সেই সব দিনরাত্রি -2

জুলিয়াস সিজার ৭ মার্চ ২০১৪, শুক্রবার, ০১:৫১:২২পূর্বাহ্ন বিবিধ ১২ মন্তব্য

আমি যেখানেই যায় মানুষের সাথে মিশি। একদম কাছ থেকেই মানুষের জীবন দেখি। একসময় আমি ফিরিঙ্গি বাজারের দিকে ছিলাম। তখন আমি প্রতিদিন বিকেলে কর্ণফুলি ব্রীজঘাঁটে গিয়ে মাছ ধরার ট্রলারে বসতাম। প্রতিদিন যাওয়াতে সেখানকার কয়েকজন জেলের সাথে আমার খুব বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। অশিক্ষিত মানুষ তবে অনেক সরল। তাঁরা আমাকে বলেছেন, সমুদ্রের যেখানে গিয়ে তারা ইলিশ মাছ ধরে সেখানকার পানি নাকি অনেক পরিষ্কার। ইলিশ মাছ পুকুরের পুঁটি মাছের মতো ঝাঁক বেঁধে একসাথে থাকে। পরিষ্কার পানিতে ইলিশ মাছ সাঁতরাতে দেখা যায়। তাঁরা আস্তে করে মাছের ঝাঁক দেখে জাল বসিয়ে দেন। তাঁদের সাথে আমি একবার মাছ ধরতে যাবও বলেছিলাম। কিন্তু আমার দিদিকে বলায় সে ক্যাঁচাল শুরু করে তাই আর যাওয়া হয় নি। গেলে দিদি আমি পাগল হয়ে গেছি বলে বাড়িতে নোটিশ পাঠিয়ে দিত। বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরুপ ঐ জেলেরা আমাকে দুইবার ফ্রী ফরমালিনমুক্ত ইলিশ মাছ দিয়েছিলেন।

আমার আর একটি মেসের নিচে দাঁড়িয়ে একজন ভিক্ষুক ভিক্ষা করতেন। প্রতিদিন দেখা হওয়াতে উনার সাথে আমার একটি ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। উনার প্রতিদিনের ইনকাম, খরচ এইসব নিয়ে ভালোই কথা হতো আমাদের। অনেক কিছুই শেয়ার করতেন তিনি আমার সাথে।

আমি রেলওয়ে স্টাফ কোয়ার্টারেও সাবলেট থাকতাম। আমার বাসার নিচেই ছিলো বস্তি। সবসময় ঝগড়া করতো সেখানকার মানুষেরা। তাদের জীবনও দেখেছি আমি। হুটহাট গরম গরম জীবন প্রণালী। এই ঝগড়া লেগে যায়, স্বামী স্ত্রী যে যতটা পারে একজন আর একজনকে ধোলাই দিয়ে দেয়। বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সুঁচাগ্র মেদিনী, কেউ কাউকে কোন ছাড় দেয় না। তারপর কেউ এসে মিটমাট করে দেবে। যে আজ ঝগড়া মিটমাট করলো সে আবার তার পরদিন ,নিজের বউয়ের সাথে মারামারি করে। আর একজন ঝগড়া মিটিয়ে দেয়। তারপর আবার সব ঠিকঠাক। হাসি কান্না ঘর সংসার।

আমি আবার অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষের সাথেও মিশেছি। একেবারে এলিট সোসাইটি। এই প্রজাতি ভয়ংকর। শিক্ষিত মানুষের এত সুন্দর করে যত্নের সাথে আপনার গলায় ছুরি বসাবে যে আপনি কিছু বুঝে উঠার আগেই আত্মা শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। শিক্ষিত মানুষ কখনও ঠকে না কিন্তু ঠকায়। অবশ্যই সবাই এমন নয়। অনেক ভালোও আছেন।

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ