
***বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে:
প্রশ্ন-উওরের একেবারে শেষ দিকে- আপনি তো মোটামুটি জানেন জানা গেল।তো কিছু ব্যক্তিগত তথ্য আমাদের জানা দরকার।
– বিয়ের কত বছর আপনার?
– খুশি মনে উওর দিলেন।জী স্যার তিন বছর।
– বাচ্চা কাচ্চা কয়জন।
বেসরকারী জব।বাচ্চা থাকা তো ঝামেলা তাই আপনি আবার খুশিতে টগবগ করে উত্তর দিলেন
– বাচ্চা কাচ্চা নাই স্যার।একেবারেই ঝামেলা মুক্ত।
– বলেন কি? এ তো বিপদের কথা।তিন বছরে বাচ্চা নেননি।চাকরীতে ঢুকেই শুরু করবেন বাচ্চা নিয়ে ছুটি নেয়া।আমাদের চলবে কি করে।
মনটা খারাপ হয়ে গেল।চাকরী যখন হবেই না তখন এক হাত দেখে নিতে হবে।
– আপনারা এক কাজ করেন।খোঁজা , বান্জা এগুলো দেখে নিয়োগ দেন।আর আপনার বউ তো এই অর্গানাইজেশনের একজন এমপ্লয়ি।তাঁর বাচ্চা নেন নাই না অন্যকিছু অপারেশন….
যথারীতি গার্ড ডেকে আপনাকে বিদায় করলেন।
****সরকারী চাকুরী:
৫০ মিনিট ধরে প্রশ্ন করতে করতে বোর্ড সদস্যরা নাজেহাল।আটকাতে না পেরে একে অপরের মুখচাওয়া চাওয়ী করছে।কিভাবে আটকানো যায়।পরীক্ষার্থী তারপরও হাসিমুখে বসে। অবশেষে মোটা ফ্রেম চশমা-
-আপনার বাড়ি তো কুড়িগ্রাম?যে কোথাও চাকরি করতে পারবেন?
-হ্যাঁ,স্যার পারব।
মুচকি হেসে-আচ্ছা,কুড়িগ্রামের মানুষকে মফিজ বলে কেন?
মুচকি হেসে- হাসি-কান্না,সুখ-দুঃখ যেমন পাশাপাশি তেমনি মফিজ-স্মার্টও পাশাপাশি।আপনারা স্মার্ট বলেই আমরা মফিজ।
সবাই হা হা হা হা ।
-যুগ্ম সচিব আপনার মামাতে ভাই তাইনা?
-হ্যাঁ ভাই-ই তো!
-মানে কি?তিনি ফোন করেছেন।
-স্যার ভাইকে এরআগেও দুবার রিটেন এর আগে বলেছিলাম।বারবারই বলেছে রিটেন পাশ হলে বলিস।তেলা মাথায় তেল সবাই দেয়।
আবার মুখ চাওয়া চাওয়ি।
-ধন্যবাদ আপনি আসতে পারেন।
-ধন্যবাদ স্যার। আসসালামুয়ালাইকুম।
****বিয়ের ভাইভা:
সব মেয়ের জীবনেই আসে এ কঠিন ভাইভা বোর্ড।তাও বারবার।
– মা হাসো তো! হুহু হি হি হা হা করতে করতে আপনি একদম ছেলের গায়ের উপর পড়লেন।
– মা হাঁটো তো! হাঁটতে গিয়ে পড়লেন ছেলের বাপের কোলে।
– মা চুল দেখাও তো! একদম ঐশ্বরিয়া স্টাইলে চুল ছেড়ে দিলেন হবু শাশুড়ির মুখে।মা গন্ধ সুন্দর না।আজই শ্যাম্পু করেছি।
তারপর আপনার সার্টিফিকেট, রেজাল্ট,চাকুরীর বেতন সব জানা শেষ। চরিত্রের খোঁজ আগেই নিয়েছে।বলেছে মাশাআল্লাহ।তিনটা প্রেম করেছেন জানার পরও।কারন আপনার চাকুরীটা ভালো।
এবার আপনার পালা-
বাবা-মা,জানু আমারও কিছু জানার আছে।কিছু মনে করা যাবেনা।কারন আমি ও কিছু মনে করিনি।আমরা তো একই পরিবারের সদস্য হতে যাচ্ছি।
– বিয়ের পর জানু,পানু,নুনু এসব তো ডাকবই সাথে তোমার বড় গাইয়া নামটা ছেঁটে দিয়ে নতুন নামে ডাকতে চাই। এছাড়া আমার কিছু পছন্দ আছে।যেগুলো আমিও একটা একটা করে দেখতে চাই।তাহলে শুরু করি।
-সালমান খানের মত সিক্স প্যাক পছন্দ আমার।তোমার শার্ট তোলো দেখি কি অবস্থা।
– শার্ট তুলে দেখালো।চলছে মুখ চাওয়া চাওয়ি।
-একি এতবড় ভুঁড়ি! এ আমার পছন্দ না!
– কবিতার খবর কি? লিখতে-পড়তে
পারো?
– না পারিনা।
– তাহলে পারোটা কি? ফুটবল ক্রিকেট, দাবা এসব।
– লুডু পারি।সাপ লুডু।
– ছি! এটা কোন হল।এ তো বাচ্চাদের খেলা।যা হোক,আমি তো রান্না টান্না কম জানি।তা তোমার খবর কি রান্না টান্না পারো?
– না পারিনা তেমন?
– মানে কি? হাওয়া নিয়া আসছ।পড়াশুনা, রেজাল্ট, চাকরী সবটাতেই তো আমার থেকে পিছিয়ে। ভাবলাম এসব দিয়ে চালায় নিব।তাও নাই? গুষ্টি শুদ্ধ ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য চলে এসেছে। কাউকে গরু ছাগল ভাবার আগে নিজের দিকে তাকাও।বিয়ে তো হবে না এতগুলা খাবার দাবার কিনতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে।আমার মুখ দেখা টাকা বেশি করে দিও অন্তত কিছুটা শোধ হবে।আমার ভীষন ঘুম পেয়েছে যাই ঘুমাই।কাল আবার অফিস আছে।
****সোনেলার ভাইভা:(ব্লগার বনাম এডমিন)
-কোনটা নিবেন কালাডা না সাদাডা।
-কালাডা।
-একলাখ।
-সাদাডা।
-ওই একই।একলাখ।
-তেল কম কোনডাতে হবে?
-কোনডার কথা।কালাডা না সাদাডা।
-কালাডা।
-আর সাদাডা।
-ওই একই! তেল কম।
-ফিড খাওয়াইছেন।
-কোনডারে।কালাডারে না সাদাডারে।
-কালাডা।
– খাইছে।
-আর সাদাডা।ওই একই ওডাও খাইছে।
-ওই মিয়া এত প্যাচান ক্যা।দাম দর সবটাই যদি একই হয় তাইলে না ঘুরায়া সোজা সুজি কইতে পারেন না?
-আরে মিয়া বুজেননা।আপনারে ব্লগার/লেখক কোনটাই স্বীকৃতি দিমুনা।এইজন্য প্যাচাইতাছি।যান ভাগেন গিয়া।
-হুম!(মুখ ভেংচি কেটে) যামু কিন্তু আবার আমু।
(ভাইরে ভাই যেমন অ্যাডমিন তাঁর তেমন ব্লগার)
উমম!! লম্বা হাই।যাই ঘুমাই গিয়া।ডাঃ বেশি রাত জাগতে নিষেধ করেছে।শুভ রাত্রি সোনেলা।
৩৩টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
🤣🤣👏👏👏 আগে হাইস্যা লই। শেষেরটাতে খুব মজা পাইছি। সোনেলার এডমিনরা সাবধান আপু যেভাবে সবাইরে বাঁশ দিতেছে আগে কিছু ঘুষ দিয়ে তার মুখ বন্ধ করন লাগবো। তার লেখায় মন্তব্য সাবধানে করন লাগবো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এভাবে আর বাঁশ দিয়েন না। এতো বাঁশ রাখার জায়গা হইবো না পরে সব ব্লগারের ঘরে একখান কইরা ধরাইয়া দিবো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
গা ঢাকা দিতে হবে বুঝলেন?নইলে রক্ষা নাই।বন্যা আপু আছে তো তাঁর কাছে জমা রাখলেই হবে।
মেয়েরা জীবনভর বাঁশ খাওয়ার মধ্যে থাকে॥ বিশেষ করে বিয়ের সময়ের অসহনীয় বাঁশ।
শুভ কামনা দিদি ভাই। ভালো থাকবেন।
সুপায়ন বড়ুয়া
ওয়াও !
সুন্দর তো হাসলাম অনেক পড়ার ছলে।
বিয়ের ইন্টারভিয়ুটা দারুন বলে।
শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
দাদা হাসাতে পেরে ধন্য হলাম। আমি আমার স্টুডেন্টদের এসব শিক্ষাই দেই।বিয়ের নামে মেয়েদের হেনস্তার শেষ নেই।
শুভ কামনা।
ফয়জুল মহী
অসামান্য ও অতুলীয় লেখনী । সুখময়
রোকসানা খন্দকার রুকু
সুখময়! করতে পেরে ধন্য হলাম মহী ভাই।
ধন্যবাদ অনেক। ভালো থাকবেন।
রেজওয়ানা কবির
খুব হাসি পেল আপু।কি মন্তব্য করবো বুঝতেছি না,ফাল্গুনী আপুর মত আগে হেসে নেই তারপর,,,আর বিয়ের ইন্টারভিউটা বেশি ভালো ছিল।
রোকসানা খন্দকার রুকু
তুমি হেসেছ জেনে ভালো লাগলো।এটা খুব জরুরি বিষয়। আমি চাই আমার বোনটা হাসতে থাকুক।
শুভ কামনা। ভালো থেক। ভালোবাসা অবিরাম।
রেজওয়ানা কবির
ইনশাআল্লাহ আপু।হাসতে চাই এভাবেই তোমার পাশে থেকে।ভালো থেক।ভালোবাসা অগাধ।
আরজু মুক্তা
হা হা! এবার সোনেলা কুপোকাত।
সবগুলো ভালো লাগছে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ইন্টারভিউটা ইন্জা ভাইজানের সাথে বোধহয় জমত বেশি।
শুভ কামনা আপু। ভালো থাকবেন।
শামীম চৌধুরী
পুরা গল্পটা পড়লাম।
এটাতো দেখছি চাকরীর ইন্টারভিউ নামে শাখের করাত।
দারুন লিখেছেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
চাকরীর ইন্টারভিউটা কিন্তু সত্যি ছিল। আমি যখন বুঝতে পারি বিষয় পজিটিভ দিকে যাচ্ছে তখন মজা করতে ভালো লাগে।
শুভ কামনা ভাইয়া।
ভালো থাকবেন।
মনির হোসেন মমি
হাসতেতো মানা করেছেন তাই আর কী করব কান্নার পথতো আর বন্ধ না,কী কন আফা ঠিক কইছি না।সকালে এক কাপ চায়ের সাথে এমন রম্য হস্য গল্প পড়লে সারা দিন মন চাঙ্গা থাকে।দুঃখের দুনিয়ায় হাসাটা বিরল।তাই এমন আরো পোষ্ট নিত্য নতুন চাইব।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনি বোধহয় এডমিনদের মধ্যে নাই তাই চায়ের সাথে হাসতে চান। আমি তো ভয়ে সকালে আসিই নাই।
হাসিটা আসলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে জীবনে।ধন্য হলাম হাসাতে পেরে।
দেখা যাক কে কে হাসে?
শুভ কামনা ভাই। ভালো থাকবেন।
সুরাইয়া পারভীন
উফফ! ছবিটা দেখেই হাসতে হাসতে শেষ। প্রথম ইন্টারভিউটা জোস হইছে। চাকরি তো দেবেই না আরো একটু বেশি কথা শুনিয়ে দিতে পারতেন😀😀
বিয়ের বাজারে মেয়েদের এভাবেই গরু ছাগল হতে হয়। যোগ্য জবাব দিতে সবাই পারে না। আর ব্লগার বা লেখক ও একই😁😁
রোকসানা খন্দকার রুকু
বেশি বড় হয়ে যাচ্ছিল তাই একটু কমিয়েছি। পরামর্শ দেবার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি ঠিকই ধরেছেন তিনটাই ম্যাসেজ ছিল।মজার ছলে বলা। সবাই বলে আমার নাকি রসবোধ কম। তাই মজা করে লিখলাম।
সুরাইয়া পারভীন
রম্য হলেও চরম বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আর হ্যাঁ তেলা মাথায় সবাই তেল দেয় এইটাই যে নির্ধারিত নিয়ম।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় 💜
রোকসানা খন্দকার রুকু
হুম সেটাই তেলা মাথায় সবাই তেল দেয়। শুভ কামনা রইলো আপুনি। ভালো থাকবেন সবসময়।
ভালোবাসা অবিরাম।
মোঃ মজিবর রহমান
দিইলেন বাশ খান খান
সালমান কলাম্যান
চাকরি হইল টাকা নই ভাই
ব্লগার এডমিন সাবধান
সব ব্লগার ঐ ঐ ঐ রই রই রই।
রোকসানা খন্দকার রুকু
বাঁশ না ভাই বাস্তবতা। বাংলাদেশেই বোধহয় এসব বেশি চালু। শুভ কামনা। ভালো থাকবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
কঠিন বাস্তবতা। এই করোনায় কতজন হারিয়েছে চাকরি আবার পুর্বের বেকার আছেই। সব বিপদ মহা বিপদ আপু।
শবনম মোস্তারী
হাহাহা..😀
সব কয়টা ইন্টাভিউ জটিল ছিল।
হাস্যরসের মাধ্যমে সবাই কুপোকাত। 😀
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ আপুনি। হাসাতে পেরে।শুভ কামনা। ভালো থাকবেন।
খাদিজাতুল কুবরা
রুকু আপু গল্পের ছলে কতোগুলো বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। আপনার গদ্য লেখা দারুণ জমে উঠেছে।
আমার তো আজ মন খারাপ ছিলো কিন্তু আপনার লেখা পড়ে অনেক হাসলাম।
ছবিটা কিন্তু সেই হয়েছে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
পাওনা রইল মন ভালো করার।কোনদিন আল্লাহ চাইলে দেখা হলে ফেরত গিফট কিন্ত চাই।
শুভ কামনা আপু। ভালো থাকবেন।
খাদিজাতুল কুবরা
দেখা হওয়ার আনন্দের কাছে সব গিফট ফিকে হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরবো।
যা খেতে চাইবেন সব খাওয়াবো পাক্কা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
কপি করে রেখেছি পড়ে কেউ যদি ভুলে যায়॥সেরকম দিন আসুক তারাতারি।
খাদিজাতুল কুবরা
একদম ঠিক করেছেন। নামতা গুণে মনে রাখবো ইনশাআল্লাহ।
তৌহিদ
হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেলো। তবে রম্য গল্পে সবসময় পাঠকদের জন্য একটি মেসেজ থাকে আর এখানেও তাই।
সমাজের কিছু মানুষ আছে যারা নারীদের হাটের পশুর মতই দেখেশুনে মুল্যায়ন করতে গিয়ে অবজ্ঞার পাত্রী বানিয়ে ফেলে। যা মোটেই উচিত নয়।
সোনেলায় লাল কালো সবাইকে একই পাত্রের খাবার খাওয়ানো হয়। এখন কারো হজম শক্তি কম থাকলে তাকে সাপ্লিমেন্টারী হিসেবে কারমিনা জাতীয় ঔষধ ফ্রীতেই দেয়ার বন্দোবস্ত আছে। সো টেনশন নট।
শুভকামনা রইলো আপু।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ঠিকই ধরেছেন ভাই।জীবনের এইসব বাজে ইন্টারভিউ আমাদের নাজেহাল করে দেয়।না হলেও কিন্তু চলে।তারপরও আমরা এটাকেই সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে চলি॥
শুভ কামনা রইলো॥
Jasim uddin
না হেসে উপায় নাই
রোকসানা খন্দকার রুকু
হাসাতে পেরে ধন্য হলাম।
শুভ কামনা॥ ভালো থাকবেন।