সানিয়া (৩)

ইঞ্জা ৮ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার, ০৯:২৬:৩৩অপরাহ্ন ভ্রমণ ১৫ মন্তব্য

আমি আমার লাগেজ খুলে কম্পলিট স্যুট, শার্ট সহ যাবতীয় দরকারী আইটেম গুলো বের করে রুমের করিডোরের ওয়াল আলমিরাতে রেখে টয়লেট্রিজ বাথরুমে রেখে ফ্রেস হতে গেলাম, গোসল সেরে বের হয়ে দেখি ইস্টেফেন বসে গল্প করছে, ইস্টেফেন আমাকে বললো, তোমাদের এখন যদি কিছু খেতে ইচ্ছে করে এইখানে ম্যানু দেওয়া আছে অর্ডার করে দাও, কিন্তু কোনো বিল দেবেনা, তোমরা আমাদের গেস্ট, আমরাই পে করবো।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, তোমাদের বাজেট কতো এই প্রোগ্রামের জন্য?
ওর জবাব শুনে আমার মাথাটায় চক্কর দিয়ে উঠলো, বলে কিনা মিনিমাম ১০ মিলিয়ন ডলার।
আমি আমার সিইওকে বললাম, দেখছেন কান্ড?
সিইও মিটিমিটি হেসে বাংলায় বললো, ভাই বিপদে তো আমি পড়েছি।
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে?
উনি যা বললেন, উনি জুতা পায়ের সমস্যার জন্য পড়েননা, কিন্তু এইখানকার যা অবস্থা উনাকে কম্পলিট স্যুট পড়তে হবে, মানে জুতা কেনা লাগবে।
আমি ইস্টেফেনকে বললাম, সিইও সাহেব একটু মার্কেটে যেতে চান, আসেপাশে কোন মার্কেট আছে?
ইস্টেফেন বললো, নো প্রবলেম, সেই নিয়ে যাবে, সিইওকে নিয়ে সে বেড়িয়ে গেল।

এইদিকে আমার পেট চোঁচো করছে, রুম সার্ভিসে রিং দিয়ে বিফ টি বোন স্টেইক এবং কিছু আইস দিতে বলে নিজে গেলাম মিনি ফ্রিজে হামলা দিতে, সেইখান থেকে প্রিয় শ্রীনফের মিনি সাইজের দুইটা নিয়ে বসলাম।
কিছুক্ষণ পর খাওয়া দিয়ে গেলে খেতে শুরু করলাম, হটাৎ বাইরের লাউড স্পিকারে এমন একটা গানের আওয়াজ এলো, শুনেই অবাক হলাম।
ভারতের মিকা সিংয়ে মউজা মউজা গান কোথায় বাজছে দেখার জন্য রুমে বড় গ্লাস দেওয়া জানালার ওপারে তাকালাম, দেখেই ভিরমী খেলাম।
দেখি কি নিচের সুইমিংপুলের চারিদিকে চায়নিজ এবং লাল চুলোরা মিলে গানের তালে তালে ডান্স দিচ্ছে, বুঝতে পারলাম মিকা সিংয়ের গান এদেরও পাগল করেছে।
আমার খাওয়া প্রায় শেষ এর মধ্যে ইস্টেফেনরা ফিরে এলো, সিইও শ্রীনফ দুইটার দিকে তাকিয়ে খোঁচা মারলো, কি ব্যাপার আজ দিনে দুপুরে?
আমি হেসে বললাম, আমি রিল্যাক্স মুডে থাকলে খায়, ইস্টেফেন তুমি নিতে চাও?
ইস্টেফেন না করলো, কারণ ওর বসদের সাথে মিটিং আছে, সাথে এও স্মরণ করিয়ে দিলো আগামীকাল সকাল দশটায় কনভেন্সন শুরু হবে, কনভেন্সনে কম্পলিট স্যুট ছাড়া কেউই এলাউড নয়, ফলশ্রুতিতে দশটার আগেই আমাদের ব্রেকফাস্ট করে ফেলতে হবে, দুপুরে লাঞ্চ হবে মিটিং ব্রেকে, সন্ধ্যার পর হবে অফিসিয়াল ডিনার, পরদিন বিকেল পর্যন্ত আমরা ফ্রি থাকবো, সন্ধ্যায় হবে পার্টি, বিচের লাগোয়া স্পেসে এই পার্টির আয়োজন করা হবে, সেখানেও কম্পলিট ডিনার স্যুট পড়তে হবে, এইসব অবশ্য আমাদের ইনভাইটেশনে উল্লেখ ছিলো, এইসব বলে ইস্টেফেন বিদায় নিয়ে চলে গেল, তার আগে প্রমিজ করলো রাতের ডিনারের পর সে আসবে গল্প করতে।

সিইও সাহেব একটা স্যান্ডুইচ খেলেন, এর মধ্যে আমি কাপড়চোপড় খুলে বিছানায় গেলাম কিছুক্ষণ রেস্টের উছিলায়।
সন্ধ্যা সাতটায় আমি জিন্স আর টিশার্ট পড়ে নিলাম, সিইও সাহেবও রেডি হয়ে আমার সাথে বেড়িয়ে পড়লেন, লিফটে করে নিচে নেমে খুঁজে বের করলাম রেস্টুরেন্ট, সেখানে প্রবেশ করে দেখলাম ডংফেং শোকনের গেস্টরা এসে ভীর করেছে, আমরা সবাইকে হাই হ্যালো করে নিজেরা একটা টেবিল দখল করলাম, এর মধ্যে হংকং, শ্রীলংকার ডিলাররা এসে আমাদের টেবিলে বসলো, খাবার যেহেতু বুফে দেওয়া আমরা উঠে গিয়ে যার যার পছন্দ মতো খাবার নিয়ে টেবিলে এসে বসলাম, খেতে শুরু করবো এইসময় দেখলাম ইস্টেফেন এগিয়ে এসে আমাদের টেবিলে একটা রেডওয়াইনের বোতল দিয়ে গেলো, আমরা গল্প করতে করতে খেতে লাগলাম, খাবার শেষ করে বের হলাম সিগারেট খাওয়ার উদ্দেশ্যে, আমরা পাঁচ, ছয় জন মিলে বীচের মধ্যে চলে এলাম, কিছুক্ষণ সেখানে ঘোরাঘুরি করে যার যার রুমে ফিরে গেলাম, ঘন্টাখানেক পরে ইস্টেফেন এলো রুমে, বিভিন্ন বিষয়ের গল্পের ছলে বললো, আগামী পরশু সকালে কোম্পানির মালিক সকল ডিলারদের সাথে আলাদা আলাদা বসবেন পরিচিত হওয়ার জন্য, সাথে আগামী বছরের সেইলস টার্গেট নির্ধারণ করবেন।

........ চলবে।
ছবিঃ গুগল।

0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ