেখার, সময়ের অভাবে পারিনি আসলে।
মনোসংযোগেও সমস্যা হচ্ছে ইদানিং।
ধন্যবাদ সহ শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
আত্মা থেকেই আত্মীয়তা।চলমান জীবনে আত্মার সাথে ক্রমাগত যোগ হতে থাকে নানা মুখ।মুখ গুলোর অনেক নাম থাকে,অনেক রঙের হয়।বন্ধুত্ব,ভালোবাসা,সম্পর্ক,প্রেম ,আত্মীয়তা এই সব কিছুই আত্মার অবয়ব। ব্যাতিক্রমী লেখা।অল্প কথায় অনেক সুন্দর বিবরন ছিলো।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা ম্যাডাম, মুখ গুলো অনেক নাম আর রঙের হয়।
একটি জীবনে মানুষ কত নিত্য নতুন ধরনের সম্পর্কের মুখোমুখি হয়।
সমস্ত সম্পর্ক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এডজাস্ট করে নেয় মন।
ধন্যবাদ, শুভ কামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
মনের পরিসরে কতটুকু জায়গা আছে জানিনা কিন্তু হাজারো হাজারো সম্পর্ক স্থান পাকা করে আছে। এতো গভিরতা ভাইয়া।
যেমন এই সোনেলা>আপু >ভাইয়া=ভরপুর। কেউ কোন্দিন কাউকে সবাই সবাইকে দেখছি??? না। কিন্তু আপু, ভাইয়া আত্বার আত্বীয়, অন্তরের গভীরে আত্বজ। ের কি কোন বিনিময় যোগ্য আছে নাই, কিন্তু আমরা আমরাই।
আর শ্রধ্বেয় ভাইয়া আপনি যে সম্পর্ক নায় দেখা নায় পরিচয় হঠাত একদিন সবকিছু দখল করে নিলো – এই হল নতুন বসত। গড়ে উঠল।
আপনার লেখাটি প্রিয়োতে নিলাম।
জিসান শা ইকরাম
ঠিক বলেছেন মজিবর ভাই।
হঠাৎই সোনেলা কেন্দ্রীক আত্মীয়তার সম্পর্কে মিলে একাকার হয়ে গেলাম।
ভাল থাকুন ভাই,
শুভ কামনা।
মাহমুদ আল মেহেদী
এরকম লেখা আরো চাই।আমরা শিখতে চাই এমন লেখনির মাধ্যমে।
জিসান শা ইকরাম
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
শুভ কামনা
ছাইরাছ হেলাল
ভালবাসা একটি অলীক ভাবনা,
গুজব -ও বটে,
চিলের কাছে কান সপে দেয়ার মত।
বেঘোরে প্রাণ হারানোর উৎকৃষ্ট ভান মাত্র!!
মায়াবতী
ও মা! সে কি!!! কবি সাহেব দেখি ভালবাসার ব্যাক্ষা দিয়ে ফেলেছেন! এই। না শুধু বলা হয় ভালবাসা ” বুঝি না “!
বাই দ্যা ওয়ে ভালবাসার ব্যাক্ষাটা কিন্ত মনে ধরেছে *
ছাইরাছ হেলাল
না মানে ইয়ে, আপনাদের বিজ্ঞ লেখা পড়ে-টড়ে সামান্য জ্ঞানী-জ্ঞানী ভাব নিলাম আর-কী!!
আপনার মনে ধরানো-তো বিরাট ব্যাপার, ঝড়ে বক পড়ে গেছে ভাবতে পারেন।
জিসান শা ইকরাম
হুম, তা বটে তা বটে ( কিছু কিছু ক্ষেত্রে)
@ছাইরাছ হেলাল
ছাইরাছ হেলাল
আজকাল ক্ষেত্রের ব্যাপক বিস্তার আমরা দেখতে পাচ্ছি।
জিসান শা ইকরাম
হ, আজকাল ক্ষেত্রের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে।
রিমি রুম্মান
জীবন চলার পথে এমন করে কতজন আসে, যায় সময়ে ! জীবন এমন করেই এগিয়ে যায় সমাপ্তির দিকে।
জিসান শা ইকরাম
ঠিক বলেছ দিদি ভাই।
রিতু জাহান
পরিণত বয়সে যে অনুভূতি, তা বড় শক্ত মজবুত। এমন সব সম্পর্কে অপরজন কোনো ব্যাথায় কষ্ট পেলে অন্যজনের বুক খা খা করে ওঠে।
আমার হয়। খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ হয়ে যায় আমার।
সত্যিই তাই, মানুষের মনে অনেকগুলো ঘর থাকে। কোনোটা ছোটো কোনোটা বড়। একেকজনের জন্য ভালবাসা একেকরকম।
স্নেহ, মায়া, মমতা, প্রেম। সবই আলাদা আলাদা ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
হুম, কিছু পথ অবশ্যই অসমতল।
এতো সুন্দর করে লিখেছেন ভাইয়া!
দারুন একটা লেখা।
জিসান শা ইকরাম
এই লেখা নিয়ে আমার যে মনোভাব, তাই বলেছ তুমি তোমার মন্তব্যে।
শুভ কামনা -{@