কোভিড-১৯ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসছে, তাও প্রথমবারের চাইতেও ভয়ংকর রূপে সে আসছে।
হয়ত আপনাদের জিজ্ঞাসা থাকতে পারে, কিভাবে তা ভয়ংকর হতে পারে?

তা বলার আগে জেনে নিই বর্তমান কোভিড-১৯ এর অবস্থা কি?

কোভিড-১৯ রোগ বিস্তারের পর থেকে গত ১১ মাসে বিশ্বজুড়ে ১২ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে এক-চতুর্থাংশের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইউরোপে, সবচাইতে বেশি মৃত্যু হয়েছে আমেরিকায়।

মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬ হাজার ১৫৯জনে। নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৭৬৭ জন।

মোট শনাক্ত ৪ লাখ ২৮ হাজার ৯৬৫ জন।

নতুন করে পৌনে ৭ লাখ মানুষের শরীরে মিললো কোভিড নাইনটিন, সবমিলে শনাক্তের সংখ্যা এখন ৫ কোটি ৩০ লাখের ওপর, মৃত্যু আর সংক্রমণের শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রই, দেশটিতে আরও ১১শ’ মৃত্যুতে মোট প্রাণহানি ছাড়ালো দু’লাখ ৪৮ হাজার, সংক্রমিত এক কোটি ৮ লাখের বেশি মানুষ।

আপনারা সবাই জানেন পৃথিবী ব্যাপি কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে, ফলশ্রুতিতে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে লকডাউন দিতে বাধ্য হয়েছে তাদের সরকার, তাও কঠোরভাবে পালন করা হচ্ছে লকডাউন, প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রধান কারণ শীত হানা দিয়েছে, আপনারা জানেন শীতকালীন সময়েই সর্দি, হাঁচি কাশি, জ্বর, হাঁপানি সবচাইতে বেশি আক্রান্ত হয় মানুষ, এইসব রোগই ঠান্ডা জনিত, আর করোনা তো এই শীতেই শক্তিশালী হবে উল্লেক্ষিত কারণে।

এই শীতে আপনি বুঝবেনই না কখন আক্রান্ত হচ্ছেন, এছাড়া করোনা রোগীদের সর্দি, হাঁচি কাশি থেকে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া অধিক সক্রিয় থাকবে।

আপনারা সবাই জানেন মানুষের হাঁচির গতিবেগ ঘন্টায় ২৪৫ কি.মি. তাহলে বুঝতেই পারছেন করোনা আক্রান্ত কেউ হাঁচি দিলে আসেপাশে কি হতে পারে, বিজ্ঞানিরা বলছেন হাঁচির মাধ্যমে ছড়ানো ব্যাকটেরিয়া প্রায় ১২ মিনিট বাতাসে ভেসে থাকে, তাহলে বুঝুন অবস্থা কি হতে পারে।

করণীয়ঃ

আমি আগেও করোনা আসার আগে লিখেছিলাম এবং বলেছিলাম করণীয় কি, আবারও বলছি।

সরকারের উচিত নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়াঃ

১) এই মুহূর্তেই সকল ইন্টারন্যাশনাল বিমান উড্ডয়ন এবং অবতরণ বন্ধ করা।

২) সকল হাসপাতালকে ইমারজেন্সি ইকুইপমেন্ট দিয়ে রেডি করা।

৩) সকল ডাক্তার, নার্সদের স্ট্যান্ডবাই করে রাখা।

৪) ডাক্তার, নার্স এবং সংস্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মিদের থাকার জন্য উন্নতমানের হোটেল রুমের ব্যবস্থা করা, যেন তাদের মাধ্যমে তাদের পরিবার আক্রান্ত না হয়।

৫) প্রত্যেকটা হাসপাতালে গতবার রোগীদের উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করা হয়নি, এইবার যেন সেই ব্যবস্থা করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬) সকল ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মিদের প্রটেকশন ড্রেস পিপিই এবং এন-৯৫ মাস্কের ব্যবস্থা করা।

৭) সকল প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে করোনা আক্রান্তদের ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, দরকার হলে সরকার জরুরি আইনের আওতায় সকল প্রাইভেট হাসপাতালকে সরকারের আওতায় আনতে হবে।

৮) করোনা আক্তান্তের হার বাড়তে শুরু করলে দ্রুত সকল ধরণের পরিবহন বন্ধ করতে হবে।

৯) কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য পাড়ায় পাড়ায় টেস্ট সেন্টারের ব্যবস্থা করা উচিত।

১০) বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান করানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

১১) উপযুক্ত সময়ে জরুরি অবস্থা জারি করতে হবে এবং লকডাউনের আওতায় আনতে হবে সারা দেশকে।

১২)  সরকারের উচিত এখনই সব বিষয়ে এলার্ট জারি করা এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে তৈয়ার রাখা। 

আমাদের করণীয়ঃ

আমাদের উচিত এখনই প্রস্তুতি নেওয়া, সকল ধরণের প্রটেকশন নেওয়া, মাস্ক পরিধান করা, সবসময় হাত, নাক পানি দিয়ে পরিস্কার রাখা, সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া।

কারো কোনো ধরণের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতাল, নতুবা নিজেকে আইসোলেটেড করা। 

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের রক্ষা করুন। 

 

সমাপ্ত। 

ছবিঃ গুগল।

0 Shares

২৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ