
আত্মায় কোন আত্মীয় নেই
অনাত্মীয়ে আজ পৃথিবী ঠাসা,
পিরিতি যদিও মাছরাঙা নয়
তবুও বিরল নীল ভালবাসা।
সবুজ টিয়ার ঝাঁকে উড়ে এসে
বসে না শৈশব কামরাঙা গাছে,
মাটির কলসি তুলসী তলায়
বিবর্ণ হয়ে ভেঙ্গে পড়ে আছে।
ভেবেছি পাবই একটি বাবুই
বুড়ো তালডালে বুনছে বাসা,
এপাশে-ওপাশে চক্ষু বুলিয়ে
দেখি সভ্যতার নগ্ন তামাশা।
বিরান দুপুরে ঘুঘুর বিরহে
যে-কালে পেকেছে ডেউয়ার ফল,
সে-কালে শালিকের সন্ধ্যাকালীন
তৃষ্ণা মিটিয়েছে ধানঝরা জল।
প্রাচীন কুঠুরির পেঁচানি বুড়ি
তীক্ষ্ণ-মোলায়েম আদুরে স্বরে,
কথা কয়ে কয়ে লুকালো কোথায়
জানে না কেউ কোলাহলপুরে।
বউ কথা কও পাপিয়ার গানে
গহীনে গহন মিলিয়েছে তাল,
ছিঁড়ে-ভেসে গেছে দখিনা বাতাসে
মমতায় গড়া নৌকার পাল।
পিতৃপুরুষের ভিটা ছেড়ে গেছে
গার্হস্থ্য পাখি ইষ্টিকুটুম,
আঙ্গিনা ভরেছে কংক্রিট ফুলে
ফুটে না মায়াবী মাধবী কুসুম।
সমতার সুরে থেকে দূরে দূরে
অসীমে অসম নিশুতির ডাক,
হারিয়েছে কালও, হারানোই ভাল
হারিয়ে ফুরিয়ে, যা থাকে— থাক।
গিয়েছে, যাবে, যাওয়াই ধর্ম
এসেছিল যা সময়ের তোড়ে,
জেনেছি এই, গেছে যা গেছেই
আসেনি যা— আসতেও পারে।
যাওয়ার প্রতীক্ষা নিয়েই আসে
ধাত্রীর পেট ফুঁড়ে জন্মদাতা,
চলে গেলে শুধু পড়ে থাকে একা
যাপনসমূহের হিসাবের খাতা।
———
একটি মন্তব্য
নার্গিস রশিদ
চমৎকার ভাব প্রকাশ। যা এক নাগাড়ে শেষ করা যায়।