সান্ধ্য ফড়িং

সৌবর্ণ বাঁধন ২৩ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ০৮:২৮:১০অপরাহ্ন কবিতা ৩০ মন্তব্য

সন্ধ্যার পদতলে ফুটে আছে লাল-নীল জল,

রেফ্রিজারেটরে সাজানো হিমায়িত মাংসের স্তূপের মতো,

সবগুলো আত্মা জমে যাচ্ছে দ্রৌপদীর রথের উপর,

রাস্তায় উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে পঞ্চবিংশতি পুরুষ!  

বুনো হাঁস শহরের বেনোজলে ডুব দিয়েছিলো বিকালে,

এখন ছেঁড়া পত্রিকার বৃদ্ধ পোকার মতো বিড়বিড় করা-

অক্ষর গুলো কানাকানি করে,

সন্ধ্যার পাখিরা হারিয়েছে সাতমহলের সিংহদরোজায়,

মেঘময়ী মেয়েরা আর পায়না তাদের দেখা নিজস্ব ছায়ায়!

কিবা আসে যায় এই নগরীর, বুনোপাখি আত্মাহুতি দিলে?

নৈঋত কোণে বিশতলা ছাদ থেকে এক বোহেমিয় যুবা,

গেছো ব্যাংগের মতো লাফ দিয়ে নেমে গেলো নীচে,

হারানো পাখিদের খোঁজে!

মেঘের তুলো মেখে সমস্ত শরীরে ভাবে মেঘময়ী,

কেমন অদ্ভুত হতো, সে যদি নেমে যেত যুবকের সাথে?

 

ছাদটা প্রসারিত হতে হতে ছুঁয়ে দিচ্ছে আবছা আকাশ,

মেয়েটার হাতে বুঝি এসে যাবে চাঁদ!

অব্যাহত বাতাসে সমুদ্রের নোনা গন্ধে ভাজা তেলের,

ফোটার মতো ছিটকে যাচ্ছে টুকরো টুকরো গন্ধ,

দীপ্যমান নক্ষত্রের বাজার এখন বন্ধ! হয়তো খুলবে!

জ্বলন্ত সিগারেটের মতো ফড়িঙের পাল নিয়েছে দখল,

বৈকালিক জল স্থল! রকেট বাতির মতো নিমেষেই পুড়ছে!

আবার ভাসছে, আবার পুড়ছে!

ওইসব ফড়িঙের সাথে কই যাবে তুমি?

এই শহরের পাদদেশে, সিংহাসনে, বনেদী রেস্তোরাঁয়-

মিশে আছে নিকোটিন!

বাতাসে পেট্রোল আর হুইস্কির গন্ধ তোমার প্রেমের চেয়েও,

অনেক প্রাচীন! বাতাসে পুড়ছে সীসা!

নেমোনা এই সান্ধ্য রাস্তায় মেয়ে, আগুনের হলকায় জ্বলে,

যাবে শ্রাবস্তীর মায়ামাখা ওই দুটো চোখ!

 

কই যাবে তুমি ফড়িঙয়ের সাথে?

তারা পুড়ে যেতে আসে; পাখা ও শরীর ছাওয়া দাহ্য তরলে!

ক্লান্ত মোটর গাড়ির সাথে ফিরে যাচ্ছে ঘরে অবসন্ন দিনমণি,

নবযৌবনা চাঁদ পড়ে থাকে একা!  

এতো প্রেম সয়না মানুষের! মেয়ে সবাই যাচ্ছে ফিরে,

তুমিও এখন খরগোশের মতো ফিরে যাও ঘরে!

ফড়িঙের পাখায় প্রিজমের মতো বর্ণময় আলোর আকুতি,

ফড়িঙের পাখা আর শরীরে আগুন!

এই শহরের ল্যাম্পপোস্ট গুলো সব জ্বলন্ত সিগারেট,

ফড়িঙের শরীরে ধিকিধিকি করে জ্বলা সিগারেটের দহন!

কই যাও তুমি?

পোড়া বাতাসে পুড়ে যাবে কণ্ঠনালী; উপরে স্তব্ধতম আকাশ,

যেয়োনা বেশিদূর! বন্ধ হয়ে যাবে পুরোটা নিঃশ্বাস!     

 

0 Shares

৩০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ