ছেলেবেলায় আমার আব্বা আর মেঝো আব্বাকে দেখতাম ব্যবসার কারণে প্রায় দেশের বাইরে যেতেন, তা দেখে ভাবতাম সেইসব দেশ গুলো কেমন, সেইসব দেশের মানুষের চলনবলন কেমন হবে, তারা কি খায়, ভাবতাম তারা শুধু ইংরেজিতেই কথা বলে।
যখন একটু বড় হলাম, তখন গল্পের বই পড়া শুরু করেছি, যার মধ্যে ভ্রমণ গল্প আমার অন্যতম আকর্ষণ ছিলো, ইবনে বতুতা, কলম্বাস সহ বিভিন্ন জনের ভ্রমণ গল্প পড়তাম, ইতিমধ্যে আমার আম্মা, ছোটো খালাম্মা আব্বার সাথে জাপান, লন্ডন ও ইটালি ঘুরে এসেছে, ছোটো খালাম্মা আমাদেরকে সেই ভ্রমণের গল্প শুনালেন, কোথায় কোথায় গেলেন, কি কি খেলেন, তাদের ব্যবহার কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি জানালেন আমাদেরকে, আমি আগ্রহ ভরে শুনি, স্বপ্ন দেখি।
আব্বার ইন্তেকালের পর আমি সকল ব্যবসার হাল ধরলাম, উন্যার চলে যাওয়ার দুই বছর পর বিয়ে করে গিন্নিকে নিয়ে থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর গেলাম হানিমুন কাম বেড়াতে, থাইল্যান্ডের চাইতে সিঙ্গাপুর আমার বেশি ভালো লাগলো, সেখানে সেন্তোসা আইল্যান্ডের ঝর্ণার মিউজিকের তালে তালে নৃত্য আমাকে মোহিত করলো, জুরং বার্ড পার্ক আমাকে পাখিদের ভিড়ে উড়ার স্বপ্ন জোগালো, কাকাতুয়ার মজার সব কথা, মজার আচরণ হাসাতে হাসাতে পেট ব্যাথা করে দিলো, থাইল্যান্ডের ক্রোকোডাইল পার্কে কুমির নিয়ে খেলা আমাকে বিস্মিত করলো।
এরপর কাজের সূত্রে প্রথম গেলাম ইউরোপ, প্রথমে লন্ডন - ইটালি - লন্ডন - প্যারিস - লন্ডন হয়ে ফিরে এলাম, ইটালিতে ফ্লোরেন্স, মিলান, রোম, ভেনিস ঘুরলাম কয়েক দফার ভ্রমণে।
ফিরে এসে বোন জামাইয়ের কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের বিষয়ে ভারতের কলকাতা - বেঙ্গলোর গেলাম।
এছাড়া ব্যবসায়িক কারণে ভারতের মুম্বাই, পুনে, হাইদারাবাদ, তামিলনাড়ুর ত্রীভান্ডাম, তেলেঙ্গানা, চেন্নাই, দিল্লি, আগ্রা, পুস্কার সহ বিভিন্ন শহরে যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।
এছাড়া মালয়েশিয়ার লাঙ্কাবি, কুয়ালালামপুর।
থাইল্যান্ডের পুকেট।
দুবাই।
নিউজিল্যান্ড।
চিনের চংকিং, সাংহাই, কুনমিং, গুয়াংজু, হুনান, হুবাই সহ বেশ কিছু শহরে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার।
পাকিস্থানের করাচি, ইসলামাবাদ, মারি।
নেপাল সহ বেশ কিছু দেশে যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।
আমার সবচাইতে পছন্দের দেশ হলো ইটালি, এই দেশ আমাকে সবসময় টানে তার শৈল্পিকতার কারণে, রোমানরা এই দেশকে দিয়েছে অনন্য এক শৈল্পিক রূপ।
এই করোনাকাল আমাকেও থমকে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে, এখন শুধুই অপেক্ষা আর অপেক্ষা, জানিনা আবার কবে সব ঠিক হবে, আবার কবে আমি উড়াল দেবো ভিন্ন কোনো দেশে।
সমাপ্ত।
ছবিঃ জিসান ভাইজান।
২৩টি মন্তব্য
প্রদীপ চক্রবর্তী
বাহ্!
জিসান দাদার মতো আপনিও একজন ভ্রমণপিপাসী।
এতো জায়গায় ভ্রমণ সেটা অনেক ভাগ্যের বেপার।
এসব জায়গা নিয়ে বিস্তারিত বিষয় তুলে ধরেন,দাদা।
অপেক্ষায় থাকলাম।
ইঞ্জা
দাদা ব্লগে আমার বেশ কয়েকটা ভ্রমণ কাহিনী আছে, পড়ে দেখতে পারেন, ভালো লাগবে। 😇
জিসান শা ইকরাম
করোনা কালে আমাদের ভ্রমন থামকে গিয়েছে,
তবে আমাদের স্মৃতিকে তো স্তব্দ করতে পারেনি।
আসুন আমরা দুজনে ভ্রমন কাহিনী লেখা আরম্ভ করি সোনেলায়।
আমাদের চোখ দিয়ে দেখা দেশ বিদেশকে তুলে আনি আমাদের স্মৃতির পাতা থেকে।
এত দেশ ভ্রমন করা অনেকেরই ভাগ্যে হয়নি। আমরা আমাদের দেখা জগতকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেই।
অন্য লেখা যাই লিখিনা কেন, সপ্তায় অন্তত একটি ভ্রমণ কাহিনী দেই।
শুভ কামনা ভাইজান।
শুভ ব্লগিং।
ইঞ্জা
ভাইজান সত্যি ভ্রমণ আমাদের রন্দে রন্দে প্রবেশ করেছে, ভ্রমণ ছাড়া যেন জীবনটাই ফিকে হয়ে আছে।
একটু ফ্রি সময় পেকেই লিখবো নিশ্চয়, দোয়া রাখবেন।
ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
ফ্রি সময় তৈরি করে নিতে হবে,
ইঞ্জা
জ্বি ভাইজান, চেষ্টায় আছি। ল
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার আইডিয়া দাদা ভাই। এমন স্মৃতি গুলো তুলে ধরলে আমাদের জন্য খুবই উপকারী, আনন্দের পোষ্ট হবে ।
জিসান শা ইকরাম
লিখব ধিরে ধিরে ছোটদি।
আরজু মুক্তা
এতোগুলো দেশ ঘুরেছেন! শুভকামনা।
ইঞ্জা
এগুলো তো উল্লেখযোগ্য, এরচেয়েও ব
ইঞ্জা
এরচেয়েও বেশি দেশ ঘুরেছি আপু।
দোয়া করবেন। 🥰
রেজওয়ানা কবির
অনেক দেশ ঘুরেছেন খুব ভালো লাগল জেনে ভাইয়া। আমারও ভ্রমণ খুব পছন্দের। তবে আগে দেশের সব জায়গা দেখতে চাই, এখনো দেখা হয় নি সব। আর করোনা আমাদের সত্যি সবকিছু থামিয়ে দিয়েছে, আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন সবাই আবার আগের মত শান্তিতে চলাফেরা করতে পারি। ভালো থাকবেন।
ইঞ্জা
আমীন।
ধন্যবাদ আপু, আসলে ভ্রমণটা আমার কাছে যেমন আনন্দের, তেমনি আমি এসব উপভোগ করি, আমি দেশের অনেক অঞ্চলে ভ্রমণ করেছি, দোয়া রাখবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার ভাইয়া। অনেক গুলো দেশ ভ্রমণ করেছেন তা আপনার আগের পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। করোনায় সব ভ্রমণ বন্ধ হয়ে গেছে। এই মহামারী থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আবার শুরু হবে ভ্রমণ। একরাশ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
ইঞ্জা
ধন্যবাদ আপু, প্রার্থনা রাখবেন যেন দ্রুতই আমরা এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারি।
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
অসাধারণ
ইঞ্জা
ধন্যবাদ অনিঃশেষ
তৌহিদ
আপনার ভ্রমণ গল্পের আমি বরাবরই ভক্ত। প্রতিটি দেশ নিয়ে আলাদা আলাদা লেখা চাই দাদা। সোনেলায় অনেকগুলো পড়েছে যদিও। তার পরেও আবার পড়তে ভালো লাগে। স্বপ্ন পূরণ হোক এটাই কামনা।
শুভকামনা সব সময়।
ইঞ্জা
ইনশা আল্লাহ ভাই, আগামীতে নিশ্চয় লিখবো নতুন কোনো দেশ এবং তার শহর নিয়ে।
ধন্যবাদ ভাই।
সুরাইয়া নার্গিস
অসাধারন লাগলো লেখাটা ভাইজান।
আপনি অনেক দেশ ভ্রমন করেছেন জেনে ভালো লাগলো।
আব্বু বলেন বেশি ভ্রমন করলে যেমন জ্ঞানের পরিধি বাড়ে, তেমনি মানুষের মনও বড় হয়।
আপনি,জিসান ভাইজানের স্নেহ পেয়ে বুঝলাম সত্যি মহৎ হৃদয়ের দুজন মানুষের ভালোবাস পেয়েছি।
ভাইজান প্রতিটা ভ্রমন নিয়ে মজার সব অভিজ্ঞতা বিস্তারিত আকারে পড়তে চাই।
ফ্রি হয়ে লিখুন আমরা অপেক্ষা করছি।
ভালো থাকবেন ভাইজান।
ইঞ্জা
আন্তরিক ধন্যবাদ আপু, ভ্রমণ অবশ্যই জ্ঞানের পরিধি বাড়ায় এতে কোনো সন্দেহ নেই, এই ব্লগেই আমার বেশ কিছু ভ্রমণ কাহিনী আছে তা আপাতত পড়তে থাকুন, খুব শিগ্রই নতুন ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে আসবো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ভাইয়া আপনি দেশে ছিলেন কয়দিন? এতগুলো দেশ ঘুরেছেন। সত্যিই ভাগ্যবান আপনি। সবাই সামর্থ্য থাকলেও যায়না বা পারেনা। শুভ কামনা রইলো ভাইয়া। শুভ সকাল।
ইঞ্জা
আপু আমি ‘৯২ সাল থেকে প্রতি বছরই ভ্রমণ করি না না দেশে, সত্যি আমি ভাগ্যবান বলেই শুধু নয়, এ আল্লাহর অশেষ রহমত এবং মুরুব্বিদের দোয়াই বলে আমার এই ভ্রমণ ভাগ্য।
দোয়া রাখবেন আপু।