A462, D666 একে অপরকে শক্ত করে ধরে থাকলো, ভয়ে থরথর করে কাঁপছে সবাই (আসে পাশের সব মানুষ এই মাঠে জড়ো হয়েছে) সবার চোখে মুখে আতঙ্ক ভর করেছে অভশ্যাম্ভাবি মৃত্যুর, মৃত্যুদূত কড়া নাড়ছে সবার দূয়ারে, চাঁদকে দেখে আরো তারা আরো ভয়ার্ত হচ্ছে কারন চাঁদকে এখন পৃথিবীর চাইতে বড় মনে হচ্ছে, স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে চাঁদের গর্তগুলোকে, যেন লাফ দিয়ে চাঁদের মাঠিতে যাওয়া যাবে, সে এক ভয়ানক দৃশ্য। চাঁদে যারা বসতি গেড়েছিল তারাতো অনেক আগেই পালিয়েছে আল্ট্রো মেডিয়াতে কারণ তারা সবাই ছিলো নামকরা বিজ্ঞানী ও তাদের বংশধর।
A462 D666 কে বলল "তুমি এখানে অপেক্ষা করো আমি দেখি ঘরের কি অবস্থা আর কিছু খাওয়ার পায় কিনা তাও দেখতে হবে" বলেই সে হাটতে শুরু করলো আর তখনি D666 বলল "তুমি একা যাবে কেন, আমিও যাচ্ছি তোমার সাথে, A462 কি আর করবে D666ও তার সাথে চলতে লাগলো। ওরা ঘরের সামনে এসে অবাক হয়ে ছেয়ে রইল, যেখানে তাদের ঘর ছিলো সেখানে যেন কেউ আবর্জনা ঢেলে দিয়েছে, কিচ্ছু নেই সব ধূলীস্বাত হয়ে গেছে, তারা সেই অবস্থায় এইটা সেইটা নেড়েচেড়ে দেখছে কিছু পায়কিনা হটাৎ D666 ডাক দিলো "ডার্লিং দেখো" A462 তাড়াতাড়ি গেলো D666 এর পাশে আর দেখে একটি বক্স, সে প্রশ্ন চোখে তাকালো D666 কে আর D666 বক্সটা হাতে তুলে নিলো, বললো হেসে "খাদ্য ট্যাবলেট " বলেই বললো " চল" দুজনেই হাঁটা শুরু করলো মাঠের দিকে।
তারা মাঠে ফিরে এসে দেখলো আরো কয়েকজন তাদের মত বক্স নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর তারা সব ট্যাবলেট নিয়ে সবার আগে বাচ্চাদের দিলো এরপর বাকিরা একটা একটা ট্যাবলেট পেলো। রাতে সবাই শুয়ে পড়লো কিন্তু চারিদিকে যেন দিনের আলো কারন চাঁদ তাদের ভয় দেখাচ্ছে তার দাঁত বের করে, কিন্তু কারো চোখে ঘুম নেই আসন্ন ভয়াল মৃত্যুর চিন্তা করে।
ভোর রাতে একটু তন্দ্রা লেগে এসেছিলো একটা শব্দ শুনে তাও ছুটে গেলো একটা মৃদু ভুঁ ভুঁ শব্দে, সবাই উঠে বসলো আর কান খাড়া করে বুঝতে চেষ্টা করছে শব্দটা কিসের, আচমকা কেউ কেউ আকাশের দিকে তাকালো, আকাশে অনেক আলো ভরা বিন্দু দেখা যাচ্ছে যেন সারা আকাশ জুড়ে জোনাকির আলো মিটমিট করছে, সবাই অবাক হয়ে চেয়ে রইলো, কেউ একজন চিৎকার করে বলল "ওগুলো স্পেসশীপ" সবাইর মাঝে কেমন যেন আনন্দ ছড়িয়ে পড়লো।
কিছুক্ষণের মধ্যে সব স্পেসশীপ একে একে নিচে নামতে লাগলো আর এই দিকে সবার হাতের হলোগ্রাফ সিস্টেমস চালু হয়ে গেলো আর সেখানে দেখা গেলো বেঁটে জাতের কিছু এলিয়েনকে যারা বলে চলেছে " আমরা গ্যালাক্সি, 093 থেকে আপনাদের সবাইকে নিতে এসেছি, আমাদের সাথে বিভিন্ন গ্যালাক্সির যথা 110, 756, G4 সহ আরো অনেক গ্রহ থেকে আপনাদের সকলকে নিতে এসেছি, আপনারা সবাই শৃংখলাবদ্ধ ভাবে আপনাদের কাছের শীপ গুলোতে চলে আসুন, আর বেশি দেরি নেই চাঁদের আঘাত হানার, আপনারা দ্রুত চলে আসুন"। সবাই দ্রুত কাছের শীপের দিকে যাওয়া শুরু করলো, A462, D666 হাত চেপে ধরলো আর D666 তাকে জড়িয়ে ধরলো, তারপর হাঁটতে শুরু করলো সবার সাথে সাথে।
এইদিকে ঘন ঘন হলোগ্রাফ সিস্টেমে বারবার ঘোষনা আসছে যত দ্রুত সম্ভব আপনারা চলে আসুন, চাঁদ অনেক কাছে চলে এসেছে আর কয়েক ঘন্টার মধ্যে চাঁদ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষনের টানে পড়ে যাবে, আপনারা দ্রুত আসুন, আমরা সবাই পর্যাপ্ত স্পেসশীপ নিয়ে এসেছি আপনারা দ্রুত শীপে উঠে আসুন। পৃথিবীর সকল মানুষ দৌঁড়াতে লাগলো নিকটবর্তী শীপের উদ্দেশ্যে, A466 আর D666 একে অপরের হাত ধরে দৌঁড়াতে লাগলো, সবাই দৌঁড়ে শীপে উঠতে লাগলো আর যে সব শীপ মানুষে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে সেগুলো উড়ে যেতে লাগলো আর তার যায়গাই নতুন শীপ নেমে আসতে লাগলো, A466 আর D666 নতুন নেমে আসা একটি শীপে উঠে বসলো সাথে আরো মানুষ উঠে আসতে লাগলো, এক পর্যায়ে শীপের দরজা হুঁশ শব্দ করে বন্ধ হয়ে গেল আর ঘোষনা শুনা গেল আপনারা দ্রুত বসে পড়ুন আমরা এখনি এই গ্রহ ত্যাগ করছি আর এক মিনিট পর শীপ উপরে উঠতে লাগলো। মিনিট খানেক পর পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ঘসাতে সো সো আওয়াজ হতে লাগলো আর কিছুক্ষন পরে চারিদিকে কেমন যেন শুনশান নীরবতা। মিনিট ১৫ পরে স্পেসশীপ ডকিং করলো মাদার শীপে, দরজা খুলে গেলে সবাই নেমে আসতে লাগলো একে একে একে, দেখলো সবাই আসে পাশে আরো শীপ উপর থেকে নেমে আসতে লাগলো মাদারশীপে। ঘোষনা এলো "আপনারা সবাই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে আসুন, অন্যান্য শীপকে নামতে দিন" সবাই উপরের দিকে যাওয়া শুরু করলো, উপরে উঠে এলো A462 এবং D666ও একে অপরের হাত ধরে রাখলো তারা, আসে পাশে কাজে ব্যস্ত হাল্কা আর ভীষণ লম্বা ধরণের মানবাকৃতির ছায়া সদৃশ এলিয়েন আর কিছু বেঁটে আকৃতির বিদঘুটে এলিয়েন যাদের হাতির মত লম্বা কিন্তু চিকন শুর আছে, সবাই ব্যস্ত নতুন আগুন্তকদের পথ দেখাতে আর কেউ ব্যস্ত নিজ কাজে।
A462 D666 কে নিয়ে কাছের এক জানালায় যা দিয়ে বাইরে ওরা দেখলো পৃথিবীরে থেকে বেশ দূরে আরো অনেক মাদারশীপ যেগুলোতে ছোট ছোট স্পেসশীপ উঠে যাচ্ছে আর আরো শীপ আসছে পৃথিবী থেকে, এই এলিয়েনরা পৃথিবীর মিলিয়ন বিলিয়ন সন্তানদের উদ্ধারে এসেছে এবং আশা করা যায় সবাইকে তারা বাঁচাতে পারবে। একে একে সব মানুষ এসে দাঁড়াচ্ছে জানালার ধারে আর এই মাদারশীপ থেকে। অনেকক্ষন তারা দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো এই কর্মযজ্ঞ আর দেখলো চাঁদের পৃথিবী গমন, মাদারশীপ আছে কয়েক লক্ষ মাইল দূরে, ওরা সবাই পুরো শীপ ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো, তাদের খাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলে তারা সবাই খেতে গেল, ঘন্টা দশ পরে ঘোষনা এলো মাদারশীপ ছেড়ে যাবে কিছুক্ষণের মধ্যে এবিং সফল ভাবে পৃথ্বীর সকল মানুষকে উদ্দার করা সম্ভব হয়েছে।
সবাই জানালার কাছে এসে ভিড় করলো শেষবারের মত পৃথিবীকে দেখার জন্য, তারা দেখলো চাঁদ পৃথিবীর বায়ূমন্ডলের কাছাকাছি এসে গেছে, মাদারশীপ গুলো একে একে ছেড়ে যাচ্ছে আস পাশ থেকে, তাদের শীপও ছেড়ে যাওয়া শুরু করলো তার নির্দিষ্ট লক্ষ্য ধরে আর সবাই অবাক হয়ে দেখতে লাগলো চাঁদ পৃথিবীর বায়ূমন্ডলে আছড়ে পড়ছে আর এতে বায়ূমন্ডল উৎখিত হোল চারিদিকে আর কিছুক্ষনের মধ্যেই দেখা গেল পুরো পৃথিবীতে অনেক আগুনে ফাটল, A462 D666 কে জড়িয়ে ধরলো আর সাথে সাথেই তাদের শীপ আলোক স্পীডে যাওয়া শুরু করলো আর মূহুর্তেই তারা পৃথিবীকে ফেলে এলো দূর অজানায়।।
৬টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
যাক বেঁচে গেলো সবাই তাহলে
বর্ননায় দেখতে পেলাম স্পেশ শিপ গুলোকে
ধ্বংস প্রাপ্ত পৃথিবীকে।
এমন লেখা আরো লেখুন ভাই
শুভ কামনা।
ইনজা
আপ্লুত হলাম ভাইজান, ধন্যবাদ অফুরান। 🙂
ব্লগার সজীব
পূর্বের সব পর্ব সহ এটিও পড়লাম। আপনার লেখায় ভিন্নতার স্বাদ পেলাম ভাইয়া।
ইনজা
ধন্যবাদ ভাই, আপ্লুত হলাম। 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সম্পূর্ণ ভিন্ন সাধের এক ভবিষৎ ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা। (y)
ইনজা
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়, পাশে থাকবেন। 🙂