তুই, যাকে আমি কোনো এককালে ভালোবেসেছিলাম। উদ্দেশ্যহীনভাবে ভালোবেসেই যাচ্ছিলাম। বিষণ্ণ ছায়া ভেবে কখনোবা ক্যামেলিয়া ফুল। কখনো দেখেছিস ক্যামেলিয়া ফুল দেখতে কেমন? প্রেমহীন আলোর ভেতরে আমি খুঁজে যাচ্ছিলাম নীল আগুণ। যেখানে রোজ নিজেকে জ্বালাতে আর পোড়াতে রেখে দিতাম শুকনো কাঠের মতো। জানিস কয়লা যখন আগুণে পোড়ে সে কাঁদে? শুধু তার নাম দিয়েছি স্ফুলিঙ্গ। রোজ কতো কতো হৃদয় মরে যায়, সে কথা জেনে বুঝেও তোর ওই শ্যাওলা পথেই পা রেখেছিলাম।
কমা, সেমিকোলনের মতো সবগুলো বিষাদীয় সমস্যা উপুড় করে রেখে এসেছিলাম পুরোনো খাতার ভেতর। রাশিয়ান নভেলের মতো শীতল-যাপন সময়টুকুকে অন্য এক অধ্যায়ের পরিচ্ছেদে ফেলে রেখে চলে এসেছিলাম। কি বোকা আমি! ভালোবাসা মানুষকে বোকা করে দেয়, জানতাম। কতোবার লিখেছি কবিতায় এবং গল্পেও। তোকে না সবার থেকে আলাদা ভেবেছিলাম, এই পৃথিবীতে তুই একাই এমন একজন। বিবর্তনে শরীর বদলেছে শুধু। মানুষের ভেতর এখনও ধূর্ত পশুর মতো কিছু নাপাক চরিত্র থেকেই গেছে। তুইও যে মানুষ, আমিও।
আমার অপরাধ নিজেকে পাল্টে ফেলে তোর ইচ্ছেমতো হয়ে যাওয়া। অরণ্যের মাদকতা, মরুভূমির ক্যাম্পফায়ার, সমুদ্রের নোণা জল, আকাশের মায়াময়তা সবকিছুই এ জীবনে ছিলো। আমার স্পনটেনিয়াস জীবনকে পাহাড়ের মতো স্থির করে এনে তোর কাছেই রেখেছিলাম। ওটাই আমার ভুল ছিলো। রোজ বহু হৃদয় ভাঙ্গে, তারপর একদিন মরে যায়। তবে আমি মরে যাইনি, এই দ্যাখ দিব্যি বেঁচে আছি। মরে গিয়ে বেঁচে গেছিস তুই আর আমি বেঁচে থেকে আবার ফিরে পেয়েছি আমার স্পনটেনিয়াস জীবন। কি করবো বল, নিঃশ্বাসের গলা টিপে ধরার সাহস আমার নেই!
হ্যামিল্টন, কানাডা
২৮ মার্চ, ২০১৭ ইং।
৩৬টি মন্তব্য
রুম্পা রুমানা
এই সাহস কারোরই নেই। ছবিটা কিসের ? আঁকা নাকি তোলা ? কেমন বিমর্ষ যেন !
নীলাঞ্জনা নীলা
ছবিটা গুগল থেকে নিয়েছি। সুন্দর কোনো ছবি দেখলে আমি সেভ করে রেখে দেই। একটা গোপন কথা বলি, আমার বেশীরভাগ লেখা ছবি দেখে দেখে। ছবিটায় স্থির হয়ে থাকা একটা ফুল আর তার চারপাশ ঝাপসা। আমাদের সকলের জীবনটা আসলে এমনই, তারই মধ্যে আমরা প্ল্যান করি, আবার কেউ প্ল্যান না করার প্ল্যান নেয়। আমি হলাম দ্বিতীয়টি।
ভালো থাকুন রুম্পা।
মিষ্টি জিন
“বিবর্তনে শরীর বদলেছে শুধু
মানুষের মধ্যে ধূর্ত পশুর মত কিছু নাপাক চরিত্র রয়েই গেছে।”
ভীষন ভাল লেগেছে কথা গুলো।
আর ভালবাসা সত্যিই মানুষকে বোকা বানিয়ে দেয়।
অসাধারন।
নীলাঞ্জনা নীলা
মিষ্টি আপু কেন জানি মন বলছিলো এই দুটো লাইন আমার প্রিয় কয়েকজনের খুব পছন্দ হবে। যাদের মধ্যে তুমিও ছিলে। আমি অবাক হয়ে গেলাম। এখন মনে হচ্ছে ওই কথাটি ঠিক, আমাদের কখনো যদি কাউকে ভালো লাগে, সবকিছু না মিললেও কোথাও একটা মিল থেকেই যায়। যার জন্যে ভালো লাগার জন্ম হয়।
অনেক ভালো থেকো আপু। -{@
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
গদ্য কবিতা
সত্যিই বলেছেন সব কিছুই বদলায় পরিবর্তন আসে শুধু মানুষের মাঝে নাপাকি কিছু চরিত্র রয়েই যায়।এর সমুলে বিনাশ যে আমাদের কাম্য। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
মনির ভাই আমরা যে বলি মানুষ তো না, যেনো পশু! আমাদের চরিত্রে সেই পূর্বের চরিত্র যে থেকে গেছে।
অনেক ভালো থাকুন। -{@
চাটিগাঁ থেকে বাহার
সুন্দর লিখেছেন। ভালো লাগলো।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো খুব। অশেষ ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
প্রেমহীনতায় যদি এমন ফাগুন-আগুন জ্বলে তবে সেই নীলাগুনই ভালো।
(হাল্কা আগুন ধার দিয়েন, জ্বল্মু!! জ্বালামু-না)
এমন খনিময় ভালোবাসা নিয়ে স্পন্টেনিয়াস হয়ে অন্য অপেক্ষমাণদের দিকেও একটু তাকান,
এমন সুন্দর লেখা-উৎসের ঠিকানা দিলে উপকৃত হবো!!
নীলাঞ্জনা নীলা
সুদ ছাড়া ধার দেইনা। আপ্নে জ্বলেন নাকি জ্বালান আমার তাতে কুনু পুরুবলেম নাই। তয় সুদহীন ধার, রাস্তা মাপেন। 😀
ইস উৎসের ঠিকানা দিমু আর আপ্নে আমার বারোটা বাজাইবেন? অত্তো বোকা না আমি কুবিরাজ ভাই। বুঝছেন? 😀
ছাইরাছ হেলাল
লেডিগুরু হৃদবুক হারা ভাবতেই পারি না!!
আপনি বুকা হইতেই পারেন্না!!
খুব বুদ্ধির ঢেঁকি!! তা -তো জানি-ই!!
নাহ্ বারোটা বজামু না, তয় একটা-দুইটা বাজতে পারে!!
তা-ও এট্টু ঠিকানা দিয়েন।
আইজ লেখা দেলেন্না যে!!!!
নীলাঞ্জনা নীলা
একটা/দুইটা বাজলে তো আরও সমস্যা। ঠিকানা-ঠুকানা দেয়া যাইবে না।
আমি কি ল্যাখার গাছ লইয়া বসছি যে ঝাড়া দিলেই পড়তে থাকবো?
ছাইরাছ হেলাল
ইস্ প্রাণে দোলা তো দেলেন্না,
তাই বলে লেখাও না,
আপনি আমাদের লেখা-বৃক্ষ, ঝাড়া দেয়ার আগেই টুপ টাপ
এই বুঝি বৃষ্টির মত!!
নীলাঞ্জনা নীলা
হ ভাই করেন বিদ্রূপ, কি আর করমু? আমারই কপাল খারাপ। 🙁
আউল-ফাউল লিখি বইল্যা এইভাবে কইবেন?
জানেন না কানারে কানা কইতে নাই, টেকোরে টাকলা কইতে নাই?
মৌনতা রিতু
জান আপু, তোমার কিছু লেখা শুধু মনে হয় আমার জন্যই লিখেছো। আচ্ছা বলো তো, বার বার এইশ্যাওলা পথেই কেন আমি পা বাড়াই। বার বার পিছলে পড়ি। জানি সামনে আমি আগাতে পারব না। যে পথ আমার নয়, সে পথে হেঁটে চলি, হুম আমি নিজেই নিজেকে পুড়াই। পুড়িয়ে ছারখার করছি। আবার তাতে পানি ঢালছি। নারীর জীবনের এই আকাঙ্খার দ্বিপালী তুষের আগুনের মতো জলে। দাউ দাউ করেও না আবার নেভেও না। ছাই এর ভিতরেও জলজল করে আগুনের লাল আভা।
দারুন লিখেছো আপু।
লিখতে থাক। (3 -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
এভাবে জ্বলজ্বলে মন্তব্য আমার শান্তসুন্দরী আপু ছাড়া কেউ কি আর দিতে পারে? খুব সুন্দর বলেছো, “নারীর জীবনের এই আকাঙ্ক্ষার দীপালি তুষের আগুনের মতো জ্বলে।” ভাবছি এই লাইনটা ধার নেবো, আর লিখবো কিছু একটা। কি ধার দেবে? নাকি চুরি করবো? :p
আমি দারুণ লিখেছি? আসলে তোমার সুন্দর মন্তব্য এই লেখাটিকে অলঙ্কৃত করেছে। বুঝলে আপু? -{@ (3
মৌনতা রিতু
তুমি আমার কাছ থেকে লেখা ধার নেবে গো আপু 🙂 এসব তোমার তোমাদের কাছ থেকেই শেখা। লিখে ফেলো। (3 অপেক্ষায় থাকলাম।
নীলাঞ্জনা নীলা
আজ হঠাৎ করে লিখে ফেললাম ফড়িংকে নিয়ে। আমার আনন্দ কবি আমাকে অনেক সাহায্য করে লিখতে।
পড়লেই বুঝবে।
ভালোবাসা জেনো। -{@ (3
মৌনতা রিতু
পোষ্ট দিছো? দাঁড়াও পড়ে দেখি। অবশ্যই দারুন হবে। (3 (3
নীলাঞ্জনা নীলা
তোমার কাছে আমার কোনো লেখা কি খারাপ হয়? এটাই ভাবছি আমি। ;?
ইঞ্জা
খুব ভালো লাগলো আপু। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
হ্যান্ডপাম্প ভাইয়া ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো। 🙂
ভালো থাকুন ভাইয়া।
ইঞ্জা
শুভকামনা জানবেন আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনাকেও ভাইয়া। 🙂
জিসান শা ইকরাম
অনেক অনেক ভাল লেগেছে নাতনী তোর এই লেখা। কবিতাটি মনে মনে আবৃত্তিও করে ফেললাম। সম্ভব হলে আবৃত্তি করে ইউটিউব লিংক দিয়ে দিস পোস্টে।
তোকে লেখার মাঝে দেখছি আমি 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা আবৃত্তিটা তুমি-ই করে দাওনা। আমরা সকলেই শুনতে চাই তোমার আবৃত্তি। প্লিজ! আমিও করবো, তবে তুমিও আমাকে শোনাও।
শোনাবে নানা?
লেখা ছাড়া আমি অর্ধমৃত। জানোই তো।
অফুরান ভালোবাসা নানা। 🙂 -{@
মৌনতা রিতু
চাই চাই আমাদের দাবি মানতে হবে মানতে হবে।
আজই চাইইইইইইইইইইই। শুনব আমিইইইই। ও আপুগো পায়ে পড়ি। প্লিজ শোনাও। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু রাত দুটো বাজে। এখন ঘুমাতে যাবো।
তবে বলে রাখছি, হ্যান্ডপাম্প ভাইয়ার আব্দারটা শেষ করে, এটা করবো। কথা দিলাম। -{@
সৈয়দ আলী উল আমিন
সত্য বলেছেন। মানুষ বদলায় সময়ে কিন্তু কিছু স্বভাব থেকে যায়।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনার মন্তব্য আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করলো।
অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।
শুন্য শুন্যালয়
বিরামচিহ্ন গুলো বুঝি বিষাদীয় সমস্যা? 🙂
স্পনটেনিয়াস জীবন আমরা প্রিয় মানুষের মতো করেই সাজাতে ভালোবাসি, তবে কারো চলে যাওয়াতে সে স্থবির হয়না। লেখো নাকি পুরা ঢেলে দাও? এভাবে দিতে দিতেও যখন স্পনটেনিয়াসলি চলছে তখন আর ভয় নেই। সবাই সব পারে নাকি পারা উচিৎ?
কেন যে এতো ভালো লেখার মতো কষ্ট করো!!
নীলাঞ্জনা নীলা
তা নয়তো কি! কমা, সেমিকোলন ঠিকমতো না বসালে লেখার বারোটা বেজে যায়। বারোটা বাজলেই ভুল, আর ভুল হলেই মন খারাপ। মন খারাপ টেনে আনে বিষাদ। শুন্য আপু প্ল্যান করে এ জীবনে চলা শিখিনি আমি। নিজের মনের কথা শুনে চলেছি। তাতে লাভ/ক্ষতি দুটোই হয়েছে, তবু এভাবেই চলছি। যদিও লেখার সাথে আমার জীবনধারার কোনো মিল নেই।
ঈশ্বর নাকি এক পিস নীলা পাঠিয়ে ধরা খেয়েছে। আর সাহস পায়নি আরেকজন পাঠানোর। :p
তুমি একটু বেশী-ই ভালোবাসো আমাকে। তাই কোনোকিছুই আমার খারাপ দেখোনা। -{@
ব্লগার সজীব
নীলাদি এত ভাল লেখেন কিভাবে? কেমন আছেন? 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
ওয়াওওওওও! ভাভু ভাইয়া খুব ভালো আছি। আচ্ছা এতোদিন কোথায় ছিলেন? একটু নিয়মিত হবার চেষ্টা করুন প্লিজ।
ভালো লিখি কই, আপনাদের সবার মন্তব্যগুলোই তো আমাকে লিখিয়ে নেয়। জানেন না বুঝি? 🙂
অনেক ভালো থাকুন।
মেহেরী তাজ
আপু আমার খুব প্রিয় এক মানুষ বলে “পৃথিবী তে কেউ আলাদা হয় না, যে দেখে বা ভাবে তার ভাবনা গুলো আলাদা হয়”।
কিন্তু আমার খুব কিউরিসিটি কে সেই লাকি পার্সোন যাকে আপনি আলাদা করে দেখেন। ;?
নীলাঞ্জনা নীলা
পিচ্চি আপু আপনার প্রিয় মানুষটি যা বলেছেন কথাটি একশত ভাগ সত্যি কিন্তু।
আপনার এই কৌতুহলপ্রবণ প্রশ্নটির উত্তরে বলতে হয়, এই লেখাটির লাকি পার্সন যে কে আমি নিজেই তা জানিনা। নিজের আমি’কে নিয়ে খুব কম লেখা হয়। 🙂
তবে আমার প্রিয় মানুষগুলোর তালিকা অনেক বড়ো। শুরুটা আমার বাবা-মা-তীর্থ। বুঝেছেন পিচ্চি আপু?
অনেক ভালো থাকবেন।