অভয়-রাজ্যের রাজপথে বোশেখের রোদ্দুর ঢেকে গেছে বজ্র-বৃষ্টিতে। অকস্মাৎ কড়াৎ শব্দে প্রবল ঠাটা হামলে পড়ল চকচকে থামানো বাসের মগডালে। কানের পর্দা-ছেঁড়া শব্দের মাঝেও ধাতব শব্দ ও আলোর ঝলকানিতে দাউ-দাউ করে জ্বলে উঠল বাসটি। মুহূর্তেই কালো-কুণ্ডলী-মেঘ আকাশে মাথা তুললো, তেলের পোড়া গন্ধ ছাপিয়ে এলো পোড়া টায়ারের তীব্র গন্ধ।
অথবা, কোন-এক মাতাল-নপুংসকের ব্যর্থ-তরবারির প্রচণ্ড আঘাতে যাত্রী-শূন্য বাসটি অগ্নি-দগ্ধ হলো।
পাণ্ডুর-মুখো জনতা-জনার্দন গালে হাত দিয়ে বসে-দাঁড়িয়ে নিরাপদ চৌহদ্দিতে,
ভিড়-গুছিয়ে এলো অগ্নিনির্বাপক দল। জলাকারে দাঁড়িয়ে আছে প্রদর্শনীতে রাখা অরক্ষিত ধাতব কংকাল!!
বাসটির প্রতিটি পোড়া-চাকায় রক্ষিত ছিল অসংখ্য পথ-ছবি,
অজানা-স্বপ্ন-আঁকা-পথের-ছবি।
৩৪টি মন্তব্য
প্রহেলিকা
এইতো কি সুন্দর করে নামিয়ে ফেললেন! লেখকদের কাছ থেকে খুঁজে খুঁজে লেখা নিতে হয় অথবা তক্কেতক্কে তাকিয়ে থাকতে হয়। বাঘদুধের চা শীতল হয় বায়না ধরে। সেদিকে কারো দৃষ্টি পড়ে না। পেয়েছি এতেই খুশি।
এই লেখায় মোবাইলে থেকে মন্তব্য করে পুষাবে না।
ছাইরাছ হেলাল
আসলে মন দিয়ে আপনারা পড়েন বলেই, প্রকাশিতব্য লেখাও দিচ্ছি।
কোনটি বা কোনগুলো সেটি আলোচনায় টানছি না, প্রকাশের আগ্রহ যে কতটা কম তা আপনি জানেন।
শীতল আর হতে পড়ল কৈ!! চা-তো খুব-ই গরম!!
ভালোলাগাই আমার লেখার উৎস,
অসুবিধা নেই, পরে-ই না-হয় হৃষ্ট-পুষ্ট মন্তব্য দেবেন!!
মোঃ মজিবর রহমান
একটি কঠিন জিবনপাতের কাহীনি কিছু শব্দমালায় তুলে আনলেন কবি।
সত্যিই নির্মম এক ছবি মানুষের মাঝে এটা বিরাজ করে।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই সুকঠিন নির্মমতা আমাদের চিরসঙ্গী।
চেষ্টা করে যাচ্ছি নিজের মত,
ইঞ্জা
বাসের পোড়া চাকায় লেখা আছে কতোনা পথ ছবি, বাহ!
ছাইরাছ হেলাল
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা ভাইজান
জিসান শা ইকরাম
পথের খবর কে রাখে?
ছাইরাছ হেলাল
বাসের চাকাগুলো পথের ঠিকই রেখেছিল।
প্রহেলিকা
এমন লেখায় হৃষ্ট-পুষ্ট মন্তব্য করার শব্দ আমার কাছে নেই, ছিলও না কখনো।
অণুগল্প! ছোট কিছু লাইনে প্রকাশের বিশালতা দেখে সত্যিই মুগ্ধ। কলমের পর কলম, শব্দের পর শব্দ দিয়ে দু’তিনটা সেতু হয়ে যায় ঠিকই কিন্তু গল্প আর হয় না। অনেক সময় আবার পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে। পড়ার পর বোধ করি কেবল গল্পের একটা খণ্ডাংশ পড়লাম। অথচ এমন অল্প শব্দে একটি পূর্ণাঙ্গ গল্প লিখতে খুব কমই পারে। তবে কেউ কেউ পারে।
অগ্নি-দগ্ধ বাস হচ্ছে, তবুও মন হয় এই দগ্ধ যেন দগ্ধতা নয় রূপালী পর্দার কোনো দৃশ্য। উৎসুকরা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে দর্শক হিসেবে। আর এদিকে দগ্ধ বাস পোড়াঘ্রাণের কালিতে লিখে যাচ্ছে খয়েরী রঙের ইতিহাস।
শেষের লাইনটি নিয়ে আর কি বলব। অনেক কিছুই আমার নজরে আসলেও এভাবে উপলব্ধি করতে পারি না। আপনি পারেন বলেই এতো সুন্দর করে চাকা কথন ফুটিয়ে তুললেন।
গল্পে লোভ লাগলেন, এবার আরও চাই! চাই!
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা দেখুন-তো এভাবে ভাবা যায় কি না!!
অভয়-রাজ্যের রাজপথে বোশেখের রোদ্দুর ঢেকে গেছে বজ্র-বৃষ্টিতে। অকস্মাৎ কড়াৎ শব্দে প্রবল ঠাটা হামলে পড়ল চকচকে থামানো বাসের মগডালে। কানের পর্দা-ছেঁড়া শব্দের মাঝেও ধাতব শব্দ ও আলোর ঝলকানিতে দাউ-দাউ করে জ্বলে উঠল বাসটি। মুহূর্তেই কালো-কুণ্ডলী-মেঘ আকাশে মাথা তুললো, তেলের পোড়া গন্ধ ছাপিয়ে এলো পোড়া টায়ারের তীব্র গন্ধ।>>>>>> দৈব- দুর্বিপাক (দৈব-দুর্বিপাক কেন!! সে আলোচনা বাদ)
অথবা, কোন-এক মাতাল-নপুংসকের ব্যর্থ-তরবারির প্রচণ্ড আঘাতে যাত্রী-শূন্য বাসটি অগ্নি-দগ্ধ হলো।>>>>>>> আন্দোলনের অযুহাতে বিরোধী দলের বাস পোড়ানোর মহোৎসব।
পাণ্ডুর-মুখো জনতা-জনার্দন গালে হাত দিয়ে বসে-দাঁড়িয়ে নিরাপদ চৌহদ্দিতে,>>>>> জনতাকে জনার্দন বলা হয়েছে, জনার্দন হলো বিষ্ণু, যে অসুর বদ করেছিল। সেই জনতা এখন অসহায়।
ভিড়-গুছিয়ে এলো অগ্নিনির্বাপক দল। জলাকারে দাঁড়িয়ে আছে প্রদর্শনীতে রাখা অরক্ষিত ধাতব কংকাল!!>>>>>> তীব্র যানজট ও অসহায় ফায়ার সার্ভিস,
শেষ লাইন বিশাল প্যাঁচাল, তাই বাদ।
গল্প-ফল্প পরিকল্পনা করে লিখি-না, লেখার কথাও ভাবি না, তাই আবার লিখব কী না জানিও-না।
আপনি লিখুন নিয়মিত সেটাই চাই, কেউ কেউ অনেক ভাল লিখবে তা কিন্তু চাই।
প্রহেলিকা
যখন বকধার্মিক শব্দটা শুনি, চোখে একটি বকের ছবি ভেসে উঠলেও, আমাদের অনুভুতিটা সেই বকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। আমরা আরো একটু বেশিই উপলব্ধি করি শব্দটি দ্বারা।
আলোচ্য লেখাটি সকালেই পড়েছিলাম। রূপকের আড়ালে ঢেকে জলজ্যান্ত একটি মুহূর্ত। কেবলমাত্র কবিতা নয়, গদ্যেও যে রূপকের সুনিপুণভাবে ব্যবহার করা যায় এই লেখাটিই তার উদাহরণ হতে পারে। আজকালের পাঠকরা সবকিছু বুঝতে গিয়েই তালগোলটা পাকিয়ে ফেলে। উনারা এটা বুঝতে চায় না যে, ”বোঝা”র চেয়েও বেশি যে কোনো ”উপলব্দি” থাকতে পারে। ওই যে বক আর বকধার্মিক এর মতো আর কি!
এই লেখাটি যদি কোনো প্রিন্ট মিডিয়ায় পেতাম তাহলে উসখুস লাগতো, লেখাটির লেখককে খুঁজতাম পাবো না জেনেও। হয়তো অজানা কিছু জানার জন্য অথবা মুগ্ধতার রেশ ধরে অভিনন্দটুকু জানার জন্য।
এক্ষত্রে ব্লগিংটা সে সুযোগটি করে দিয়েছে, লেখক হতে আসলে ব্লগিং করি না। করি পারষ্পরিক মতামত আদান-প্রদানের জন্য।
আপনার বিস্তারিত বর্ণনার সাথে মিলিয়ে নিলাম।
জনতাকে জনার্দন রূপে আখ্যা দেয়াটা খুবই যথার্থ মনে হয়েছে।
**জলাকারে দাঁড়িয়ে আছে প্রদর্শনীতে রাখা অরক্ষিত ধাতব কংকাল!**
লাইনটি বেশ ভালো লাগলো। এক প্রকারের সার্কাজমের প্রকাশ। ধাতব কংকাল শব্দটা দিয়ে যে ব্যঞ্জনা ফুটিয়ে তুলা হয়েছে তা লেখাটিকে আরো ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছে।
গল্প লেখা কঠিনই মনে হয়, তবে এভাবে টুকটাক করে চালু রাখলেও মন্দ হয় না।
প্রহেলিকা
”অভিনন্দটুকু জানার” কে ”অভিনন্দটুকু জানানোর” পড়তে হবে।
ছাইরাছ হেলাল
যারা গল্প লেখে তাদের জন্য গল্প কোন কঠিন না, অন্যদের জন্য অবশ্যই কঠিন,
অবশ্য লেখা-লিখি কাজটাই কঠিন,কারও কারও জন্য, আরও বেশি কঠিন তা প্রকাশ করা,
আগাম বলা যাচ্ছে না, চালু-ফালুর কথা, যারা চালু রাখে তাদেরটি ভাল করে চলুক সেটাই ভাল, টুকটাক না।
ছাইরাছ হেলাল
সে ভাবেই তো পড়লাম, ব্যাপার না।
ছাইরাছ হেলাল
আমিও বলি, আসলে বোঝার কিচ্ছু নেই, থাকেও না,
যা থাকে তা অনুভবে নিজের মত নিতে পারাই আসল কথা।
প্রহেলিকা
ঝোলাতে যে আছে তা কিন্তু বোঝা যায়। প্রকাশের এত অনীহা থাকা ভালো না। বলেইত দিয়েছি সবারটা পড়ি না কারো কারোটা পড়ি।
ছাইরাছ হেলাল
আমিও তো বলেছি, অপ্রকাশিতব্য!! তাও দিয়ে দিচ্ছি।
ঝোলাতে সামান্য হলে কিছু না কিছু তো থাকেই।
প্রহেলিকা
****ঝোলাতে সামান্য হলে কিছু না কিছু তো থাকেই।****
ঝোলার ভেতর রেখেই এমন কিপটামি! ঠিক লয় ঠিক লয়!
ছাইরাছ হেলাল
আমার থেকেও বড় কিপ্টে আছে কিন্তু।
প্রহেলিকা
হা হা এইতো ভালো কথা বলেছেন। সময় অসময় এসব না দেখে দিয়ে ফেলবেন এভাবেই মাঝে মাঝে।
এবার আসল কথা বলি,
হা-মুখো সন্ধ্যার গহ্বরে অনায়াসে ঢুকে গেছে দিন,
স্তব্ধ এখন শব্দভূগোল, ঘুমিয়েছে দেবতা।
মধ্যরাতের নির্জন পথে,
মনিবভক্ত কুকুরকতক ধমকে বলে
“ফিরে যাও এখানে প্রবেশ নিষেধ”!
পা কি কখনো আদব জানে?
হেঁটে চলে সাদা কাফনে মোড়ানো চাঁদ আলোতে
না জেনে পোড়াতন্ত্র সুখ।
শরীরে পোড়াগন্ধ, বাযুগুলো উড়ে বেড়ায়
আর সারিবদ্ধ পারফিউমের দোকানে দোকানে
ঝুলে থাকে মূল্যছাড়ের বিশাল ব্যানার।
যে প্রেক্ষাপট নিয়ে লিখেছেন, নিজেও একবার বসেছিলাম গল্প লিখতেই তবে হলো না। পারিনি। যার যদি লিখে ফেলতামও তাহলে আপনার লেখার ধারেকাছেও থাকতো না। বছর খানেক পেরিয়ে গেলেও, আজ পেলাম আপনার হাতে।
ছাইরাছ হেলাল
একাকার দিন-রাত্রি
দেবতারা নির্ঘুম,
চোখ পাতে, চোখ রাখে
কে যায় কে আসে,
কে কোন তল্লাটে।
আসলে কোথাও কেউ যায়-না
আসেও- না।
নিরবিচ্ছিন্ন গোলক ধাঁধাঁয়
দেবতা হাসে অলক্ষ্যে!!
নীলাঞ্জনা নীলা
মন দিয়ে পড়েছি। অথচ অবাক হচ্ছি রূপকাশ্রিত গদ্য কবিতা দেখে। এভাবেও লেখেন আপনি! আজই জানলাম।
তবে মিথ্যে বলিনা, আপনার সব কবিতাই মন দিয়েই পড়ি। খানিকটা পড়ি শেখার জন্য, কিছুটা লেখার জন্য। মানে ফিফটি/ফিফটি। সমস্যা হয় বুঝতে পারিনা। তবে আজকের কবিতা সত্যিই অসাধারণ। খুব সত্যি।
ছাইরাছ হেলাল
সবই সঙ্গদোষ! তা না হলে কেউ এভাবে লেখে!! আমিও তাই-ই ভাবি।
শেখা-ফেখার কিচ্ছু নেই, শুধু একটু আনন্দ নিয়ে পড়লেই হয়ে যাবে।
বুঝিয়ে বলার জন্য বান্দা সবসময়-ই হাজির থাকে/থাকবেও।
ধরে নিচ্ছি তিন সত্যি বলছেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
সঙ্গদোষ!!! কাকে যে কি বললেন বুঝলাম না।
তা তো অবশ্যই আনন্দ নিয়ে যখন পড়ি তখন আমার মাথার উপরে ভিসুভিয়াস এসে বসে।
যখন মাথা চুলকাতে চুলকাতে পড়ি, তখন যে কি মাথার ভেতর ঢুকে আজও বের করতে পারলাম না।
তবে সব অবস্থাতেই আপনার জন্য 😀 এই ইমু থাকবে। মানে দিতে বাধ্য থাকিবো আর কি! 😀
ছাইরাছ হেলাল
দেন দেন মনের সাধ মিটিয়ে দেন,
তবে ভিসুভিয়াস চালু থাকলেই হবে।
নন্দ ঘোষ আছে তো, নো চিন্তা।
নাসির সারওয়ার
লেখা না বুঝে কেমন করে উপলব্দি করা যায়!!!!
মন্তব্যের ঝুড়ি থেকে কিছু সাহায্য নিয়েছি। তারপরও, এ বেজায় কঠিন।
ছাইরাছ হেলাল
বেজায় কঠিন, বেশি বোঝা ভাল না,
এগুলো একটু আপডেট দিন কবি-সাহেব!!
ফাঁকি-ফুঁকি দিয়ে আর কদ্দুর যেতে পারবেন!!
মিষ্টি জিন
বাপরে এ নাকি গল্প!!!! গদ্য বলেলেও সঠিক বলা হবে কিনা ,,
এত শব্দ কৈ পান? শব্দের অভাবে লিখতেই বসি না।
শব্দ গুলো যে কৈ যায় এখন তা বুঁঝতে পেরেছি। ;?
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন, সাকুল্যে গোটা-আষ্টেক লাইন মাত্র হাজির করেছি কায়-ক্লেশে,
ঢাউস আকৃতি কুলিয়ে উঠতে পারিনি, সাধ থাকলেও সাধ্যের বাইরেই থেকে যায়।
আমিও বুঝতে পারছি শব্দেরা কার আচঁলে লুকিয়ে লাফায়!!
নীহারিকা
বাস পোড়ার কথা মনে হলেই আঁতকে উঠি।
কিন্ত কি সুন্দর করে লিখলেন। বিশেষ করে “বাসটির প্রতিটি পোড়া-চাকায় রক্ষিত ছিল অসংখ্য পথ-ছবি,
অজানা-স্বপ্ন-আঁকা-পথের-ছবি।” এ অংশটুকে অসাধারণ।
মানুষ ক্যাম্নে যে এত সুন্দর করে লেখে!!!!!! ;?
ছাইরাছ হেলাল
আমিও আপনার মতই ভাবি, কেমনে কেমনে সত্য সত্য ঘটনা
লিখে ফেলে,
নীহারিকা
😀
ছাইরাছ হেলাল
এগুলাইন কী, এ পড়া পড়িনি, পড়বোও না,
ফেসবুকে দুন্নাইডা খাইছে। আমি কিন্তু এডি দেই না,