স্বাধীনতা মাসে মা কেন এখনো কাদে

মনির হোসেন মমি ১৬ ডিসেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১২:১৫:০৯পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৩ মন্তব্য

কী হরিচান, স্মৃতি সৌধ যাইবা না?
নাগো ভাই
কেন?
গত কয়েক বছর ধইরাই দেখতাছি আমরা যখন শহিদদের ফুল হাতে নিয়ে যাই স্মৃতি সৌধের দিকে তখন সবায় কেমন কইরা যেন চাইয়া থাকে,
একবারতো একজন কইয়াই দিলো
ঐ দেখ মালা..... পুজোতে যায়!!

🙏মানুষের মন মানুষিকতা এমন হলো কেন ?এমন হবারতো কথা ছিলো না।

আসসালামুআলাইকুম
হুজুর কেমন আছেন?
ভাল, কই যাইতাছো?হাতে ফুল!!
স্মৃতি সৌধে,
এটাতো হিন্দু নাছারা করে! তুমিতো মুসলমান তুমি করবা কেন?

হুজুর বেয়াদবি নিয়েন না,আপনার নয় আমার ইসলামের কথা বলছি,আমার ইসলাম কি বলে?ইসলামে মন ও নিয়তের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশী তাই আমি কোন নিয়তে কি করছি এখানে তা মুখ্য বিষয়।যদি মন ও নিয়ত সু্ন্দর হয় তবে তা অবশ্যই কল্যায়ণকর আর আমার খোদা কল্যায়ণকারীকেই সবচেয়ে বেশী পছন্দ করেন।
তাছাড়া শহিদদের শ্রদ্ধায় ফুল দিতে যাবো যেখানে সেখানেতো মূ্র্তি নেই ?তাহলে পাপ হবে কেন?পুজা করলাম কই?

শুধু শুধু সব জায়গায়ই ধর্মকে টেনে আনবেন না তাতে নিজেদের বিশাল উদার ইসলাম ধর্মটাকেই ছোট করা হয়।আপনারাইতো হাদিস কোরান পড়ে কত কিছুইতে বাধা ছিয়েছিলেন,ঘরে ছবি রাখা তোলা যাবে না,ভিডিওতো সাক্ষাৎ হারাম!! অথচ এখন আপনাই সবচেয়ে বেশী ভিডিও বানাচ্ছেন!!আপনাদের বেলায় কি তাহলে জায়েজ?

ধর্মকে ব্যবহার নয় ধর্মকে ভালবাসতে শিখুন নবীর তরিকায়।
🙏🙏

আরে নেতাজি যে
হ কেমন আছো?
আর কইয়েন না আজকে একটা নিউজ পইড়াতো টাসকি খাইয়া গেলাম।
কি সেটা?
এদেশটার ভবিষৎটা হবে কি তাই ভাবছি।

আরে নিউজ কি ওইডা কও!
ওইডাইতো কইতাছি,,এ দেশের মানুষ আমরা কত নিমক হারামখোর।এখনো আমরা নাপাকি ভক্ত ছাড়ি নাই।

ছাড়বে কেমনে যারা নাপাকি জিন্দাবাদ কয় ওগোর মা বোনেরতো কোন ক্ষতি হয় নাই,,ওরাতো রাজাকার!! তুমি নিউজটা কও নাই কিন্তু!

স্বাধীনের পর হতেই এদেশে দেশীও শত্রুরা থেকে যায়।এদেশে একটি নাম নিয়ে রাজনীতি করেছে নাপাকিদের এজেন্ডা হয়ে তাদের দীর্ঘ ক্ষমতায়নে তারা তাদের উদ্দ্যেশ্য হাসিলে অনেকটা গুছানো শুধু সময় সুযোগের অপেক্ষায় আছে।

আরে তুমিতো দেখছি আমার মাথায় প্যাচ লাগাইয়া দিতাছো নিউজটা কি ঐডা কও!

নিউজতো নিউজ থাকে প্রকাশ হয়ে যায়।আমেরিকায় এক বাংলাদেশী সেখানকার সিটিজেন এক যুদ্ধাপরাধীর বংশধর।সে আমেরিকার প্রশাসনের প্রভাবশালী কর্মকর্তা।তার ছিলো আছে এদেশের আরো কিছু রাজাকার।ইতিমধ্যে দেশের ক্ষতি কিছুটা করে ফেলেছে বাকিটা ভবিষৎতে করবে।

কস কি!!
কেন তুমি জানো না?
নাতো!!

তাহলে তুমি নেতা হইলা কেমনে? আমরাতো তোমাদের মত নেতাগো লইয়াই সবচেয়ে বেশী চিন্তায় আছি তোমরা যখন যে সরকার আসে তখন সেই সরকারের দলেই ভীরো,দেশের কথা না ভাইব্বা নিজের কথা ভাবো! তোমরা যদি সঠিক নেতা হইতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হইতা তাহলে নতুন প্রজন্ম আজ বেকা পথে চলতো না!স্বাধীনতার বিপক্ষে গিয়ে নাপাকিদের কথা কইতো না ! জাতীয় সঙ্গীত কি বুঝে না!বঙ্গবন্ধু কে?তাও জানে না!অর্জিত স্বাধীনতার ত্যাগ কি তা মনে ধারন করতে পারে নাই তাহলে তাদের মনে দেশ প্রেম আসবে কৈ থেকে? ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মত্যাগে পাওয়া এ স্বাধীনতার মান তোমরাই নষ্ট করেছো!ভবিষৎ প্রজন্মকে কী জবাব দিবে?

বঙ্গবন্ধুকে খাইলেন,খাইলেন জিয়া, হাসিনাকে ২১ আগষ্ট গ্রেনেট মাইয়া খাওয়ার চেষ্টা করেছ।বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া শেষ ভরসা হাসিনাকে মেরে তোমরা কি মনে করছো তোমরা এই স্বাধীন মাটিতে স্বাধীন ভাবে দাড়িয়ে থাকতে পারবা? যদি মনে করো হ্যা পারবে তবে বলে রাখছি তোমাদের ধারনা ভুল।

তুমি কিন্তু নেতাদের অপমান করছো!!
নেতা!! আজকে নেতা বলে কেউ কি আছে নাকি? রাস্ট্রের কর্ণধার হয়েও তোমরা এমন সব ঘটনা ঘটাও লজ্জা লাগে তোমাদের নেতা বলতে।তোমরা নেতার তাৎপর্য ছেড়ে সীমাহীন দূর্ণীতি লুটতরাজ আর বড় বড় কথা বলে বেড়াচ্ছো।

না, এবার আর থাকা যায় না।
পালাবেইতো তোমরাতো জোয়ার ভাটার নেতা।দেশের টাকা দিয়ে বিদেশ সংসার পাতছো তোমরাতো আজ না হয় কাল পালাবেই।এ জাতি যখন স্বাধীনতা রক্ষায় জেগে উঠবে তখন পালাবারও সময় পাবে না।

১৫ ডিসেম্ভর রাত ১২টার পর হতেই বিজয়ের উল্লাসে স্মৃতিসোধে মানুষের ঢল নামে।আমি যাইতেছিলাম সেই ঢলের কাছে।স্মৃতিসৌধের কাছাকাছি যেতেই চোখে পড়ল এক বৃদ্ধ নারী হাতে একটি ঝিঙে ফুল নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
কই যাইবেন মা?
স্মৃতিসৌধে..
তাই আমিও যাচ্ছি কিন্তু আপনার যে বয়স এ বয়সেতো সেখানে আপনি যেতে পারবেন না।
পারবো, অবুঝ সেই কিশোরী বয়সে যখন কাদে বন্দুক তুলে নিতে পেরেছি এখনো পারবো।

আমার আর বুঝতে অসুবিদা হলো না সে যে একজন মুক্তিযোদ্ধা বীরাঙ্গণা নারী।
আচ্ছা, চলেন হাটি....আপনি কি যুদ্ধ করেছেন?
শুধু আমি একাই যুদ্ধ করিনি-আমার স্বামী, দুই ছেলে এক নাতি আমার শশুড় সবায় যুদ্ধে শহিদ হয়েছে-আমার মেয়েদের ওরা ধরে নিয়ে গিয়েছে আর ফিরে আসেনি,একটি মাত্র পোয়াতি ছেলের তাকেও ওরা ছাড়েনি!যুদ্ধ অপারেসন ফিল্ডে থাকায় আমি রক্ষা পাই বেচে যাই।কিন্তু যুদ্ধ শেষে আমি যখন আমার আর কেউ বেচে নেই তখন মনে হলো আমার বেচে থাকাটাই ভুল ছিলো।

বৃদ্ধার হাত বার বার ঝরে পড়া অশ্রুজল মুছে।
বেচে থাকা বা বেচে যাওয়াটা ভুল হবে কেন? আপনিতো আমাদের অহংকার আমাদের গর্ব।
এই প্রথম তুমি বললে-যুদ্ধশেষে কেউ আমাদের খোজ নেয়নি না রাস্ট্র না সমাজ।
আপনি কৈ থাকেন?
গাছ তলায়
মানে?
যুদ্ধশেষে এসে দেখি অন্যেরা আমার পোড়া বাড়িটাও দখল করে নিয়েছে।অপবাদ দিয়ে আমাকে বাড়ী ছাড়া করেছে।

এর মধ্যে কখন যে রাত ১২ টা বেজে গেলো টের পাইনি।

আমরা সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালবাসি

গান আর আতশবাজিতে বুঝলাম
আজ ১৬ ডিসেম্বর
মহান  বিজয় দিবস।

বৃদ্ধা বীরাঙ্গনা পায়ের তালু উচিয়ে উচিয়ে দেখার চেস্টা করছে স্মৃতিসৌধটিকে। তার নাকি  স্বামী সন্তানেরা তার জন্য অপেক্ষা করছে।স্মৃতির পাতায় ধরা দেয় যুদ্ধ জয়ের স্মৃতিগুলো।

সকল শহীদদের প্রতি
বিনম্ভ্র শ্রদ্ধাঞ্জলী।
🙏🙏

উল্লাস যতই করি
দেশপ্রেম যেন না ভুলি

কাল্পনিক চরিত্র কারো সাথে মিলে গেলে কেউ গোস্সা হলে মাফ করবেন।

 

 

 

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ